ঠাকুরগাঁওয়ে কমলা বাগান করে চমক সৃষ্টি  

  • রবিউল এহ্সান রিপন, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেট, বার্তা ২৪.কম, ঠাকুরগাঁও 
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

থোকায় থোকায় ঝুলছে কমলা, ফলনে ভরে গেছে পুরো বাগান। চারপাশে কমলার চোখ জুড়ানো দৃশ্য বিমোহিত করছে সবাইকে। দেখতে যেমন মনোমুগ্ধকর তেমনি স্বাদে অনন্য। রসালো ও ভিটামিন সি সমৃদ্ধ এ কমলালেবু ফলটি চাষ করে কৃষিতে নতুন চমক সৃষ্টি করেছেন জয়নাল আবেদীন।

কমলা বাগানের মনোমুগ্ধকর দৃশ্য আকৃষ্ট করে সবাইকে। এমন দৃশ্য দেখতে ভারতের দার্জিলিংসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছুটে যান ভ্রমণ পিপাসু মানুষেরা। সেই দার্জিলিং জাতের কমলা চাষ করে তাক লাগিয়েছেন ঠাকুরগাঁওয়ের জয়নাল আবেদীন। তার পুরো বাগানজুড়ে কমলা ফলনে ভরে গিয়েছে। কমলা বাগানের এমন দৃশ্য দেখতে বাগানে ভীড় জমাচ্ছেন দর্শনার্থীরা।

বিজ্ঞাপন

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রাজাগাঁও ইউনিয়নের দক্ষিণ বঠিনা গ্রামের বাসিন্দা জয়নাল আবেদীন। পেশায় তিনি একজন সরকারি চাকরিজীবী। চাকরির সুবাধে বিভিন্ন স্থানে কমলার বাগান দেখে মুগ্ধ হোন তিনি। শখের বসে চার বছর আগে বাড়ির পাশে শুরু করেন বাগান। চুয়াডাঙ্গা থেকে নিয়ে আসেন মাল্টা ও কমলার চারা। তার এক বছর পর থেকে ফলন আসা শুরু করে তার। মাল্টার ফলন শেষ হওয়ার পর এখন শুধু কমলার ফলন। গত বছর কমলার বেশি ফলন না আসলেও এবারে ফলনে ভরে গেছে বাগান।

ছবি: দার্জিলিং জাতের কমলার গাছ

তার বাগানে ৩ একর জমি জুড়ে রয়েছে তিন শতাধিক দার্জিলিং জাতের কমলার গাছ। গত বছর ফলন কম হওয়ায় বাগান থেকে এক লাখ ত্রিশ হাজার টাকার ফল বিক্রি করেছেন তিনি। এবারে ফলনের মাত্রা ছড়িয়ে যাওয়ায় প্রায় ৫ থেকে ৬ লাখ টাকার ফলন বিক্রির আশা তার। কমলা বাগান থেকে স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন জায়গায় পাইকারদের কাছে বিক্রি করছেন তিনি।কৃষি অফিসের দেওয়া তথ্যমতে, জেলায় ছোট বড় মিলে ৭ টি বাগানে ৭.২ হেক্টর জমিতে কমলার চাষ হয়েছে। ক্রমশ বেড়ে চলছে ফলটির আবাদ। কমলা চাষে যুক্ত হচ্ছেন নতুন নতুন উদ্যোক্তারা।

বিজ্ঞাপন

কমলা বাগানের এমন দৃশ্য দেখতে প্রতিনিয়ত ভীড় জমান দর্শনার্থীরা। চারদিকে এমন দৃশ্য দেখে আর বাগানে কমলা খেয়ে তুষ্টির কথা জানান তারা।শহর থেকে কমলা বাগান দেখতে আসা পারভেজ বলেন, কমলা বাগানে এত সুন্দরভাবে কমলা ঝুলে আছে যা দেখে মন জুরিয়ে গেল। কমলা বাগান দেখতে ভারতে যেতে চেয়েছিলাম। কিন্তু নিজ শহরে কমলা বাগান দেখে আমি মুগ্ধ। আর কমলা খেয়ে দেখলাম অনেক সুস্বাদু।

পরিবার নিয়ে বাগানে আসা নাজমা আক্তার বলেন, ‘পরিবার নিয়ে বাগানে এসেছি। বাচ্চারা কমলা বাগান দেখে অনেক খুশি। আর গাছ থেকে কমলা পেরে খেতে পারে তাদের আনন্দের শেষ নেই। আসলে বাগানটিতে এসে আমরা সবাই খুশি।’

ছবি: বাগানের পরিচর্যায় রফিকুল ইসলাম

বাগানের পরিচর্যা ও প্রতিনিয়ত কাজ করেন রফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, বাগান দেখাশুনাসহ কমবেশি সব কাজ করি। এই বাগানে আমরা ৬/৭ জন কাজ করি। এখানে কাজ করে আমাদের সংসার ভালোই চলছে।

শখ থেকেই সফলতার হাতছানি পেয়েছেন বাগান মালিক জয়নাল আবেদিন। তিনি বলেন, চাকড়ির সুবাদে বিভিন্ন জায়গায় যেতে হত। কমলা বাগান দেখে আমি মুগ্ধ হয়েই নিজে বাগান করার ইচ্ছা জাগে। সেই মোতাবেক এই বাগান করেছি। পরের বছরে বাগানের পরিধি আরো বাড়িয়ে কমলার বাগানে চমক সৃষ্টি করতে চাই। নতুন উদ্যোক্তারা কমলার চাষ করলে সার্বিক সহযোগিতা করা হবে।

ঠাকুরগাঁও কৃষি অফিসের উপ-পরিচালক সিরাজুল ইসলাম বলেন, জমি উপযোগী হওয়ায় জেলায় কমলা ও মাল্টা বাগানের আবাদ ক্রমশ বেড়েই চলছে। বাগান করে সফল হচ্ছেন কৃষকেরা। কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে সার্বিক তত্ত্বাবধান ও পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।