কুমিল্লায় ৬ নতুন মুখ
ভোট এলো, এলো ভোটদ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় কুমিল্লার ১১টি আসনের মধ্যে ৬টি তে নতুন মুখ বিজয়ী হয়েছেন। এর মধ্যে ৫ জনই প্রথমবারের মত সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেন। সব মিলিয়ে ৬জন প্রথমবারের মতো এমপি নির্বাচিত হয়েছেন কুমিল্লায়।
এদের দুই জন বিজয়ী হয়েছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন নিয়ে নৌকা প্রতীকে। তারা হলেন কুমিল্লা-১ (দাউদকান্দি-তিতাস) আসনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আবদুস সবুর এবং কুমিল্লা-৮ (বরুড়া) আসনে আবু জাফর শফি উদ্দিন। আবদুস সবুরের নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন আওয়ামী লীগ নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী নাঈম হাসান আর আবু জাফর শফিউদ্দিনের প্রতিপক্ষে নিকটতম ভোট পেয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী নুরুল ইসলাম মিলন। যদিও তিনি ভোটের আগেই নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন।
এদিকে উপজেলা চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করে স্বতন্ত্র পদে লড়াই করে জয় ছিনিয়ে এনে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন কুমিল্লা-৪ (দেবিদ্বার) আসনের প্রার্থী আবুল কালাম আজাদ, তিনি হারিয়েছেন বর্তমান এমপি ও আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী রাজী মো. ফখরুলকে। একই ভাবে স্বতন্ত্র পদে কুমিল্লা-৫ আসনে উপজেলা চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করে জয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতা এমএ জাহের, তার সাথে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই করেছেন আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা সাজ্জাদ হোসেন। আর কুমিল্লা-৩ আসনে প্রচার-প্রচারণা শুরুর তিন দিন পর আদালতের মাধ্যমে প্রার্থিতা ফিরে পেয়ে মাঠে নেমে নিজের দলের মনোনীত প্রার্থী বর্তমান এমপি ইউসুফ আবদুল্লাহ হারুনকে পরাজিত করে প্রথম বারের মত সংসদ সদস্য হলেন উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাকালীন সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম সরকার। তিনি এর আগেও সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন তিনি। এবারও দল থেকে নির্বাচন করার মনোনয়ন চাইলেও পাননি, জিতেছেন স্বতন্ত্র পদে লড়াই করেই।
প্রথমবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার প্রতিক্রিয়ায় বরুড়া থেকে নির্বাচিত এসকিউ গ্রুপের চেয়ারম্যান ও কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আবু জাফর মো. শফিউদ্দিন শামীম বলেন, আমার জয়ের পেছনে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা ছিলো জন সম্পৃক্ততা। আমার বিপরীতে সেরকম কোন শক্ত প্রতিদ্বন্দী না থাকার পরও আমি ভোটারদের দ্বারে দ্বারে গিয়েছি প্রতিদিন। ভোটারদের কেন্দ্রে আনা এবং নির্বাচনকে উৎসবমুখর করার যে চ্যালেঞ্জ নিয়েছিলাম আমি মনে করি এতেই আমি জয়ী হয়েছি। আমি সবার প্রতি কৃতজ্ঞ।
তিনি আরো বলেন, সবার আগে আমি এলাকার নিরক্ষরতা ও বেকারত্ব দূর করতে চাই। রাস্তাঘাট, প্রযুক্তি নির্ভর কৃষি ও শিল্পোন্নয়নই আমার প্রথম লক্ষ্য।
কুমিল্লা-০৪ আসন থেকে বিজয়ী জাহাঙ্গীর আলম সরকার বলেন, আমি শেখ হাসিনার কর্মী। আসল নৌকার মাঝি ছিলাম আমি, তাই আমার কাছেই নৌকা ফিরে এসেছে। ভোটাররা আমাকে ভোট দিয়েছে- মানে শেখ হাসিনাকেই ভোট দিয়েছে, আওয়ামী লীগকেই বিজয়ী করেছে। ভোটারদের সেবাই এখন আমার প্রধান লক্ষ্য। একটি স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে সরকারের সকল কাজে সহযোগিতাই আমার লক্ষ্য।
কুমিল্লা-০৫ আসন থেকে নির্বাচিত এমএ জাহের বলেন, আমি উপজেলা চেয়ারম্যান থাকাকালীন মানুষের পাশে ছিলাম - তাই মানুষই আমাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছে। আমি তাদের উন্নয়নেই পাশে থাকবো সব সময়। আমি বুড়িচং ও ব্রাহ্মণপাড়ার সকলকে সাথে নিয়ে এই আসনটিকে নতুন ভাবে উন্নয়নমুখী করে সাজাতে চাই।
কুমিল্লা-০৪ আসন থেকে নির্বাচিত আবুল কালাম আজাদ বলেন, আমার সাথে জনগণ ছিলো। জণগণের সকল শক্তিই আমাকে বিজয়ী করেছে। আমি স্বতন্ত্র পদে লড়ে নির্বাচিত হলেও আমি সবাইকে নিয়েই আমার দলকে সুসংগঠিত রাখবো এবং সাধারণ মানুষের উন্নয়ণে কাজ করবো।
উল্লেখ্য, কুমিল্লার ১১টি আসনে ৯৩ জন প্রার্থী সংসদ সদস্য হতে লড়াই করেন।