জনপ্রিয়তা পেতে, গর্ভবতী তরুণী

  • ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

গর্ভবতী হওয়ার অভিনয় করলেন চীনের তরুণী

গর্ভবতী হওয়ার অভিনয় করলেন চীনের তরুণী

চীনের দক্ষিণ-পশ্চিম পার্শ্বে সিচুয়ান প্রদেশ। সেখানে সঙ্গীহীন তরুণ-তরুণীরা জড়ো হয়েছে। তাদের উদ্দেশ্য জীবন কাটানোর সঙ্গী বেছে নিয়ে পরবর্তী জীবন সুখে কাটানো। স্থানীয় সেই ম্যাচ-মেকিং অনুষ্ঠানে সকলে নিজের তথ্য উল্লেখ করেন। তার সাথে সঙ্গী হিসেবে যাকে পছন্দ করবেন, তার যেসব গুণাবলি থাকতে হবে- সেই তথ্যও ফর্মে লিখেন। সেই অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয় এক গর্ভবতী নারীও। একজনের পক্ষ থেকে প্রস্তাবও পান। কিন্তু তা তিনি প্রত্যাখ্যান করে দেন। এতে তার দিকে কিছুটা সন্দেহপ্রবণ হয় অনুষ্ঠান কর্তৃপক্ষ। এরপর যে তথ্য সামনে এলো, তাতে অবাক হয়ে যায় সবাই!

চীনের এক ৩২ বছর বয়সী তরুণী, চেন জিয়াওসি। ৫ মাসের সন্তান গর্ভে নিয়েও মনে অনেক আশা বেঁধেছেন তিনি। তথ্যফর্মে নিজের সম্পর্কে তিনি লেখেন। সেখানে নিজেকে ৩২ বছর বয়সী সিঙ্গেল দাবী করেন। তবে তার গর্ভে ৫ মাসের একটি ছোট প্রাণ রয়েছে। তার সাথে উল্লেখ করেন, তার কোনো সম্পদ বা গাড়ি নেই।

বিজ্ঞাপন

তিনি যেমন স্বামী খোঁজ করছেন সেই ব্যাপারেও কাগজে তথ্য লেখা ছিল। তিনি বলেন, তার হবু স্বামীর অবশ্যই একটি ফ্ল্যাট এবং একটি গাড়ি থাকতে হবে। চেন এবং তার সন্তানের সাথে অনেক ভালো ব্যবহার করতে হবে। তার সাথে অবশ্যই স্বামীর মাসিক আয় ২০ হাজার ইয়ান(৩ লাখের বেশি) হওয়া প্রয়োজন।  

তার প্রতি আগ্রহী এক ব্যক্তির সাথে তাকে কথা বলতেও দেখা যায়। এক ব্যক্তি গর্ভবতী নারী চেনকে জানান, তার ছেলে চেনের প্রতি আগ্রহী। হবু স্বামীর জন্য চেনের বক্তব্য ছিল,‘সন্তান তার না হলেও, আমি সম্পূর্ণরূপে তার। যদি তিনি আমাকে ভালোবাসেন, তাহলে সন্তানের পিতৃপরিচয় নিয়ে চিন্তিত হওয়ার কথা নয়।’ ভদ্রলোক জানান, তার ছেলের বয়স ৪০ বছর এবং অন্য কোনো ব্যাপারে তার আপত্তি নেই। তবে তার মাসিক আয় যতটা চেন আশা করছেন তার অর্ধেকেরও কম। এই শুনে চেন তাকে হাত নেড়ে বরখাস্ত করে দেন।

বিজ্ঞাপন

তার এই পদক্ষেপে সমালোচনার ঝড় বয়ে যায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। ব্যাপারটা এই পর্যায়ে গুরুতর হয়ে যায়। সেই নারীর এরকম কর্মকাণ্ডে তাকে সন্দেহ করা হয়। পুলিশ এই ব্যাপারে তদন্ত শুরু করে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চেন আসলে গর্ভবতীই নন। জীবনসঙ্গী খোঁজার কোনো উদ্দেশ্যও তার ছিল না। তিনি কেবল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হতে চেয়েছিলেন। পরবর্তীতে পুলিশের কাছে এই ব্যাপারে স্বীকারোক্তিও দিয়েছেন তিনি। শুধুমাত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফলোয়ার পাওয়ার জন্য এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তিনি। অপার সম্ভাবনাময় জীবন না বেছে, সে বেছে নেয় ধোঁকার পথ।

একটা সময় ছিল, যখন মানুষ সাবলম্বী হতে কঠোর পরিশ্রম করতো। মাথার ঘাম পায়ে ফেলতো দিনের পর দিন। তবে যুগ এখন শর্টকাটের। সব কিছুতে শর্টকাট খুঁজতে খুঁজতে, মানুষের মধ্যে ভর করছে অলসতা। তার সাথে ফলোয়ার পাওয়ার লোভ। মানুষের মনোযোগই যেন পৃথিবীর সবচেয়ে দামী সম্পদ। তাই মানুষকে ঠকাতেও কেউ দু’বার ভাবে না। ভবিষৎ প্রজন্ম হয়ে যাচ্ছে অনিশ্চিত।  

তথ্যসূত্র: এনডিটিভি