ঢালিউডের প্রখ্যাত চিত্রনায়িকা ও নৃত্যশিল্পী অঞ্জনা রহমান এই বয়সেও নিয়মিত কাজ করে চলেছেন। শোবিজের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে প্রায়ই তিনি হাসিমুখে হাজির হয়ে গ্ল্যামার ছড়ান।
কিন্তু সেই তারকার অবস্থা এখন ভালো না। গুরুতর অসুস্থ হয়ে তিনি এখন হাসপাতালে। অঞ্জনার অসুস্থতার কথা বার্তা২৪.কমকে নিশ্চিত করেছেন তার ছেলে নিশাত রহমান মনি। তিনি এইমাত্র বলেন, ‘আমার আম্মুর অবস্থা বেশ সংকটাপন্ন। আপনারা সবাই তার জন্য দোয়া করবেন।’
বিজ্ঞাপন
মনি আরও বলেন, ‘আম্মু এখন রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালের সিসিইউতে রয়েছেন। বিগত ৬ দিন ধরে তিনি এই হাসপাতালেই আছেন। আমি তো ছোট মানুষ, অনেক কিছুই বুঝি না। আমার বড় দুলাভাই উনার চিকিৎসার ব্যাপারে সব ধরনের সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। আমি তাকে সাহায্য করছি।’
কি হয়েছিলো জানতে চাইলে মনি বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘আম্মুর প্রায় ১৫ দিন আগে থেকে জ্বর শুরু হয়। কমছিলো, আবার বাড়ছিলো। এক পর্যায়ে তিনি ভীষণ অসুস্থ হয়ে পড়েন। এরপরই আমরা তাকে হাসপাতালে ভর্তি করি।’
বিজ্ঞাপন
এতোদিন ধরে অঞ্জনার মতো প্রখ্যাত শিল্পী অসুস্থ, কিন্তু আপনারা কাউকে কিছু জানাননি কেন? জানতে চালে মনি বলেন, ‘আমার আম্মুই চাননি তার অসুস্থতার কথা কাউকে কিছু বলি। উনি ভেবেছিলেন, দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবেন। অযথা নিজের অসুস্থতার কথা জানিয়ে কাউকে দুশ্চিন্তায় ফেলতে চাননি। কিন্তু এতোদিন ধরে তো উনার মতো শিল্পীর অসুস্থতার কথা লুকিয়ে রাখা যায় না। তাই এখন সবাই আস্তে আস্তে জানতে শুরু করেছে।’
মনি আরও বলেন, ‘চিকিৎসব পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে জানিয়েছেন যে, আম্মুর রক্তে ইনফেকশন ধরা পড়েছে। তাকে আরও অনেকটা দিন হাসপাতালেই থাকতে হবে। আরও অনেক ধরনের পরীক্ষা করতে হবে। তারপর বোঝা যাবে আদতে কি হয়েছে। আমি আবারও বলব সবাই আমার আম্মুর জন্য মন খুলে দোয়া করবেন। তিনি এই দেশ ও দেশের চলচ্চিত্রশিল্পকে মনপ্রাণ উজাড় করে ভালোবাসা দিয়েছেন। আমার বিশ্বাস সবার দোয়ায় তিনি আবারও চলচ্চিত্র অঙ্গনে হাসিমুখে ফিরবেন।’
শোবিজ ইন্ডাস্ট্রিতে নৃত্য কোরিওগ্রাফারের কথা বলতে গেলে সবার আগে যে নামটি চলে আসে তিনি ইভান শাহরিয়ার সোহাগ। টানা দেড় দশক শোবিজের শীর্ষ কোরিওগ্রাফার হিসেবে কাজ করে যাচ্ছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত এই শিল্পী। আজ (১ জানুয়ারি) তার জন্মদিন। তার এই বিশেষ দিনটি স্পেশ্যাল করে দিলেন দেশের জনপ্রিয় তারকারা। লিখেছেন মাসিদ রণ
‘সে একাধারে আমার ভাই, বন্ধু ও সহকর্মী’
পূর্ণিমা চিত্রনায়িকা ইভান শাহরিয়ার সোহাগ আমার খুব প্রিয় এবং কাছের মানুষ। সে একাধারে আমার ভাই, বন্ধু ও সহকর্মী। তার সঙ্গে শেষ ১৫ বছরে এতো কাজ করেছি, এতো সময় কাটিয়েছি যে সেটা বলে শেষ করা যাবে না। আমার স্টেজ পারফরমেন্সের সিংহভাগই তার সঙ্গে করা। মেধাবী শিল্পী না হলে তো আর এতো বছর শীর্ষ অবস্থানে থাকতে পারত না। সবচেয়ে বড় কথা, সে একজন ভালো মানুষ। এ জন্যই বন্ধুত্ব হতে সময় লাগেনি। আমি যতোই বন্ধু হই না কেন, শিল্পী হিসেবে আমার প্রাপ্য সম্মানটুকু দিতে সে কখনোই ভুল করে না। এটাই হলো তার পেশাদারিত্ব। জন্মদিনে সোহাগের জন্য অনেক দোয়া। সে যেন আজীবন এভাবেই হেসে-খেলে কাটিয়ে দিতে পারে সেই কামনা থাকল।
‘আমাদের বোঝাপড়া অনেক চমৎকার’ মেহজাবীন চৌধুরী অভিনেত্রী ইভান শাহরিয়ার সোহাগকে নিয়ে যতোই বলি কম বলা হবে। আমার নৃত্যশিল্পী পরিচয়ের অনেকটাই তার হাতে তৈরী। আমরা একসঙ্গে কতো কাজ করেছি সে হিসেব করাটা কষ্টসাধ্য। শুধু এটুকু বলতে পারি, আমাদের বোঝাপড়া অনেক চমৎকার। একে অপরকে মন থেকে সম্মান করি, ভালোবাসি। নিশ্চয়ই আমরা আরও অনেক পথ একসঙ্গে পাড়ি দিতে চাই। আর এ ধরনের প্রত্যাশা তখনই পূর্ণ হয় যখন দুটি মানুষের মনের মিল থাকে। সোহাগ ভাইয়ার কাছ থেকে আমি যেমন অনেক কিছু শিখেছি, তেমনি তিনিও আমার যে কোন পরামর্শ মন দিয়ে শুনে তারপর একটি কাজ সম্পন্ন করেন। খুব ভালো মনের একজন মানুষ। আমি তার জন্মদিনে অনেক শুভকামনা জানাই। সবাই তার জন্য দোয়া করবেন, যেন সুস্থ থেকে অনেক ভালো ভালো কাজ আমাদের উপহার দিতে পারেন।
‘ভীষণ ক্রিয়েটিভ মানুুষ’
বিদ্যা সিনহা মিম নৃত্যশিল্পী ও অভিনেত্রী সোহাগ ভাইয়া আমার খুব পছন্দের একজন মানুষ। সবচেয়ে বড় কথা তিনি ভীষণ ক্রিয়েটিভ একজন মানুষ। তার মধ্যে পরোপকারী গুণটি রয়েছে। দেখা যাচ্ছে একটি কাজে সে কোনভাবেই যুক্ত নয়, কিন্তু নিজ থেকে সাহায্য করতে চলে এসেছেন। এই গুণ সবার মধ্যে থাকে না। এবং জীবনের খুব ভয়ঙ্কর মুহূর্তেও আমি তাকে দেখেছি খুব ঠাণ্ডা মাথায় গুছিয়ে চলতে। আমার হয়ত প্রতিদিন তার সাথে কথা হয় না, কিন্তু আমি মনে করি সোহাগ ভাইয়া আছেন, আমার কোন সমস্যা হলে সমাধান হয়ে যাবে। আমি তার কাছে সমাধান চাই আর না চাই, এটা আমার মাথার মধ্যে থাকে। এটা হয়ত তাকে প্রকাশ করিনি কখনো, কিন্তু আমি এভাবেই ফিল করি তাকে। তার জন্মদিনে আমি চাই সে খুব সুসব সুন্দরভাবে আজীবন কাজ করে যাক।
‘সে যেন সুস্থ, নৃত্যচর্চা ও শুদ্ধ জীবনযাপনের মধ্যে থাকতে পারে’
মুনমুন আহমেদ নৃত্যশিল্পী ও নৃত্যশিক্ষক সোহাগকে অনেক ছোটবেলা থেকে চিনি। নাচের প্রতি তার ভালোবাসা ছিল অদম্য। তাইতো অতো ছোটবেলায় আমার কাছে নাচের কর্মশালা করতে বরিশাল থেকে ঢাকায় আসত। সে একজন মেধাবী নৃত্যশিল্পী। জন্মদিনে সোহাগকে অনেক শুভেচ্ছা ও শুভকামনা থাকলো। দোয়া করি, সে যেন সুস্থ নৃত্যচর্চা ও শুদ্ধ জীবনযাপনের মধ্যে থাকতে পারে।
‘শিল্পীদের অনেক সম্মান করে’
বিজরী বরকতউল্লাহ নৃত্যশিল্পী ও অভিনেত্রী ইভান শাহরিয়ার সোহাগ আমাদের দেশের একজন প্রতিথযশা ও গুণী একজন নৃত্যশিল্পী-নৃত্য কোরিওগ্রাফার। তার কোরিওগ্রাফিতে দীর্ঘদিন ধরে অনেক নাচ করেছি। সে তার মেধা ও যোগ্যতা দিয়ে এগিয়ে গেছে এবং অনেক সুনাম অর্জন করেছে। তার আরেকটি গুণ, সে শিল্পীদের অনেক সম্মান করে। সিনিয়রদের অনেক বেশি সম্মান করে। এটা সবাই পারে না বা করে না। কাজের ব্যাপারেও সোহাগ খুবই সিনসিয়ার।
‘সোহাগ আজ এতোদূর এসেছে দেখে গর্বে বুকটা ভরে যায়’ মাহনূর মাহবুবা চাঁদনী নৃত্যশিল্পী ও অভিনেত্রী সোহাগের সঙ্গে ১৫ বছরের বেশি সময় ধরে কাজ করছি। প্রথম পরিচয় ঢাকার একটি প্রোগ্রামে। সেখানে আমার নাচ দেখেই আমাকে তার দলে কাজের প্রস্তাব দেয়। সেই থেকে এখনো আমরা কাজ করে যাচ্ছি। অনেকেই হয়ত জানেন না, সোহাগ নৃত্যশিল্পীর পাশাপাশি শুরু থেকেই একজন কোরিওগ্রাফার। তার কোরিওগ্রাফিতে আমি প্রথম নাচি ২০০৮ সালে ‘ও সুজন’ গানে। ওই নাচটিকে এখনো কেউ টেক্কা দিতে পারেনি। এটিএন বাংলার ঈদের স্পেশ্যাল প্রোগ্রামে সেই নাচ দেখে আমাদের প্রিয় চিত্রনায়ক রিয়াজ বলেছিলেন, তার স্ত্রী তিনাকেও যেন সোহাগ এমন একটি নাচ শিখিয়ে দেয়। একটু একটু করে মেধা, শ্রম আর মিষ্টি ব্যবহার দিয়ে সোহাগ আজ এতোদূর এসেছে। দেখলে গর্বে বুকটা ভরে যায়। সে টানা এক যুগের বেশি সময় ধরে নম্বর ওয়ান কোরিওগ্রাফার হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে।
আনিকা কবির শখ নৃত্যশিল্পী ও অভিনেত্রী দীর্ঘদিনের সম্পর্ক আমাদের। তা থেকে দেখেছি, সোহাগ ভাইয়া খুবই বিনয়ী স্বভাবের একজন মানুষ। সব সময় মানুষের বিপদে পাশে থাকেন। যতোদিন বেঁচে থাকি যেন আমাদের মধ্যে ভালো সম্পর্ক থাকে, একসঙ্গে কাজ করতে পারি সোহাগ ভাইয়ার জন্মদিনে এটাই প্রত্যাশা।
‘সন্তানের মতো আদর যত্ন পেয়েছি’
সাবিলা নূর মডেল ও অভিনেত্রী আমি অভিনয়ে এসেছি অনেক পরে। তবে ছোটবেলা থেকে নাচ শিখতাম। ইভান শাহরিয়ার সোহাগ স্যারের কাছেই আমি নাচ শিখেছি। তাই পরিচয়ের প্রথম দিন থেকেই আমি তার কাছে সন্তানের মতো আদর যত্ন পেয়েছি। সোহাগ স্যার তখন বরিশালে থাকলেও তার নাচের সুনাম ছড়িয়ে পড়েছিল সারা দেশে। তাই আমার আম্মু তাকে বরিশাল থেকে ঢাকায় নিয়ে আসতেন আমাকে নাচ শেখানোর জন্য। তার নাচের মেধার কথা শিষ্য হিসেবে আমি আর কি বলব? শুধু এটুকু বলতে পারি, তিনি অসম্ভব ভালো মনের একজন মানুষ। আমি তার স্নেহ ও শিক্ষা পেয়ে ধন্য।
‘বিপদে আপদে অনেক শিল্পীর পাশে দাঁড়াতে দেখেছি’ প্রার্থণা ফারদিন দীঘি চিত্রনায়িকা বিপদে আপদে অনেক শিল্পীর পাশে দাঁড়াতে দেখেছি সোহাগ ভাইয়াকে। তার সুন্দর ব্যবহার ও গুণের জন্য আজকের পর্যায়ে পৌঁছেছেন। তাই তাকে ভালো না বেসে পারা যায় না। তিনি নিজের জন্মদিন যতোটা না বড় করে উদযাপন করেন, তার চেয়ে তার প্রিয় শিল্পীদের জন্মদিন আরও অনেক সুন্দর করে আয়োজন করেন। এটা খুবই অসাধারণ একটা গুণ। এটা সবার থাকে না। আজকে বছরের প্রথম দিন, একইসঙ্গে সোহাগ ভাইয়ার জন্মদিন। আমি দোয়া করি, সারা জীবন যেন তিনি সুস্থ’-সুন্দর থেকে এভাবেই কাজ করে যেতে পারেন।
প্রতি বছরের মতো এ বছরও জীবনের ভ্রমণ শেষ করে চিরনিদ্রায় শায়িত হয়েছেন বিনোদন অঙ্গনের বেশকিছু গুণীজন। কেউ অসুস্থ হয়ে পাড়ি দিয়েছেন না ফেরার দেশে। আবার কেউ বেছে নিয়েছেন আত্মহত্যার মত কঠিন পথ।
জাহিদুল হক
১৫ জানুয়ারি মারা যান ষাটের দশকের কবি, গল্পকার, গীতিকার জাহিদুল হক। তার বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর। সঙ্গীত শিল্পী সুবীর নন্দীর কণ্ঠে তার লেখা ‘আমার এ দুটি চোখ পাথর তো নয়’ গানটি দেশজুড়ে তুমুল জনপ্রিয়তা পায়।
আহমেদ রুবেল
গত ৭ ফেব্রুয়ারি না ফেরার দেশে পাড়ি জমান অভিনেতা আহমেদ রুবেল। ওইদিন সন্ধ্যায় বসুন্ধরা সিটির বেজমেন্টে গাড়ি রেখে নিজের শেষ সিনেমা ‘পেয়ারার সুবাস’-এর প্রিমিয়ার অনুষ্ঠানে এসেছিলেন তিনি। গাড়ি থেকে নামার পর ফ্লোরে পড়ে যান এই অভিনেতা। এরপর তাকে স্কয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
সাদি মহম্মদ
প্রখ্যাত রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী সাদি মহম্মদ ১৩ মার্চ মারা যান। অজানা এক অভিমানে আত্মহত্যা করেন এই গুণী সংগীতশিল্পী।
খালিদ
‘হয়নি যাবারও বেলা’, ‘সরলতার প্রতিমা’, ‘আবার দেখা হবে’র মতো অসংখ্য জনপ্রিয় গানের শিল্পী খালিদ মারা যান। ১৮ মার্চ রাজধানীর পান্থপথের কমফোর্ট হাসপাতালে তিনি মারা যান। তার বয়স হয়েছিল ৫৬ বছর।
জিএম ফুরুখ
১৮ মার্চ লন্ডনে বেপরোয়া গাড়ির ধাক্কায় প্রাণ হারান লন্ডন প্রবাসী বাংলাদেশি নাট্য নির্মাতা জিএম ফুরুখ। মৃত্যু কালে তার বয়স হয়েছিল ৪৫ বছর।
আবু তাওহীদ হিরণ
১৫ এপ্রিল ঢাকার মগবাজারের ফ্ল্যাটে মৃত অবস্থায় ‘আদম’ সিনেমার নির্মাতা আবু তাওহীদ হিরণের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
অলিউল হক রুমি
ক্যানসারে আক্রন্ত হয়ে ২২ এপ্রিল অভিনেতা অলিউল হল রুমি মারা যান। ক্যানসার জয় করে আগের মতো অভিনয়ে ফিরতে চেয়েছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ফেরা হয়নি তার।
এম এ আউয়াল
৭ মে রাজধানীর মগবাজার দিলু রোডের একটি বাসা থেকে ‘রাজপথের বাদশা’ ও ‘কাছের শত্রু’ সিনেমার পরিচালক এম এ আউয়ালের (৬০) মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পুলিশ জানায়, চলচ্চিত্র পরিচালক দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন। ধারণা করা হচ্ছে, ঘুমের মধ্যেই অসুস্থতার কারণে তার মৃত্যু হয়েছে।
মাসুদুল মাহমুদ রূহান
১১ মে তরুণ প্রযোজক মাসুদুল মাহমুদ রূহানের মরাদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানায়, তিনি আত্মহত্যা করেছেন।
শাফিন আহমেদ
২৫ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রের একটি হাসপাতালে মারা যান জনপ্রিয় ব্যান্ড তারকা শাফিন আহমেদ। যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়ায় চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। তার বয়স হয়েছিল ৬৩ বছর।
হাসান আবিদুর রেজা জুয়েল
৩০ জুলাই সকালে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে মারা যান সংগীতশিল্পী, নির্মাতা ও সঞ্চালক হাসান আবিদুর রেজা জুয়েল। ১১ বছর ধরে ক্যানসারের সঙ্গে লড়াই করছিলেন তিনি।
আব্দুল ওয়াদুদ রঙ্গিলা
উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিসে ভোগার পর ১২ মার্চ মারা যান খায়রুন সুন্দরীসহ বেশ কিছু ব্যবসাসফল ছবির অভিনেতা আব্দুল ওয়াদুদ রঙ্গিলা। তার বয়স হয়েছিল ৫৩ বছর।
শিল্পী চক্রবর্তী
রক্তক্ষরণ জনিত কারণে ৭ মার্চ ঢালিউডের অন্যতম সফল নির্মাতা শিল্পী চক্রবর্তী মারা গেছেন। মৃত্যুকালে নির্মাতার বয়স ছিলো ৭১ বছর।
মো. শাহাদাৎ হোসেন বাদশা
১৫ জুন চলচ্চিত্র প্রযোজক-পরিবেশক সমিতির সাবেক সভাপতি হাজি মো. শাহাদাৎ হোসেন ওরফে বাদশা মারা যান। রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। তিনি মনোয়ার হোসেন ডিপজলের ভাই।
মনি কিশোর
চলতি বছর অক্টোবরে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান ৯০ দশকের জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী মনি কিশোর। ১৯ অক্টোবর রাজধানীর রামপুরার বাসা থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পুলিশ জানায়, হৃদ যন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে তার মৃত্যু হয়।
মাসুদ আলী খান
বরণ্য অভিনেতা মাসুদ আলী খান মারা যান চলতি বছরের ৩১ অক্টোবর। মৃত্যুর আগে দীর্ঘদিন অসুস্থ ছিলেন তিনি।
ওস্তাদ মিহির লালা সাহা
১৭ আগস্ট নিজ বাসায় মারা যান স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের কণ্ঠসৈনিক ওস্তাদ মিহির লালা সাহা। তার বয়স হয়েছিল ৮৪ বছর।
আলাউদ্দিন লাল
গত ২৫ সেপ্টেম্বর মারা যান অভিনেতা আলাউদ্দিন লাল। ২০০৮ সাল থেকে টিভি নাটকে অভিনয় করেন আলাউদ্দীন লাল। প্রায় ৩০০ নাটকে অভিনয় করেছেন এই প্রবীণ অভিনেতা।
সুজেয় শ্যাম
স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের অন্যতম সংগীতযোদ্ধা, সুরকার ও সংগীত পরিচালক সুজেয় শ্যাম মৃত্যুবরণ করেন ১৭ অক্টোবর। সংগীতে অবদানের জন্য তিনি ২০১৮ সালে একুশে পদক এবং এর আগে ২০১৫ সালে পান শিল্পকলা পদক।
আফরোজা হোসেন
দুরারোগ্য ব্যাধি ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে ১০ নভেম্বর মারা যান ছোট পর্দার জনপ্রিয় অভিনেত্রী আফরোজা হোসেন। দীর্ঘদিন ধরে ক্যানসারের সঙ্গে লড়ছিলেন আফরোজা। জরায়ুমুখ ক্যানসার ধীরে ধীরে মেরুদণ্ড থেকে হাড়ে ছড়িয়ে পড়ে তার। অবশেষে সবাইকে কাঁদিয়ে পাড়ি জমালেন না ফেরার দেশে।
আবু জাফর
বছরের শেষের দিকে আমরা হারাই বিখ্যাত গীতিকার, সুরকার ও শিক্ষক আবু জাফরকে। তিনি মারা যান গত ৫ ডিসেম্বর। আবু জাফর রাজশাহী ও ঢাকা বেতার এবং টেলিভিশনের নিয়মিত সংগীতশিল্পী ও গীতিকার ছিলেন।
পাপিয়া সারোয়ার
বছরের একেবারে শেষপ্রান্তে এসে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান একুশে পদকজয়ী রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী পাপিয়া সারোয়ার। দীর্ঘদিন ক্যান্সারে আক্রান্ত ছিলেন তিনি। গত ১২ ডিসেম্বর সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থান মারা যান গুণী এই শিল্পী।
আজাদী হাসনাত ফিরোজ
ঢাকাই সিনেমার সফল নির্মাতা আজাদী হাসনাত ফিরোজ মৃত্যুবরণ করেন গত ১৭ ডিসেম্বর। আজাদী হাসনাত ফিরোজ ছিলেন প্রেমের সিনেমার পরিচালক। শাবনূরকে নিয়েই ১০টি সিনেমা নির্মাণ করেছেন তিনি। তার পরিচালিত উল্লেখযোগ্য সিনেমার মধ্যে রয়েছে ‘কাজের মেয়ে’, ‘সবার উপরে প্রেম’, ‘বউ শাশুড়ির যুদ্ধ’, ‘ফুলের মতো বউ’, ‘রসের বাইদানী’, ‘ঘরের লক্ষ্মী’, ‘স্বামী নিয়ে যুদ্ধ’ ইত্যাদি।
মিনহাজ আহমেদ পিকলু
হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে ২০ ডিসেম্বর রকস্ট্রাটা ও অর্থহীন ব্যান্ডের সাবেক গিটারিস্ট মিনহাজ আহমেদ পিকলু। তিনি ছিলেন কিংবদন্তি গিটারিস্ট নিলয় দাশের শিক্ষার্থীদের অন্যতম।
সি বি জামান
‘উজান ভাটি’ খ্যাতদেশের খ্যাতনামা চলচ্চিত্র নির্মাতা সি বি জামান মারা গেছেন ২০ ডিসেম্বর। চলতি মাসে হার্ট অ্যাটাকের পর থেকেই আইসিইউতে ছিলেন তিনি।
২০১৩ সালের দিকে বাংলাদেশ টেলিভিশনের তালিকাভুক্ত শিল্পী হিসেবে নাটকে অভিনয় শুরু করেছিলেন মানসুরুল হক। তবে অভিনয় পেশাকে অব্যহতি জানিয়ে বর্তমান তিনি উপস্থাপন করছেন দেশের বেশ কয়েকটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলে। তার সঞ্চালনায় উল্লেখযোগ্য অনুষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে- চ্যানেল আইতে প্রচারিত দুর্যোগ কথা, এটিএন বাংলায় প্রচারিত উন্নয়নের বাংলাদেশ, আরটিভিতে প্রচারিত 'দুর্নীতিকে না' প্রভৃতি।
কেন অভিনয় ছেড়ে উপস্থাপনায় এলেন? জানতে চাইলে মানসুরুল হক বলেন, ‘অভিনয় পেশায় প্রাণের টান খুঁজে না পেয়ে অভিনয় থেকে সরে এসেছি!’
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জন্ম নেয়া মানসুর স্থানীয় অন্যদা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে স্কুল জীবন শেষ করে ঢাকার একটি স্বনামধন্য বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিএ সম্পন্ন করেন। এরপর পাবলিক সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে যোগদান করেছিলেন বাংলাদেশ সরকারের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে। ২০০৫ সালে দুর্যোগ মোকাবেলা ও ঝুঁকিহ্রাস ব্যবস্থাপনা বিষয়ে জাতিসংঘে বাংলাদেশের একমাত্র ফেলো হিসেবে দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত হওয়ার গৌরব অর্জন করেন তিনি।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা নিয়ে কাজ করলেও মানসুরের অভিনয়ের প্রতি দুর্বলতা ছিলো ছোটবেলা থেকেই। তাইতো ২০১৩ সালে বাংলাদেশ টেলিভিশনে তালিকাভুক্ত শিল্পী হিসেবে অভিনয় শুরু করেছিলেন। তবে আস্তে আস্তে দেশের মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির কাজটিই তার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে হতে লাগলো। তাই এখন থেকে এই কাজেই তার পুরোটা সময় ও মেধা ব্যয় করতে চান।
অভিনয় থেকে সরে এসে মানসুর বর্তমানে সমাজদের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর উন্নয়নে গণমাধ্যমের প্রয়োজনীয়তা ভিন্নভাবে অনুভব করেছেন। তাইতো দেশের বেশ কয়েকটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলে সঞ্চালনা করছেন প্রাকৃতিক, মানবসৃষ্ট দুর্যোগ প্রতিরোধ ও সচেতনতামুলক অনুষ্ঠানের। কাজ করছেন দুর্নীতি প্রতিরোধ, শিক্ষার প্রসার ও প্রাকৃতিক বিপর্যয় মোকাবেলায় জনগণকে ঐকবদ্ধও করতে।
মানসুর মনে করেন, প্রাকৃতিক বিপর্যয় মোকাবেলায় মানুষ যেদিন ঐক্যবদ্ধ ভাবে নিজেরাই সচেতন হবে। সেদিনই তিনি জীবনের পরিপূর্ণ সার্থকতা খুঁজে পাবেন।
মেহজাবীন চৌধুরীর অভিষেক সিনেমা ‘প্রিয় মালতী’র প্রশংসা শোনা যাচ্ছে মুক্তির পর থেকেই। কিন্তু অনেকেই মনে করছেন, ছবিটি শুধু বোদ্ধা দর্শকই পছন্দ করছে। সাধারণ দর্শক সেভাবে দেখছে না।
কিন্তু আজ এক জরিপে সেই ধারণাও ভুল প্রমাণিত হলো। দেশের সর্ববৃহৎ চেইন মাল্টিপ্লেক্স ‘স্টার সিনেপ্লেক্স’-এ মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমার মধ্যে এই সপ্তাহে কোন ছবিটি বেশি দেখেছেন দর্শক, তার একটি তালিকা করেছে প্রতিষ্ঠানটি। তালিকায় দেশীয় সিনেমার মধ্যে শীর্ষে রয়েছে ‘প্রিয় মালতী’।
এই সপ্তাহের শীর্ষ সাত সিনেমার মধ্যে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে মেহজাবীন চৌধুরী অভিনীত সিনেমা ‘প্রিয় মালতী’। তাতে বোঝাই যায়, ছবিটি সিঙ্গেল স্ক্রিনে অতো মার কাটারি ব্যবসা না করলেও মাল্টিপ্লেক্সে ভালোই সাড়া ফেলেছে।
খবরটি নিজেই সাংবাদিকদের জানিয়ে নিজের উচ্ছ্বাসের কথা প্রকাশ করেছেন। মেহজাবীন বলেন, ‘এই বছরটা আমরা দারুণ একটা খবর দিয়ে শেষ করছি! প্রিয় মালতি টিমের আমরা সবাই সুপাার এক্সাইটেড। কারণ, সবার ভালোবাসা আর সাপোর্ট-এর জন্য আমাদের সিনেমা ভালো করছে। এটা আপনাদের সবার সাপোর্ট ছাড়া সম্ভব হতো না। আমাদের সিনেমাকে এতটা ভালোবাসা আর সাপোর্ট দেওয়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। আশা করি, ভবিষ্যতেও আমরা এভাবেই একসাথে এগিয়ে যাবো।’
এই ছবিতে মেহজাবীন লড়াকু নারী মালতী রানি দাশ চরিত্রে অভিনয় করেছেন। তার অভিনয়ের প্রশংসা করছেন অনেকে। ছবিটি পরিচালনা করেছেন তরুণ নির্মাতা শঙ্খ দাশগুপ্ত। প্রযোজনা করেছে ফ্রেম পার সেকেন্ড।
গত ২০ ডিসেম্বর মুক্তি পাওয়া ছবিটিতে আরও অভিনয় করেছেন নাদের চৌধুরী, আজাদ আবুল কালাম, মোমেনা চৌধুরী, সমু চৌধুরী, আনিসুল হক বরুণ, শাহজাহান সম্রাট, রিজভী রিজু।
স্টার সিনেপ্লেক্সের তালিকায় প্রথম অবস্থানে রয়েছে হলিউডের সিনেমা ‘মুফাসা: দ্য লায়ন কিং’, এরপরই ‘প্রিয় মালতী’। তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে ‘মোয়ানা ২’, চতুর্থ অবস্থানে ‘সোনিক দ্য হেজহগ’, পঞ্চম স্থানে ‘৮৪০’, ষষ্ট অবস্থানে ‘ক্র্যাভেন দ্য হান্টার’ ও সপ্তম স্থানে রয়েছে ‘নকশীকাঁথার জমিন’।