ঠাকুরগাঁও থেকেও দেখা মিলছে কাঞ্চনজঙ্ঘার অপরূপ দৃশ্যের!
কাঞ্চনজঙ্ঘা একটি পর্বতশৃংঘ। আর এই পর্বতশৃঙ্গের অপরূপ দৃশ্যে মুগ্ধ হন যে কেউ। যাদের সরাসরি এই পর্বতশৃঙ্গে যাওয়ার সৌভাগ্য হয় না তারা একটু হলেও দুর থেকে হেমন্তের শেষে ও শীত ঋতুর শুরুতে দেখতে পান এই কাঞ্চনজঙ্ঘা পর্বতশৃংঘ। প্রতিবছর দেশের উত্তরের জেলা ঠাকুরগাঁও ও পঞ্চগড়ে শীতের আগমনের সময় এই পর্বতটি দেখা যায়।
এবারও উত্তরের জেলা ঠাকুরগাঁওয়ের বিভিন্ন জায়গা থেকে শুভ্র সাদা বরফে আচ্ছাদিত পর্বতমালাটি দেখা যাচ্ছে। বিশেষ করে ভোরের আধার কেটে সূর্যের হালকা আলোয় ও বিকাল থেকে সন্ধ্যার আগ মুহুর্ত পর্যন্ত দেখা যায় পৃথিবীর তৃতীয়তম উচ্চ এই পর্বতটি।
বছরের এই সময়ে বৃষ্টি হওয়ায় আর বাতাসে ধুলা, মেঘ-কুয়াশামুক্ত থাকায় অনেক দূরের কাঞ্চনজঙ্ঘা পরিষ্কারভাবে দেখা যাচ্ছে ঠাকুরগাঁও থেকে। বিগত কয়েক বছর ধরে এই সময়ে এই জেলা থেকে এই পর্বত দেখা যায়। তবে গতবারের থেকে ঠাকুরগাঁওয়ে এবার আরও পরিষ্কারভাবে দেখা যাচ্ছে কাঞ্চনজঙ্ঘা।
জানা যায়, কাঞ্চনজঙ্ঘা পর্বতটি অবস্থিত ভারতের সিকিম ও নেপালে। এর উচ্চতা ২৪ হাজার ১৬৯ ফুট বা ৮ হাজার ৫৮৬ মিটার।
পর্যটকদের কাছে অন্যতম জনপ্রিয় একটি আকর্ষণ কাঞ্চনজঙ্ঘা। ভারতের অন্যতম শৈল শহর দার্জিলিং, কালিম্পং এর প্রধান আকর্ষণও কাঞ্চনজঙ্ঘা। তাইতো দূর থেকে সূর্যের আভায় পর্বতটির একেক সময় একেক রূপ দেখে মুগ্ধ হচ্ছেন ছোট থেকে শুরু করে যেকোন বয়সের মানুষ।
আর এমন পর্বতের দৃশ্য দেখতে ফাঁকা মাঠ, উঁচু দালান ও ফসলের মাঠে সাত সকালে, দুপুরে ও বিকালে অবস্থান করেন অনেকে। এমনকি দুর দূরান্ত থেকে অনেকে কাঞ্চনজঙ্ঘার অপরূপ দৃশ্য একপলক দেখতে ছুটে আসছেন ঠাকুরগাঁও ও পঞ্চগড়ে।
আশরাফুল ইসলাম। পেশার সুবাধে থাকেন ঢাকায়। সম্প্রতি ঠাকুরগাঁওয়ে বাড়িতে এসেছেন তিনি। মঙ্গলবার (০১ নভেম্বর) বিকালে ছোট্ট সোনামনিদের নিয়ে বেড়িয়েছেন কাঞ্চনজঙ্ঘার দেখার উদ্দ্যেশে। তিনি বলেন, প্রতিবছর এই সময়ে আমাদের ঠাকুরগাঁওয়ে ফাকা জাগায় ও উঁচু জায়গাব বা বিল্ডিং থেকে সকালে ও বিকালে আবহাওয়া পরিষ্কার ও ভালো থাকলে পরিস্কার ও ইস্পস্ট দেখা যায়। তাই ঢাকা থেকে এসে আজ ছেলে মেয়েদের নিয়ে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখার জন্য বালিয়াডাঙ্গীর বড়পলাশবাড়ির যুগিবস্তি পুলের কাছে এসছি। এসে সবাই মিলে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখলাম খুবই ভালো লাগল। অন্যান্য বারের থেকে এবার আরও বেশি পরিষ্কার দেখা গেল পর্বতটি।
ওই উপজেলার স্থানীয় হুসাইন আহমেদ নামে এক যুকবও এসেছেন কয়েকজন মিলে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখেতে। তিনি বলেন, ভবিষত্যে সিকিম বা নেপাল যেতে পারবো কিনা তার কোন ঠিক নেই। তবে সিকিম বা নেপালে অবস্থিত কাঞ্চনজঙ্ঘা ঠাকুরগাঁও থেকে দেখতে পেরে খুব ভালো লাগছে।
রংপুর থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখার উদ্দ্যেশে ঠাকুরগাঁওয়ে আত্মীয়ের বাসায় এসেছেন মো. নূর জামাল। তিনি জানান, সকাল থেকে অবস্থান করছিলেন সদর উপজেলার বুড়ি বাধ এলাকায়। তবে সকালে আসতে একটু দেরি হওয়ায় কাঞ্চনজঙ্ঘা তখন দেখতে পারেননি। অধির অপেক্ষার পর বিকালে স্বচোখে কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখতে পেতে তিনি মুগ্ধ ও খুশি।