৩ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত রাস্তা পরিত্যক্ত

  • গনেশ দাস, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট,বার্তা ২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: বার্তা২৪

ছবি: বার্তা২৪

বাকি ২০০ মিটার রাস্তা করতে না পারায় তিন কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা ৬০০ মিটার রাস্তা পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে। ফলে পরিত্যক্ত এ রাস্তাটি ব্যবহার করা হচ্ছে ধান ও খড় শুকানোর কাজে। এদিকে দীর্ঘ ১৪ বছরেও গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাটির কাজ শেষ করতে না পারায় ব্যয় বেড়েছে আরও ১৩ গুণ।

বগুড়া মোহাম্মদ আলী হাসপাতাল থেকে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) ও হাসপাতাল পর্যন্ত সংযোগ সড়কটির কাজ ২০০৪ সালে শুরু করা হয়েছিল। বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল উদ্বোধনের পর মোহাম্মদ আলী হাসপাতাল থেকে জরুরি রোগী দ্রুত স্থানান্তর করার সুবিধার্থে ২০০৪ সালে সড়ক ও জনপথ বিভাগ দুই হাসপাতালের মধ্যে সংযোগ সড়ক নির্মাণ প্রকল্প হাতে নেয়।

বিজ্ঞাপন

প্রকল্পের শুরুতে ৬০ ফুট প্রশস্ত ও সাড়ে ৪ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়ক নির্মাণ এবং জমি অধিগ্রহণ বাবদ ১৪ কোটি টাকার প্রকল্প ব্যায় নির্ধারণ করা হয়। সে সময় জমি অধিগ্রহণ জটিলতার কারণে রাস্তাটির প্রশস্ত কমিয়ে ৪৫ ফুট নির্ধারণ করা হয়। মোহাম্মাদ আলী হাসপাতালের উত্তর পাশ ও বাংলাদেশ ব্যাংকের দক্ষিণ পাশ ধরে নার্সিং ইন্সটিটিউট এবং এসেনসিয়াল ড্রাগসের উত্তরপাশ দিয়ে গোহাইল রোড হয়ে মালগ্রামের মধ্য দিয়ে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজের গেটে মহাসড়কের পূর্বপাশে সড়কটি শেষ হওয়ার কথা। প্রকল্প গ্রহণের পরপরই শজিমেকের দিক থেকে পুর্বদিকে প্রায় ৫০ ফুট প্রশস্ত ধরে ৮০০ মিটারের বেশি দীর্ঘ জমি অধিগ্রহণ করা হয়। সে সময় বরাদ্দকৃত অর্থে অধিগ্রহণকৃত জায়গায় মাটি ফেলে ভরাট করার পর অর্থ বরাদ্দ না পাওয়ায় থেমে যায় সকল কার্যক্রম। পরবর্তী বছরগুলোতে এ প্রকল্পে অর্থ বরাদ্দ না থাকায় কাজ বন্ধ হয়ে থাকে।

প্রকল্পটি প্রথম পর্যায়ে না করায় পরের বছর এর ব্যয় বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়। ফলে প্রকল্প বাস্তবায়ন অনিশ্চিয়তার মধ্যে পড়ে। কাজ না হওয়ায় প্রকল্প ব্যয় বাড়তেই থাকে। এক সময় প্রকল্প ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় প্রায় ৮০ কোটি টাকায়। কিন্তু প্রকল্পটি বাতিল না হওয়ায় ২০১৪-১৫ অর্থ বছরে প্রকল্পের জন্য অর্থ বরাদ্দ করা হয়। বরাদ্দকৃত অর্থে সড়ক বিভাগ অধিগ্রহণকৃত জায়গায় ৮১০ মিটার রাস্তা কার্পেটিংয়ের কাজ করে।

৮১০ মিটার রাস্তার কাজ হওয়ার পর আবার অনিশ্চয়তায় পড়ে প্রকল্পটি। ২০১৫ সালের ১২ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বগুড়ার আলতাফুন্নেছা খেলার মাঠে জনসভায় বগুড়ার বেশ কয়েকটি উন্নয়ন কাজ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে করার ঘোষণা দেন। এর মধ্যে এই সড়কটি ছিল অন্যতম।

বিজ্ঞাপন

পরে ২০১৮ সালের শেষের দিকে প্রকল্পের জন্য নতুন করে ২০ কোটি টাকার বরাদ্দ দেয়া হয়। কিন্তু বর্তমানে প্রকল্পের ব্যয় ১৩ গুণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৮৫ কোটি টাকায়। এর মধ্যে ৮০ কোটির বেশি টাকা ধরা হয়েছে ভূমি অধিগ্রহণ বাবদ।

বগুড়া সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আশরাফুজ্জামান বার্তা২৪কে বলেন, ‘এ প্রকল্পের জন্য প্রাথমিকভাবে ২০ কোটি টাকা বরাদ্ধ পাওয়া গেছে। চলতি অর্থবছরের মধ্যেই জমি অধিগ্রহণের বিষয়টি নিষ্পত্তি হবে। জমির মূল্য বেড়ে যাওয়ায় ক্ষতিপূরণ সংক্রান্ত জটিলতায় কাজ শুরু করা যাচ্ছে না। তবে আশা করা যাচ্ছে আগামী অর্থ বছরে কাজ শুরু করা যাবে।’