২০২৪: চলচ্চিত্রের সফল অভিনেত্রী যারা
রাজনৈতিক অস্থিরতা ও নানা কারণে এ বছর ঢালিউডে মুক্তি পেয়েছে ৫০টি সিনেমা! এরমধ্যে চার-পাঁচটি ছবি ব্যবসাসফল হয়েছে। অন্যান্য বছরের তুলনায় হিটের গ্রাফ নিন্মমুখীই বলা যায়! সব মিলিয়ে ২০২৪ সালটা বাংলা চলচ্চিত্রের জন্যই সার্বিকভাবে খুব ভালো যায়নি।
তবে সবার ছবি হিট না হলেও অভিনয়ের দিক দিয়ে সফল বলা যায় কয়েকজন তারকাকে। এ আয়োজনে দেখে নেওয়া যাক সেই অভিনেত্রীদের তালিকা-
জয়া আহসান
ঢালিউডের জনপ্রিয় অন্য নায়িকারা ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে ব্যস্ত, জয়া আহসান তখন তার ক্যারিয়ারের সেরা অভিনয় ক্যারিশমা দেখিয়ে এ বছরও ছাড়িয়ে গেছেন অন্য সবাইকে। বছরের শুরুতে জয়া আহসান অভিনীত ‘পেয়ারার সুবাস’ মুক্তি পেয়েছিল। মস্কোজয়ী নূরুল আলম আতিক পরিচালিত ছবিতে গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেছেন জয়া আহসান। ব্যবসায়িকভাবে ছবিটি ফায়দা তুলতে না পারলেও জয়া আহসান তার অভিনয় দিয়ে প্রশংসা পান। শুধু তাই নয়, বছর শেষেও মুক্তি পেয়েছে জয়া অভিনীত আকরাম খান পরিচালিত ‘নকশী কাঁথার জমিন’। মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে নির্মিত এই ছবিটিও সমালোচকদের প্রশংসা পাচ্ছে!
শবনম বুবলী
ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে নানা আলোচনা-সামলোচনা থাকলেও এ বছর অভিনয় নিয়ে সফলতা পেয়েছেন নায়িকা শবনম বুবলী। প্রতি বছরের মতো এ বছরেও তার অভিনীত একাধিক ছবি মুক্তি পেয়েছে। তবে ‘দেয়ালের দেশ’ ছবির জন্য হয়েছেন তুমুল প্রশংসিত। অনেকে বলছেন, ‘দেয়ালের দেশ’ বুবলীর ক্যারিয়ারের অন্যতম পারফরমেন্স।
কুসুম সিকদার
সবশেষ ২০১৬ সালে বড়পর্দায় দেখা যায় জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারজয়ী অভিনেত্রী কুসুম সিকদারকে। বাংলার খ্যাতিমান নির্মাতা গৌতম ঘোষ নির্মিত ‘শঙ্খচিল’ সিনেমায় প্রসেনজিতের বিপরীতে দুর্দান্ত অভিনয় করে পেয়েছিলেন বাহবা! প্রায় ৮ বছরের দীর্ঘ বিরতি কাটিয়ে এই অক্টোবরে ‘শরতের জবা’র মাধ্যমে বড়পর্দায় ফেরেন কুসুম। যথারীতি পেয়েছেন প্রশংসা। ‘শরতের জবা’ সিনেমাতে মূল চরিত্রে অভিনয়ের পাশাপাশি এর চিত্রনাট্য, প্রযোজনা ও পরিচালনার দায়িত্বও একাই সামলেছেন কুসুম!
মাসুমা রহমান নাবিলা
অমিতাভ রেজার ‘আয়নাবাজি’ দিয়ে চঞ্চল চৌধুরীর সাথে মাৎ করেছিলেন মাসুমা রহমান নাবিলা। সেই ছবির পর বড়পর্দায় তিনি ছিলেন অনুপস্থিত। অবশেষে শাকিব খানের বিপরীতে বছরের শীর্ষ ব্যবসাসফল ছবি ‘তুফান’ এর মাধ্যমে প্রেক্ষাগৃহে ফেরেন। রায়হান রাফীর পরিচালনায় এই ছবিটিতে শাকিবের বিপরীতে দেখা গেছে দুই অভিনেত্রীকে, একজন কলকাতার মিমি চক্রবর্তী, অন্যজন নাবিলা। গ্ল্যামারগার্ল হিসেবে মিমি চক্রবর্তীর উপস্থিতির পাশাপাশি নাবিলার সাবলীল অভিনয় দর্শকের মন ছুঁয়ে গেছে। কমার্শিয়াল ছবির মোড়কে আলাদাভাবে প্রশংসিত হয়েছেন নাবিলা।
রাফিয়াত রশিদ মিথিলা
‘মনপুরা’খ্যাত পরিচালক গীয়াসউদ্দিন সেলিমের স্বপ্নের প্রজেক্ট ছিলো ‘কাজলরেখা’। ছবিটি মুক্তির পর দর্শকের ভালোই সাড়া পাওয়া গেছে। শিল্পীরা অভিনয় গুণে মুগ্ধ করেছেন সবাইকে। তবে সবাইকে ছাড়িয়ে গেছেন দুই বাংলার জনপ্রিয় অভিনেত্রী রাফিয়াত রশিদ মিথিলা। কঙ্কন দাসী চরিত্রে তার নিখুত অভিনয়ের প্রশংসা করেছেন সুবণা মুস্তাফার মতো প্রখ্যাত অভিনেত্রী থেকে শুরু করে সাধারণ দর্শক। মিথিলাকে প্রথমবারের মতো সিনেমার পর্দায় নেতিবাচক চরিত্রে দেখা গেছে। মিষ্টি মেয়ের ইমেজ ভেঙে তিনি তার চরিত্রের মধ্যকার লোভ, হিংসা ও কুটিলতাগুলোকে দারুণভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন।
মেহজাবীন চৌধুরী
বড়পর্দায় পা রেখেই চমকে দিয়েছেন লাক্স সুপারস্টার মেহজাবীন চৌধুরী। প্রায় ১৪ বছর ধরে ছোটপর্দা মাতিয়ে রাখছেন মেহজাবীন। দর্শকের প্রশ্ন ছিলো, কবে তিনি বড়পর্দায় পা রাখছেন! ২০২৪ এর শেষ প্রান্তে এসে তার মোক্ষম জবাব দিলেন তিনি। ‘প্রিয় মালতী’র হাত ধরে বড়পর্দায় অভিষিক্ত হলেন মেহজাবীন। পেলেন দর্শক ও সমালোচকদের প্রশংসা। শঙ্খ দাশগুপ্তের এই সিনেমায় মেহজাবীনের অভিনয়ে মুগ্ধ হননি এমন দর্শক খুঁজে পাওয়া দুস্কর!
এছাড়াও এই বছরে অভিষিক্ত হয়েছেন তাসনিয়া ফারিণ। ধ্রুব হাসানের ‘ফাতিমা’ দিয়ে ছিলেন আলোচনায়। সোহেল রানার বয়াতির নয়া মানুষ-এর জন্য মৌসুমী হামিদ, লিপস্টিক-এর জন্য পূজা চেরী, শ্যামা কাব্যের জন্য নীলাঞ্জনা নীলা, কাজলরেখার জন্য সাদিয়া আয়মান, ৩৬ ২৪ ৩৬-এর জন্য প্রার্থণা ফারদিন দীঘি ও কারিনা কায়সার এবং মেঘনাকণ্যা’র জন্য কাজী নওশাবা আহমেদ প্রশংসা কুড়িয়েছেন।