প্লেন ছাড়াই ১৬ হাজার কিমি ভ্রমণ করা এক পরিবারের গল্প
ইংল্যান্ডের পূর্ব পেনার্ড শহর থেকে অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে বোনের বিয়েতে যাবেন। বিয়ে তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে ২৮ ডিসেম্বর। ১৬ হাজার কিলোমিটার রাস্তা তাও আবার উড়োজাহাজ ছাড়াই! কখনও সড়কপথ, কখনও পানিপথে; এভাবে সাড়ে তিন মাস ভ্রমণ করে ইন্দোনেশিয়া পৌঁছান একটি পরিবার। এখন পূর্ব তিমুরের অপেক্ষা করছেন সাগর পাড়ি দেওয়ার।
অদ্ভুত হলেও এমন কাণ্ড করেছেন শ্যানোন কগিন্স ও থিও সাইমন দম্পতি। গত ১৬ আগস্ট তারা তাদের একমাত্র কন্যা সন্তান রোজাকে নিয়ে এই পথ পাড়ি দেন। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রতিবাদ স্বরূপ ২০০২ সাল থেকে এই পরিবারটি আকাশপথে উড়োজাহাজে করে ফ্লাই করা বন্ধ করে দেন। আর এ কারণেই উড়োজাহাজে না চড়ে, সময় নিয়ে তাই এখন বিকল্প পথে যাত্রা করেছেন।
কগিন্স জানান, ২০০৭ সালে তার বোন অস্টেলিয়ায় মুভ করেন এবং নিউ সাউথ ওয়েলসের একজনের সঙ্গে বিয়ে হচ্ছে। বিশাল দূরত্বে বসবাস করলেও তাদের মধ্যে গভীর টান রয়েছে। তাই বোনের বিয়ে তিনি মিস করতে চাননি।
তিনি বলেন, আমি যেহেতু ফ্লাই করতে চাইনি। তাই আমরা অনেক দিন থেকে ভ্রমণের জন্য অর্থ জমাচ্ছিলাম। যা আকাশপথে ভ্রমণের টিকিটের থেকেও বেশি ব্যয়বহুল।
গত ৪ মাসে তারা কাজাগিস্তান, চীন, লাওস, থাইল্যান্ড ও ইন্দোনেশিয়া পাড়ি দিয়েছেন। বর্তমানে পূর্ব তিমুরের রাজধানী দিলিতে আছেন। এখান থেকে জাহাজে করে তিমুর সাগর পাড়ি দিয়ে অস্ট্রেলিয়ার ডারউইনে যাবেন। সেখান থেকে বাসে করে সিডনিতে পৌঁছাবেন। বিয়ের নির্দিষ্ট তারিখের পূর্বেই পৌঁছে যাবেন বলে আশাবাদী তারা।
মিসেস কগিন্স ফ্রোমের অবন্তি পার্ক স্কুলে প্রশাসকের চাকরি করতেন। গত আগস্টে তিনি তা ছেড়ে দেন এবং তার স্বামী থিও সাইমন ডিচেট-এর সংবার্ড ন্যাচারালসের কাজ শেষ করেন। এরপরেই তারা এই অ্যাডভেঞ্চার ভ্রমণে বেরিয়ে পড়েন। এর সাথে তারা তাদের ‘সিজ দ্য ডে’ নামক ব্যান্ডও বন্ধ করে দেন। জলবায়ুর পরিবর্তন রোধে এই পরিবারটি দীর্ঘদিন দরে বিভিন্ন ক্যাম্পেইনে অংশগ্রহণ করে আসছে। তাদের অস্ট্রেলিয়া ভ্রমণকে কার্বন নিঃসরণ মুক্ত ভ্রমণ করতে চেয়েছেন তারা।
অ্যাডভেঞ্চার জার্নি সম্পর্কে তারা জানান, তাদের যাত্রা অনেক রোমাঞ্চকর ছিল। সেই সঙ্গে দুর্দান্ত দুঃসাহসিক কাজও হয়েছে। এখন যাত্রা এগিয়ে নিতে নৌকার সন্ধান করছেন।
সবার উদ্দেশ্যে তারা আরও বলেন, তারা যথেষ্ট বাস্তববাদী মানুষ। সময় স্বল্পতার কারণে মানুষ চাইলেই প্লেন যাত্রা পুরোপুরি ত্যাগ করতে পারবেন না। তবে প্লেন যে ব্যাপকহারে পরিবেশের ক্ষতি করে তার মাত্রা কমিয়ে আনতে পারবেন। কারণ, কার্বন নিঃসরণ কমানো যাত্রা- বিশ্ব এখনও সহজ করতে পারেনি। কিন্তু, এর জন্য সবার সচেতন হওয়া উচিত।
তথ্যসূত্র: বিবিসি নিউজ