যাচাই না করে তারকাদের নিয়ে কোন মিথ্যা নিউজ করবেন না-বলে মন্তব্য করেছেন ছোট পর্দার জনপ্রিয় অভিনেত্রী তানজিন তিশা। সদ্য অনুষ্ঠিত হওয়া সিজেএফবি ২৩তম পারফর্মেন্স অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানে হাজির হয়ে এমন কথা বলেন তিনি।
এ সময় তিশা বলেন, ‘কিছু সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে আমি বলব, যাচাই বাছাই না করে কোন শিল্পীকে নিয়ে সংবাদ পরিবেশন করা উচিৎ নয়। না জেনে মিথ্যা সংবাদ করবেন না, আমাদেরও পরিবার আছে। এ ধরণের সংবাদের কারণে আমাদের পরিবারকে ভয়াবহ অবস্থার মধ্য দিয়ে যেতে হয়।’
বিজ্ঞাপন
তিনি আরও বলেন, আমার বাবা বেঁচে নেই। কিন্তু তিনি যদি বেঁচে থাকতেন এ ধরনের মিথ্যা গুজব সহ্য করতে পারতেন না।
এসময় তিনি তার বাবার উদ্দেশ্যে তার পুরষ্কার উৎসর্গ করে নতুন বছরে সবার জন্য শুভকামনা জানান।
বিজ্ঞাপন
শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) জাতীয় গণমাধ্যমে কর্মরত বিনোদন সাংবাদিকদের সংগঠন কালচারাল জার্নালিস্টস ফোরাম অব বাংলাদেশের সিজেএফবি ২৩তম পারফর্মেন্স অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। এদিন রাজধানীর ঢাকা শেরাটনের বলরুমে জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজনে দেশের বিনোদন অঙ্গনের তারকাদের হাতে তুলে দেওয়া হয় সম্মাননা।
এ অনুষ্ঠানে সংস্কৃতি উপদেষ্টা নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী, সাংবাদিক-সঞ্চালক শফিক রেহমান,অভিনেত্রী জয়া আহসান, মেহজাবীন চৌধুরী, নির্মাতা আশফাক নিপুণসহ আরও অনেক তারকা উপস্থিত ছিলেন।
বর্তমান প্রজন্মের বলিউড অভিনেত্রীদের মধ্যে অন্যতম জনপ্রিয় কিয়ারা আদভানি। একের পর এক হিট সিনেমা উপহার দিয়ে জায়গা করে নিয়েছেন মুম্বাই শোবিজে। এ বছর কিয়ারার একে একে ৪টি সিনেমা মুক্তি পাবে। তাই ২০২৫, এই বছরটা হতে যাচ্ছে কিয়ারাময়, তা বলাই বাহুল্য। বলিউড থেকে দক্ষিণ, বিগ বাজেটের বহুল প্রতীক্ষিত সিনেমাগুলোতেই নায়িকা হিসেবে দেখা যাবে কিয়ারাকে।
২০২৫ সালের অন্যতম প্রতীক্ষিত একটি চলচ্চিত্র ‘গেম চেঞ্জার’। এটি একটি তেলেগু রাজনৈতিক থ্রিলার সিনেমা, যা পরিচালনা করেছেন এস শঙ্কর এবং ২০২৫ সালের ১০ জানুয়ারি এটি মুক্তি পেতে চলেছে। এতে রাম চরণের বিপরীতে কিয়ারাকে দেখা যাবে। এরই মধ্যে সিনেমার টিজার এবং গানগুলোও ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। কিয়ারার আসন্ন সিনেমাগুলোর মধ্যে রয়েছে কন্নড় অ্যাকশন ফিল্ম ‘টক্সিক’। যেখানে তার সঙ্গে অভিনয় করছেন কেজিএফ খ্যাত অভিনেতা যশ। জাতীয় পুরস্কার বিজয়ী চলচ্চিত্র নির্মাতা গীতু মোহানদাস এই সিনেমাটি পরিচালনা করছেন।
এই চলচ্চিত্রটি গোয়ার মাদক চক্রের ওপর ভিত্তি করে নির্মিত। এতে কিয়ারাকে প্রথমবারের মতো যশের সঙ্গে জুটি বাঁধতে দেখা যাবে, যা অভিনেত্রীর ক্যারিয়ারে একটি নতুন মাত্রা যোগ করতে চলেছে। দক্ষিণের দুই বিগ বাজেটের সিনেমা ছাড়াও কিয়ারাকে দেখা যাবে যশরাজ ফিল্মসের স্পাই ইউনিভার্সের সিনেমায়। হৃতিক রোশনের ‘ওয়ার ২’তে নাম লিখিয়েছেন অভিনেত্রী। যশ রাজ ফিল্মসের ‘ওয়ার’ ছিল একটি বড় হিট সিনেমা।
এ সিনেমায় অভিনয় করেছেন হৃত্বিক রোশান ও টাইগার শ্রফ। এটি স্পাই ইউনিভার্সের একটি অংশ ছিল। তারই পরিপ্রেক্ষিতে এবার আবারও নির্মিত হতে যাচ্ছে এর সিক্যুয়েল ‘ওয়ার ২’। এবার হৃতিকের সঙ্গে থাকছেন জুনিয়র এনটিআর। সঙ্গী হবেন কিয়ারা আদভানিও। সিনেমাটি মুক্তি পাবে ২০২৫ সালের ১৪ আগস্ট। এরপর বলিউডের আরেক বিগ বাজেটের ফ্র্যাঞ্চাইজি ফিল্মে দেখা যাবে কিয়ারাকে। রণবীর সিংয়ের বিপরীতে ‘ডন ৩’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করছেন কিয়ারা।
নির্মাতা ফারহান আখতার সিনেমাটিতে কিয়ারার অন্তর্ভূক্তির তথ্য নিশ্চিত করেন। এই চলচ্চিত্রটিতে শাহরুখ খান এবং অমিতাভ বচ্চনের পর ফ্র্যাঞ্চাইজির প্রধান চরিত্রে রণবীর সিং অভিনয় করতে চলেছেন। এটি ২০২৫ সালের সবচেয়ে আলোচিত মুক্তি হতে চলেছে বলে আশা করা হচ্ছে।
চলছে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল)। এবারের আসরকে জমজমাট করতে নানা পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। এসব উদ্যোগের অন্যতম গান। কনসার্ট দিয়ে বিপিএল নিয়ে দেশজুড়ে বার্তা ছড়িয়ে দিতে চেয়েছে বোর্ড। এ ছাড়া প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া বেশ কয়েকটি দল তৈরি করেছে নিজস্ব থিম সং। ‘খেলায় মাতো, সবাই মিলে / এলাকা কাঁপাও, ছক্কা-চারে / বাংলার হৃদয়, উৎসবে নাচে / বিজয় উল্লাস, ঘরে ঘরে / লাল-সবুজের পতাকা উড়ে / বাংলাদেশের আকাশজুড়ে / বিপিএলের ঝড়, দেশে এল দিন বদল / আবার এল বিপিএল’ - বিপিএলের থিম সংয়ে আছে এমন সব কথা। এরই মধ্যে জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজনে উন্মোচিত হয় বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের থিম সং। গানের দুটি লাইন লিখেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। থিম সংটি গেয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী বাংলাদেশি শিল্পী মুজা। সঙ্গে কণ্ঠ মিলিয়েছেন রায়েফ আল হাসান রাফা ও র্যাপার হান্নান হোসাইন। অফিশিয়াল গান প্রকাশের দিন তিনজনই মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন। ‘নয়া দামান’ ও ‘ঝুমকা’ গান দিয়ে আলোচিত শিল্পী মুজা বিপিএলের সঙ্গে যুক্ত হয়ে বলেছেন, ‘‘আমি বিদেশে থাকাকালে এই গানের রেকর্ডিং শুরু করি। এরপর দেশে এসে ভিডিও শুট করি। সবাই আমরা অনেক এক্সাইটেড ছিলাম। এই গানে একটি লাইন আছে, ‘এসো দেশ বদলাই’, যেটা সবাইকে প্রেরণা দেবে।’ এবারের বিপিএলে প্রথমবারের মতো সরাসরি যুক্ত হয়েছেন ঢাকাই ছবির তারকা শাকিব খান। তিনি বিপিএলের দল ঢাকা ক্যাপিটালসের অন্যতম কর্ণধার। শাকিবের দল থেকে একটি গান তৈরি হয়েছে। এফিডিসিতে বড় আয়োজনে সেই গানের ভিডিও চিত্রে মিম, ইমন, সিয়াম যেমন আছেন, তেমনি আছেন দীঘি, মিথিলা, ইরফান সাজ্জাদ, নাবিলা ও সারিকা সাবাহর মতো তরুণ তারকারা। সবচেয়ে বড় চমক শাকিব খানের উপস্থিতি। ঢালিউড এই তারকাকে সচরাচর গানের মডেল হতে দেখা যায় না। গতকাল রোববার সকালে এফডিসিতে গানের ভিডিও চিত্রের শুটিংয়ে অংশ নেন তিনি। গানটি সুর করার পাশাপাশি গেয়েছেন প্রীতম হাসান। ঢাকা ক্যাপিটালস কর্তৃপক্ষের দাবি, গানটি নির্মাণে খরচ হয়েছে কোটি টাকার বেশি।
বিপিএলের আরেক দল রংপুর রাইডার্স নতুন একটি গান তৈরি করলেও পুরোনো গানটিকে নিজেদের সৌভাগ্যের প্রতীক মনে করছে। গানটি গেয়েছে শূন্য ব্যান্ড। শুরু থেকেই গানটি নিয়ে প্রচারণায় আছে তারা। রংপুর রাইডার্সের ব্যবস্থাপক (অপারেশন ও লজিস্টিক) আহসানুর রহমান মল্লিক বলেন, ‘প্রথম গানটিতে রংপুরের চিরায়ত ব্যাপারগুলো উঠে এসেছে। প্রথম আসর থেকেই এটি আমাদের দলের গান, যখন আমরা চ্যাম্পিয়ন হই, তখনো গানটি ছিল। ফলে এটা নিয়ে আমাদের আবেগও জড়িয়ে আছে।’ চিটাগং কিংস নতুন গান বানায়নি। তবে ২০১২ সালের গানটিকে নতুন সংগীতায়োজনে উপস্থাপন করছে এবার। গানটির শিল্পী আগে ছিলেন রাজু, এবারও গানটিতে নতুন করে কণ্ঠ দিয়েছেন তিনি। গানটিতে এবার র্যাপ যুক্ত করা হয়েছে। সংগীতায়োজন করেছেন ডি জে আকস। রাজু বললেন, ‘দেশীয় ক্রিকেটের বড় একটি আসর। এই বিপিএল ঘিরে ক্রিকেটপ্রেমীরা আনন্দে মেতে থাকেন। খুবই খুশি, গানে গানে এই আয়োজনে আমিও আছি। প্রথম যখন বিপিএল শুরু হয়, তখনই আমরা গানটা তৈরি করি। এবারও যখন গানটি তৈরি হলো, তখনো আমি আছি। ভালো লাগার ব্যাপারটা সত্যি অন্য রকম।’ ‘জাগো চিটাগাং কিংস’ গানটির সুর করেছেন সজীব দাশ।
গান ছাড়াও দলটির আরেকটি চমক নিজেদের দলের জন্য আলাদা সঞ্চালক নিয়োগ। ভারতীয়-কানাডীয় অভিনেত্রী ও মডেল ইয়েশা সাগর এই ফ্র্যাঞ্চাইজির হয়ে কাজ করতে এরই মধ্যে ঢাকায় পোঁছেছেন। মাঠ থেকে তিনি জানাচ্ছেন দলটির নানা খবর। সিলেট স্ট্রাইকার্সের মিনহাজ উদ্দিন খান জানালেন, তারা নতুন গান তৈরি করেননি। প্রচারণায় আগের তৈরি করা গানটিই বাজবে। এ গানও বানিয়েছেন ফুয়াদ আল মুক্তাদির। ‘বুচ্ছো নি বা ভাই তোমারা বুচ্ছো নি বা খও/ আমরা ফাটাই মারি ছক্কা আর ধুমছে মারি বল’-এমন কথার গানটিতে কণ্ঠ দিয়েছেন জোহান, তাশফী ও ফুয়াদ।
শোবিজ ইন্ডাস্ট্রিতে নৃত্য কোরিওগ্রাফারের কথা বলতে গেলে সবার আগে যে নামটি চলে আসে তিনি ইভান শাহরিয়ার সোহাগ। টানা দেড় দশক শোবিজের শীর্ষ কোরিওগ্রাফার হিসেবে কাজ করে যাচ্ছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত এই শিল্পী। আজ (১ জানুয়ারি) তার জন্মদিন। তার এই বিশেষ দিনটি স্পেশ্যাল করে দিলেন দেশের জনপ্রিয় তারকারা। লিখেছেন মাসিদ রণ
‘সে একাধারে আমার ভাই, বন্ধু ও সহকর্মী’
পূর্ণিমা চিত্রনায়িকা ইভান শাহরিয়ার সোহাগ আমার খুব প্রিয় এবং কাছের মানুষ। সে একাধারে আমার ভাই, বন্ধু ও সহকর্মী। তার সঙ্গে শেষ ১৫ বছরে এতো কাজ করেছি, এতো সময় কাটিয়েছি যে সেটা বলে শেষ করা যাবে না। আমার স্টেজ পারফরমেন্সের সিংহভাগই তার সঙ্গে করা। মেধাবী শিল্পী না হলে তো আর এতো বছর শীর্ষ অবস্থানে থাকতে পারত না। সবচেয়ে বড় কথা, সে একজন ভালো মানুষ। এ জন্যই বন্ধুত্ব হতে সময় লাগেনি। আমি যতোই বন্ধু হই না কেন, শিল্পী হিসেবে আমার প্রাপ্য সম্মানটুকু দিতে সে কখনোই ভুল করে না। এটাই হলো তার পেশাদারিত্ব। জন্মদিনে সোহাগের জন্য অনেক দোয়া। সে যেন আজীবন এভাবেই হেসে-খেলে কাটিয়ে দিতে পারে সেই কামনা থাকল।
‘আমাদের বোঝাপড়া অনেক চমৎকার’ মেহজাবীন চৌধুরী অভিনেত্রী ইভান শাহরিয়ার সোহাগকে নিয়ে যতোই বলি কম বলা হবে। আমার নৃত্যশিল্পী পরিচয়ের অনেকটাই তার হাতে তৈরী। আমরা একসঙ্গে কতো কাজ করেছি সে হিসেব করাটা কষ্টসাধ্য। শুধু এটুকু বলতে পারি, আমাদের বোঝাপড়া অনেক চমৎকার। একে অপরকে মন থেকে সম্মান করি, ভালোবাসি। নিশ্চয়ই আমরা আরও অনেক পথ একসঙ্গে পাড়ি দিতে চাই। আর এ ধরনের প্রত্যাশা তখনই পূর্ণ হয় যখন দুটি মানুষের মনের মিল থাকে। সোহাগ ভাইয়ার কাছ থেকে আমি যেমন অনেক কিছু শিখেছি, তেমনি তিনিও আমার যে কোন পরামর্শ মন দিয়ে শুনে তারপর একটি কাজ সম্পন্ন করেন। খুব ভালো মনের একজন মানুষ। আমি তার জন্মদিনে অনেক শুভকামনা জানাই। সবাই তার জন্য দোয়া করবেন, যেন সুস্থ থেকে অনেক ভালো ভালো কাজ আমাদের উপহার দিতে পারেন।
‘ভীষণ ক্রিয়েটিভ মানুুষ’
বিদ্যা সিনহা মিম নৃত্যশিল্পী ও অভিনেত্রী সোহাগ ভাইয়া আমার খুব পছন্দের একজন মানুষ। সবচেয়ে বড় কথা তিনি ভীষণ ক্রিয়েটিভ একজন মানুষ। তার মধ্যে পরোপকারী গুণটি রয়েছে। দেখা যাচ্ছে একটি কাজে সে কোনভাবেই যুক্ত নয়, কিন্তু নিজ থেকে সাহায্য করতে চলে এসেছেন। এই গুণ সবার মধ্যে থাকে না। এবং জীবনের খুব ভয়ঙ্কর মুহূর্তেও আমি তাকে দেখেছি খুব ঠাণ্ডা মাথায় গুছিয়ে চলতে। আমার হয়ত প্রতিদিন তার সাথে কথা হয় না, কিন্তু আমি মনে করি সোহাগ ভাইয়া আছেন, আমার কোন সমস্যা হলে সমাধান হয়ে যাবে। আমি তার কাছে সমাধান চাই আর না চাই, এটা আমার মাথার মধ্যে থাকে। এটা হয়ত তাকে প্রকাশ করিনি কখনো, কিন্তু আমি এভাবেই ফিল করি তাকে। তার জন্মদিনে আমি চাই সে খুব সুসব সুন্দরভাবে আজীবন কাজ করে যাক।
‘সে যেন সুস্থ, নৃত্যচর্চা ও শুদ্ধ জীবনযাপনের মধ্যে থাকতে পারে’
মুনমুন আহমেদ নৃত্যশিল্পী ও নৃত্যশিক্ষক সোহাগকে অনেক ছোটবেলা থেকে চিনি। নাচের প্রতি তার ভালোবাসা ছিল অদম্য। তাইতো অতো ছোটবেলায় আমার কাছে নাচের কর্মশালা করতে বরিশাল থেকে ঢাকায় আসত। সে একজন মেধাবী নৃত্যশিল্পী। জন্মদিনে সোহাগকে অনেক শুভেচ্ছা ও শুভকামনা থাকলো। দোয়া করি, সে যেন সুস্থ নৃত্যচর্চা ও শুদ্ধ জীবনযাপনের মধ্যে থাকতে পারে।
‘শিল্পীদের অনেক সম্মান করে’
বিজরী বরকতউল্লাহ নৃত্যশিল্পী ও অভিনেত্রী ইভান শাহরিয়ার সোহাগ আমাদের দেশের একজন প্রতিথযশা ও গুণী একজন নৃত্যশিল্পী-নৃত্য কোরিওগ্রাফার। তার কোরিওগ্রাফিতে দীর্ঘদিন ধরে অনেক নাচ করেছি। সে তার মেধা ও যোগ্যতা দিয়ে এগিয়ে গেছে এবং অনেক সুনাম অর্জন করেছে। তার আরেকটি গুণ, সে শিল্পীদের অনেক সম্মান করে। সিনিয়রদের অনেক বেশি সম্মান করে। এটা সবাই পারে না বা করে না। কাজের ব্যাপারেও সোহাগ খুবই সিনসিয়ার।
‘সোহাগ আজ এতোদূর এসেছে দেখে গর্বে বুকটা ভরে যায়’ মাহনূর মাহবুবা চাঁদনী নৃত্যশিল্পী ও অভিনেত্রী সোহাগের সঙ্গে ১৫ বছরের বেশি সময় ধরে কাজ করছি। প্রথম পরিচয় ঢাকার একটি প্রোগ্রামে। সেখানে আমার নাচ দেখেই আমাকে তার দলে কাজের প্রস্তাব দেয়। সেই থেকে এখনো আমরা কাজ করে যাচ্ছি। অনেকেই হয়ত জানেন না, সোহাগ নৃত্যশিল্পীর পাশাপাশি শুরু থেকেই একজন কোরিওগ্রাফার। তার কোরিওগ্রাফিতে আমি প্রথম নাচি ২০০৮ সালে ‘ও সুজন’ গানে। ওই নাচটিকে এখনো কেউ টেক্কা দিতে পারেনি। এটিএন বাংলার ঈদের স্পেশ্যাল প্রোগ্রামে সেই নাচ দেখে আমাদের প্রিয় চিত্রনায়ক রিয়াজ বলেছিলেন, তার স্ত্রী তিনাকেও যেন সোহাগ এমন একটি নাচ শিখিয়ে দেয়। একটু একটু করে মেধা, শ্রম আর মিষ্টি ব্যবহার দিয়ে সোহাগ আজ এতোদূর এসেছে। দেখলে গর্বে বুকটা ভরে যায়। সে টানা এক যুগের বেশি সময় ধরে নম্বর ওয়ান কোরিওগ্রাফার হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে।
আনিকা কবির শখ নৃত্যশিল্পী ও অভিনেত্রী দীর্ঘদিনের সম্পর্ক আমাদের। তা থেকে দেখেছি, সোহাগ ভাইয়া খুবই বিনয়ী স্বভাবের একজন মানুষ। সব সময় মানুষের বিপদে পাশে থাকেন। যতোদিন বেঁচে থাকি যেন আমাদের মধ্যে ভালো সম্পর্ক থাকে, একসঙ্গে কাজ করতে পারি সোহাগ ভাইয়ার জন্মদিনে এটাই প্রত্যাশা।
‘সন্তানের মতো আদর যত্ন পেয়েছি’
সাবিলা নূর মডেল ও অভিনেত্রী আমি অভিনয়ে এসেছি অনেক পরে। তবে ছোটবেলা থেকে নাচ শিখতাম। ইভান শাহরিয়ার সোহাগ স্যারের কাছেই আমি নাচ শিখেছি। তাই পরিচয়ের প্রথম দিন থেকেই আমি তার কাছে সন্তানের মতো আদর যত্ন পেয়েছি। সোহাগ স্যার তখন বরিশালে থাকলেও তার নাচের সুনাম ছড়িয়ে পড়েছিল সারা দেশে। তাই আমার আম্মু তাকে বরিশাল থেকে ঢাকায় নিয়ে আসতেন আমাকে নাচ শেখানোর জন্য। তার নাচের মেধার কথা শিষ্য হিসেবে আমি আর কি বলব? শুধু এটুকু বলতে পারি, তিনি অসম্ভব ভালো মনের একজন মানুষ। আমি তার স্নেহ ও শিক্ষা পেয়ে ধন্য।
‘বিপদে আপদে অনেক শিল্পীর পাশে দাঁড়াতে দেখেছি’ প্রার্থণা ফারদিন দীঘি চিত্রনায়িকা বিপদে আপদে অনেক শিল্পীর পাশে দাঁড়াতে দেখেছি সোহাগ ভাইয়াকে। তার সুন্দর ব্যবহার ও গুণের জন্য আজকের পর্যায়ে পৌঁছেছেন। তাই তাকে ভালো না বেসে পারা যায় না। তিনি নিজের জন্মদিন যতোটা না বড় করে উদযাপন করেন, তার চেয়ে তার প্রিয় শিল্পীদের জন্মদিন আরও অনেক সুন্দর করে আয়োজন করেন। এটা খুবই অসাধারণ একটা গুণ। এটা সবার থাকে না। আজকে বছরের প্রথম দিন, একইসঙ্গে সোহাগ ভাইয়ার জন্মদিন। আমি দোয়া করি, সারা জীবন যেন তিনি সুস্থ’-সুন্দর থেকে এভাবেই কাজ করে যেতে পারেন।
প্রতি বছরের মতো এ বছরও জীবনের ভ্রমণ শেষ করে চিরনিদ্রায় শায়িত হয়েছেন বিনোদন অঙ্গনের বেশকিছু গুণীজন। কেউ অসুস্থ হয়ে পাড়ি দিয়েছেন না ফেরার দেশে। আবার কেউ বেছে নিয়েছেন আত্মহত্যার মত কঠিন পথ।
জাহিদুল হক
১৫ জানুয়ারি মারা যান ষাটের দশকের কবি, গল্পকার, গীতিকার জাহিদুল হক। তার বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর। সঙ্গীত শিল্পী সুবীর নন্দীর কণ্ঠে তার লেখা ‘আমার এ দুটি চোখ পাথর তো নয়’ গানটি দেশজুড়ে তুমুল জনপ্রিয়তা পায়।
আহমেদ রুবেল
গত ৭ ফেব্রুয়ারি না ফেরার দেশে পাড়ি জমান অভিনেতা আহমেদ রুবেল। ওইদিন সন্ধ্যায় বসুন্ধরা সিটির বেজমেন্টে গাড়ি রেখে নিজের শেষ সিনেমা ‘পেয়ারার সুবাস’-এর প্রিমিয়ার অনুষ্ঠানে এসেছিলেন তিনি। গাড়ি থেকে নামার পর ফ্লোরে পড়ে যান এই অভিনেতা। এরপর তাকে স্কয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
সাদি মহম্মদ
প্রখ্যাত রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী সাদি মহম্মদ ১৩ মার্চ মারা যান। অজানা এক অভিমানে আত্মহত্যা করেন এই গুণী সংগীতশিল্পী।
খালিদ
‘হয়নি যাবারও বেলা’, ‘সরলতার প্রতিমা’, ‘আবার দেখা হবে’র মতো অসংখ্য জনপ্রিয় গানের শিল্পী খালিদ মারা যান। ১৮ মার্চ রাজধানীর পান্থপথের কমফোর্ট হাসপাতালে তিনি মারা যান। তার বয়স হয়েছিল ৫৬ বছর।
জিএম ফুরুখ
১৮ মার্চ লন্ডনে বেপরোয়া গাড়ির ধাক্কায় প্রাণ হারান লন্ডন প্রবাসী বাংলাদেশি নাট্য নির্মাতা জিএম ফুরুখ। মৃত্যু কালে তার বয়স হয়েছিল ৪৫ বছর।
আবু তাওহীদ হিরণ
১৫ এপ্রিল ঢাকার মগবাজারের ফ্ল্যাটে মৃত অবস্থায় ‘আদম’ সিনেমার নির্মাতা আবু তাওহীদ হিরণের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
অলিউল হক রুমি
ক্যানসারে আক্রন্ত হয়ে ২২ এপ্রিল অভিনেতা অলিউল হল রুমি মারা যান। ক্যানসার জয় করে আগের মতো অভিনয়ে ফিরতে চেয়েছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ফেরা হয়নি তার।
এম এ আউয়াল
৭ মে রাজধানীর মগবাজার দিলু রোডের একটি বাসা থেকে ‘রাজপথের বাদশা’ ও ‘কাছের শত্রু’ সিনেমার পরিচালক এম এ আউয়ালের (৬০) মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পুলিশ জানায়, চলচ্চিত্র পরিচালক দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন। ধারণা করা হচ্ছে, ঘুমের মধ্যেই অসুস্থতার কারণে তার মৃত্যু হয়েছে।
মাসুদুল মাহমুদ রূহান
১১ মে তরুণ প্রযোজক মাসুদুল মাহমুদ রূহানের মরাদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানায়, তিনি আত্মহত্যা করেছেন।
শাফিন আহমেদ
২৫ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রের একটি হাসপাতালে মারা যান জনপ্রিয় ব্যান্ড তারকা শাফিন আহমেদ। যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়ায় চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। তার বয়স হয়েছিল ৬৩ বছর।
হাসান আবিদুর রেজা জুয়েল
৩০ জুলাই সকালে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে মারা যান সংগীতশিল্পী, নির্মাতা ও সঞ্চালক হাসান আবিদুর রেজা জুয়েল। ১১ বছর ধরে ক্যানসারের সঙ্গে লড়াই করছিলেন তিনি।
আব্দুল ওয়াদুদ রঙ্গিলা
উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিসে ভোগার পর ১২ মার্চ মারা যান খায়রুন সুন্দরীসহ বেশ কিছু ব্যবসাসফল ছবির অভিনেতা আব্দুল ওয়াদুদ রঙ্গিলা। তার বয়স হয়েছিল ৫৩ বছর।
শিল্পী চক্রবর্তী
রক্তক্ষরণ জনিত কারণে ৭ মার্চ ঢালিউডের অন্যতম সফল নির্মাতা শিল্পী চক্রবর্তী মারা গেছেন। মৃত্যুকালে নির্মাতার বয়স ছিলো ৭১ বছর।
মো. শাহাদাৎ হোসেন বাদশা
১৫ জুন চলচ্চিত্র প্রযোজক-পরিবেশক সমিতির সাবেক সভাপতি হাজি মো. শাহাদাৎ হোসেন ওরফে বাদশা মারা যান। রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। তিনি মনোয়ার হোসেন ডিপজলের ভাই।
মনি কিশোর
চলতি বছর অক্টোবরে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান ৯০ দশকের জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী মনি কিশোর। ১৯ অক্টোবর রাজধানীর রামপুরার বাসা থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পুলিশ জানায়, হৃদ যন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে তার মৃত্যু হয়।
মাসুদ আলী খান
বরণ্য অভিনেতা মাসুদ আলী খান মারা যান চলতি বছরের ৩১ অক্টোবর। মৃত্যুর আগে দীর্ঘদিন অসুস্থ ছিলেন তিনি।
ওস্তাদ মিহির লালা সাহা
১৭ আগস্ট নিজ বাসায় মারা যান স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের কণ্ঠসৈনিক ওস্তাদ মিহির লালা সাহা। তার বয়স হয়েছিল ৮৪ বছর।
আলাউদ্দিন লাল
গত ২৫ সেপ্টেম্বর মারা যান অভিনেতা আলাউদ্দিন লাল। ২০০৮ সাল থেকে টিভি নাটকে অভিনয় করেন আলাউদ্দীন লাল। প্রায় ৩০০ নাটকে অভিনয় করেছেন এই প্রবীণ অভিনেতা।
সুজেয় শ্যাম
স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের অন্যতম সংগীতযোদ্ধা, সুরকার ও সংগীত পরিচালক সুজেয় শ্যাম মৃত্যুবরণ করেন ১৭ অক্টোবর। সংগীতে অবদানের জন্য তিনি ২০১৮ সালে একুশে পদক এবং এর আগে ২০১৫ সালে পান শিল্পকলা পদক।
আফরোজা হোসেন
দুরারোগ্য ব্যাধি ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে ১০ নভেম্বর মারা যান ছোট পর্দার জনপ্রিয় অভিনেত্রী আফরোজা হোসেন। দীর্ঘদিন ধরে ক্যানসারের সঙ্গে লড়ছিলেন আফরোজা। জরায়ুমুখ ক্যানসার ধীরে ধীরে মেরুদণ্ড থেকে হাড়ে ছড়িয়ে পড়ে তার। অবশেষে সবাইকে কাঁদিয়ে পাড়ি জমালেন না ফেরার দেশে।
আবু জাফর
বছরের শেষের দিকে আমরা হারাই বিখ্যাত গীতিকার, সুরকার ও শিক্ষক আবু জাফরকে। তিনি মারা যান গত ৫ ডিসেম্বর। আবু জাফর রাজশাহী ও ঢাকা বেতার এবং টেলিভিশনের নিয়মিত সংগীতশিল্পী ও গীতিকার ছিলেন।
পাপিয়া সারোয়ার
বছরের একেবারে শেষপ্রান্তে এসে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান একুশে পদকজয়ী রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী পাপিয়া সারোয়ার। দীর্ঘদিন ক্যান্সারে আক্রান্ত ছিলেন তিনি। গত ১২ ডিসেম্বর সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থান মারা যান গুণী এই শিল্পী।
আজাদী হাসনাত ফিরোজ
ঢাকাই সিনেমার সফল নির্মাতা আজাদী হাসনাত ফিরোজ মৃত্যুবরণ করেন গত ১৭ ডিসেম্বর। আজাদী হাসনাত ফিরোজ ছিলেন প্রেমের সিনেমার পরিচালক। শাবনূরকে নিয়েই ১০টি সিনেমা নির্মাণ করেছেন তিনি। তার পরিচালিত উল্লেখযোগ্য সিনেমার মধ্যে রয়েছে ‘কাজের মেয়ে’, ‘সবার উপরে প্রেম’, ‘বউ শাশুড়ির যুদ্ধ’, ‘ফুলের মতো বউ’, ‘রসের বাইদানী’, ‘ঘরের লক্ষ্মী’, ‘স্বামী নিয়ে যুদ্ধ’ ইত্যাদি।
মিনহাজ আহমেদ পিকলু
হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে ২০ ডিসেম্বর রকস্ট্রাটা ও অর্থহীন ব্যান্ডের সাবেক গিটারিস্ট মিনহাজ আহমেদ পিকলু। তিনি ছিলেন কিংবদন্তি গিটারিস্ট নিলয় দাশের শিক্ষার্থীদের অন্যতম।
সি বি জামান
‘উজান ভাটি’ খ্যাতদেশের খ্যাতনামা চলচ্চিত্র নির্মাতা সি বি জামান মারা গেছেন ২০ ডিসেম্বর। চলতি মাসে হার্ট অ্যাটাকের পর থেকেই আইসিইউতে ছিলেন তিনি।