মারায়ন তং চূড়ায় জোছনাস্নান (১ম পর্ব)



শুভ্রনীল সাগর, স্পেশালিস্ট রাইটার, বার্তা২৪.কম
মারায়ন তং চূড়ায় জোছনাস্নান (১ম পর্ব)

মারায়ন তং চূড়ায় জোছনাস্নান (১ম পর্ব)

  • Font increase
  • Font Decrease

মারায়ন তং চূড়া থেকে ফিরে: ঝট করে এক ঝলক রোদ এসে লাগলো মুখে। ছোটবেলার সেই আয়নায় রোদ প্রতিফলিত করে বন্ধুদের মুখে ফেলার কথা মনে পড়ে গেলো। কেউ হয়তো আনমনে কিছু একটা করছিল বা দু-চারজন মিলে খুনসুঁটি – আচমকা মুখে রোদের আঁচ লাগলে যেমন চমকে উঠতো এক্ষেত্রেও তেমন দশা!

সবে ভোর জাগছে। ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা বাস চকরিয়া ছাড়িয়ে ততক্ষণে আলিকদম ঢুকে গেছে। আড়মোড়া ভেঙে হাই তুলছে গাছেরাও। শিশির ভেজা পাতায় গা মুছে এদিক-ওদিক উড়ে যাচ্ছে চড়ুই-শালিক। শীতের আড়ষ্ঠতায় আমরাও ঝিমোচ্ছিলাম। এই এক ব্যাপার হয়, ঢাকায় শীত যেমন আসে দেরিতে তেমনি যায়ও সবার আগে। গ্রাম-মফস্বলে যেখানে লেপ গায়ে দিয়েও ঠকঠক অবস্থা, ঢাকায় সেখানে দিব্যি টি-শার্ট গায়ে বুক ফুলিয়ে চলা যায়। সেইসঙ্গে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রকোপে প্রকৃতির এখন মাথা পাগল দশা। এই মধ্য অগ্রহায়ণেই শীতে কনকন। বাসের চাকা যত শহর ঢাকাকে পেছনে ছেড়ে এসেছে শীতের আলিঙ্গন ততই শক্ত হয়েছে।

 ‘ঘুমাবো কেতকী সুবাস শয়নে, চাঁদের কিরণে করিবো স্নান..’

আধো আধো ঘুম চোখে কেউ হয়তো সবে চোখ মেলেছে, কেউবা ডানে-বায়ে ঢুলছে। এরই মধ্যে সুয্যিমামার দেখা। মামার আদরের মতো মুখে রোদের চাপড়। প্রথমে আচমকা প্রতিক্রিয়ায় চোখ-মুখ কুঁচকে এলেও পরে হইহই করে উঠলো সবাই। হুল্লোড় শুনে বাকিরাও জেগে ওঠে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই বাড়ির দস্যি ছোটমামার মতো এই এলো আবার ছুটে পালালো কোনো দূর পাহাড়ের পেছনে। আলিকদমের চড়াই-উৎরাই পথ। এই উপরে উঠছে, পরক্ষণে রোলার কোস্টারের মতো নিচে। বাস চলছে সাপের মতো শরীর-মাথা এঁকে-বেঁকে। আবার দস্যি মামা এসে হাজির কিন্তু লুকোচুরি থামলো না! ফিক করে এসে উঠে আবার কোথায় মুখ লুকিয়ে ফেলে। একবার ডানে হারায় তো একবার বামে। খানিক বাদে সুয্যিমামাও বোধহয় একটু হাঁপিয়ে উঠলো। ‘দেখলি তো, আমায় ধরতে পারলি না’র মতো দিগ্বিজয়ী হাসিমুখ করে একরাশ রোদ নিয়ে হাজির। আমাদের মুক্তি এই আলোয় আলোয়..

আলোরেখা ধরে আমরা এগিয়ে চলেছি। দুপাশে পাহাড়ের কোলঘেঁষে পেজা তুলোর মতো মেঘের ওড়াউড়ি। জানলা খুলে দিলে মুখে এসে লাগে শীতল পরশ। ইচ্ছে হয়, বাস থামিয়ে এখানেই নেমে পড়ি। কিন্তু মন আমাদের মেঘের সঙ্গী, দিক-দিগন্ত পেরিয়ে উড়ে চলে মারায়ন তং চূড়ার পানে, নিঃসীম শূন্যে জোছনাবর্ষণসঙ্গীতে.. 

এরইমধ্যে হঠাৎ যাত্রাবিরতি। জাতীয় পরিচয়পত্রসহ নামতে হলো ইয়াংছা চেকপোস্টে। প্রয়োজনীয় ‘সওয়াল-জবাব’ শেষে বাসযাত্রার ইতি হলো আলিকদমের আবাসিক রাস্তার মাথায়। স্থানীয় একটি হোটেলে প্রাকৃতিক কর্ম ও প্রাতঃরাশ সেরে যে যার মতো ট্রেকিংয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি সেরে নিলো। একটু পরই শুরু হবে পাহাড় যাত্রা। আহা, পাহাড়..

সবে ভোর জাগছে, আড়মোড়া ভেঙে হাই তুলছে গাছেরাও

পাহাড় ডাকছিল চলতি বছরের জানুয়ারি থেকেই। মার্চে তাজিংডংয়ে যাওয়ার সব প্রস্তুতি সারা, কেবল যাত্রা শুরুর অপেক্ষা। এর মধ্যে বিশ্বব্যাপী নামলো করোনা মহামারী, সেই ধারাবাহিকতায় চার দেয়ালে বন্দিত্ব। এরপর ‘নিউ নরমাল’ জীবনে সেপ্টেম্বরে গিয়ে আবার ট্রেকিংয়ের তোড়জোড়। আগের সব হতাশা পুষিয়ে নিতে ‘এক্সক্লুসিভ ট্রেকিং’ হবে এটি। মন আবার মেঘ-পাহাড়ে ভাসলো। সে যাত্রায়ও পিছিয়ে তারিখ পড়লো অক্টোবরে। শেষমেশ আশার গুড়ে বালি দিয়ে সহ-ট্রেকার বন্ধুদের ছুটিছাটাজনিত সমস্যায় ট্রেকিংই আর হলো না। এক বুক দুঃখ নিয়ে নিত্যদিনের কাজকর্ম করে দিন কাটে। মধ্য নভেম্বরে এসে খোঁজ পেলাম, ‘হিট দ্য ট্রেইল’ নামে একটি ট্রাভেল গ্রুপ জনা বিশেকের একটি দল নিয়ে ২৭ নভেম্বর মারায়ন তং চূড়ায় ক্যাম্পিং এবং ২৮ নভেম্বর আলীর গুহায় ট্রেকিংয়ে যাচ্ছে। আগপিছ না ভেবে ভিড়ে গেলাম তাদের দলে। সেই পাহাড়ে আসা হলো বহু অপেক্ষার পর। এছাড়াও, দীর্ঘ পাঁচ-ছয়মাস লকডাউনে বন্দিজীবন কাটিয়ে মনও ভীষণভাবে খোলা হাওয়ায় শ্বাস নিতে চাইছিলো। সেই বহু বাসনার পাহাড় সামনেই! তার বিস্তৃত বিশালত্বে প্রাণ-মন মেলানোর অপেক্ষা কেবল..

বান্দরবান জেলার মারায়ন তং অ্যাডভেঞ্চারপ্রেমীদের কাছে বেশ জনপ্রিয়। অনেকে এই পাহাড়কে মারায়ন ডং নামেও ডাকে। প্রায় ১৬৪০ ফুট উচ্চতার এই পাহাড় মেরাই থং জাদি, মারায়ং তং প্রভৃতি নামেও পরিচিত। মিরিঞ্জা রেঞ্জের এই পাহাড়ের ভাঁজে ভাঁজে ত্রিপুরা, মারমা, মুরংসহ বেশ কয়েকটি আদিবাসীদের বসবাস।

জানা গেলো, চূড়ায় উঠতে মোট ৫টি ট্রেইল। এর মধ্যে সবচেয়ে খাড়া ট্রেইলটি ৭২ ডিগ্রি কোণে ভূমি থেকে চূড়ার দিকে গেছে। শুনেই শরীর বেয়ে রোমঞ্চকর শিহরণ খেলে গেলো। এ জন্যই তো আসা..

চূড়ায় উঠতে মোট ৫টি ট্রেইল। এর মধ্যে সবচেয়ে খাড়া ট্রেইলটি ৭২ ডিগ্রি কোণে ভূমি থেকে চূড়ার দিকে গেছে। শুনেই শরীর বেয়ে রোমঞ্চকর শিহরণ খেলে গেলো

আবাসিক রাস্তার মাথা এলাকার দোকানপাট-লোকালয় ছেড়ে আমরা মারায়ন তং-মুখী। যে যার ব্যাগ-বোঁচকা নিয়ে হাঁটা শুরু। সূর্য এখন রাগী বড়মামা। একেবারে মধ্যগগন থেকে চোখ রাঙিয়ে চলেছে। কড়া রোদের শাসানি উপেক্ষা করেই আমাদের পৌঁছাতে হবে চূড়ায়। প্রায় পাঁচ কিলোমিটার খাড়া পথ। একে তো হাঁটলে হাঁটু বুকে এসে ঠেকে, এর উপর আগুন গরম তাপ – খানিক হেঁটেই পিপাসায় বুক শুকিয়ে এলো। প্রথমবারের মতো যারা ট্রেকে এসেছে তাদের অনেকেই পথিমধ্যে শুয়ে পড়লো। পাশ দিয়ে যে হেঁটে যায় তাকে ডেকে জিজ্ঞেস করে, আর কতদূর? উত্তরে, ‘এ তো কেবল শুরু’, শুনে চুপসে পড়ে। কেউ আশাবাদী উত্তর শোনায়, ‘আরেহ, এই তো এসে গেছি! ওই যে চূড়া দেখা যায়, ওইখানেই শেষ’। শুনে ছোটবেলায় বড়খালার শ্বশুরবাড়ি যাওয়ার কথা মনে পড়ে যায়। নদী পার হয়ে অনেকটা হাঁটাপথ থাকতো। আমরা ছোটরা হাঁটতে হাঁটতে বেজায় ক্লান্ত। পা আর চলেই না। বারবার জিজ্ঞেস করতাম, আর কতদূর? বড়রা আশা দিত, ওই যে তালগাছ দেখা যায়, ওর ঠিক পাশেই যে টিনের বাড়িটা, ওইটাই। আমরা প্রবল উৎসাহে আবার হাঁটা লাগাতাম। আর একটু কষ্ট করে পৌঁছে গেলেই তো শেষ, এরপর শুধু আনন্দ আর মজা। কিন্তু কত তালগাছ আর টিনের গাছ পেরিয়ে যায়, খালাবাড়ি আর আসে না! সেই কথা ভেবে মনের অজান্তে হেসে উঠি..

আমরাও প্রবল উৎসাহে ব্যাগ কাঁধে নিয়ে আবার হাঁটা শুরু করি। পথের দুধারে ঘন বন। সেগুনের প্রশস্ত পাতায় রোদ ঝলমল করে। আমরা সেসব পেরিয়ে চূড়ার হাতছানিতে এগিয়ে যাই। থ্রুং-ভর্তি (বাঁশ দিয়ে বানানো পিঠে ঝোলানো ঝুড়ি) আলু-কলা-শাক নিয়ে পাশ কাটিয়ে যায় আদিবাসী নারীরা। বাঁশের মাঁচার মতো বাড়ি থেকে অপার বিস্ময়ে টিপরা-মুরং শিশুরা তাকিয়ে থাকে। আমরা হাসিমুখে হাত নাড়াই। এরপরও পা-কোমর ধরে আসে। আমরা আরও উদ্দীপনায় খাড়া পাহাড় চড়তে থাকি। চূড়ায় পৌঁছে গেলেই তো অপার আনন্দ-উল্লাস। এরপর ‘আমরা মলয় বাতাসে ভেসে যাবো শুধু, কুসুমের মধু করিবো পান..’

হাওয়া আমাদের হাত ধরে নিয়ে গেলো। মারায়ন তংয়ের চূড়া ছুঁতে প্রায় বিকেল। চূড়ায় উঠেই প্রথমেই চোখে পড়ে বিশাল একটি জাদি আর বটবৃক্ষ। জাদি মানে বৌদ্ধদের পূজা-অর্চনার জন্য বানানো বুদ্ধবিগ্রহ। ধ্যানরতবুদ্ধ প্রকৃতির গূঢ় কোনো রহস্য নিয়ে ভাবছেন আর স্মিত হাসি ফুটে উঠেছে তার ঠোঁটে। চূড়ার মুখোমুখি চিম্বুক রেঞ্জের পাহাড়েরা। চিম্বুক আর মিরিঞ্জাকে মায়ের সমান আদর দিয়ে মাঝখান দিয়ে বয়ে গেছে মাতামুহুরি।

বান্দরবান জেলার মারায়ন তং অ্যাডভেঞ্চারপ্রেমীদের কাছে বেশ জনপ্রিয়

বটবৃক্ষের ছায়ায় বসে দুপুরের ভোজনপর্ব সারা হলো। গত প্রায় তিন-চার ঘণ্টা রোদ-গরমে হাঁটার ক্লান্তি যেনো সবার মধ্য থেকে উবে গেছে। অবশেষে বহু আকাঙ্ক্ষাময় মারায়ন তং পাহাড়ের চূড়া, আহা কী আনন্দ আকাশে-বাতাসে! যে যার তাঁবু খাটাতে ব্যস্ত। দ্রুতই সেরে ফেলতে হবে যেনো। সন্ধ্যা হতেই শুক্লা দ্বাদশীর চাঁদ উঠবে। ‘ঘুমাবো কেতকী সুবাস শয়নে, চাঁদের কিরণে করিবো স্নান..’

টুকটাক গোছগাছের ব্যস্ততায় কখন যে সুয্যিমামা ডুবতে বসলো খেয়ালই ছিলো না। পড়িমড়ি করে ক্যামেরা তাক করতেই দিগন্তজুড়ে নীল-কমলার আভা ছড়িয়ে ‘আজ তবে চললাম’ বলে বিদায়। হুট করে যেমন সকালে এসেছিল, হুট করেই তেমন সন্ধ্যার মেঘমালার মধ্যে মিলিয়ে গেলো।

হুহু ঠান্ডা বাতাস। কেউ তার থোড়াই কেয়ার করে। চারদিকে গল্প-আড্ডা-গানে মুখরিত। পূর্ব পরিকল্পনা মাফিক ক্যাম্পফায়ার জ্বলে উঠলো। কিন্তু কাঠপোড়ানো আগুনের আলোকে ম্লান করে চাঁদ উঠলো আরও আরও রোশনাই রঙে। তাকে বরণ করে নিলো মণি-মাণিক্যখচিত তারাদল। আজ জোছনা রাতে সবাই এসেছি পাহাড়ে। আজ আমরা কোথাও যাবো না। প্রাণে প্রাণ মিলিয়ে ভিজবো জোছনাবর্ষণে..

পাহাড়ে এলে অন্তরের ভাবুক মনটি জেগে ওঠে। পাহাড় নিজেই একজন ধ্যানী। হাজার হাজার বছর ধরে বুদ্ধের জাতক হয়ে যেনো আমাদের মধ্যে রয়ে গেছে। এই ধ্যানী ভাবটি ব্যক্তির মধ্যেও এসে পড়ে। হোক সে তা অল্প সময়ের জন্য! পাহাড়ের বিস্তৃত বড়ত্বের মধ্যে নিজেদের ক্ষুদ্রতা অনুধাবিত হয়। সংকীর্ণতা-নীচুতা-অহং দূর করে আত্মসচেতনতা যেনো আরও বেশি প্রস্ফুটিত হয়ে ওঠে। এজন্যই বারবার পাহাড়ের কাছে ছুটে আসা..

রাত গভীর হয়। হুটোপুটি করে কলাপাতা পেতে খিচুড়ি-মাংসবিলাসে মেতে উঠি সবাই। কারও একটু বেশি বা কম খাওয়া নিয়ে অন্যদের অবধারিত কৌতুক তো ছিলোই। আরও ছিল নানা গল্প। ভাবা যায়, আজ সকালের আগেও কেউ কাউকে সেভাবে চিনতো না, নাগরিক কায়ক্লেশ থেকে দূরে এই পাহাড় চূড়ায় সবাই যেনো সবার আত্মার আত্মীয়। খাওয়া শেষে আবার যে যার মতো। গিটারের টুংটাং, হ্যামোকের দুলুনি আর মন-প্রাণ ছড়িয়ে পড়লো আঁধারে-আকাশে। সবাই যেনো ঘুম ভুলে গেছে। গানের কোরাস যত দূর যায় তারও বেশি দূরে আমাদের দুঃখ-বিষাদ ছেড়ে আসি। গায়ে অন্ধকার জড়িয়ে আমরা বসে থাকি একে অপরের মুখোমুখি। আমাদের মাঝে কেবল জোছনার বন্ধন…

(২য় পর্বে সমাপ্ত)

   

বৃষ্টি নাকি ধান, কী প্রার্থনায় দেশ?



কবির য়াহমদ, অ্যাসিস্ট্যান্ট এডিটর, বার্তা২৪.কম
বৃষ্টি নাকি ধান, কী প্রার্থনায় দেশ?

বৃষ্টি নাকি ধান, কী প্রার্থনায় দেশ?

  • Font increase
  • Font Decrease

‘পথের কেনারে পাতা দোলাইয়া করে সদা সঙ্কেত/ সবুজে হদুদে সোহাগ ঢুলায়ে আমার ধানের ক্ষেত/ ছড়ায় ছড়ায় জড়াজড়ি করি বাতাসে ঢলিয়া পড়ে/ ঝাঁকে আর ঝাঁকে টিয়ে পাখিগুলে শুয়েছে মাঠের পরে/ কৃষাণ কনের বিয়ে হবে, তার হলদি কোটার শাড়ী/ হলুদে ছোপায় হেমন্ত রোজ কটি রোদ রেখা নাড়ি/ কলমী লতার গহনা তাহার গড়ার প্রতীক্ষায়/ ভিনদেশী বর আসা যাওয়া করে প্রভাত সাঁঝের নায়।’ পল্লীকবি জসীম উদদীনের ‘ধান ক্ষেত’ কবিতার অপূর্ব চিত্রায়ন কৃষকের শ্রম-ঘাম আর প্রকৃতির তরফে। কাব্যে-পঙক্তির বিমূর্ত চিত্র মূর্ত হয়েছে বিস্তীর্ণ মাঠে। কিষান-কিষানির বুক ভরা আশার সার্থক রূপায়ন হতে চলেছে এ-মৌসুমে।

এখন ভরা বৈশাখ। এ-সময়টা বোরো ধানের। বোরো ধান দেশের খাদ্যচাহিদার অন্তত ৫৫ শতাংশ মিটিয়ে থাকে। দেশের হাওরভুক্ত ৭টি জেলা সিলেট, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার হাওরে এই বোরোর চাষ বেশি হয়ে থাকে। এই ধান অতিবৃষ্টি, বন্যা ও ভারতের পাহাড়ি ঢলে ক্ষতিগ্রস্ত না হলে দেশের খাদ্যচাহিদায় ঘাটতি পড়ে না। তাই এই ধান চাষ থেকে শুরু করে ঘরে ফসল তোলা পর্যন্ত অনুকূল আবহাওয়া, বিশেষ করে রোদের উপস্থিতি অতি জরুরি। বর্তমানে সে পরিস্থিতি চলছে।

সিলেট অঞ্চলের মানুষ বলে এই অঞ্চলের মানুষের চাওয়া-পাওয়া, হতাশা-উচ্চাশার সঙ্গে আমি পরিচিত। তাদেরকে উদাহরণ হিসেবে টানছি। তাদের সঙ্গে থেকে জেনেছি, বোরো মৌসুমে নির্বিঘ্নে ঘরে ফসল তোলা কতটা জরুরি। গবাদি পশুর খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিতে জরুরি খড় সংরক্ষণও। তীব্র রোদ এখানে সমস্যার নয়, এটা বরং আনন্দের। কারণ এই রোদ গা পোড়ালেও বুক ভরা আশার সার্থক বাস্তবায়নের পথ দেখায়। দেশের যে খাদ্যচাহিদা, যে খাদ্যনিরাপত্তা সেটা এই বোরো ধানের ওপর অনেকাংশে নির্ভরশীল। তাই চাষ থেকে শুরু করে প্রতিটি পর্যায়ে দরকার হয় প্রকৃতির সহায়তা। এবার এখন পর্যন্ত সে সহায়তা আছে, যদিও এ মাসের শুরুর দিকে একবার ঝড়বৃষ্টিসহ শঙ্কার কালমেঘ হাতছানি দিয়েছিল। সেটা আপাতত দূরে সরেছে।

কিষান-কিষানির দরকার এখন তীব্র রোদ। তারা এটা পাচ্ছে। দেশে তীব্র তাপদাহ। এখানেও এর ব্যতিক্রম নয়। তবু তারা এই রোদের প্রার্থনায় রয়েছে। বৃষ্টি এখন তাদের কাছে দুর্যোগ-সম। কারণ এই বৃষ্টি এবং অতি-বৃষ্টিসৃষ্ট বন্যা তাদের স্বপ্নসাধ গুঁড়িয়ে ভাসিয়ে নিতে পারে সব। ২০১৭ সালের দুঃসহ স্মৃতি এখনও বিস্মৃত হয়নি সুনামগঞ্জের কৃষকেরা। সে বছর সুনামগঞ্জের ছোট-বড় ১৩৭ হাওরের ফসল বন্যায় এবার ভেসে গিয়েছিল। গতবার কৃষক নির্বিঘ্নে ফসল ঘরে তুলেছেন। এরআগের বছর অন্তত ২০টি হাওরের ফসলহানি হয়েছিল বন্যায়।

প্রকৃতির ওপর নির্ভরশীল ক্ষেতের ফসল, দেশের খাদ্যনিরাপত্তা। এখানে প্রচণ্ড তাপদাহ তাই প্রভাব ফেলে সামান্যই। রোদে পুড়ে, প্রয়োজনে ছাতা মাথায় দিয়ে কিষান-কিষানিরা স্বপ্ন তোলেন ঘরে। তারা বৃষ্টির জন্যে প্রার্থনা না করে বরং রোদ আরও কিছুদিন অব্যাহত রাখার প্রার্থনায় বসেন। কৃষকেরা পরিমিত বৃষ্টি চায় চৈত্র মাসে, বৈশাখে চায় খাঁ খাঁ রোদ্দুর, কারণ এই রোদে সোনালী ধান ঘরে ওঠে। লোককথার প্রচলিত, ধান তোলার মৌসুমে ঝড়বৃষ্টি ও প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের হাত থেকে ফসল রক্ষা করার জন্য হাওরবাসীরা তন্ত্রসাধক বা ‘হিরাল’ ও ‘হিরালি’-দের আমন্ত্রণ জানাতেন। তারা এসে মন্ত্রপাঠ করে ঝড়বৃষ্টি থামানোর জন্য চেষ্টা করতেন। লোকায়ত বিশ্বাস থেকে আগেকার মানুষজন এমন আচার পালন করতেন। এসবে সত্যি কাজ হতো কিনা সেটা বিতর্ক এবং ব্যক্তি-বিশ্বাসসাপেক্ষ, তবে এই হিরাল-হিরালিদের আমন্ত্রণ বলে বৈশাখে একদম বৃষ্টি চায় না হাওরের কৃষক।

হাওরপারের মানুষেরা যখন রোদ অব্যাহত থাকার প্রার্থনায়, তখন দেশজুড়ে তীব্র তাপদাহে পুড়তে থাকা মানুষেরা আছেন বৃষ্টিপ্রার্থনায়। দেশের জায়গায়-জায়গায় বৃষ্টি প্রার্থনায় ইস্তিস্কার নামাজ পড়া হচ্ছে, গণমাধ্যমে সচিত্র সংবাদ আসছে এর। কোথাও প্রবল বিশ্বাসে কেউ কেউ ‘ব্যাঙের বিয়ে’ দিচ্ছেন, এটাও বৃষ্টি প্রার্থনায়। সামাজিক মাধ্যমে গরমের তীব্রতার আঁচ মিলছে, বৃষ্টি নাকি ধান—কোনটা জরুরি এই প্রশ্নও তুলছেন কেউ কেউ। কেবল তাই নয়, বাংলাদেশের প্রচণ্ড তাপদাহ নিয়ে বিশ্বমিডিয়ায় খবর প্রকাশিত হয়েছে। প্রচণ্ড গরমে দেশের মানুষের দুর্ভোগ নিয়ে প্রতিবেদন করেছে দ্য নিউইয়র্ক টাইমস, বিবিসি, এএফপি ও টাইমস অব ইন্ডিয়া। গণমাধ্যমগুলো বলছে, প্রচণ্ড গরমের কারণে টানা দ্বিতীয় বছর বাংলাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধের ঘোষণাও এসেছে। বৃষ্টি-প্রার্থনায় নামাজের আয়োজনের কথাও এসেছে বিশ্বমিডিয়ায়।

একদিকে প্রচণ্ড তাপদাহ, অন্যদিকে খাদ্যনিরাপত্তার প্রধান উপকরণ ধান ঘরে তোলার অনিশ্চয়তা—তবু অনেকের কাছে সাময়িক স্বস্তিই যেন মুখ্য। অথচ আর দিন দশেক বেরো আবাদ-এলাকায় বৃষ্টি না নামলে ধানগুলো ঘরে ওঠত কৃষকের। নিশ্চিত হতো খাদ্যনিরাপত্তার।

প্রকৃতির ওপর আমাদের হাত নেই, নিয়ন্ত্রণ নেই; তবু মনে করি আমাদের আকাঙ্ক্ষার প্রকাশে কৃষকদের গুরুত্ব থাকা উচিত। আমাদের চাওয়ায় হয়তো প্রকৃতির রীতি বদলাবে না, তুমুল রোদ্দুরের দেশে হঠাৎ বৃষ্টি নামবে না, তবে ধান ঘরে তোলার আগ পর্যন্ত রোদ্দুর কামনায় কৃষক স্বস্তি পাবে; ভাবতে পারবে এই দেশ আছে তাদের সঙ্গে।

কৃষকের জয় হোক। অন্তত বোরো-এলাকায় প্রকৃতি কৃষকের সঙ্গে থাকুক।

;

৫০ বছর আগে মহাকাশ থেকে তোলা পৃথিবীর ছবি আজও শ্রেষ্ঠ



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সালটা ১৯৬৮। বিশ্বব্যাপী মানুষ মেতে উঠেছিল বড়দিনের আনন্দে। তখনো জানতো না, বড়দিন উপলক্ষে তারা একটি বিশেষ উপহার পেতে চলেছে। পৃথিবী থেকে আমরা হরহামেশাই চাঁদ দেখি। অমাবস্যা-পূর্ণিমা, এমনকি পক্ষের মাঝামাঝি সময়ের বদৌলতে নানা দৃষ্টিকোণে নানা আকারের চাঁদ দেখতে পাই। তবে চাঁদ থেকে পৃথিবী দেখতে কেমন? এরকমটা হয়তো অনেকেই ভাবেন।

নাসার মহাকাশচারীরা অ্যাপোলো ৪ এ করে তখন চাঁদের চারপাশে টহল দিচ্ছে। সেখান থেকে তারা চাঁদের বাসকারীদের দৃষ্টিতে পৃথিবী কেমন হবে তার এক নমুনা জোগাড় করেন। ক্রিসমাসের কিছুদিন আগে ক্রুরা চাঁদকে প্রদক্ষিণ করার সময় ব্যারেন লুনার হরিজোন থেকে একটি ছবি তোলে। সেখানে সুদূর মহাকাশ থেকে পৃথিবীর একটি সুন্দর দৃশ্য ধারণ করা হয়। চমৎকার সেই রঙিন ছবিটি সবকিছু পরিবর্তন করতে চলেছিল।

ছবিটি তুলেছিলেন মার্কিন নভোচারী বিল অ্যান্ডার্স এবং জিম লাভেল। ছবিটি ধারণ করার পর মহাকাশ বিজ্ঞানীরা অবাক হয়ে যান। অর্ধ শতাব্দী পার হয়ে যাওয়ার পরও এটিকে প্রকৃতির সবচেয়ে আইকনিক ছবি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কারণ, এটিই মহাকাশ থেকে তোলা প্রথম রঙিন এবং উচ্চ রেজুলেশনের ছবি।

১৯৭০ সালে পরিবেশ সচেতনতা এবং এই ব্যাপারে সক্রিয়তা বাড়ানোর উদ্দেশে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেখানে পৃথিবী দিবস প্রচারিত হওয়ার কারণে ছবিটিকে বিশেষ কৃতিত্ব দেওয়া হয়।

যুক্তরাজ্যের রয়্যাল ফটোগ্রাফিক সোসাইটির প্রোগ্রাম ডিরেক্টর মাইকেল প্রিচার্ড ছবিটিকে নিখুঁত দাবি করেন। তিনি বলেন, এই ছবিটি পৃথিবীর এমন একটি দৃষ্টিভঙ্গি প্রদান করেছিল, যা আগে কোনো ছবি করতে পারেনি। প্রকাণ্ড মহাবিশ্বে পৃথিবীর অস্তিত্ব কতটা ক্ষুদ্র গ্রহ, তা যেন চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় ছবিটি।

১৯৬০ সালের পরই পৃথিবী নিয়ে দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে শুরু করে। ষাটের দশকের শেষভাগে যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপের মানুষ অনুধাবন করে পৃথিবীকে আজীবন একইভাবে ব্যবহার করা যাবে না। গ্রহের প্রতি আমাদের আরও অনুরাগী হতে হবে। সেই উদ্দেশে ১৯৬৯, ‘৭০ ও ‘৭১ সালে ‘ফ্রেন্ডস অব দ্য আর্থ’, মার্কিন প্রতিষ্ঠান ‘এনভায়রনমেন্টাল প্রোটেকশন এজেন্সি’ এবং ‘গ্রিনপিস’ প্রতিষ্ঠা করা হয়। এই ছবিটি প্রকাশের ১৮ মাস পর ২০ মিলিয়ন মার্কিন নাগরিক পৃথিবী রক্ষার আন্দোলনে রাস্তায় নামে।

পৃথিবী রক্ষা করার জন্য মানুষদের উৎসাহিত করার বেলায় ছবিটি অনেক বেশি প্রভাব ফেলে। এখনো অবদি মহাকাশ থেকে পৃথিবীর পাঠানো ছবিগুলোর মধ্যে ১৯৬৮ সালে বড়দিনের আগে তোলা সেই ছবিটিকে শ্রেষ্ঠ বিবেচনা করা হয়।

;

মাঝরাতে আইসক্রিম, পিৎজা খাওয়া নিষিদ্ধ করল মিলান!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: স্কাই নিউজ

ছবি: স্কাই নিউজ

  • Font increase
  • Font Decrease

আইসক্রিম, পিৎজা অনেকের কাছেই ভীষণ পছন্দের খাবার। তবে ইউরোপসহ পশ্চিমা দেশগুলোতে মাঝরাতে এসব মুখরোচক খাবার ও পানীয় খাওয়ার প্রবণতা বেশি দেখা যায়। ইতালিতে জেলাটিনের তৈরি আইসক্রিম খুব বিখ্যাত। এজন্য ইতালিতে 'জেলাটো সংস্কৃতি' নামে একটা কালচার গড়ে উঠেছে। সম্প্রতি ইতালির মিলানের বাসিন্দাদের জন্য একটি নতুন আইন প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রতিবেদন- স্কাই নিউজ।

মিলানে বসবাসকারীদের অধিকাংশই মাঝরাতে রাস্তায় ঘোরাঘুরি করে আইসক্রিম, পিৎজা, ফাষ্টফুড জাতীয় খাবার ও পানীয় পান করে থাকে। এতে করে সেখানকার এলাকাবাসীদের রাতের ঘুম বিঘ্নিত হয়। নতুন প্রস্তাবিত আইনে শহরবাসীর রাতের ঘুম নির্বিঘ্ন করতে মধ্যরাতের পর পিৎজা ও পানীয়সহ সব ধরনের টেকওয়ে খাবার নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

তবে মধ্যরাতের পর আইসক্রিম নিষিদ্ধ করার চেষ্টা এবারই প্রথম নয়। ২০১৩ সালে, তৎকালীন মেয়র গিউলিয়ানো পিসাপিয়া অনুরূপ ব্যবস্থা বাস্তবায়নের চেষ্টা করেছিলেন কিন্তু 'অকুপাই জেলাটো' আন্দোলনসহ তীব্র প্রতিক্রিয়ার পরে তিনি এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন।

এরপর আবারও মিলানে এ আইনটি প্রস্তাব করেছেন ডেপুটি মেয়র মার্কো গ্রানেল্লি। দেশটির ১২টি জেলা এই প্রস্তাবের আওতাভুক্ত হবে বলে জানিয়েছে মিলান কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে মিলানের মেয়র গ্রানেল্লি বলেন, 'আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে সামাজিকতা ও বিনোদন এবং বাসিন্দাদের শান্তি ও প্রশান্তির মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখা।

প্রস্তাবটি নিম্নলিখিত এলাকাগুলোতে প্রযোজ্য হবে বলে জানিয়েছে মিলান কর্তৃপক্ষ: নোলো, লাজারেটো, মেলজো, ইসোলা, সারপি, ভায়া সিজারিয়ানো, আরকো ডেলা পেস, কোমো-গাইআউলেন্টি, পোর্টা গ্যারিবল্ডি, ব্রেরা, টিসিনিজ এবং দারসেনা-নাভিগলি।

জানা যায়, প্রস্তাবটি মে মাসের মাঝামাঝি থেকে কার্যকর থাকবে এবং নভেম্বর পর্যন্ত চলবে। এটি প্রতিদিন রাত ১২.৩০ টায় এবং সাপ্তাহিক ছুটির দিন এবং সরকারী ছুটির দিনে রাত ১.৩০ টা থেকে প্রয়োগ করা হবে। তবে এ প্রস্তাবের বিরুদ্ধে নাগরিকদের মে মাসের শুরু পর্যন্ত আপিল করার এবং আইন পরিবর্তনের পরামর্শ দেওয়ার সময় রয়েছে।

 

 

 

;

অস্ট্রেলিয়ায় নিখোঁজ কুকুর ফিরলো যুক্তরাজ্যের মালিকের কাছে



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

অস্ট্রেলিয়ায় ঘুরতে এসে নিখোঁজ হয় যুক্তরাজ্যের এক দম্পতির পালিত কুকুর। যুক্তরাজ্যে আসার ১৭ দিন পর মিলো নামের কুকুরটিকে ফিরে পেয়েছেন জেসন হোয়াটনাল নিক রোল্যান্ডস দম্পতি।

হোয়াটনাল এবং তার সঙ্গী নিক সম্প্রতি তাদের কুকুর মিলোকে নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার ভিক্টোরিয়া পরিদর্শনে যান। তারা যখন সোয়ানসিতে বাড়িতে যাচ্ছিলেন তখন মেলবোর্ন বিমানবন্দরে তার হ্যান্ডলার থেকে কুকুরটি পালিয়ে যায়।

সাড়ে পাঁচ বছর বয়সী কুকুরটিকে অবশেষে মেলবোর্নের শহরতলিতে ১৭ দিন পর খুঁজে পাওয়া যায়।


হোয়াটনাল স্কাই নিউজকে বলেন, ‘মিলোকে ফিরে পাওয়াটা খুবই আশ্চর্যজনক ছিল আমার জন্য। যখন আমি আমার প্রিয় মিলোর (কুকুর) সাথে পুনরায় মিলিত হয়েছিলাম, তখন আমি কান্নায় ভেঙে পড়েছিলাম। আমার কান্না দেখে অন্যরাও কেঁদেছিল। এটি সত্যিই আবেগপ্রবণ ছিল।

তিনি আরও বলেন, বিশ্বের অন্য প্রান্তে থেকে মিলোর কথা চিন্তা করে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিলাম। আমরা জানতাম না মিলো কোথায় আছে। এটি বেশ হতাশাজনক ছিল আমাদের জন্য, কিছুটা আশা হারিয়ে ফেলেছিলাম। তাকে ফিরে পাবো ভাবিনি।

মিলোকে পাওয়ার জন্য সামাজিক মাধ্যমে জানিয়েছিলাম, তখন স্বেচ্ছাসেবকদের কাছ থেকে সাহায্য আসে, তারা মিলোর সন্ধান দেয়। মিলোকে আমাদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য তাদের ধন্যবাদ।

;