খরায় জিম্বাবুয়েতে শতাধিক হাতির মৃত্যু

  • নিউজ ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

খরায় জিম্বাবুয়তে শতাধিক হাতির মৃত্যু

খরায় জিম্বাবুয়তে শতাধিক হাতির মৃত্যু

পৃথিবী সৃষ্টিকর্তার অপরূপ সৃষ্টি এবং তার অসীম ক্ষমতার প্রমাণ। নানা প্রজাতির প্রাণির বসবাস এখানে। প্রকৃতি সবসময় ভারসাম্য রক্ষা করতে পছন্দ করে। ছোট বড় নানা আকারের প্রাণির অস্তিত্বে বৈচিত্র্যপূর্ণ হয়েছে পৃথিবী।

স্থলভাগের আকারে সবচেয়ে বিশাল প্রাণি হলো হাতি। তবে যখন প্রকৃতি নিষ্ঠুর হয়, তখন রক্ষা পায় না কেউই; বিশালাকার হাতিরাও নয়। সম্প্রতি আফ্রিকা মহাদেশের জিম্বাবুয়ে দেশের এক পার্কে গণহারে হাতি মারা যাচ্ছে। পরিবেশের বিরূপ প্রভাবেই ঘটছে এই ঘটনা। প্রাণিদের বাঁচিয়ে রাখতে পানি ও অক্সিজেনের ব্যবস্থা করেও লাভ হচ্ছে না। মানুষের চেয়েও বেশি প্রাধান্য দেওয়া হলেও অভিজ্ঞদের ধারণা সামনে মৃতের হার আরও বাড়বে।   

বিজ্ঞাপন

গত কয়েক সপ্তাহে জিম্বাবুয়ের সবচেয়ে বড় জাতীয় উদ্যানে অনেক হাতি মারা গেছে। আবহাওয়া আরও খারাপ হলে ‘হোয়াঙ্গে ন্যাশনাল পার্ক’সহ আফ্রিকার দক্ষিণাঞ্চলে থাকা অন্যান্য প্রাণিদের প্রাণসংশয়ের সম্ভাবনা আছে। ২০১৯ সালে এই পার্কে ২০০র বেশি হাতি মারা গিয়েছিল। সেই ঘটনার পুরনাবৃত্তির আশংকা করছেন হোয়াঙ্গে পার্কের কর্তৃপক্ষরা।  

খরার কারণে ইতোমধ্যে মারা গেছে ১০০র বেশি হাতি। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে বৃষ্টির অভাব এবং তাপের বৃদি্ধর কারণে আরও অনেক বেশি প্রাণী মারা যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। এল নিনোর কারণে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে বলে আশংকা করা হচ্ছে। 

বিজ্ঞাপন

এল নিনো হল প্রশান্ত মহাসাগরের কিছু অংশের উষ্ণ হয়ে ওঠার প্রাকৃতিক ঘটনা। এতে সারা বিশ্বের আবহাওয়া প্রভাবিত হয়। এই বছর এল নিনোর কারণ ইতোমধ্যে পূর্ব আফ্রিকায় মারাত্মক বন্যা হয়েছে। এল নিনো দক্ষিণ আফ্রিকার গড় বৃষ্টিপাতের উপরেও প্রভাব ফেলবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

 ‘জিম্বাবুয়ে ন্যাশনাল পার্কস অ্যান্ড ওয়াইল্ডলাইফ ম্যানেজমেন্ট ‘ সংশ্লিষ্ট টিনাশে ফারাও বলেন, "এল নিনো পরিস্থিতিকে আরও ভয়াবহ করে তুলছে। জিম্বাবুয়েতে এবছর স্বাভাবিকের চেয়ে কয়েক সপ্তাহ পরে বর্ষাকাল শুরু হয়েছিল। আপাতত বৃষ্টি পড়ছে কিন্তু সামনে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে।”

তিনি আরও বলেন, যেসব হাতি পানির জন্য দীর্ঘ পথ অতিক্রম করতে অক্ষম তারাই ক্ষতির মুখে বেশি পড়েছে। একটি সুস্থ স্বাভাবিক হাতির প্রতিদিন ২০০ লিটার(৫২গ্যালন) পানি প্রয়োজন হয়।

হোয়াঙ্গেতে প্রায় ৪৫ হাজার হাতি বসবাস করে। এছাড়াও ১০০ টিরও বেশি অন্যান্য প্রজাতির স্তন্যপায়ী এবং ৪০০ প্রজাতির পাখি রয়েছে। জিম্বাবুয়েতে সাধারণত বর্ষাকাল অক্টোবরে শুরু হয় এবং মার্চ পর্যন্ত চলে। সাম্প্রতিক বছরগুলিতে এর অনিয়মিত হচ্ছে। তাছাড়া আবহাওয়া আরও শুষ্ক হয়ে যাচ্ছে।

পার্ক কর্তৃপক্ষের সাথে অংশীদার হিসেবে আছে ‘দ্য ভেজেন ট্রাস্ট’ নামের সংস্থা। সংস্থার পরিচালক ট্রেভর লেন জানান, তারা বন্যপ্রাণিদের বাঁচিয়ে রাখতে লড়াই করে চলেছেন। কার্বন-ডাই-অক্সাইড নিয়ন্ত্রণে রাখতে গাছপালা বৃদ্ধির পদক্ষেপও গ্রহণ করছেন তারা। প্রতিদিন ৫০টির বেশি বোরহাল থেকে ১.৫মিলিয়ন লিটার পানি উঠানো হয়। ৫৬০০ বর্গমাইল প্রশস্ত এই পার্কে মধ্যে কোনো বড় জলাশয় নেই। ১০০টির বেশি সৌর বোরহাল দিয়েই পানিপাম্প করা হয়।

তথ্যসূত্র: আরব নিউজ