ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির সাংসদ ও অভিনেত্রী কঙ্গনা রানাওয়াত। মাঝে মাঝেই বিতর্কমূলক কথা-বার্তায় সংবাদের শিরোনাম হন তিনি। সম্প্রতি ভারতের জাতির পিতা মহাত্মা গান্ধীকে নিয়ে করা তার এক মন্তব্যে নতুন করে রাজনৈতিক বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। দেশটির বিরোধী দল কংগ্রেস তার মন্তব্যকে ‘অশ্লীল’ বলে অভিহিত করেছে।
মহাত্মা গান্ধীর জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে সামাজিক মাধ্যমে একটি পোস্ট দেন কঙ্গনা রানাওয়াত। সেখানে তিনি লেখেন, ‘দেশের কোনো পিতা হয় না, সন্তান হয়, ধন্য এই ভারতমাতার সন্তানরা।’
বিজ্ঞাপন
যে কোন দেশের স্বাধীনতার পেছনে সবচেয়ে যে নেতার অবদান বেশি, তাকেই সেই রাষ্ট্রের পিতা বলা হয়। সেটা শুধু বাংলাদেশ বা ভারত নয়, বিশ্বের অনেক দেশেই এই সম্মান প্রয়োগের প্রথা রয়েছে। কঙ্গনার এমন মন্তব্য নিঃসন্দেহে মহাত্মা গান্ধীর সারা জীবনের অবদানকে ছোট করে। তিনি মহাত্মা গান্ধীর গড়ে তোলা সংগ্রেস পার্টির বিপক্ষের একটি রাজনৈতিক দল (বিজেপি)’র নেত্রী বলেই এমন অসম্মানজনক মন্তব্য করেছেন বলে মনে করছেন দেশটির অনেক মানুষ।
সেই পোস্টে অবশ্য ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী লাল বাহাদুর শাস্ত্রীর ১২০তম জন্মবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাও নিবেদন করেছেন কঙ্গনা।
বিজ্ঞাপন
তবে ঘটনার এখানেই শেষ নয়। আরও একটি পোস্টে অভিনেত্রী কঙ্গনা লেখেন, ‘যেখানে তিনি মহাত্মা গান্ধীর স্বচ্ছতার উত্তরাধিকার বহন করার জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে কৃতিত্ব দিয়েছেন।’ আর এতেই রাজনৈতিক দিকে টেনে নিয়ে গেছেন অনেকে। একইসঙ্গে কঙ্গনার এই মন্তব্যকে অশ্লীল এবং নিন্দনীয় বলেও অভিহিত করেছেন।
কংগ্রেস নেত্রী সুপ্রিয়া শ্রীনাতে তার এই মন্তব্যের সমালোচনা করে লেখেন, ‘বিজেপি সাংসদ কঙ্গনা মহাত্মা গান্ধীর জন্মবার্ষিকীতে তাকে অশ্লীল কটাক্ষ করেছেন। জাতির পিতা আছেন, পুত্র আছেন, শহিদ আছেন। সবারই সম্মান প্রাপ্য।’
উল্লেখ্য, কঙ্গনা রানাওয়াতকে এরপর দেখা যাবে ‘ইমার্জেন্সি’ সিনেমাতে। যেখানে ইন্দিরা গান্ধীর চরিত্রে দেখা যাবে তাকে। সেন্সর জটে আটকে আছে ছবির মুক্তি।
জনপ্রিয় মডেল ও অভিনেত্রী মৌটুসী বিশ্বাসকে ইদানিং নতুন কাজে একেবারেই পাওয়া যাচ্ছে না। কারণ গত একটা বছর টানা কাজ করেছেন ক্যামেরার পেছনে। ব্র্যাকের ‘অতিথি’ প্রজেক্টের একজন গবেষণাকর্মী হিসেবে ব্যস্ত ছিলেন। তবে কাজটি দর্শকের সামনে আসতে আসতে তাকেও নিয়ে আসা হয়েছে ক্যামেরার সামনে। সেই কাজটিই এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় দারুণ প্রশংসা কুড়াচ্ছে। ‘অতিথি’র আদ্যোপান্ত নিয়ে বার্তা২৪.কমের সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন মাসিদ রণ
মৌটুসী বিশ্বাস: সত্যি আমি এতো ভালো ভালো মন্তব্য ও কাজটির গুণগত মানের প্রশংসা শুনে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েছি। কারণ আমি শুধু এই অডিও ভিজ্যুয়ালে একজন মডেল হিসেবেই কাজ করিনি। ক্যামেরার পেছনে দিনের পর দিন কাজ করেছি। এর প্রতিটি ফ্রেমে রয়েছে আমিসহ পুরো টিমের অনেক পরিশ্রম ও আন্তরিকতা। আজকাল তো ভালো মানের কনটেন্ট সোশ্যাল মিডিয়ায় যেভাবে সাড়া ফেলে না। তবে আমাদের কাজটি দর্শকের এতো ভালো লেগেছে দেখে সকল পরিশ্রম সার্থক মনে হচ্ছে। আমার পুরো মডেলিং ক্যারিয়ারে এতো ভালো সাড়া কোন কাজে পাইনি।
মাসিদ রণ: ‘অতিথি’ প্রজেক্টটি কিছু বলুন...
মৌটুসী বিশ্বাস: বাংলাদেশে ভ্রমণের প্রসঙ্গ আসলেই কক্সবাজারের সি বিচ, সিলেটের চা বাগান, সুন্দরবন কিংবা বান্দরবানের পাহাড়- এমন গুটি কয়েক জায়গার কথাই মনে পড়ে। কিন্তু এর বাইরেও যে আমাদের সবুজ শ্যামল দেশের কতো জায়গা ঘুরে দেখার আছে, কতো ইতিহাস-ঐতিহ্যসমৃদ্ধ জায়গা রয়েছে, সেসব জায়গাকে আরেকবার তরুণ প্রজন্মের মধ্যে পরিচয় করিয়ে দেবার জন্য ব্র্যাকের মতো একটি ওয়ার্ল্ড ফেমাস এনজিও এই প্রজেক্টটি হাতে নিয়েছে। এজন্য তাদের সাধুবাদ না নিয়ে পারছি না।
খেয়াল করে দেখবেন, শ্রীলংকা, ভুটান এমনকি আমাদের পাশের দেশ ভারতেও টুরিজ্যমে আগ্রহী করে তোলার জন্য কতো ধরনের সরকারি-বেসরকারি প্রোজেক্ট হয়। কতো অর্থ লগ্নি হয় এই কাজগুলোর পেছনে। এর ফলে যেখানে প্রচুর টুরিস্টদের আগমন হয়। দেশের অর্থনীতিতে যা দারুণভাবে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। তেমনি একটি কাজ করতে চেয়েছে ব্র্যাক।
প্রতিষ্ঠানটির এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর আসিফ সালেহ’র মস্তিষ্কপ্রসূত এই আইডিয়াটির নামই হলো ‘অতিথি’। বেশ আগে থেকেই এই কার্যক্রম শুরু হয়েছে। শুরুতেই তারা এমন একটি জেলাকে বেছে নিয়েছে যেখানে ভ্রমণের কথা কেউ চিন্তাও করে না। সেটি হলো ‘রাজশাহী’। এই বিভাগটি যে শুধু আমের জন্য বিখ্যাত নয়, এখানেও যে ভ্রমণের অসাধারণ উপকরণ রয়েছে, এটাও যে ইতিহাস-ঐতিহ্যের একটি খনি, হাজার বছরের বাংলা সংস্কৃতির খনি তা জানাতে চেয়েছি আমরা।
মাসিদ রণ: এই প্রোজেক্টে যুক্ত হওয়ার প্রধাণ কারণ কী?
মৌটুসী বিশ্বাস: ওই যে বললাম, এই প্রোজেক্টটি দেশের মানুষ, দেশের অর্থনীতি তথা পিছিয়ে পড়া কমিউনিটির অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য কাজ করছে। ফলে আমার মনে হয়েছে, যে কাজটি আমি প্রফেশনালি করছি সেটা আমার দেশের জন্য দারুণ সহায়ক হবে। তাই পুরো জার্নিতে আমার বার বার মনে হয়েছে আমি দেশের জন্য কিছু একটা করছি। তাই ওমন প্রত্যন্ত অঞ্চলে টানা কাজ করতে গিয়ে ক্লান্তি ভর করলেও পরক্ষণেই দেশের কথা ভাবতেই আমার মধ্যে শক্তি সঞ্চার হয়েছে। আমি মনে করেছি, কাজটি ভালো করে করতে পারলে কতো মানুষ রাজশাহীতে ভ্রমণের ব্যাপারে আগ্রহী হয়ে উঠবেন।
মাসিদ রণ: কবে কিভাবে যুক্ত হলেন?
মৌটুসী বিশ্বাস: এই প্রোজেক্টের সঙ্গে যুক্ত হয়েছি প্রায় এক বছর আগে। ব্র্যাক থেকেই আমাকে প্রস্তাবটি দেওয়া হয়। আমি এর আগেও স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেলের জন্য ভ্রমণবিষয়ক শো হোস্ট করেছি লম্বা সময় ধরে। সেই শোটি জনপ্রিয়তা পেয়েছিলো। তাই আমার অভিজ্ঞতার ব্যাপারে ধারণা ছিলো ব্র্যাকের। তারা যখন আমাকে এতো লম্বা সময়ের জন্য কাজটির প্রস্তাব দেয়, আমি একটু ভেবে চিন্তে রাজী হই। কারণ আপনারা জানেন, আমি আগের মতো টিভিতে নিয়মিত নাটক করি না। খুব বেছে বছরে একটা বা দুইটা কাজ করি। কারণ মানহীন কাজে সময় নষ্ট করার মতো সময় আমার হাতে নেই।
তাই এই প্রোজেক্টে এতো লম্বা সময় দেবো কি না সেটি ভাবতে হয়েছে। কারণ আমি এখানে শুধু একজন মডেল হিসেবে কাজ করিনি। আমি ব্র্যাকের টিমের একজন সদস্য হিসেবে দিনের পর দিন কাজ করেছি। স্থানীয় লোকজনের কাছ থেকে ফিল্ড ওয়ার্ক-এর মাধ্যমে জায়গাগুলো সম্পর্কে জেনেছি, বইপত্র থেকেও জেনেছি। যার ফলাফল দর্শক এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখতে পাচ্ছেন।
মাসিদ রণ: কেমন অভিজ্ঞতা হলো?
মৌটুসী বিশ্বাস: মানুষ একটি কাজ শুরু করার সময় তো এক ধরনের প্রত্যাশা নিয়েই শুরু করে। কিন্তু কাজটি শেষ করে মনে হয়েছে, আমি প্রত্যাশার চেয়ে অনেক বেশি পেয়েছি। ব্র্যাকের সঙ্গে আমার কাজের অভিজ্ঞতা খুবই ভালো। তারা একইসঙ্গে ভীষণ প্রফেশনাল এবং আন্তরিক। নারীদের কতোটা সম্মান ও কমফোর্ট দিয়ে কাজ করাতে হয় সেটি ব্র্যাকের কাছ থেকে আমাদের দেশের অনেকের শেখার আছে। এমন কর্মপরিবেশ না পেলে আমি কাজটা শেষ করতে পারতাম কি না সন্দেহ আছে। কারণ আমি অভিনয় করতে গিয়েও কর্মপরিবেশ ভালো লাগেনি বলে সেই টিমের সঙ্গে আর কাজ করিনি এমন ঘটনা বহুবার ঘটেছে।
অনেক লম্বা সময় দিতে হয়েছে কাজটির জন্য। কিন্তু আমার কোন অসুবিধা হয়নি। তবে সংসার আর গ্রামের বাড়ির দায়িত্ব ব্যালেন্স করতে এক ধরনের বেগ তো পেতেই হয়েছে। তবে আমি খুবই খুশি যে প্রস্তাবটি গ্রহণ করেছিলাম। কারণ এই জার্নিটাকে আমি আনন্দময় করে নিয়েছিলাম। আমার মনে হয়েছে কাজটি না করলে একটি একটি বড় অংশের এতো সমৃদ্ধ ইতিহাস সম্পর্কে জানতেই পারতাম না।
মাসিদ রণ: এই কাজটি সমাজের জন্য কতোটা গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন?
মৌটুসী বিশ্বাস: ‘অতিথি’ প্রোজেক্টটিকে বলা হচ্ছে কমিউনিটি বেইজড সাসটেইবল টুরিজ্যম। অর্থাৎ সমাজের বিভিন্ন কমিউনিটিকে এখানে তুলে ধরা হবে। যার মাধ্যমে ভ্রমণপিপাসুরা তাদের ব্যাপারে উৎসাহী হবেন। এতে করে ওই কমিউনিটির জীবনযাত্রার মানে এক ধরনের ইতিবাচক প্রভাব পড়বে যা সাময়িক সময়ের জন্য নয়। বছরের পর বছর এর সুফল তারা ভোগ করবেন। ফলে সমাজের জন্য এই কাজটি কতোটা গুরুত্বপূর্ণ বুঝতেই পারছেন। রাজশাহীর বিভিন্ন কমিউনিটি নিয়ে আমরা কাজ করেছি। একটি উদাহরণ দিই, আমরা সাওতাল কমিউনিটিতে গিয়েছি। বিস্তারিতভাবে তাদের কালচার সম্পর্কে জেনেছি। অনেকেই তাদের সম্পর্কে জানতে চান কিন্তু সুযোগ-সুবিধার অভাবে তাদের কাছ পর্যন্ত পৌঁছতে পারেন না। আমার সেইসব মানুষের ব্রিজ হিসেবে কাজ করেছি। বিভিন্ন কমিউনিটির যতো ধরনের উৎকর্ষতা আছে তা তুলে ধরেছি।
এছাড়া আমরা রাজশাহীর বরেন্দ্র জাদুঘর, পুঠিয়া রাজবাড়ি, পদ্মাসহ আরও অনেক কিছু নিয়ে কাজ করেছি। এসব মোটামুটি পরিচিত দেশের মানুষের কাছে। কিন্তু আমরা সবগুলোকেই নতুন আঙ্গিকে তুলে ধরতে চেয়েছি যাতে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে আকর্ষণ তৈরি হয়। মোটকথা যারা রাজশাহী ভ্রমণ করবেন তাদের সঙ্গে এই বিভাগ এবং কমিউনিটিগুলোর যেন একটা বন্ধন তৈরি হয় সেই কাজটি করার চেষ্টা করেছি।
মাসিদ রণ: শুরুতে কি ভেবেছিলেন আপনাকেও ক্যামেরার সামনে আসতে হবে?
মৌটুসী বিশ্বাস: শুরুতে তো আমি একজন গবেষনাকর্মী হিসেবেই কাজ করছিলাম নিষ্ঠার সঙ্গে। ভেবেছিলাম, আমি ক্যামেরার পেছনেই কাজ করবো। অডিও ভিজ্যুয়ালে হয়তো অন্য মডেল আনা হবে। কিন্তু একটা পর্যায়ে ব্র্যাক থেকে আমাকে বলা হলো ক্যামেরার সামনেও থাকতে হবে। তখন বরং একটু জটিল লাগছিলো বিষয়টি আমার কাছে। কারণ একইসঙ্গে ক্যামেরার সামনে ও পেছনে কাজ করাটা ভীষণ চ্যালেঞ্জিং কাজ। কিন্তু পরে কাজটি করেছি কারণ এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজের অংশ হওয়া খুবই আনন্দের।
বার্ধক্যের ভারে ন্যুব্জা আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন বাউলশিল্পী কাঙালিনী সুফিয়া। বয়স ৯০ বছর পেরিয়েছে। শরীরে নানান রোগে বাসা বেঁধেছে। তবুও মঞ্চে উঠে গান গেয়ে মঞ্চ মাতালেন এই প্রবীণ শিল্পী। বয়স হলেও, এখনো নেচে নেচে গান করেন সুফিয়া। তার কণ্ঠের জাদু এখনো যেস অক্ষত আছে।
শুক্রবার (৮ নভেম্বর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে জেলা শিল্পকলা একাডেমির উন্মুক্ত মঞ্চে তরঙ্গ কালচারাল ফেস্ট ও মেলার আয়োজিত সাংস্কৃতিক উৎসবের সমাপনী দিনে তিনি গান পরিবেশন করেন। খ্যাতনামা এ শিল্পীর গানে মুগ্ধ হয়ে দর্শকরা উল্লসিত হয়ে ওঠে। তার সঙ্গে পরে যোগ দেন ‘চ্যানেল আই সেরাকণ্ঠ’ খ্যাত সাব্বির কোরাইশিসহ লালন একাডেমির শিল্পী ও বাউলরা।
অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করা নিয়ে নিজের অনুভূতি ব্যক্ত করে বাউলশিল্পী কাঙালিনী সুফিয়া বলেন, ‘আমার বয়স ৯০ বছর পেরিয়েছে। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন। আমার বয়স হয়েছে। এখন আর আগের মতো গাইতে পারি না, তবুও চেষ্টা করি। এখন মেয়ে আমাকে সহযোগিতা করে।’
অনুষ্ঠানে দর্শক হিসেবে উপস্থিত নারী উদ্যোক্তা সাফিনা আঞ্জুম জনী বলেন, ‘টাকা দিয়ে গুণী শিল্পীর মূল্যায়ন হয় না। এরপরও গানে মুগ্ধ হয়ে সামান্য কিছু টাকা উপহার দিলাম। উনি ৯০ বছরে যে ভাবে গান গাইলেন, দর্শকরা তার কন্ঠের জাদুময়ী গামে মুগ্ধ হয়ে শুনেছে। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে মাদক, সন্ত্রাস দূর করা সম্ভব। এই আয়োজনের মাধ্যমে মেলায় আগত দর্শকরা বিনোদনের খোরাক হিসেবে জনপ্রিয় শিল্পীদের গান উপভোগ করতে পারলো।’
তরঙ্গ সংগঠনের সভাপতি তাসফী পারভেজ রোহান বলেন, ‘কুষ্টিয়াবাসী ভাগ্যবান। কাঙালিনী সুফিয়ার মতো একজন গুণী শিল্পীর গান শুনে মানুষ যেমন আনন্দিত তেমনি আমরা আয়োজক হিসেবেও ধন্য। এ বয়সেও তিনি গান গেয়ে সবাইকে মুগ্ধ করেন। আমরা ভবিষ্যতেও এ ধারা অব্যাহত রাখতে চাই।’
জেলা শিল্পকলা একাডেমির কালচারাল অফিসার সুজন রহমান জানান, ‘হাসি-কান্নার মতো উৎসবের রংও সর্বজনীন। ঠিক যেমন একই রকম রং জগতের তাবৎ যাতনা আর প্রেমের। প্রেম, যাতনা, সম্মিলন নানা ভাব থেকে গানের সৃষ্টি। তরঙ্গ সংগঠন আয়োজিত অনুষ্ঠানে মেলা বাউল গানসহ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন এবার দর্শককে মুগ্ধ করেছে। এই মেলা থেকে উৎসারিত গান যাপিত জীবন উদযাপনের রঙিন অনুষঙ্গ বলেও জানান তিনি।’
বাংলার কৃষ্টি কালচার ও ঐতিহ্য উপস্থাপনের মাধ্যমে কুষ্টিয়ায় ৪ নভেম্বর শুরু হওয়া পাঁচ দিনব্যাপী উৎসব শেষ হয়েছে শুক্রবার। তরঙ্গ সংগঠনের আয়োজন জেলা শিল্পকলা একাডেমির আঙ্গিনায় এ উৎসবে শহরের প্রায় ৩০টি স্টল বসেছে।
দেশীয় পণ্য ও খাদ্য সামগ্রী নিয়ে মেলায় উপস্থিত হয় উদ্যোক্তারা। পাশাপাশি উন্মুক্ত মঞ্চে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের শিল্পীদের সমন্বয়ে রবীন্দ্র সঙ্গীত, নজরুল সঙ্গীত, ফোন, আধুনিক গান, বাউল ও সাধুসঙ্গ, ব্যান্ড শো, নৃত্য, আবৃত্তি ও বাদ্যযন্ত্রের ঝনঝনানি উপস্থাপন করেছে।
বর্তমান সময়ে ছোটপর্দার অন্যতম জনপ্রিয় জুটি ইয়াশ রোহান ও তানজিম সাইয়ারা তটিনী। দুজনে একের পর এক নাটকে দর্শকদের নজর কাড়ছেন। এরইমধ্যে গুঞ্জন উঠেছে, শুধু পর্দায় নয় বাস্তবেও এই জুটির রয়েছে বিশেষ সম্পর্ক। যা নিয়ে কৌতূহলের শেষ নেই ভক্তদের।
ইয়াশ ও তটিনীর সম্পর্কের বিষয়টি নেটিজেনদের নজরে ছিল অনেক আগে থেকেই। ফেসবুকে তাদের দুজনের চলাফেরা মিলে যেত! যদিও বিষয়টি নিয়ে ভাবেন না ইয়াশ-তটিনীর কেউই। গুঞ্জন তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে। তবে বিষয়টি ইতিবাচকভাবেই দেখছেন তাদের অনুরাগীরা।
তটিনী জানিয়েছিলেন, ইয়াশের সঙ্গে নাটকের সূত্রেই এই বন্ধুত্ব! বিভিন্ন সময়েই তারা দুজনে মেতে উঠেন খুনসুটিতে। ফেসবুকে একইরকমের ছবি পোস্ট করেন, সঙ্গে ক্যাপশনও থাকে একই, যা নিয়ে দুইয়ে দুইয়ে চার মেলায় নেটিজেনরা। কিছুদিন আগেই একটি ছবি শেয়ার করেন ইয়াশ রোহান। ছবিতে দেখা যায়, এক করিডোরে মুখোমুখি দাঁড়ানো ইয়াশ ও তটিনী। দুজনের হাতেই ফোন, তবে ইয়াশের নজর ছিল ফোনের দিকেই, আর তটিনীর নজর ছিল ইয়াশের দিকে। ক্যাপশনে ইয়াশ লেখেন, ‘আনসোশ্যাল ফ্রেন্ড টু তানজিম সাইয়ারা-টটস’। একই ছবি নিজের প্রোফাইল থেকেও শেয়ার দেন তটিনী। সেখানে ইয়াশকে জুড়ে দিয়ে তটিনী লেখেন, ‘আনসোশ্যাল ফ্রেন্ড ইয়াশ রোহান’।
এই জুটি এখন কক্সবাজারে মহিদুল মহিমের একটি নাটকের শুটিং করছেন। আসছে ভালোবাসা দিবসেও তাদের দেখা যাবে একাধিক নাটকে।
এবার নিজের সহশিল্পীর প্রতি নিজের মুগ্ধতা প্রকাশ করলেন তটিনী। ইয়াশের সঙ্গে পর্দা শেয়ার করা নিয়ে সহশিল্পীর প্রশংসায় রীতিমতো পঞ্চমুখ তিনি।
তটিনী বলেন, আমরা একসঙ্গে ১৫টির মতো নাটকে কাজ করেছি। দর্শকরা আমাদের ভালোভাবে গ্রহণ করেছেন। আমাদের একসঙ্গে দেখে তারা ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন। সেদিক থেকে আমরা দুজনে আসলেই অনেক সৌভাগ্যবান।
তিনি আরও বলেন, সহশিল্পীর পাশাপাশি ইয়াশ ভাই আমার খুব ভালো বন্ধুও। কিন্তু আমি এটিও কখনো ভুলি না যে, তিনি আমার সিনিয়র। তাকে সবসময় তার প্রাপ্য সম্মানটুকু দিই আমি। তার উৎসাহী ব্যক্তিত্বে কাজের দারুণ অভিজ্ঞতা হয়েছে।
বক্স অফিসে মুক্তির পর দুর্দান্ত ব্যবসা করছে আনিস বাজমির ‘ভুল ভুলাইয়া ৩’। ১ নভেম্বর মুক্তির পর এ পর্যন্ত ভারতে ১৫৮ কোটি রুপি ব্যবসা করেছে ছবিটি। দিওয়ালিতে মুক্তি পাওয়া আরেক তারকাবহুল সিনেমা রোহিত শেঠী পরিচালিত ‘সিংহাম এগেইন’কে পেছনে ফেলে দিয়েছে ছবিটি। এখনো সগৌরবে চলছে প্রেক্ষাগৃহে।
এর মধ্যেই এল নতুন ঘোষণা, ‘ভুল ভুলাইয়া ৪’ ছবির প্রস্তুতি শুরু করে ফেলেছেন আনিস বাজমি। সূত্র বলছে, ইতিমধ্যেই নাকি চিত্রনাট্য তৈরি। ‘ভুল ভুলাইয়া ৩’-এর মতোই এই ছবির চতুর্থ পর্বতেও থাকবে প্রচুর চমক।
শোনা যাচ্ছে, ‘ভুল ভুলাইয়া ৩’ ছবিতে যেমন ‘মঞ্জুলিকা’ রূপে ফিরেছেন বিদ্যা বালান, তেমনি চতুর্থ পর্বেও থাকছেন তিনি। শুধু তা–ই নয়, শোনা যাচ্ছে, ‘ভুল ভুলাইয়া ৪’-এ ‘ভুল ভুলাইয় ‘ প্রথম কিস্তির অক্ষয় কুমার ও ‘ভুল ভুলাইয়া ২’-এর কিয়ারা আদভানিকেও। তবে সর্বশেষ দুই সিজনে নায়কের চরিত্রে থাকা কার্তিক আরিয়ান চতুর্থ কিস্তিতেও থাকবেন কিনা তা নিয়ে এখনো কোন খবরই আসেনি। তবে এখনই এই ছবি নিয়ে মুখ খুলতে নারাজ ছবির টিম।
ঠিক ১৭ বছর আগে মুক্তি পায় ‘ভুল ভুলাইয়া’, যা কিনা সাইকোলজিক্যাল থ্রিলারের ঘরানাকে মেনেই তৈরি করেছিলেন পরিচালক প্রিয়দর্শন। হঠাৎই দুই বছর আগে পরিচালক আনিস বাজমি ‘ভুল ভুলাইয়া’কে করে তুললেন হরর-কমেডি। ‘ভুল ভুলাইয়া ৩’-এর গল্প দুই বোন মঞ্জুলিকা-অঞ্জুলিকা, ভাই দেবেন্দ্রকুমার এবং রাজ সিংহাসন দখলের। মঞ্জুলিকা-অঞ্জুলিকা একাধারে যোদ্ধা ও দুরন্ত নৃত্যশিল্পী।
কিন্তু তবু রাজ সিংহাসন জোটে রাজকুমার দেবেন্দ্রর কপালে। ব্যস, হিংসার আগুন। বদলা। ক্ষমতার লড়াই। আর সঙ্গে পরিচালক টেনে আনেন ভয়ের ছবির পুরোনো ফর্মুলা পুনর্জন্মকে। যেখানে মঞ্জুলিকা-অঞ্জুলিকা হয়ে ওঠেন মন্দিরা (মাধুরী দীক্ষিত) এবং মলিকা (বিদ্যা বালান)।
‘ভুল ভুলাইয়া ২’ ছবিতে কার্তিকের নায়িকা ছিলেন কিয়ারা আদভানি। তবে তৃতীয় কিস্তিতে দেখা গেছে তৃপ্তি দিমরিকে। শোনা যাচ্ছে, পরের কিস্তিতে অভিনয়ের জন্য কিয়ারার সঙ্গে কথাবার্তা অনেকটাই বাকি।