‘স্বপ্নের দিনে’ চলে গেলেন পরিচালক বাসু চ্যাটার্জি



ড. মাহফুজ পারভেজ, অ্যাসোসিয়েট এডিটর, বার্তা২৪.কম
পরিচালক বাসু চ্যাটার্জি (১৯০৩৯-২০২০)

পরিচালক বাসু চ্যাটার্জি (১৯০৩৯-২০২০)

  • Font increase
  • Font Decrease

রূপালি পর্দায় তিনি স্বপ্নের ছবি আঁকতেন। প্রেম ও রোমান্টিক আবহে সাধারণ, মধ্যবিত্ত মানুষের আটপৌরে জীবনসংগ্রামের কঠিনতম প্রান্তরে আনতেন স্বপ্নের ছোঁয়া। স্বপ্ন নিয়েই তিনি বেঁচে ছিলেন। তার একটি বিখ্যাত চলচ্চিত্র 'হঠাৎ বৃষ্টি'তে নচিকেতার কণ্ঠে গাওয়া 'একদিন স্বপ্নের দিন, বেদনার বর্ণবিহীন' গানের রেশ ধরে ‘স্বপ্নের দিনে’ চিরতরে চলে গেলেন পরিচালক বাসু চ্যাটার্জি (জন্ম: ১০ জানুয়ারি ১৯৩০, মৃত্যু: ৪ জুন ২০২০)।

করোনার সামাজিক দূরত্বের পরিস্থিতিতেও তার মৃত্যু বোম্বে চলচ্চিত্র জগত ও সিনেমাবোদ্ধাদের গভীরভাবে স্পর্শ করেছে। তাকে চিহ্নিত করা হচ্ছে সামাজিক সিনেমার লিজেন্ডারি পরিচালক হিসেবে। 'মিডল ক্লাস আরবান' তথা নাগরিক মধ্যবিত্তের রোমান্টিক জীবনের চাওয়া-পাওয়া, সফলতা-ব্যর্থতাকে এতো স্পষ্টভাবে নান্দনিক পরিসরে খুব কম পরিচালকই ধরতে পেরেছেন।

তার মৃত্যু সংবাদ শুনতেই তার নির্মিত চলচ্চিত্রগুলো ভিড় করে সামনে এসে দাঁড়ায়। বোম্বের হিন্দি চলচ্চিত্রের আজগুবি জগতে আলাদা ঘরানার এই পরিচালক বাসু চ্যাটার্জির ছবি যারা দেখেছেন, তারা সহজেই তাকে ও তার কাজকে ভুলতে পারবেনা।

বিশেষত সামাজিক ও রোমান্টিক চলচ্চিত্র নির্মাণে তার দক্ষতা প্রবাদপ্রতিম। বাংলাদেশের নায়ক ফেরদৌসকে নিয়ে তার নির্মিত 'হঠাৎ বৃষ্টি' ছবিটি যারা দেখেছেন, তাদের মনে আছে রোমান্টিক কাহিনির চিত্রায়ণে তিনি কতটুকু পারঙ্গম।

সারা জীবন মধ্যবিত্তের আশা-আকাঙ্ক্ষা, প্রেম-বিরহ নিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছেন তিনি। বোম্বের বাঘা-বাঘা পরিচালকের ক্রাইম, অ্যাকশন, ভায়োলেন্সভিত্তিক ম্যাগাফিল্মের সঙ্গে নিটোল নির্মাণশৈলী ও কাহিনির জোরে লড়াই করেছেন তিনি। একজন শিল্পিত নির্মাতা হিসেবে তার কদর ছিল সর্বজনবিদিত।

বাসু চ্যাটার্জি গুরুত্ব দিতেন কাহিনি ও নির্মার্ণকলায়। গভীর অনুভূতিসূচক কাহিনিকে তিনি সিনেমাটোগ্রাফি, সংলাপ, চিত্রনাট্য ও নেপথ্য সঙ্গীতের আবহে জমিয়ে দিতেন। তার অধিকাংশ ছবির সঙ্গীত পরিচালনায় সঙ্গত কারণেই ছিলেন বিখ্যাত সলিল চৌধুরী।

পরিচালক বাসু চ্যাটার্জি (১৯০৩৯-২০২০)

খুবই স্নিগ্ধ আর হৈচৈ-হট্টগোল ছাড়া ছবি করতেন বাসু চৌধুরী। অল্প কয়জন অভিনেতাকে নিয়েই তার ছবি উতরে গেছে। প্রতিটি চরিত্রকে গভীরভাবে ফোকাস করার মাধ্যমে তিনি একই সঙ্গে কাহিনি ও অভিনেতা-অভিনেত্রীদের জীবন্ত করে তুলতেন।

চলচ্চিত্রের গ্রামার তিনি এতোটাই ভালো বুঝতেন যে, বিশাল স্টেজ, বড় ক্যানভাস, সুপার হিরো-হিরোইন, অনেক কাস্টিং ও রং-বেরঙের কস্টিউমস ছাড়াও তার ছবি নান্দনিক সুষমায় উজ্জ্বল ও জনপ্রিয়। শিক্ষিত, পরিশীলিত, রুচিশীল দর্শকদের পছন্দের তালিকায় তিনি সব সময়ই ছিলেন।

বাসু চ্যাটার্জি প্রসঙ্গে উল্লেখ করা যায়, বোম্বে তথা ভারতীয় চলচ্চিত্রে বাঙালির অবদান নেহাৎ কম নয়। চলচ্চিত্র শিল্পের উত্থানপর্বের ঐতিহাসিক ধারায় অনেক বাঙালি শিল্পী, পরিচালক, কলাকুশলীর নাম লিপিবদ্ধ রয়েছে। সাম্প্রতিক অতীতে তেমনি নামজাদা পরিচালক ছিলেন হৃষীকেশ মুখার্জি ও বসু ভট্টাচার্য।
গত শতকের ৬০ ও ৭০ দশকে বোম্বের চলচ্চিত্র জগতে উল্লেখযোগ্য আলোড়ন তৈরি করেছিলেন এ দুজন বাঙালি পরিচালক।

চলচ্চিত্রে বাসু চ্যাটার্জির বিকাশ হৃষীকেশ মুখার্জি হাত ধরে। পরিচালক বসু ভট্টাচার্যর পৃষ্ঠপোষকতাও তিনি পেয়েছিলেন। তিনি হৃষীকেশ মুখার্জি এবং বসু ভট্টাচার্যের সহকারী হিসাবে চিত্রনির্মাণ করেন। এর মধ্যে বিশেষভাবে জনপ্রিয় চলচ্চিত্র ছিল তিসরি কসম। রাজ কাপুর ও ওয়াহিদা রহমান অভিনীত তিসরি কসম চলচ্চিত্রটি জাতীয় পুরস্কার লাভ করেছিল।

মধ্যবিত্ত পরিবারের প্রেম, ভালোবাসা নিয়ে সিনেমা বানানোর দিকেই ছিল বাসু চ্যাটার্জির বিশেষ প্রবণতা ও ঝোঁক। সামাজিক আখ্যানভিত্তিক ছবিই প্রধানত তিনি নির্মাণ করেছে। বাসু চ্যাটার্জির প্রথম পরিচালিত চলচ্চিত্র সারা আকাশ (১৯৬৯)। এই ছবিটির জন্য ফিল্ম ফেয়ার পুরস্কার লাভ করেন তিনি।

চিত্রনাট্য, সংলাপ রচয়িতা , কাহিনিকার, পরিচালক ও প্রযোজক হিসেবে তিনি শতাধিক চলচ্চিত্রের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তিনি কিছু বাংলা সিনেমা ও টিভি সিরিয়াল পরিচালনা করেন। তার বিখ্যাত কিছু ছবির মধ্যে রয়েছে সারা আকাশ, রজনীগন্ধা, ছোটি সে বাত, স্বামী, গোধূলি, ত্রিশঙ্কু ইত্যাদি।

বাঙালি বাবু হলেও বাসু চ্যাটার্জি হিন্দি চলচ্চিত্রে সাচ্ছন্দ্যবোধ করতেন। কারণ তিনি জন্ম নেন হিন্দিভাষী অঞ্চলে, ১৯৩০ সালের ১০ জানুয়ারি ভারতের রাজস্থান প্রদেশের ঐতিহাসিক আজমির শহরে। তার বহু ছবিতেই উত্তর ভারত তথা জন্মস্থান রাজস্থানের প্রকৃতি, পরিবেশ ও নিসর্গের ব্যবহার রয়েছে।

বিশেষত 'হঠাৎ বৃষ্টি' ছবিতে প্রত্নঐতিহ্য ও মরুময় জয়সলমীর চমৎকারভাবে প্রস্ফুটিত হয়েছে। দক্ষিণ-পশ্চিম রাজস্থানের থর মরুভূমির মাঝখানে পাকিস্তানের সীমান্ত ঘেঁষা জয়সলমীরের বিরাণ ও ঊষর প্রান্তরে বাঙালি যুবকের (ফেরদৌস) প্রেম ও বিরহ ছবিটিকে দর্শকপ্রিয় করেছে। অচেনা ও নবাগত ফেরদৌসকেও এই ছবি বিখ্যাত করেছে। এমন অনেকেই লাইম লাইটের আলোয় এনেছেন মেধাবী পরিচালক বাসু চ্যাটার্জি।

বাসু চ্যাটার্জিকে লড়তে হয়েছে পর্বত-সদৃশ্য রাজ কাপুর এবং দিলীপ কুমারের ইমেজের বিরুদ্ধে সাধারণ অভিনেতা-অভিনেত্রীদের নিয়ে। তাকে লড়তে হয়েছে বিখ্যাত নায়কের মিছিলের বিরাট বাজেটের চলচ্চিত্রের বিরুদ্ধেও, যেখানে ছিলেন সুনীল দত্ত, অমিতাভ, ধর্মেন্দ্র, বিনোদ খান্না, শত্রুঘ্ন সিনহার মতো সুপারস্টার। তবু তিনি নতুন ও অচেনাদের দিয়ে বিকল্প জগৎ নির্মাণ করতে সফল হয়েছেন। যেখানে দর্শকরা নিজের স্বপ্নের অদেখা জগতকে রূপালি পর্দায় পেয়েছে।

বোম্বের অন্য পরিচালকের মতো বাসু চ্যাটার্জি স্বপ্ন ও ফ্যান্টাসির তোপ দেগে দেননি দর্শকদের মগজে। বরং দর্শকের সুপ্ত মনস্তাত্ত্বিক স্তরের অবচেতনে যে অসফল বা চাপা পড়া স্বপ্ন আছে, তাকে গুরুত্ব দিয়েছেন। সাধারণ মানুষ ও তাদের দৈনন্দিন স্বপ্ন-সংগ্রামই ছিল তার উপজীব্য।

নায়ক অনিল কাপুর তার অভিনয় জীবনে বাসু চ্যাটার্জির ভূমিকা স্বীকার করে বলেছেন, তিনি ছিলেন সময়ের চেয়ে এগিয়ে। চলতি পথের বাইরে। বিকল্পের উদ্ভাবক। মেধা ও স্বকীয়তায় অগ্রগামী।

বিশিষ্ট পরিচালক মাধুর ভাণ্ডারকার মনে করেন, বাসু চ্যাটার্জির নাম চিরস্মরণীয় থাকবে এইজন্য যে তিনি সিরিয়াস সামাজিক ইস্যুকে হালকা চালে ও হাস্যকৌতুকের সঙ্গে তুলে ধরতে পেরেছেন। মানুষের জীবনের সীমাহীন অপ্রাপ্তির পরেও তার ভেতরে লুক্কায়িত রোমান্টিক স্বপ্নটিকে তিনি বাঁচিয়ে রেখেছিলেন। শত বেদনা ও হতাশায় আকীর্ণ সামাজিক মানুষের ব্যক্তিগত জীবনের সুপ্ত সৌন্দর্যকে তার মতো সফলতায় খুব কম পরিচালকই তুলে ধরতে পেরেছেন।

বোম্বের বহু চলচ্চিত্রজন শোকবার্তায় এমনটিই জানিয়েছেন যে, চলচ্চিত্র মাধ্যমকে মানুষের হৃদয়স্পর্শী করার কৃতিত্ব তার। সাধারণ টেকনিক ও সরল উপস্থাপনায় তিনি সেটা করেছেন। কঠিন কঠিন সামাজিক, মনস্তাত্ত্বিক ইস্যুকে সহজে ধারণ করেছেন। তিনি ছিলেন একজন প্রকৃত চলচ্চিত্র নির্মাতা, যিনি সেলুলয়েডে স্বপ্ন বিনির্মাণ করতে পারতেন।

৯০ বছরের সুদীর্ঘ জীবন চলচ্চিত্রের সঙ্গে নিবিড়ভাবে জড়িয়ে থাকলেও বাসু চ্যাটার্জী মুম্বাই থেকে প্রকাশিত সাপ্তাহিক ট্যাবলয়েড Blitz-এ অঙ্কনশিল্পী এবং কার্টুনিস্ট হিসাবে তার কর্মজীবন শুরু করেন। তবে জীবনের নানা বাঁক পেরিয়ে সিনেমার স্বপ্নময় রূপালি জগতকেই তিনি আপন করে নেন। মৃত্যুর উড়ালপথে তিনি সিনেমার স্বপ্নময় জগত থেকে চলে গেলেন চিরকালের স্বপ্নের দিনে।

হাসপাতালে শেষ দেখায় সামিনাকে যা বলেছিলেন শাফিন



বিনোদন ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি : সংগৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়ার যে অনুষ্ঠানে গাইতে গিয়ে আর ফিরলেন না শাফিন আহমেদ, সেই মঞ্চে সেদিন গেয়েছিলেন দেশের আরেক জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী সামিনা চৌধুরী। অনুষ্ঠানের চার দিনের মাথায় জানতে পারেন শাফিন আহমেদ চিরতরে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করেছেন। শাফিন আহমেদের মৃত্যুর খবর অবিশ্বাস্য ছিল সামিনা চৌধুরীর কাছে। এই খবর সহ্য করাটাও ছিল ভীষণ কষ্টদায়ক।

যুক্তরাষ্ট্রে থাকা সামিনা চৌধুরী জানালেন, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় স্বামী ইজাজ খান স্বপনসহ গিয়েছিলেন শাফিন আহমেদকে দেখতে। হাসপাতালে তাদের থাকার অনুরোধ করেছিলেন বলেও জানালেন সামিনা চৌধুরী।

সামিনা বলেন, ‘‘তিন দিন আগে দেখে এলাম শাফিন ভাইকে। বারবার আমাকে আর স্বপনকে থাকতে বলছিলেন। স্বপনকে বললেন, ‘আমাকে ছেড়ে যেয়ো না প্লিজ! আমার সঙ্গে গল্প করো। আমার অনেক ব্যথা হচ্ছে কোমরে। স্বপন, তোমাকে কিছু বলব, বসো।’'

সামিনা আরও বলেন, ‘শাফিন ভাইকে পানি খাওয়াল স্বপন। তারপর তাকে ঘুমের ওষুধ দেওয়া হলো। শাফিন ভাইয়ের অবস্থা দেখে আমাদের চলে আসতে বললেন আয়োজকেরা। কী বলতে চেয়েছিলেন শাফিন ভাই, কে জানে। কোনো চাপা কষ্ট কি ছিল তার ভেতর? দেশের আরেকটি সম্পদ, আরেকটি মেধার বিয়োগ হলো। চোখে শুধু ভাসছে। তোমরা যেয়ো না প্লিজ...আমাকে আর পাবা না।’

;

ম্যানেজারের সঙ্গে প্রেম, ভাঙছে যীশুর ২০ বছরের সংসার?



বিনোদন ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
যীশু সেনগুপ্ত ও নীলাঞ্জনা শর্মা দম্পতি

যীশু সেনগুপ্ত ও নীলাঞ্জনা শর্মা দম্পতি

  • Font increase
  • Font Decrease

টলিউড তারকা যীশু সেনগুপ্ত আর সাবেক অভিনেত্রী নীলাঞ্জনা শর্মার দুই দশকের দাম্পত্য জীবন। এত দিন তাদের সম্পর্ককে সবাই আদর্শ মেনে এসেছে। কিন্তু জীবনে কোনকিছুই যে স্থায়ী নয়, কিংবা আমরা বাইরে থেকে যা দেখি তার সবটাই যে সত্য নয় সে কথা আরও একবার হয়তো ঘটতে চলেছে! কয়েক দিন ধরে হঠাৎই টলিপাড়ায় আলোচনায় তাদের বিচ্ছেদের খবর।

ভারতীয় গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, তাদের সম্পর্ক আগের মতো নেই। নীলাঞ্জনার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া পোস্টও সে ইঙ্গিতই দিয়েছে।

দুই কন্যাকে নিয়ে ‍সুখের সংসার ছিলো যিশুর

শিনাল সূর্তি নামের নারীর সঙ্গে নাকি সম্পর্কে জড়িয়েছেন যীশু। এটাই তাদের দাম্পত্য কলহের মূল কারণ। ইতিমধ্যেই নিজের নামের পাশ থেকে সেনগুপ্ত পদবি সরিয়ে ফেলেছেন নীলাঞ্জনা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বাবাকে আনফলো করে দিয়েছেন বড় মেয়ে সারাও।

এখন প্রশ্ন, সত্যিই কি তাহলে যীশু-নীলাঞ্জনার ২০ বছরের দাম্পত্য ভাঙনের পথেই এগোচ্ছে? যদিও এ বিষয়ে স্পিকটি নট যীশু সেনগুপ্ত। এই পরিস্থিতিতে নীলাঞ্জনার পক্ষে কথা বলেছেন শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়ের স্ত্রী মহুয়া চট্টোপাধ্যায়। নীলাঞ্জনার সঙ্গে মহুয়ার বন্ধুত্ব বহুদিনের। প্রায় দিনই তাদের একসঙ্গে দেখা যায়। এদিকে এই কঠিন পরিস্থিতিতে নীলাঞ্জনার পাশেই দাঁড়ালেন মহুয়া চট্টোপাধ্যায়।

যীশু সেনগুপ্ত

মহুয়া নীলাঞ্জনার উদ্দেশে লিখেছেন, ‘তোমাকে দুর্দান্ত ও শক্তিশালী মানুষ বলেই জানি। খুব গর্ব হয় তোমার জন্য। সব সময়ই তোমার সঙ্গে রয়েছি নীলাঞ্জনা।’ পাল্টা মহুয়া চট্টোপাধ্যায়ের প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ করেছেন নীলাঞ্জনাও।

তবে শুধু মহুয়া চট্টোপাধ্যায় নন, নীলাঞ্জনার পাশে দাঁড়িয়েছেন তার অভিনেত্রী বন্ধু রাগেশ্বরীও। তিনিও নিজের ইনস্টাস্টোরিতে লিখেছেন, ‘একসময় জীবনে কঠিন সময়ে তুমি আমাকে হাত ধরে বাঁচিয়েছিলে, এবার আমার পালা। আজ আমার পালা।’

যীশু সেনগুপ্ত ও নীলাঞ্জনা শর্মা দম্পতি

ইতিমধ্যেই যীশু-নীলাঞ্জনা নাকি বিচ্ছেদের পথেই হাঁটছেন বলে খবর। টলিপাড়ায় কান পাতলে শোনা যাচ্ছে, তারা নাকি বিচ্ছেদের বিষয়ে আইনি পরামর্শও নিচ্ছেন। শোনা যাচ্ছে, গুজরাটিকন্যা শিনাল সূর্তির সঙ্গেই নাকি বেশ কয়েক মাস ধরে তারা লিভ ইন সম্পর্কেও রয়েছেন। এমনকি ‘খাদান’ সিনেমার শুটিংয়ের জন্য কলকাতায় এসেও নাকি যীশু নিজের বাড়িতেও ওঠেননি।

প্রসঙ্গত, যীশু এ মুহূর্তে বলিউড, টলিউড ও দক্ষিণি ইন্ডাস্ট্রিতে অন্যতম ব্যস্ত অভিনেতা। কাজের সূত্রে মুম্বাইয়ে বেশির ভাগ সময় থাকতে হয় তাকে।

২০০৪ সালে সাত পাকে বাঁধা পড়েন যীশু-নীলাঞ্জনা। খ্যাতির শিখরে পৌঁছানোর বহু আগেই থেকেই যীশু সেনগুপ্তের সঙ্গে আলাপ নীলাঞ্জনার। যখন তারা বিয়ে করেন, তখন যীশু টেলিভিশনের একজন উঠতি অভিনেতা। নীলাঞ্জনা শর্মাও অভিনয় করতেন। তিনি জনপ্রিয় অভিনেত্রী অঞ্জনা ভৌমিকের মেয়ে। তবে বিয়ের পর সংসারেই মন দেন নীলাঞ্জনা। দুই মেয়ে সারা ও জারাকে নিয়ে ছিল তাদের সংসার।

যীশু সেনগুপ্ত

তথ্যসূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস বাংলা

;

বায়োপিকের টিজারে টিমোথি যেন অবিকল বব ডিলান!



মাসিদ রণ, সিনিয়র নিউজরুম এডিটর, বার্তা২৪.কম
বব ডিলানের বায়োপিকে টিমোথি শ্যালামে ও এলে ফ্যানিং

বব ডিলানের বায়োপিকে টিমোথি শ্যালামে ও এলে ফ্যানিং

  • Font increase
  • Font Decrease

টিমোথি শ্যালামেকে নতুন করে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার কিছু নেই। অভিনয়গুণে অল্প দিনের মধ্যেই দর্শকের মনে শক্ত অবস্থান করে নিয়েছেন কম বয়সী এই হলিউড অভিনেতা। তার অভিনীত ‘ডুন’ ও ‘ওঙ্কা’ সিনেমা দুটি ব্যাপক আলোচিত হয়েছে।

জীবন্ত কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী বব ডিলানের বায়োপিক ‘আ কমপ্লিট আননোন’-এর মূখ্য চরিত্রেও দেখা যাবে টিমোথি শ্যালামেকে। প্রকাশ পেয়েছে ছবিটির টিজার। ‘আ কমপ্লিট আননোন’-ও যে বিশ্বজয় করতে চলেছে, তা টিজার দেখেই নিশ্চিত সিনেপ্রেমীরা।

বব ডিলানের বায়োপিকে টিমোথি শ্যালামে

টিজারে ‘আ হার্ড রেইন’স আ-গনা ফল’ গানের কিছু অংশ গাইতে শোনা গেছে টিমোথিকে। মেকআপ, পোশাক আর চুলের স্টাইলে টিমোথি যেন অবিকল বব ডিলান! ছবিটি পরিচালনা করেছেন ‘ওয়াক দ্য লাইন’, ‘ফোর্ড ভার্সেস ফেরারি’, ‘লোগান’ খ্যাত পরিচালক জেমস ম্যানগোল্ড।

টিজারের শুরুতে টিমোথিকে ম্যানহাটনের রাস্তায় হাঁটতে দেখা যায়। এ সময়ে অ্যামেরিকান গায়ন পিট সিগার বব ডিলানের গান প্রথম শোনার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেছেন। পিট সিগারের চরিত্রে অভিনয় করেছেন এডওয়ার্ড নরটন। টিজারে ম্যানহাটনে ডিলানের কিছু প্রিয় স্থান দেখানো হয়েছে। তার মাঝে আছে ক্যাফে হোয়া এবং হোটেল চেলসা। টিজারে ডিলান, হোয়ান বাইজ এবং সিলভি রুশোর ত্রিভুজ প্রেমের ইঙ্গিতও দেয়া হয়েছে।

বব ডিলানের বায়োপিক ‘আ কমপ্লিট আননোন’-এর দুটি দৃশ্যের কোলাজ

১৯৫৯ সালে ক্যারিয়ার শুরুর পর গানের দুনিয়ায় নিজেকে অন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন বব ডিলান। ৮১ বছরের জীবনে অনেক কীর্তি গড়েছেন তিনি। সাহিত্যে নোবেল পুরস্কারও পেয়েছেন এই গীতিকবি। নন্দিত এই গায়ক, গীতিকারের জীবনের প্রথম দিকের ঘটনাবলি তুলে ধরা হবে সিনেমাটিতে।

তথ্যসূত্র : এনডিটিভি

বব ডিলানের বায়োপিকে টিমোথি শ্যালামে

;

শাফিন আহমেদের কিছু বিরল ছবি আর অজানা কথা



মাসিদ রণ, সিনিয়র নিউজরুম এডিটর, বার্তা২৪.কম
মা ফিরোজা বেগমের সঙ্গে শাফিন আহমেদ ও হামিন আহমেদ (২০১০) / ছবি : আবেগ রহমান

মা ফিরোজা বেগমের সঙ্গে শাফিন আহমেদ ও হামিন আহমেদ (২০১০) / ছবি : আবেগ রহমান

  • Font increase
  • Font Decrease

যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়ার সেন্টারা হাসপাতালে গতকাল বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সময় সকাল ৬টা ৫০ মিনিটে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন ব্যান্ড সংগীতের কিংবদন্তি শিল্পী শাফিন আহমেদ।

তার মৃত্যুর শোকের আঁচ এখনো পাওয়া যাচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। যে যেভাবে পারছেন প্রিয় শিল্পীকে শেষ শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন।

শাফিনকে পেলে এভাবেই মধ্যমণি করে রাখতেন শিল্পীসমাজ। ছবিতে শাফিনের পাশে আসিফ আকবর, শওকত আলী ইমন, শহিদুল্লাহ ফরায়েজী, ফুয়াদ নাসের বাবু, লাবুসহ গানের মানুষরা
 

অনেকেই জানেন না শাফিন আহমেদের জন্ম কলকাতায়। আর তারা তিন ভাই- তাহসিন, হামিন ও শাফিন। বাবা কমল দাশগুপ্ত, মা ফিরোজা বেগম। দুজনেই সংগীতাঙ্গনের কিংবদন্তি। তবে অনেকেই জানেন না, ছেলেবেলায় শাফিন আহমেদের নাম ছিল মনোজিৎ দাশগুপ্ত!

১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর ১৯৬৭ সালের দিকে গোটা পরিবারসহ পূর্ব পাকিস্তানে চলে আসেন তারা। এরপর ভর্তি হন স্কুলে। সেসময়ই পরিবর্তন করা হয় তার নাম। মনোজিৎ দাশগুপ্ত থেকে তিনি হয়ে যান শাফিন আহমেদ।

কিশোর বেলায় মাকে ঘিরে তিন ভাই তাহসিন, হামিন ও শাফিনের হাসিমুখ

নাম পরিবর্তন নিয়ে এক সাক্ষাৎকারে শাফিন জানিয়েছিলেন, ‘ভারতবর্ষ যখন স্বাধীন হলো, তখন হিন্দু-মুসলিমের মাঝে যে দূরত্ব বা বিবাদ, সেই সময়ে তা প্রবল ছিল। সেখান থেকেই কিন্তু দুটো দেশের জন্ম- ভারত ও পাকিস্তানের। সেজন্য ভারতে থাকাকালীন একজন ভারতীয় নাগরিক হিসেবে হিন্দু পরিচিতিটা যে রকম প্রয়োজন ছিল, একই রকমভাবে যখন পূর্ব পাকিস্তানে চলে আসলাম তখন দেখা গেল মুসলিম পরিচয়টা খুব জরুরি ছিল। কারণ আমরা স্কুলে ভর্তি হতে পারছিলাম না।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের বাসার ব্যাপারটা ছিল কি, বাবা খুবই প্রগ্রেসিভ একজন মানুষ ছিলেন। ধর্ম নিয়ে তার মধ্যে সে রকম কোনো চিন্তা-ভাবনা ছিল না। উনি গানের জগতের মানুষ, গান নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন। আমরা ছোটকাল থেকে বড় হয়েছি আসলে ইসলাম ধর্মকে ঘিরেই। মায়ের কাছ থেকেই এই প্রভাব এসেছে। ইসলাম ধর্মের চর্চাটা বাসায় ছিল। এ ব্যাপারে আব্বার কোনো মন্তব্য ছিল না। উনার কোনো দৃষ্টিভঙ্গি কখনোই তিনি চাপিয়ে দিতে চাননি।’

ছবিটি ২০১২ সালে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে ফিরোজা বেগমের স্বামী ও শাফিনের বাবা কমল দাশগুপ্ত’র ১০০ তম জন্মদিন উদযাপন অনুষ্ঠানে তোলা। ফ্রেমবন্দী হয়েছিলেন দেশের চার প্রখ্যাত শিল্পী সাবিনা ইয়াসমিন, সুবীর নন্দী, ফিরোজা বেগম ও শাফিন আহমেদ। একে একে সবাই চলে গেছেন, রয়েছেন সাবিনা ইয়াসমিন (তিনিও বেশ অসুস্থ)। 

শাফিন আহমেদের ডাক নাম ছিল মুনা। পরিবারের অনেকে এ নামেই ডাকে। এ ছাড়া সংগীতাঙ্গনের অনেকে যারা আমাকে ছোটবেলা থেকে চেনে, তখনও এমন তারকাখ্যাতি পাইনি, বয়স ১৭-১৮ হবে; সেই সময়ে যারা চিনতেন তারাও মুনা নামটিই আগে বলেন।

কিংবদন্তি সুরকার কমল দাশগুপ্ত ও প্রখ্যাত নজরুল সংগীতশিল্পী ফিরোজা বেগমের সন্তান শাফিন। যেন সুরের চামচ মুখে জন্মেছিলেন তিনি। বাবার কাছে উচ্চাঙ্গসংগীত আর তবলা, মায়ের কাছে নজরুলসংগীত শিখেছেন। ৯ বছর বয়সে নজরুলের শিশুতোষ গান ‘প্রজাপতি প্রজাপতি’ রেকর্ড করেছেন শাফিন।

কৈশোরে বিটলসসহ বহু ওয়েস্টার্ন অ্যালবাম হাতের নাগালে পেয়েছেন। ইংরেজি গানে মুগ্ধতা জমে; বাড়িতে ড্রামস ও গিটার বাজাতেন। মা-বাবা নাখোশ হননি; বরং আশকারাই দিয়েছেন।

মায়ের সঙ্গে হামিন ও শাফিন

শাফিন আহমেদের মৃত্যুর পর তাকে নিয়ে প্রখ্যাত গীতিকার ও সুরকার প্রিন্স মাহমুদ বলেছেন, ‘ওনার কণ্ঠটা একদমই আলাদা। অত্যন্ত সুরে গান করেন। একই সঙ্গে বেজ বাজিয়ে গান করা ভীষণ কঠিন কাজ। এটিই তাকে আলাদা করেছে।’

প্রিন্স মাহমুদের লেখা ‘আজ জন্মদিন তোমার’, ‘কী করে সব ভুলে যাই’সহ ১০ টির মতো গান গেয়েছেন শাফিন। মাইলসের বাইরে শাফিনের বেশির ভাগ জনপ্রিয় একক গানের কথা ও সুর করেছেন তিনি।

১৯৭৯ সালে গঠিত হয় বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় ব্যান্ড মাইলস। চার দশকের ক্যারিয়ারে ‘ফিরিয়ে দাও’, ‘চাঁদ তারা সূর্য’, ‘জ্বালা জ্বালা অন্তরে’, ‘ফিরে এলে না’, ‘হ্যালো ঢাকা’সহ বহু হিট গান উপহার দিয়েছেন শাফিন।

কনসার্টে রীতিমতো ঝড় তুলতেন রক তারকা শাফিন

কনসার্টে রীতিমতো ঝড় তুলতেন রক তারকা শাফিন। গান আর গিটারের তালে শ্রোতাদের হৃদয়ে উন্মাদনা ছড়িয়েছেন। প্রাণশক্তিই তাকে সমসাময়িকদের চেয়ে আলাদা করেছে বলে মনে করেন আরেক ব্যান্ড তারকা মাকসুদ হক।

নব্বইয়ের দশকে কলকাতায় মাইলসের কনসার্টে শ্রোতাদের ঢল নামত। কলকাতার শিল্পীরাও শাফিন আহমেদকে শ্রদ্ধার আসনে বসিয়েছেন। বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে কলকাতায় গায়ক অনুপম রায় বলেছেন, মাইলসে শাফিনের গান শুনেই বেড়ে উঠেছেন তিনি। ব্যান্ডটির ভক্ত তিনি। কলকাতার ক্যাকটাস ব্যান্ডের সিধুসহ আরও অনেকেই শাফিনের গানের প্রতি ভালোবাসার কথা জানিয়েছেন।

ব্যান্ড মাইলস-এর সদস্যরা

;