আত্মসমর্পণ পরবর্তী কয়েক দিনে যা ঘটেছিল



আশরাফুল ইসলাম, পরিকল্পনা সম্পাদক, বার্তা২৪.কম
আত্মসমর্পণ পরবর্তী কয়েক দিনে যা ঘটেছিল

আত্মসমর্পণ পরবর্তী কয়েক দিনে যা ঘটেছিল

  • Font increase
  • Font Decrease

ভারতীয় বাহিনী ও মুক্তিবাহিনীর মিলিত প্রাণপণ সমরপ্রচেষ্টায় কোঁণঠাসা হয়ে বর্বর পাকিস্তান সেনাবাহিনী আত্মসমর্পণে বাধ্য হলেও পরবর্তী কয়েকটি দিন বেশ ঘটনাবহুল ভাবেই কাটে। ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ পরবর্তী কয়েকটি দিনে ঘটে যাওয়া অনেক খবরই প্রকাশ্যে আসেনি। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে সংবাদপত্রগুলিতে ধ্বংসলীলা ও সাংবাদিক-বুদ্ধিজীবীদের নির্বিচার হত্যার ফলে আত্মসমর্পণ পরবর্তী দিনগুলির ঘটনাপ্রবাহ দেশিয় গণমাধ্যমে সেভাবে তুলে ধরা সম্ভব হয়নি। কিন্তু ভারতীয় গণমাধ্যম মুক্তিযুদ্ধের প্রধান মিত্র দেশ হওয়ায় সেখানকার গণমাধ্যমে, বিশেষ করে প্রতিবেশি রাজ্য পশ্চিমবঙ্গের সংবাদপত্র অত্যন্ত নিষ্ঠার সঙ্গে বহু আঙ্গিকে সেই সময়কার ঘটনাপ্রবাহকে ধারণ করতে সচেষ্ট ছিল।

অন্বেষণ করার চেষ্টা করেছি, আত্মসমর্পণ পরবর্তী দিনগুলিতে কলকাতার সংবাদপত্র কি ধরণের খবর দিয়েছিল। অত্যন্ত আশার কথা হচ্ছে, নির্মোহ ইতিহাসের চর্চার জন্য সেই সময়কার ভারতীয় গণমাধ্যমগুলো এতোটাই নিবেদিত ছিল যে পত্রিকাগুলির প্রায় পুরো সংবাদ আয়োজনই ছিল সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশকে নিয়ে। আমরা তাতে দেখতে পাচ্ছি, যুদ্ধে সব ধরণের আন্তর্জাতিক রীতিনীতি লঙ্ঘন করে কিভাবে মানবাধিকার ভূলুণ্ঠিত করেছিল হানাদার বাহিনী। নির্বিচার সেই গণহত্যার যে বিবরণ বিভিন্ন সময় উঠে এসেছে, ভারতীয় গণমাধ্যমে বিধৃত বিবরণের তুলনায় তা নেহায়েতই সামান্য। 


মুক্তিযোদ্ধাদের গ্রামে গ্রামে চলে যাওয়ার নির্দেশ

২১ ডিসেম্বর ১৯৭১-এ কলকাতার প্রভাবশালী দৈনিক যুগান্তর (অধূনালুপ্ত) ‘যুদ্ধ শেষ, এখন পুনর্বাসন/মুক্তিযোদ্ধাদের গ্রামে গ্রামে চলে যাওয়ার নির্দেশ’ শীর্ষক এক খবরে জানায়, ‘পশ্চিম পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর অত্যাচারে বাংলাদেশের যে লক্ষ লক্ষ লোক নিরাশ্রয় হয়ে ভারতের মাটিতে চলে গিয়েছেন, তাদের পুনর্বাসনের কাজ ত্বরান্বিত করার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ সকল ছাত্র মুক্তিযোদ্ধাদের গ্রামে গ্রামে চলে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।’

‘এক আবেগময় পরিবেশে অনুষ্ঠিত এই সভায় উপস্থিত ছাত্রছাত্রী মুক্তিযোদ্ধারা দীর্ঘদিন পরে একে অপরকে দেখে অশ্রুবর্ষণ করতে থাকেন। দীর্ঘ এই ন’মাসে অনেকের আপনজন, ভাই বোন বন্ধু প্রাণ হারিয়েছেন।’

‘মুজিবরকে জেল থেকে শীঘ্রই ছেড়ে দেওয়া হবে’

একই দিনে দৈনিকটি রাওয়ালপিন্ডির রয়টার্স এর বরাত দিয়ে অপর এক খবরে জানায়, পাকিস্তানে কারা অন্তরীন বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা শেখ মুজিবুর রহমানকে মুক্তি দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন নতুন ক্ষমতা নেওয়া জুলফিকার আলি ভুট্টো।

‘মুজিবকে মুক্তি দেওয়া হবে/মিঃ ভুট্টোর ঘোষণা’ শিরোনামে ওই খবরে জানানো হয়, ‘আজ রাত্রে মিঃ ভুট্টো জানিয়েছেন, শেখ মুজিবরকে জেল থেকে শীঘ্রই ছেড়ে দেওয়া হবে এবং তাকে গৃহবন্দী ধরণে অন্তরীণ রাখা রাখা হবে। এখানে বিদেশি সংবাদদাতাদের জন্য আয়োজিত এক সংবর্ধনা-সভায় মিঃ ভুট্টো এ ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, মুজিব এখনও জেলে আছেন।’


ইতিহাসের নৃশংস্যতম বর্বরতা চালানোর পরও যুদ্ধবন্দী পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে মানবিক আচরণের ধৃষ্ঠতা সেই সময়ের বিশ্বসম্প্রদায়কে বাঙালির মানবিক সত্ত্বার পরিচয় মেলে ধরে। পাক বন্দিরা কি কি সুবিধা পাবে-এ বিবরণও প্রকাশ করেছিল যুগান্তর।

বাঙালি কর্মচারীদের সঙ্গে বৈষম্য কতটা প্রকট ছিল তাও তুলে ধরেছিল দৈনিকটি। তাতে লেখা হয়, ‘ঢাকা পুলিশ লাইনস এর বাঙালি ডি এস পি শামসুর রহমান, ইনসপেক্টর আবদুর রশিদ চৌধুরী আমাকে বলেন যে, এই অবাঙালি পুলিশ কনস্টেবলরা কেউ বাঙালি অফিসারদের নিয়ন্ত্রণের মধ্যে ছিলেন না। বাঙালি এসপি, এডিশনাল এসপি কেউ এদের কোথাও মোতায়েন করতে পারতেন না। বাঙালি পুলিশদের কম পয়সার রেশন দেওয়া হত। কিন্তু অবাঙালি পুলিশদের দেওয়া হত বিনামূল্যের রেশন। এছাড়া অবাঙালি পুলিশরা বাজারে ঢুকে প্রায়ই দাম না দিয়ে জিনিসপত্র নিয়ে চলে যেত। সেখানে কিছু করার ক্ষমতা বাঙালি পুলিশদের ছিল না।

পাকিস্তান পুলিশের আনুগত্য ছেড়ে কিভাবে স্বাধীন বাংলাদেশের পুলিশের আত্মপ্রকাশ ঘটেছিল তা জানিয়ে খবর বেরিয়েছিল। খবরে বলা হয়, ‘‘ঢাকা ডিআইজি আবুল কাদের শরকুদ্দিন, ডিআইজি সিআিইডি মেসবাউদ্দিন, এডিশনাল এসপি সেকান্দার আলি-এঁরা সকলেই তাদের পোশাকের কাঁধ থেকে ‘ইস্ট পাকিস্তান পুলিশ’ (ই পি পি) প্রতীক তুলে দিয়েছেন। প্রশ্নের উত্তরে তারা বলেন যে, তাঁরা এখন বাংলাদেশ পুলিশ। সেকান্দার আলির কাঁধে দেখলাম ‘বি পি’ লাগানো হয়েছে। অর্থাৎ ‘বেঙ্গল পুলিশ’ লাগানো হয়েছে। অবিভক্ত বাংলাদেশে পুলিশের চাকুরির সময় এটি লাগাতেন। এখন থেকে তিনি ‘বাংলাদেশ পুলিশ’ এর প্রতীক চিহ্ন হিসেবে এই ‘বি পি’ ব্যবহার করছেন।

এক পাকিস্তানি পুলিশ সদস্যকে ঘিরে হৃদয়স্পর্শী ঘটনা

খবরে বলা হয়, ‘অস্ত্র জমা নেওয়ার পর অবাঙালি পুলিশদের ‘যুদ্ধবন্দী’ হিসেবে ভারতীয় ও মুক্তিবাহিনীর সামরিক প্রহরায় ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় রাখা হবে। কিন্তু সীমান্ত প্রদেশের কোহাট জেলার বাস্তান খানকে নিয়ে অসুবিধা দেখা দিয়েছে। তাকে নিরস্ত্র করা হয়নি। সে খুব ভালো বাংলা বলতে পারে এবং বাঙালিদের সঙ্গে তাঁর অনেক দিনের বন্ধুত্ব। সে কোথায় যেতে চায়, সে জন্য তাকে মনস্থির করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে।


ইউ এন আই এর বিবরণ

ঢাকা থেকে ইউ এন আই প্রতিনিধি জানাচ্ছেন, পাকিস্তান সেনাবাহিনীল প্রায় এক লক্ষ অফিসার ও সৈন্য আজ বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে ভারতীয় কমান্ডারদের হাতে অস্ত্র সমর্পণ করেছে। উল্লেখযোগ্য, বাংলাদেশে নিযুক্ত পাক বাহিনীরে সেনাধ্যক্ষ এ এ কে নিয়াজি তিন দিন আগে নিজে আত্মসমর্পণ করেন এবং সমগ্র পাক বাহিনীকে আত্মসমর্পণ করার কথা বলেন।

বুদ্ধিজীবী হত্যার ঘৃণ্য কারিগর ফরমান আলি

২০ ডিসেম্বর ১৯৭১-এ যুগান্তরে প্রকাশিত সুখরঞ্জন সেনগুপ্তের এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ‘আত্মসমর্পণের দিন পাকিস্তানি সৈন্যরা ঢাকার দুই শতাধিক বুদ্ধিজীবীকে হত্যা করার ঘটনায় ঢাকা নগরী কাল থেকে বিক্ষোভে ফেটে পড়ছে এবং শহরের রাস্তায় ইতস্তত অনেকগুলো মরদেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়। রাত্রে মাঝে মাঝে মেশিনগানের গুলির শব্দও কানে ভেসে আসে।’

সেই সময়ই শহীদ বুদ্ধিজীবীদের অনেকের নাম প্রকাশ করে দৈনিকটি। তাতে উল্লেখ করা হয়, ‘ঢাকার যে দুই শতাধিক বুদ্ধিজীবীকে নৃশংস্যভাবে হত্যা করা হয়েছে, তাদের মধ্যে আছেন-ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যক্ষ মুনীর চৌধুরী, ইত্তেফঅক পত্রিকার কার্যনির্বাহক সম্পাদক সিরাজউদ্দীন হোসেন, সংবাদ পত্রিকার যুগ্ম সম্পাদক শহিদুল্লাহ কায়সার, পি পি আই’র নিজামউদ্দিন আহমদ, বিবিসি ও ভয়েস অব আমেরিকার সংবাদদাতা সৈয়দ নাজমুল হক, সাপ্তাহিক ললনার মহম্মদ আখতার, অবজারভার পত্রিকার এস এ মান্নান, পূর্বদেশের গোলাম মোস্তফা, অধ্যাপক মোকাবুল হায়দার চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ডঃ আবুল খায়ের, অধ্যাপক গিয়াসউদ্দিন আহমদ, গণিতের অধ্যাপক সাদউদ্দিন, ড. মণিরুজ্জামান, ঢাকা মেডিকেল কলেজের ডা. ফজলে রাব্বি, ডা. আলিম চৌধুরী প্রভৃতি।’

সামরিক অফিসার এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত,  তাদের কয়েকজনের নাম তাঁরা পেয়েছেন। সেগুলি তাঁরা দু’একদিনের মধ্যে প্রকাশ করবেন। ঐ লোকদের নিশ্চিহ্ন করা প্রয়োজন বলে মিত্রবাহিনীর এক মুখপাত্র মনে করেন।’

একজন বিভাগীয় সেক্রেটারি প্রতিবেদককে বলেন, ‘পাকিস্তানি বাহিনীর মেজর জেনারেল রাও ফরমান আলি এই হত্যাকাণ্ডের নায়ক। ফরমান আলি, সেক্রেটারি পর্যায়ের কর্মকর্তাদের খুন করার পরিকল্পনা করে তাঁদের সবাইকে ১৪ ডিসেম্বর ক্যান্টনমেন্টে ডেকে পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁরা কেউ উপস্থিত হননি। সকলেই অন্যত্র চলে গিয়েছিলেন। বুদ্ধিজীবীদের অপহরণ করে নিয়ে গিয়ে ঢাকার অবাঙালি এলাকা রায়ের বাজারের কাছে জলঅ জমিতে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। নিহতের মধ্যে একজন মেয়ে আছেন, তাঁর চোখ উপড়ে নেওয়া হয়েছে। বেয়নেট দিয়ে তাঁর মুখ ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। তাঁর পরিচয় জানা যায়নি। অধিকাংশ মৃতদেহের বুকে, পেটে, মাথায় গুলি ও বেয়নেটের চিহ্ন।’

পাকিস্তানের ক্ষমতার পটপরিবর্তনের খবরও স্থান পেয়েছিল দৈনিকটির খবরে। ‘ইয়াহিয়া গেলেন, এবার প্রেসিডেন্ট ভুট্টো (সেই সঙ্গে চিফ মার্শাল ল’এডমিনিস্ট্রেটর)’ শীর্ষক খবরে জানা যায়, ‘পাকিস্তান পিপলস পার্টির সভাপতি জেড এ ভুট্টো আজ পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ও প্রধান সামরিক প্রশাসকরূপে কার্যভার গ্রহণ করেছেন বলে পাক বেতারে ঘোষণা করা হয়। ১৩ বছর পরে একজন অসামরিক ব্যক্তি পাকিস্তানের প্রশাসক হলেন। ভারতের কাছে পাকিস্তানের অপমানজনক পরাজয়ের দরুণ জেনারেল ইয়াহিয়া খানের বিরুদ্ধে দেশব্যাপি বিক্ষোভে ফেটে পড়ায় প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া গকাল প্রতিনিধিত্বমূলক একটি সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের এবং পদত্যাগের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন। প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়ার জরুরি আহ্বানে মিঃ ভুট্টো বিদেশ থেকে ইসলামাবাদে পৌছানোর অল্পক্ষণ পরই জেনারেল ইয়াহিয়া তাঁর হাতে ক্ষমতা অর্পণ করেন।’

‘আজ রাতে প্রেসিডেন্ট জেড এ ভুট্টো ঘোষণা করেছেন যে, জেনারেল ইয়াহিয়া খান এবং তাঁর সামরিক চক্রের অপর কয়েকজন শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তি অবসর গ্রহণ করেছেন। তিনি আরও বলেছেন যে, লেঃ জেনারেল গুলহাসান খাঁ সেনাবাহিনীর অধ্যক্ষ হয়েছেন। পাকিস্তানের প্রধান সামরিক প্রশাসকরূপে শপথগ্রহণের পরই জেড এ ভুট্টো উচ্চ পদস্থ অসামরিক ও সামরিক অফিসারদের সঙ্গে বৈঠবে বসেন বলে পাকিস্তান রেডিওর সংবাদে প্রকাশ।’

প্রথম ভাষণেই ভারতের বিরুদ্ধে বদলা নেওয়ার হুক্কার ভুট্টোর

দিল্লি থেকে বার্তা সংস্থা পি টি আই ও ইউ এন আই এর বরাতে এক প্রতিবেদনে যুগান্তর জানায়, ‘নয়া পাক প্রেসিডেন্ট মিঃ জেড এ ভুট্টো আজ রাত্রে তাঁর বেতার ভাষণে বলেছেন, বাংলাদেশ পাকিস্তানের অবিচ্ছেদ্য অংশ। দেশবাসীর কাছে তাঁর আবেদন, ‘আমাকে কিছু সময় দিতে হবে।’

ফরমান আলি ও নিয়াজি ফোর্ট উইলিয়ামে?

আরেক খবরে প্রকাশ, পাক হানাদার বাহিনীর দুই সেনা কর্তা নিয়াজি আর ফরমান আলিকে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ইস্টার্ন কমান্ডের সদর দপ্তর ফোর্ট উইলিয়াম-এ নেওয়ার খবরও জানায় দৈনিকটি।

তাতে উল্লেখ করা হয়, ‘সামরিক বাহিনীর এক মুখপাত্রকে এই প্রশ্ন করা হলে তিনি কোন মন্তব্য করতে অস্বীকার করেন। এ দিকে এ দিন বিশেষ বিমানে করে দমদম বিমানঘাটিতে আনা হয়েছিল বলে আমাদের রিপোর্টার মনে করেছেন। তবে ঐ রিপোর্টারকে কাছে যেতে দেওয়া হয়নি। ভারতীয় সেনারা কিছুক্ষণের মধ্যেই এই দুই যুদ্ধবন্দীকে হেলিকপ্টারে করে এক অজ্ঞাত স্থানে পাঠিয়ে দিয়েছেন।’

‘রিপোর্টার দূর থেকে অনুমান করেছেনঃ এদের মধ্যে একজন পাক জেনারেল নিয়াজি ও অন্যজন মেজর জেনারেল ফরমান আলি। যুগান্তরের কাছে অবশ্য খবর আছে যে, নিয়াজি ও ফরমান আলিকে ফোর্ট উইলিয়ামে রাখা হয়েছে।’

   

সম্মানসূচক ডি. লিট উপাধি পেল 'বিড়াল'!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে 'ম্যাক্স' নামের একটি বিড়ালকে সম্মানসূচক ‘ডক্টরেট অব লিটারেচার’ বা ডি. লিট উপাধিতে ভূষিত করা হয়েছে। দেশটির ভারমন্ট স্টেট ইউনিভার্সিটির ছাত্রদের স্নাতক অনুষ্ঠানে বিড়ালটিকে এই সম্মানসূচক ডিগ্রি দেওয়া হয়। তবে সেই অনুষ্ঠানে বিড়ালকে আমন্ত্রণ জানানোর নিয়ম না থাকায় উপস্থিত ছিল না ম্যাক্স। 

বিশ্ববিদ্যালয়টির কর্তৃপক্ষ বলছে, অনুষ্ঠানে বিড়ালটি উপস্থিত ছিল না। তাই বিড়ালের মালিক অ্যাশলে ডোর কাছে খুব শিঘ্রই এই ডিগ্রি পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।   

বন্ধুসুলভ এই বিড়ালটিকে তার ইঁদুর শিকারের দক্ষতা বা অতিরিক্ত ঘুমানোর জন্য নয় বরং তার সহচার্যের জন্যই স্বীকৃতি দিয়েছে।   বিড়ালটিকে এই ডিগ্রিতে ভূষিত করা হয়। ভারমন্ট স্টেট ইউনিভার্সিটির ক্যাসেলটন ক্যাম্পাস।

ব্রিটিশ গণমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

সম্মানসূচক ডি. লিট উপাধি পেল 'বিড়াল'!

বিশ্ববিদ্যালয়টি একটি ফেসবুক পোস্টের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, ম্যাক্স দ্য ক্যাট, অনেক বছর ধরেই ক্যাসেলটন পরিবারের একজন আদুরে সদস্য। ভারমন্ট স্টেট ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাসের প্রবেশদ্বারের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া রাস্তায় পাশেই বসবাস করে এক পরিবার। বিড়ালটি সেই পরিবারেরই পোষা।

বিড়ালের মালিক অ্যাশলে ডো বলেন, ‘বিড়ালটি ঠিক করেছে সে ক্যাম্পাসে যাবে। এরপর থেকেই সে কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আড্ডা দিতে শুরু করে। আর শিক্ষার্থীরাও তাকে আদর করতে শুরু করে।’

বিড়ালটি প্রায় চার বছর ধরে ক্যাম্পাসে আসা যাওয়া করছে। বিড়ালটিকে পথের ধারে শুয়ে থাকতে দেখলেই সবাই তার সঙ্গে সেলফি নেয়।

এমনকি সাবেক ছাত্ররাও যখনই ক্যাম্পাসে আসেন তারা তখনই বিড়ালটির খোঁজ নিতে তার মালিক ডো-এর কাছে যান। ডো তাদের কাছে বিড়ালটির মা হিসেবেই বেশি পরিচিত।

;

৯৩ বছর বয়সে বৃদ্ধের অবিশ্বাস্য কর্মকাণ্ড



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
বৃদ্ধ জন স্টারব্রুক

বৃদ্ধ জন স্টারব্রুক

  • Font increase
  • Font Decrease

শৈশবে খেলা, কৈশরে পড়ালেখা, যৌবনে চাকরি, মধ্যবয়সে সংসার, বৃদ্ধবয়সে একটা মাথা গোজার ঠাঁই খুঁজে অবসরে সময় কাটিয়ে দেওয়া। কপাল খারাপ থাকলে বিছানাতেই শোয়া বা আধশোয়া থেকে মৃত্যুর দিন গোণা। সাধারণত এভাবেই মানুষের জীবন কেটে যায়। অনেকে আবার মধ্যবয়সের পরেই নানারকম রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। অথবা শরীরকে বিভিন্ন রোগের আবাসস্থল বানিয়ে দুর্বল হয়েই বেঁচে থাকেন। তবে খড়ের গাদায় সূচের মতো দু-একজন থাকে যারা একেবারেই ব্যতিক্রম। তেমনভাবেই আলোচনায় এসেছেন ৯৩ বছরের এক বৃদ্ধ।  তার ব্যতিক্রমী জীবনযাপনের ধারাই আলোড়ন সৃষ্টি করেছে যুসমাজে।     

যুক্তরাজ্যের বাসিন্দা জন স্টারব্রুক। তিনি একজন ওয়াটার পোলো খেলোয়াড়। এটি মূলত পানির মধ্যে বাস্কেটবলের মতো একধরনের খেলা। এইখেলার সাথে কুস্তি খেলারও কিছুটা সাদৃশ্য রয়েছে। জনের বর্তমান বয়স ৯৩ বছর। এই বয়সেও যথেষ্ট সুস্থ এবং সবল তিনি। সমবয়েসীদের যেখানে সোজা হয়ে দাঁড়াতেও ২ জনের সহায়তা লাগে, সেখানে এখনো ম্যারাথনে দৌড়ে বেড়াচ্ছেন তিনি। পাশাপাশি বেশ দক্ষ সাঁতারুও বটে! ৮০ বছরেরও বেশি সময় ধরে সাঁতার কাটা অব্যাহত রেখেছেন তিনি।

প্রায় শতাব্দি ছুঁই ছুঁই বৃদ্ধের এমন কারিশমা দেখে চোখ ছানাবড়া হবার উপক্রম। জন মূলত একজন সাঁতারু। পেশাগতভাবে না হলেও অনেক ছোটবেলা থেকেই তিনি সাঁতার কাটেন তিনি। দেশের সম্মানজনক অনেপ্রতিযোগীতায় একাধিক বার চ্যাম্পিয়নের খেতাবও জেতেন। চাকরি করেছেন ‘ব্রিটিশ আর্মি মেডিক্যাল কর্পস’-। সেখানেও সাঁতারের দক্ষতার কারণে তার বেশ সুনাম ছিল।   

ম্যারাথনে দৌড়াচ্ছেন ৯৩ বছরের জন

তবে সাঁতারের পাশাপাশি এখন ম্যারাথেনেও অংশগ্রহণ করেছেন জন। ৫২ টির বেশি ম্যারাথনের দৌড় শেষ করেছেন তিনি। জানালেন এই বয়সেও তার এমন চ্যালেঞ্জিং সব কাজের অভিজ্ঞতা। সুস্থতা ধরে রাখার রহস্যও ফাঁস করলেন সকলের কাছে। ব্রিটিশ নাগরিক জন বন্ধুদের কাছে ‘দ্য লিজেন্ডনামেই পরিচিত। একই নামে তাকে আখ্যায়িত করছে ব্রিটিশ গণমাধ্যমগুলো

জন স্টারব্রুক জানান, তিনি এখনো সপ্তাহের ৬ দিনই জিমে যাতায়াত করেন। বিশেষ কোনো খাদ্যাভাস নেই তার। খাদ্যতালিকায় প্রচুর পরিমাণে শাক-সবজি রাখতে পছন্দ করেন- এই যা। তাছাড়া প্রতিদিন সকালে পোরিজ খান তিনি। তবে তিনি কখনো ধূমপান করেননি। অ্যালকোহলও খুব সীমিত পরিমাণে সেবন করতেন। মূলত এই বয়সেও এটা সবল থাকার পেছনে বংশ পরম্পরায় পাওয়া নিজের জীন আসল কারণ- বিশ্বাস করেন জন।

কারণ যাই হোক, প্রানবন্ত এই বৃদ্ধ বিশ্ববাসীকে অবাক করেছে। তার মতোই দৃঢ় মানসিকতা ধরে রাখার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন যুবক-যুবতীরা।

তথ্যসূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

;

প্রশ্ন আর উত্তর যেন পরস্পরের সাংঘর্ষিক!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

প্রশ্ন থাকে এক আর তার উত্তর হয় ভিন্ন। এমন উত্তরপত্রের ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রায়ই দেখা যায়। এবার এমনই এক উত্তরপত্রের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ইনস্টাগ্রামে ভাইরাল হয়েছে। যা দেখে রীতিমতো সবাই অবাক! তবে এই ঘটনার জন্ম দেওয়া দেশটি বাংলাদেশ নয়, প্রতিবেশী দেশ ভারতের একটি হিন্দি পরীক্ষায় ঘটেছে এমন কাহিনী।

ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রকাশিত ভিডিওতে পরীক্ষার্থীর এমন উত্তর দেখে শিক্ষককেও হাসতে দেখা যায়। 

ভিডিওটি ইনস্টাগ্রামে শেয়ার করা হয়েছে @n2154j অ্যাকাউন্টের একটি আইডি থেকে।

ওই ভিডিওতে দেখা যায়, একটি প্রশ্ন ছিল এমন, সংযুক্ত ব্যঞ্জনবর্ণ (যৌগিক ব্যঞ্জনবর্ণ) কী? এই প্রশ্নের উত্তরে শিক্ষার্থীটি একটি খাদ্য রূপক দিয়ে উত্তর দিল: "মাটার পনির এবং সব মিশ্র সবজি একত্রিত একটি খাবার।"

আরেকটি প্রশ্ন ছিল "অতীত কাল কাকে বলে?" এর উত্তরে ওই পরীক্ষার্থি লিখেছে, "যখন অতীত আমাদের অতীতের আকারে আসে, তখন তাকে অতীত কাল বলা হয়।"

ভিডিও অনুযায়ী আরও একটি প্রশ্ন ছিল "বহুবচন কাকে বলে?" এর উত্তরে সে লিখেছে "যে পুত্রবধূ তার শ্বশুরবাড়ির কথা শোনে তাকে বহুবচন বলে।"

শিক্ষার্থীটির এমন উত্তর শুনে হাসিতে ফেটে পড়েন শিক্ষক। এমন উত্তরগুলোকে শিক্ষক ভুল হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। যদিও এমন উত্তরের জন্য তাকে পুরোপুরি হতাশ করা হয়নি। তাকে ১০ মার্কের মধ্যে ৫ নম্বর দেওয়া হয়েছে।

শিক্ষক পরে তার উত্তরপত্রে লিখে দিয়েছিলেন, এই ৫ মার্ক তোমার মস্তিষ্কের জন্য, ছেলে।

ভিডিওটি দেখে সবাইকে হাসির ইমোজি দিতে দেখা যায়। সম্পূর্ণ নম্বর না পাওয়ায় অনেকেই যুক্তি দিয়ে লিখেছেন, ছাত্রটি তার কৌতুক প্রতিভার জন্য পূর্ণ নম্বর পাওয়ার যোগ্য।

তবে এমন ঘটনা নিয়ে অনেকেই সন্দেহ প্রকাশ করে বলেছেন, ছাত্র এবং শিক্ষকের হাতের লেখা সন্দেহজনকভাবে একই রকম।

অন্য এক ব্যবহারকারী লিখেছেন, "প্রশ্ন এবং উত্তর একই হাতের লেখা"। 

;

ফেনী শহরে মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে কৃষ্ণচূড়া



মোস্তাফিজ মুরাদ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ফেনী
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

'কৃষ্ণচূড়ার রাঙা মঞ্জুরি কর্ণে-আমি ভুবন ভুলাতে আসি গন্ধে ও বর্ণে' জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের এই মনোমুগ্ধকর গানে ফুটে উঠেছে কৃষ্ণচূড়ার সৌন্দর্য। কৃষ্ণচূড়া যেন প্রকৃতিকে দান করেছে লাল আভার অপরূপ সৌন্দর্যের মহিমা। সাথে গ্রীষ্মের উত্তাপে শহরে সৌরভ ছড়াচ্ছে নানা জাতের ফুল। তীব্র তাপদাহের পর কালবৈশাখী, এরপর মাঝারি বৃষ্টির মধ্যে ফুলের আগমন। এতে রঙের উল্লাসে মেতে উঠেছে ফেনী শহরবাসী।

ফেনী শহরের কোর্ট বিল্ডিং, এলজিইডি, পুলিশ লাইন, নবীন চন্দ্র সেন কালচারাল সেন্টার, ফেনী সরকারি কলেজ, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকাসহ বিভিন্ন স্থানে ফুটে আছে কৃষ্ণচূড়া। এটি একদিকে প্রকৃতিকে যেমন সাজিয়েছে অপরূপ সৌন্দর্যে, অন্যদিকে এর সৌন্দর্য মুগ্ধ করছে তরুণ-তরুণী, নানা শ্রেণি-পেশার মানুষসহ ফুলপ্রিয় পথচারীদের। শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়কের পাশে, সরকারি দফতরসহ স্কুল-কলেজে কৃষ্ণচূড়া গাছের লাল ও উজ্জ্বল সবুজ পাতার সংমিশ্রণ দৃষ্টিনন্দন করে তুলেছে চারপাশ।


কৃষ্ণচূড়ার পাশাপাশি বিভিন্ন ফুলের ঘ্রাণে মুখরিত হয়ে আছে পুরো শহর। শহরের মূল সড়কের ডিভাইডারে পৌরসভার উদ্যোগে লাগানো হাসনাহেনা, রজনিগন্ধা, গন্ধরাজসহ নানা জাতের ফুল গাছে ফুল ফুটেছে। এটি একদিকে বাড়িয়েছে সৌন্দর্য অন্যদিকে হেঁটে কিংবা রিকশায় চলাচল করলে পাওয়া যায় এসব ফুলের সুঘ্রাণ।

ফেনী শহরের কৃষ্ণচূড়ার অপরূপ সৌন্দর্য দেখে ফুলপ্রিয় পথিকরা বলছেন, কৃষ্ণচূড়া ফুল প্রকৃতিকে অনন্য সাজে সাজিয়েছে। এই ফুলের সৌন্দর্যের কারণে পথচারীরা একবার হলেও এই ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য এর গাছের উপর নজর দিবে। পাশাপাশি তীব্র গরমে অন্যান্য ফুলের সুঘ্রাণে চারপাশ মুখরিত হওয়াতে ক্লান্তিতা কিছুটা হলেও কমছে।


তারা বলছেন, কৃষ্ণচূড়া ফুলের এই নান্দনিক দৃশ্য দেখতে এর গাছ রোপণ করা জরুরি। রাস্তা প্রশস্তকরণ, ঘর-বাড়ি নির্মাণসহ নানা প্রয়োজনে গাছ কেটে ফেলা হয়। অন্যান্য গাছ রোপণ করার পাশাপাশি কৃষ্ণচূড়া রোপণ করলে একদিকে যেমন সৌন্দর্য বাড়াবে অন্যদিকে পরিবেশ বান্ধব হবে।

সাজিদ হাসান নামের এক পথচারী বলেন, কৃষ্ণচূড়া একদিকে যেমন প্রকৃতিতে অপরুপ সৌন্দর্য বৃদ্ধি করবে, আরেকদিকে গ্লোবাল ওয়ার্মিং কমাবে। সারাদেশে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে, আমার মতে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিতে এই গাছটিও যুক্ত করা উচিত। তীব্র গরমের পর বৃষ্টি হলো, এরপর শহরে নানা রঙের ফুলের দেখা মিলছে, ফুলের ঘ্রাণে চলাচল করতেই ভালো লাগছে।

ফারজানা ইয়াসমিন নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, ফুলের সৌন্দর্য সবাইকে মুগ্ধ করে। অন্যান্য ফুলের পাশাপাশি কৃষ্ণচূড়া ফুল আমার অনেক ভালো লাগে। আমাদের কলেজে বকুল তলা আছে, ক্যান্টিনের পাশে কৃষ্ণচূড়া গাছ আছে। সুযোগ পেলেই ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করি।

অনিক মোহন নামে একজন বলেন, রিকশায় করে যখন বাসায় ফিরি, শহরের রাস্তার মাঝে ভিডাইভারে লাগানো নানা জাতের ফুলের ঘ্রাণ মনকে আনন্দিত করে। রাতের বেলা শহর যখন নিস্তব্ধ হয়ে যায়, তখন এ ফুলের সৌন্দর্য কয়েকশ’ গুণ বেড়ে যায়।

সড়কের পাশে কৃষ্ণচূড়া লাগানো হলে সৌন্দর্য বাড়বে বলে মনে করেন পথচারী মিনহাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, রাস্তা প্রশস্তকরণের জন্য যে গাছগুলো কেটে ফেলা হয়েছে, ওই গাছগুলোর জায়গা কৃষ্ণচূড়ার গাছ লাগালে রাস্তার সৌন্দর্য বৃদ্ধি করবে।

একই কথা বলেন শহরের ব্যবসায়ী নাদিম আহমেদ। তিনি বলেন, সৌন্দর্য ও পরিবেশের কথা বিবেচনা করে এই গাছ রোপণ করা উচিত আমাদের। তাপমাত্রা যেভাবে বাড়ছে অন্যন্যা গাছ রোপণ করার পাশাপাশি কৃষ্ণচূড়া গাছ রোপণ করার উদ্যোগ নিতে হবে। যেগুলো শহরে আছে তাতেই সৌন্দর্য বেড়ে গিয়েছে কয়েকগুণ, আরও যদি লাগানো যায় ফুলে ফুলে ভরে উঠবে আমাদের শহর।

কৃষ্ণচূড়া মাদাগাস্কারের শুষ্ক পত্রঝরা বৃক্ষের জঙ্গলে পাওয়া যায়। যদিও জঙ্গলে এটি বিলুপ্ত প্রায়, বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে এটি জন্মানো সম্ভব হয়েছে। সৌন্দর্যবর্ধন গুণ ছাড়াও, এই গাছ উষ্ণ আবহাওয়ায় ছায়া দিতে বিশেষভাবে উপযুক্ত। কৃষ্ণচূড়া উদ্ভিদ উচ্চতায় কম (সর্বোচ্চ ১২ মিটার) হলেও শাখা-পল্লবে এটি বেশি অঞ্চল ব্যাপী ছড়ায়।

শুষ্ক অঞ্চলে গ্রীষ্মকালে কৃষ্ণচূড়ার পাতা ঝরে গেলেও, নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলে এটি চিরসবুজ থাকে। কৃষ্ণচূড়া ফুলের রং উজ্জ্বল লাল। পত্র ঝরা বৃক্ষ, শীতে গাছের সব পাতা ঝরে যায়। বাংলাদেশে বসন্ত কালে এ ফুল ফোটে। ফুলগুলো বড় চারটি পাপড়ি যুক্ত। পাপড়িগুলো প্রায় ৮ সেন্টিমিটারের মত লম্বা হতে পারে। কৃষ্ণচূড়া জটিল পত্র বিশিষ্ট এবং উজ্জ্বল সবুজ। প্রতিটি পাতা ৩০-৫০ সেন্টিমিটার লম্বা এবং ২০-৪০ টি উপপত্র বিশিষ্ট। কৃষ্ণচূড়ার জন্মানোর জন্য উষ্ণ বা প্রায়-উষ্ণ আবহাওয়ার দরকার। এই বৃক্ষ শুষ্ক ও লবণাক্ত অবস্থা সহ্য করতে পারে।

জানা যায়, অপরূপ সৌন্দর্য ছড়ানোর পাশাপাশি কৃষ্ণচূড়া ঔষধ হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এর পাতা, মূলের বাকল ও ফুল ভেষজ গুণাগুণ সম্পূর্ণ, যা জ্বর ও খুশকি নিরাময়ের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়। ভেষজটি হেমিপ্লেজিয়া, আর্থরাইটিস এবং কোষ্ঠকাঠিন্য নিরাময়ে ব্যবহৃত হয়। কৃষ্ণচূড়া গাছের শিকড়, বাকল এবং ফুল সবই পরজীবী সংক্রমণ নিরাময়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।

;