কুয়াকাটায় বাড়ছে পর্যটক, লাভের আশা ব্যবসায়ীদের

  • উপজেলা করেসপন্ডেন্ট, বার্তা ২৪.কম, (কলাপাড়া-পটুয়াখালী)
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর থেকে প্রতিদিনই কুয়াকাটায় পর্যটকের আগমন বৃদ্ধি পাচ্ছে। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে হাজার হাজার পর্যটকের পদভারে মুখর হয়ে উঠেছে সমুদ্রতট। 

সাপ্তাহিক ছুটি শুক্রবার ও শনিবার পর্যটক বেশি আসে। এই ২ দিন তারা আনন্দোৎসবে কাটিয়ে দেন।

বিজ্ঞাপন

শুক্রবার (২৬ জানুয়ারি) একদিকে শীতের আমেজ অন্যদিকে সাপ্তাহিক বন্ধ সবকিছু মিলিয়ে হাজার পর্যটকদের আনাগোনা সমুদ্র সৈকতে। এটা পদ্মা সেতুর সুফল এমনটাই মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। 

জানা যায়, পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে দ্রুত কুয়াকাটায় আসার সুযোগ হওয়ায় বহু পর্যটক আসছেন। হোটেল-মোটেলে সিটের সংকট থাকলেও কোনো আফসোস বা ক্লান্তি নেই তাদের চোখেমুখে। হোটেলে সিট না পেয়ে অনেকে তাদের ভ্রমনের জন্য নিয়ে আসা বাসগাড়িকেই হোটেল বানিয়ে নিয়েছেন।

বিজ্ঞাপন
ছবি: মুখরিত প্রাণবন্ত সৈকত

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আগত পর্যটকরা কুয়াকাটার জিরো পয়েন্ট থেকে ১ কিলোমিটার পূর্ব দিকে এবং ১ কিলোমিটার পশ্চিম দিকে দলগতভাবে সাগরের উত্তাল ঢেউয়ের মধ্যে গোসল করছেন। বহু পর্যটক প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমন্ডিত ঝাউবাগান, গঙ্গামতি কাউয়ারচর, লেম্বুরবন ও চর বিজয়সহ বিভিন্ন স্পটে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। কুয়াকাটা সংলগ্ন মিশ্রীপাড়ায় অবস্থিত বৌদ্ধ মূর্তি, সুন্দরবনের পূর্বাঞ্চলখ্যাত ফাতরার সবুজবন, মম্বীপাড়ার সৎসঙ্গ মন্দির, ঝাউবাগান, লেম্বুরচর বনাঞ্চল, গঙ্গামতির লেকপাড় সর্বত্র পর্যটকের ভিড় রয়েছে। শ্রীমঙ্গল বৌদ্ধবিহার, সীমা বৌদ্ধ বিহারসহ দর্শনীয় স্পট সমূহ ঘুরে দেখছেন আগতরা। এ যেন পর্যটকদের মেলা।

পর্যটকদের আগমনে লাভের আশা দেখছেন পর্যটননির্ভর ব্যবসায়ীরা। পর্যটক যত বাড়বে তাদের লাভের অংশ তত বাড়বে বলে মনে করছেন তারা।

স্থানীয় গরুর মাংস বিক্রেতা মো: আবুল বাশার বার্তা ২৪.কে বলেন,  ‘স্থানীয়দের পাশাপাশি শুক্রবার ও শনিবারে আমার মূল টার্গেট থাকে রেস্তোরাঁগুলো। পর্যটক আসার কারণে আমরা এই বন্ধের দুই দিন (শুক্র শনিবার) ৩-৪টা গরু জবাই করি। আল্লাহর রহমতে সব মাংসই বিক্রি হয়ে যায়। পর্যটক আসলে আমরা খুবই খুশি।’ 

স্থানীয় অটো ভ্যানচালক মোঃ হুমায়ূন হাওলাদার বার্তা ২৪.কে জানান, ‘পর্যটক আসলে মোগো জন্য ঈদের দিন। এক সপ্তাহে যে ইনকাম করি, এই ২ দিনে (শুক্রবার এবং শনিবার) তার দ্বিগুণ হয়। পর্যটক আছে বলে মোরা আছি, নাইলে দিনমজুরের কাজ করতে হত।’

পর্যটক আসলে এভাবেই ১৬ -২০ টি পেশার মানুষের মুখে হাসি ফোটে প্রতিনিয়ত। পর্যটকদের এই ধারা অব্যাহত থাকবে এমনটাই প্রত্যাশা কুয়াকাটার ব্যবসায়ীদের। 

ছবি: ছুটির দিনে কুয়াকাটায় ভিড় বাড়ে পর্যটকদের

কুয়াকাটা হোটেল মোটেল অনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মোতালেব শরীফ বলেন, ‘গত অক্টোবর থেকে নির্বাচন পর্যন্ত পর্যটকশূন্য ছিল কুয়াকাটা। কিন্তু দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের পর থেকে বুকিং পেতে শুরু করছি। কুয়াকাটা প্রায় ১৮০-২০০ আবাসিক হোটেল- মোটেল রয়েছে। বর্তমানে প্রথম শ্রেণীর  হোটেলগুলো সহ আবাসিক প্রতিটি হোটেলে শতভাগ বুকিং রয়েছে।’ 

কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট পুলিশ রিজওয়ানের পুলিশ সুপার আবুল কালাম আজাদ জানান, কুয়াকাটায় দিন দিন পর্যটকের আগমন বৃদ্ধি পাচ্ছে। সে কারণে পর্যটকের নিরাপত্তা নিশ্চিতে মহিপুর থানা ও ট্যুরিস্ট পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে। দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের পর থেকে কুয়াকাটায় পর্যটকের আগমন বৃদ্ধি পাচ্ছে।