এদেশে বিপন্ন রাম কুত্তা



অধ্যাপক ড. আ ন ম আমিনুর রহমান
মালয়েশিয়ার তাইপেং চিড়িয়াখানায় বিশ্রামরত রাম কুত্তার দল। ছবি: লেখক

মালয়েশিয়ার তাইপেং চিড়িয়াখানায় বিশ্রামরত রাম কুত্তার দল। ছবি: লেখক

  • Font increase
  • Font Decrease

কোনো এককালে বৃহত্তর চট্টগ্রাম, পার্বত্য চট্টগ্রাম ও সিলেটের মিশ্র চিরসবুজ বনে অবাধে ঘুরে বেড়াত প্রাণীগুলো। দল বেঁধে ওরা শিকার করত হরিণ, বুনো শুয়োর, বন ছাগল, এমনকি গরু-মহিষও। ওদের কবল থেকে বাঘ-চিতাবাঘও রক্ষা পেত না বলে প্রচলিত আছে। অন্তত ১৯৫০ সাল পর্যন্ত এভাবেই চলছিল।

কিন্তু এরপরই ওদের উপর নেমে আসে বিপর্যয়। কৃষি জমি ও মানুষের বাসস্থানের জন্য বন কেটে জমি উদ্ধার, কাঠের জন্য বন উজাড় এবং প্রাণীগুলো ও ওদের খাদ্য অর্থাৎ তৃণভোজী প্রাণীদের অবাধ শিকারের কারণে দিনে দিনে সংখ্যা কমে এক সময়ের সচরাচর দৃশ্যমান (Common) প্রাণীগুলো বর্তমানে একেবারেই বিরল (Rare) ও বিপন্ন (Endangered) হয়ে পড়েছে।

মালয়েশিয়ার তাইপেং চিড়িয়াখানায় একটি রাম কুত্তা। ছবি: লেখক

যদিও ২০০০ সাল পর্যন্ত ওদেরকে হবিগঞ্জের রেমা-কালেঙ্গা অভয়ারণ্যেও দেখা যেত বলে শুনেছি, কিন্তু বর্তমানে ওদের আবাসস্থল মারাত্মকভাবে সংকুচিত হয়ে চট্টগ্রাম বিভাগের পার্বত্য জেলাগুলোর অল্পকিছু এলাকা; রাঙামাটির কাসালং ও রাইখং সংরক্ষিত বনাঞ্চল, পাবলাখালী বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য, বান্দরবানের সাঙ্গু বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য ইত্যাদিতে সীমাবদ্ধ হয়ে পড়েছে। তবে, কয়েক বছর আগে হবিগঞ্জের সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানে ওদের অস্তিত্বের প্রমাণ মিলেছে। সেকারণে আমার ধারণা ওরা এখনও রোম-কালেঙ্গা এবং সিলেটের আরও কিছু বনেও থাকতে পারে।

মেট্রো টরেন্ট চিড়িয়াখানায় একটি রাম কুত্তা। ছবি: লেখক

আজ থেকে প্রায় ত্রিশ বছর আগে পাল্প উড বিভাগ, কাপ্তাইয়ে চাকুরিরত খালাত ভাই ফরেস্টার শফিকুর রহমানের ওখানে কাছে বেড়াতে গিয়ে ওর কাছেই ওদের সম্পর্কে প্রথম শুনেছিলাম। এরপর ১৯৯৮ সালে কানাডার গুয়েল্প বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস এস্টেট অ্যানিম্যাল হসপিটালে পোষা প্রাণীর চিকিৎসায় উচ্চতর প্রশিক্ষণ নেয়ার সময় মেট্টো টরন্টো চিড়িয়াখানায় গিয়ে প্রথম ওদের দেখি। ওখানে কৃত্রিমভাবে প্রাকৃতিক পরিবেশ সৃষ্টি করে ওদের রাখা হয়েছিল।

প্রাণীগুলোর চেহারা, আচরণ ও চলাফেরা শফিক ভাইয়ের বর্ণনার সঙ্গে হুবহু মিলে যায়। টরন্টো চিড়িয়াখানায় ওদের দেখে আমি এতটাই বিমোহিত হয়ে গিয়েছিলাম যে, মনে হয়েছিল পার্বত্য চট্টগ্রামের গহিন অরণ্যেই যেন ওদের দেখছি। কতক্ষণ যে সেই কৃত্রিম বনে হারিয়ে গিয়েছিলাম জানি না, কানাডা প্রবাসী সুমন সাইয়েদ ভাইয়ের ধাক্কায় বাস্তবে ফিরে এলাম। এরপর পটাপট কয়েকটা ছবি তুললাম। পরবর্তীতে ২০১৪ সালে মালয়েশিয়ার প্রথম চিড়িয়াখানা তাইপেং জু ও নাইট সাফারিতে দিনে-রাতে ওদেরকে আবারও দেখি।

মালয়েশিয়ার তাইপেং চিড়িয়াখানায় কৃত্রিমভাবে বানানো গুহার সামনে একটি রাম কুত্তা। ছবি: লেখক

কয়েক বছর আগে সিলেটের টিলাগড় ইকো পার্কে গিয়ে শফিক ভাইয়ের সঙ্গে দেখা হলে তিনি বললেন, এখনও ওরা টিকে আছে। তিনি ওদেরকে স্বচক্ষে দেখা ছাড়াও বেশ ক’টি অঞ্চলে ওদের পদচিহ্নও দেখেছেন। বন্যপ্রাণী গবেষক ‘ক্রিয়েটিভ কনজারভেশন অ্যালায়েন্স’-এর মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা শাহরিয়ার সিজার রহমানের সাথে আলাপকালে জানা যায়, বেশ ক’বছর আগে তারা বান্দনবানের সাঙ্গু-মাতামুহুরী উপত্যকায় ওদের অস্তিত্বের প্রমাণ পেয়েছেন। সাঙ্গু-মাতামুহুরী উপত্যকার স্থানীয় ম্রোদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন এবং সেখানকার বন্যপ্রাণী ও তাদের আবাস সংরক্ষণে কাজ করতে গিয়ে ম্রোদের ভাষায় ‘শুই’ নামে পরিচিত প্রাণীগুলোর সঙ্গে অন্তত দু’বার তার দেখা হয়েছে। উপত্যকার গহীনে ওদের পায়ের চিহ্নও দেখছেন তিনি। সর্বোপরি ‘ক্রিয়েটিভ কনজারভেশন অ্যালায়েন্স’-এর কর্মীদের পাতা ক্যামেরা ফাঁদে বেশ ক’বার প্রাণীগুলোর চলাফেরার চিত্রও ধরা পড়েছে।

কানাডার মেট্রো টরেন্ট চিড়িয়াখানায় বিশেষ ভঙ্গিমায় রাম কুত্তা। ছবি: লেখক

হবিগঞ্জের সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানের পাখি-প্রাণী পর্যবেক্ষণ করতে গিয়ে ২০১৯ সালে ওখানকার গাইডদের কাছে আজব এক প্রাণীর কথা শুনি। প্রাণীগুলোকে ওরা চোখে না দেখলেও সেগুলোর দ্বারা গত্যাকৃত গরু ও শুকরের দেহাবশেষ তারা দেখেছেন এবং আমাকেও দেখিয়েছিলেন। পরবর্তীতে একটি গবেষক দলের পাতা ক্যামেরা ফাঁদে প্রাণীগুলোর চলাফেরার চিত্রও ধরা পড়ে এবং প্রাণীগুলোর পরিচয় জানা যায়।

যাহোক, বৃহত্তর চট্টগ্রাম, পার্বত্য চট্টগ্রাম এবং সিলেটের এই বিরল ও বিপন্ন শিকারি প্রাণীগুলোর নাম রাম কুত্তা। লাল কুত্তা, বন কুত্তা বা ডোল নামেও পরিচিত। ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে ওরা জংলি কুকুর, চ্যু, সোনহা, সোন বা ডোল নামে পরিচিত। ইংরেজি নাম এশিয়াটিক ওয়াইল্ড ডগ, রেড ডগ বা ডোল (Asiatic Wild Dog, Red Dog or Dhole)| ক্যানিডি (Canidae) গোত্রভুক্ত প্রাণীটির বৈজ্ঞানিক নাম Cuon alpinus (কুয়ন অ্যালপিনাস) অর্থাৎ পাহাড়ি কুকুর। বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত, ভুটান, নেপাল, চীন ও রাশিয়াসহ এশিয়ার অনেক দেশেই ওদের দেখা মেলে। আগেই বলেছি, একসময় এদেশে ওদেরকে সচরাচর দেখা গেলেও বর্তমানে একেবারেই বিরল ও বিপন্ন হয়ে পড়েছে।

বান্দরবানের সাঙ্গুতে উপজাতীয়দের হাতে মৃত রাম কুত্তা। ছবি: ক্রিয়েটিভ কনজারভেশন অ্যালায়েন্স

রাম কুত্তা শিয়াল, কুকুর ও নেকড়ের জাতভাই। তবে চেহারায় শিয়ালের সঙ্গেই মিল বেশি। আকারে নেকড়ে ও শিয়ালের মাঝামাঝি। নাগের আগা থেকে লেজের গোড়া পর্যন্ত লম্বায় ৪৫ থেকে ৬০ সেন্টিমিটার; লেজ ২০ থেকে ২৭ সেন্টিমিটার। ওজন ১০ থোকে ২০ কেজি। পা খাটো, লেজ ঝোঁপালো ও নাকের উপরের অংশ খানিকটা উঁচু। মাথা ও দেহের উপরের অংশের লোম বাদামি-লাল। ঋতুভেদে রঙ হালকা থেকে গাঢ় হতে পারে। কানের ভেতরটা, মুখের নিচ, গলা ও দেহের নিচের অংশ সাদা। ঝোঁপালো লেজের আগা কালো।

হবিগঞ্জের সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানে রাম কুত্তার দ্বারা মৃত ও ভক্ষণকৃত বুনো শুকরের হাড়সহ দেহাবশেষ। ছবি: লেখক

রাম কুত্তা সামাজিক প্রাণী। দলবদ্ধভাবে থাকে; দিনের বেলা শিকার করে। দলে ২ থেকে ৩০টি পর্যন্ত কুকুর থাকতে পারে। ওরা সচরাচর মাঝারি আকারের প্রাণী, যেমন- হরিণ, শূকর, ছাগল ইত্যাদিকে আক্রমণ করে। প্রয়োজনে বনগরু বা মহিষের মতো বড় পশুকেও আক্রমণ করতে পারে। বন কুকুরের দল কোনো প্রাণীকে সামনে ও পিছনে উভয় দিক থেকেই আক্রমণ করে ও তাড়িয়ে নিয়ে যায়। তাড়াতে তাড়াতে ক্লান্ত করে ফেলে। ওরা যে প্রাণীকে লক্ষ্যবস্তু হিসাব ঠিক করে তাকে না মারা পর্যন্ত ছাড়ে না। তাড়ানো অবস্থাতেই জীবিত প্রাণীটিকে খাবলে খেতে থাকে। আর এভাবে ১০ থেকে ১৫টি কুকুর মিলে অল্প সময়ের মধ্যেই যে কোন প্রাণীকে সাবাড় করে ফেলতে পারে। খাদ্য স্বল্পতার সময় ফল ও সরীসৃপও খায়। কুকুরের মতো ঘেঁউ ঘেঁউ করে না। বরং শিস দেয়ার মতো শব্দ করে ডাকে।

সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানে রাম কুত্তা কর্তৃক মৃত গরুর দেহাবশেষ। ছবি: লেখক

ওরা সচরাচর ভালুক, চিতাবাঘ বা বাঘকে এড়িয়ে চলে; তবে আক্রান্ত হলে তাদেরও রেহাই নেই। ১৯৭০ সালে প্রকাশিত ভারতের জীবজন্তু নামক পুস্তকে লেখক শ্রীরাম শর্মা রাম কুত্তা কীভাবে বাঘকে আক্রমণ সে সম্পর্কে কিছুটা আলোকপাত করেছেন যা সংক্ষেপে এখানে তুলে ধরছি।

আগেই বলেছি ওরা বাঘকে বেশ সমীহ করে, আর বাঘও ওদেরকে এড়িয়েই চলে। কিন্তু ঘটনাচক্রে যদি ওরা কখনো বাঘের মারা শিকারের কাছে পৌঁছে যায়, আর বাঘ থাবা মেরে যদি দু’একটা কুকুরকে মেরে ফেলে তখন কিন্তু বাঘ মামার আর রক্ষা নেই। তবে তখনই ওরা বাঘকে আক্রমণ করে না। কারণ ওরা জানে বাঘের একেকটা থাবায় একেকটা কুকুরের তালগোল পাকিয়ে যেতে পারে, এমন কি মারাও যেতে পারে। কাজেই ওরা বাঘকে আক্রমণ না করে খানিকটা দূর থেকে চারিদিক দিয়ে ঘিরে ফেলে এবং বিরক্ত করতে থাকে; শান্তিতে থাকতে দেয় না। বাঘ যখন তার শিকার বা মড়ি খেতে বসে তখন বাঘের পিছন দিকে ওরা কামড়ে দেয়। বাঘ যখন রেগে গিয়ে ওখান থেকে উঠে হাঁটা শুরু করে, তখন ওরাও নিরাপদ দূরত্বে থেকে চারদিক দিয়ে ঘিরে বাঘকে অনুসরণ করতে থাকে। বাঘ যখন ক্ষেপে গিয়ে জোড়ে হাঁটতে থাকে তখন রাম কুত্তারাও বাঘের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে জোড়ে হাঁটা শুরু করে। বাঘ যখন পিপাসা মেটাতে পানিতে নামে, তখন ওরা বাঘের লেজ ও পিছন দিকে কামড়ে দেয়। বাঘ রেগে গিয়ে পিছন দিকে লাফ দিলে ওরা নিরাপদ দূরত্বে চলে যায়। আবার যখন বাঘ পানি পান করতে যায়, তখন ওরা আবারও বাঘকে জ্বালাতে শুরু করে। কোনোভাবেই বাঘকে পানি পান করতে দেয় না। তবে বাঘকে পানি পান না করতে দিলেও নিজেরা পালাক্রমে পানি পান করে আসে।

যাক, এবার কিন্তু বাঘ ভয় পেয়ে যায় এবং পানি ছেড়ে দূরে গিয়ে একটু আরাম করার জন্য বসে পড়ে। তবে কুকুরগুলো কোনোভাবেই বাঘকে আরামে থাকতে দেয় না। আরাম করতে করতে বাঘ যখন খানিকটা ঝিমুতে শুরু করে, তখন কুকুরগুলো বাঘের মুখে থাবা দেয়। কয়েকটিতে মিলে বাঘের লেজ টানাটানি করতে থাকে। এতে বাঘ খুব অপমান বোধ করে। আর তাই রাগে-দুঃখে বাঘ দৌড়–তে শুরু করে। দৌড়–তে দৌড়–তে বাঘের পায়ের নিচের চর্বি গলে যায় ও বাঘ ক্লান্ত হয়ে পড়ে। ক্ষুধায়, তৃষ্ণায় ও ক্লান্তিতে বাঘ যখন প্রায় আধমরা হয়ে যায়, তখনই যমদূতের মতো কুকুরগুলো বাঘের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে ও দেহের বিভিন্ন স্থানে কামড়াতে থাকে। ধস্তাধস্তিতে দু’একটা কুকুর মারা গেলেও নাছোড়বান্দা কুকুরগুলো রনে ভঙ্গ দেয় না। বরং ওরা আরও উদ্যমে বাঘের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে ও শেষ পর্যন্ত বাঘকে হত্যা করে ছাড়ে।

যাক, এবার রাম কুত্তার প্রজনন ও বংশবৃদ্ধি সম্পর্কে জানা যাক। ওরা মাটিতে গর্ত খুঁড়ে বা পাহাড়ের গুহায় বাস করে। সেপ্টেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত ওদের প্রজননকাল। স্ত্রী ৬০ থেকে ৬৫ দিন গর্ভধারণের পর মাটির গর্ত বা পাহাড়ের গুহায় ৪ থেকে ৬টি বাচ্চা প্রসব করে। শুধু মা-বাবাই যে বাচ্চা লালনপালন করে তা নয়, বরং একাজে দলের অন্যান্য সদস্যরাও সাহায্য করে। প্রায় এক বছর বয়সে বাচ্চারা পূর্ণবয়স্ক হয়ে যায়। ওদের আয়ুষ্কাল প্রায় দশ বছর।

প্রবন্ধটির লেখক ও আলোকচিত্রী ড. আ ন ম আমিনুর রহমান একজন বন্যপ্রাণী জীববিজ্ঞানী, প্রাণী চিকিৎসা বিশেষজ্ঞ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক।

E-mail:[email protected], [email protected]

৫৫ বছর পর ডুবে যাওয়া জাহাজের ধ্বংসাবশেষ উদ্ধার



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

৫৫ বছর আগে অর্থাৎ ১৯৬৯ সালের ২৫ আগস্ট একটি দুর্যোগ বার্তা দিয়ে কয়েক মিনিটের মধ্যেই ডুবে যায় অস্ট্রেলিয়ার 'এমভি নুনগাহ' জাহাজ। পরে তাৎক্ষণিক উদ্ধার তৎপরতায়ও জাহাজে থাকা মানুষদের জীবিত উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। তখন থেকেই জাহাজটির নিখোঁজ হওয়া দেশটির নাগরিকদের কাছে রহস্য হয়ে ছিল। 

এবার সেই রহস্যের উদঘাটনের দ্বারপ্রান্তে দেশটির বিজ্ঞান সংস্থা কমনওয়েলথ সায়েন্টিফিক অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিসার্চ অর্গানাইজেশন (সিএসআইআরও)। বিজ্ঞানীরা দাবি করছেন, ডুবে যাওয়া জাহাজটির ধ্বংসাবশেষ খুঁজে পাওয়া গেছে।

ওই ঘটনায় জাহাজে থাকা ২৬ জনের মধ্যে ক্রুসহ ২১ জনের মারা যাওয়ার খবর গণমাধ্যমে উঠে এসেছিল।  

বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি জাহাজটির ধ্বংসাবশেষ খুঁজে পাওয়ার তথ্য জানায়।

বিবিসি জানায়, ৭১ মিটার (২৩৩ ফুট) দৈর্ঘ্যের ওই মালবাহী জাহাজটি নিউ সাউথ ওয়েলসের উপকূল থেকে ইস্পাত নিয়ে যাচ্ছিল। পরে ঝড়ের কবলে পরে জাহাজটি ডুবে যায়। এমন ঘটনা তখন অস্ট্রেলিয়ায় ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয়। 

জাহাজটি ডুবে যাওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে পাঁচজনকে জীবিত ও ২০ জনের মরদেহ তুলে নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু একঝনের লাশ এখনো উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।

ডেরওয়েন্ট নদীতে ১৯৫৬ সালে তোলা 'এমভি নুনগাহ'
 

গণমাধ্যমটি জানায়, অস্ট্রেলিয়া তাদের উচ্চ রেজোলিউশন সমুদ্রতল ম্যাপিং এবং ভিডিও ফুটেজ ব্যবহার করে ধ্বংসাবশেষের অবস্থান নিশ্চিত করেছে।

তবে সিডনি থেকে প্রায় ৪৬০ কি.মি (২৮৬ মাইল) উত্তরে সাউথ ওয়েস্ট রকসের উপকূলের গভীর জলে স্থানীয়রা এক বছর আগে একটি ধ্বংসাবশেষ দেখেছিল। পরে তারা এ সম্পর্কে কর্তৃপক্ষকে অবগত করার পর বিজ্ঞানীরা সন্ধান চালিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে। 

স্থানীয়দের তথ্যের পর বিজ্ঞানীরা দীর্ঘদিন ধরে সন্দেহ করেছিল এটি ডুবে যাওয়া জাহাজটি হতে পারে। তবে প্রয়োজনীয় কোন প্রযুক্তি বা ডাইভিং জ্ঞান না থাকার কারণে সেটিই যে ডুবে যাওয়া জাহাজ নুনগাহ তা নিশ্চিত করতে পারেনি তারা।

গত মাসে সিএসআইআরও উচ্চ প্রযুক্তি নিয়ে জাহাজটির ধ্বংসাবশেষ খুঁজতে শুরু করে।

পরে তারা ওই স্থানের ১৭০ মিটার নিচে এর ধ্বংসাবশেষ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে।

সিএসআইআরও'র কর্মকর্তা ম্যাট কিম্বার বলেন, এই ট্র্যাজেডি এখনও অনেকের স্মৃতিতে রয়েছে। তবে ধ্বংসাবশেষ আবিষ্কারের বিষয়টি জানার ফলে সবার জন্যই কিছুটা স্বস্তির কারণ হবে। 

নিহত ক্রুদের পরিবারের সদস্যরা অস্ট্রেলিয়ান ব্রডকাস্টিং কর্পোরেশনকে জানিয়েছেন, আবিষ্কারটি একটি স্বস্তির বিষয়।

;

বিশ্বের সবচেয়ে ‘কুৎসিত কুকুর’ এটি!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বিশ্বের সবচেয়ে সুন্দর কুকুরের তথ্য যেমন রয়েছে তেমনি এবার সবচেয়ে কুৎসিত আকৃতির কুকুরেরও তথ্য মিলেছে।

ব্রিটিশ গণমাধ্যম স্কাই নিউজ এ তথ্য জানিয়েছে।

স্কাই নিউজ বলছে, চলতি বছরের ২১ জুন (শুক্রবার) যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া রাজ্যে বিশ্বের সবচেয়ে কুৎসিত কুকু্রের প্রতিযোগিতা বসেছে। ওই প্রতিযোগিতায় যুক্তরাষ্ট্রের বাসিন্দা ওয়াইল্ড থাং নামে আট বছর বয়সী একটি কুকুর এ তকমা পেয়েছে।

তবে এবারই ওয়াইল্ড থাং প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেনি। এর আগেও ৫ বার এমন প্রতিযোগিতায় প্রাণীটি অংশগ্রহণ করেছিল। কিন্তু প্রতিবারই নিরাশ হয়ে ফিরতে হয়েছে।

ওয়াইল্ড থাং এবং তার মালিক অ্যান লুইস। ছবি: সুমিকো মুটস / এনবিসি নিউজ

ওয়াইল্ড থাং এর মালিক অ্যান লুইস বলেন, ওয়াইল্ড থাং কুকুরছানা হিসাবে একটি ভয়ানক রোগ ক্যানাইন ডিস্টেম্পারে সংক্রমিত হয়েছিল। কোন ক্ষতি ছাড়াই অনেক চিকিৎসার পর বাঁচানো সম্ভব হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, তার দাঁত বেশি বৃদ্ধি না পাওয়ায় জিহ্বা বাইরে থাকে এবং তার সামনের ডান পা ২৪/৭ প্যাডেল আকারে থাকে।

পুরস্কার হিসেবে তাদেরকে ৫ হাজার ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৫ লাখ ৮৭ হাজার ৫১১ টাকা) দেওয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, বিশ্বের সবচেয়ে কুৎসিত কুকুর প্রতিযোগিতা প্রায় ৫০ বছর ধরে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। প্রতিযোগিতাটি আকর্ষণীয় করার জন্য কুকুরগুলোকে বিশেষ এবং অনন্য করে সাজিয়ে তোলা হয়।

;

ট্যাক্সি চালকের অনর্গল ইংরেজি বলার দক্ষতা!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

এই সংবাদটি পড়তে হলে আপনাকে ভুলে যেতে হবে শুধু শিক্ষিতরাই সাবলীলভাবে ইংরেজি বলতে পারেন! কারণ সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে দেখা যায় এক ট্যাক্সি চালক তার যাত্রীর সাথে অনর্গল ইংরজিতে কথা বলছেন।

ঘটনাটি প্রতিবেশী দেশ ভারতের মহারাষ্ট্রে ঘটেছে। দেশটির গণমাধ্যম এনডিতিভির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

এনডিটিভি বলছে, ওই ট্যাক্সি চালক তার যাত্রীদের সাথে ইংরেজি কথা বলার পাশাপাশি কিভাবে আরও দক্ষ হওয়া যায় সে বিষয় নিয়েও আলোচনা করেন।

মহারাষ্ট্রের অমরাবতীতে ধারণ করা ভিডিওটি ভূষণ নামে একজন ইনস্টাগ্রাম ব্যবহারকারী শেয়ার করেছেন। ভিডিওর ক্যাপশনে তিনি লিখেছেন, "এমন ঘটনা দেখে আমি কিছু সময়ের জন্য স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিলাম। পরে তার সাথে কথা বলার সময় কিছুটা তোতলা হয়েছিলাম। তার ইংরেজিতে সাবলীলতা দেখে আমি অবাক হয়েছিলাম।"

পরে তার সাথে এ নিয়ে কিছুক্ষণ আলাপ হলো।

ট্যাক্সি চালক বলেন, ইংরেজি শেখা থাকলে আপনি লন্ডন এবং প্যারিসের মতো উন্নত দেশে যেতে পারবেন। এটা বিশ্বব্যাপী ভাষা। এ কারণে ইংরেজি শেখা গুরুত্বপূর্ণ।

ভিডিওটিতে একজন ব্যবহারকারী মন্তব্য করেছেন, "তার কথা বলার ধরণ ডক্টর এপিজে আবদুল কালামের মতো শোনাচ্ছেন"।

অপর একজন লিখেছেন, "১৬ বছরের শিক্ষার পর তার ইংরেজি আমার চেয়ে অনেক ভালো।"

;

‘প্রিয় স্বাধীনতা’ কবিতার মেঘনা নদীর দেখা মেলে চুনা নদীতে



মৃত্যুঞ্জয় রায়, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সাতক্ষীরা
ছবি: মৃত্যুঞ্জয় রায়, বার্তা২৪, সাতক্ষীরার শ্যামনগরের চুনা নদীর তীরের জীবন

ছবি: মৃত্যুঞ্জয় রায়, বার্তা২৪, সাতক্ষীরার শ্যামনগরের চুনা নদীর তীরের জীবন

  • Font increase
  • Font Decrease

মেঘনা নদী দেব পাড়ি
কল-অলা এক নায়ে।

আবার আমি যাব আমার
পাড়াতলী গাঁয়ে।

গাছ-ঘেরা ঐ পুকুরপাড়ে
বসব বিকাল বেলা।

দু-চোখ ভরে দেখব কত
আলো-ছায়ার খেলা।

বাঁশবাগানে আধখানা চাঁদ
থাকবে ঝুলে একা।


ঝোপে ঝাড়ে বাতির মতো
জোনাক যাবে দেখা।

ধানের গন্ধ আনবে ডেকে
আমার ছেলেবেলা।

বসবে আবার দুচোখে জুড়ে
প্রজাপতির মেলা।

হঠাৎ আমি চমকে উঠি
হলদে পাখির ডাকে।

ইচ্ছে করে ছুটে বেড়াই
মেঘনা নদীর বাঁকে।

শত যুগের ঘন আঁধার
গাঁয়ে আজো আছে।

সেই আঁধারে মানুষগুলো
লড়াই করে বাঁচে।

মনে আমার ঝলসে ওঠে
একাত্তরের কথা,

পাখির ডানায় লিখেছিলাম-
প্রিয় স্বাধীনতা।

কবি শামসুর রাহমানের প্রিয় স্বাধীনতা কবিতার লাইনের সঙ্গে মিল রেখে বলতে হয়-

শ্যামনগরের চুনা নদীর তীরে থাকা মানুষগুলোর কথা।
চুনা নদী পাড়ি দেবো, ডিঙ্গি নৌকা দিয়া।

আবার আমি যাবো আমার উপকূলের গাঁয়ে।
কাজের জন্য ছুটে বেড়াই, চুনা নদীর বাঁকে।

বনে বাঘ, জলে কুমির আর ডাঙ্গায় লোনা পানির ক্ষত।
সেই চরের মানুষগুলো, এখনো লড়াই করে বাঁচে।

বর্ষাকালের দুপুর বেলা। আকাশে কালো মেঘ খেলা করছে! নদীতে পানি ঢেউ খেলছে! ভেসে আসছে, গেট থেকে জল আসার শব্দ। নদীর এপার ওপার হচ্ছেন ডিঙা নৌকা দিয়ে পাড়ে থাকা মানুষগুলো। ছুটে চলেছেন নারী-পুরুষ একে একে চুনা নদীর তীরে কাজের সন্ধানে। সন্ধ্যা হলেই দেখা মেলে বাড়ি ফেরার তাড়া। রাতের আঁধারে পশুপাখি, জীবজন্তু, পোকামাকড়ের সঙ্গে লড়াই করে বাঁচেন এই চুনা নদীর পাড়ের মানুষগুলো।

সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগরের চুনা নদীর তীরে বসবাস নিত্যসংগ্রামী মানুষদের, ছবি- মৃত্যুঞ্জয় রায়, বার্তা২৪.কম


এখানকার মানুষজন লড়াই সংগ্রাম করে এখনো টিকে আছেন। টিকে থেকে তাদের রোজ কাজের সন্ধানে অবিরাম ছুটে চলতে হয়। বর্তমানে ভাঙাগড়ার জীবনে অনিশ্চিত এক ভবিষ্যত নিয়ে বসবাস করছেন তারা। শ্যামনগর উপজেলার কলবাড়ি এলাকায় অবস্থিত চুনা নদীর চরটি। ঘন ঘন প্রাকৃতিক দুর্যোগে সহায়-সম্বল হারানো ২০-২৫টি জেলে পরিবারের ঠাঁই হয়েছে এখানে। বছরের পর বছর এই চরকে আগলে বসবাস করলেও সব সময় লড়াই করে বেঁচে থাকতে হয় তাদের।

তাদের একজন ৩৫ বছর বয়েসি রমেশ চন্দ্র মণ্ডল। দুর্যোগে সহায়-সম্পদ হারিয়ে আশ্রয় নেন চরের এক কোণে। সেখানে মাটির ঘরে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে বসবাস তার। শারীরিকভাবে অসুস্থ হলেও ভর করে থাকতে হয়, স্ত্রীর ওপর। তার কষ্টের বিনিময়ে জোটে তাদের একমুঠো ভাত। স্ত্রী একাই লড়াই সংগ্রাম করে বেঁচে আছেন তাদের নিয়ে এই চরে।

বনে পশুপাখির, জলে কুমির আর স্থলে বন্যা, জলোচ্ছ্বাসের সঙ্গে এভাবে তাদের জীবন প্রবহমান। তাদের জীবন চলার পথে নেই কোনো বিরাম। সংগ্রাম করে টিকে থাকেন সবাই। একে একে সব কিছু হারিয়েও এখানো টিকে থাকতে হয় তাদের।

রমেশের মতো একই অবস্থা ষাটোর্ধ্ব ফকির বিশ্বাসের। বয়সের ভারে নুইয়ে পড়লেও পেটের দায়ে কাজ করতে হয় তাকে। একবেলা কাজ করলে অপর বেলা কাটে অসুস্থতায়!

ফকির বিশ্বাস বার্তা২৪কমকে বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগে সহায়-সম্বল হারিয়ে এই চরে আশ্রয় নিয়েছিলাম। আশ্রয়ের দুই যুগ লড়াই সংগ্রাম করে টিকে থাকলেও ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটাতে পারিনি। বরং প্রতিবছর ছোটবড় দুর্যোগের মুখোমুখি হয়েছি। লড়াই-সংগ্রাম করতে হয়েছে বারংবার!

জীবন কাটে যুদ্ধ করে, ঝড়-ঝঞ্ঝা মাথায় পেতে...চুনা নদীর তীরের মানুষের জীবন, ছবি- মৃত্যুঞ্জয় রায়, বার্তা২৪.কম

চুনা নদীর চরে মাছের পোনা গুনতে দেখা যায় নমিতা রাণী রায়কে। নমিতা রাণী রায় বার্তা২৪.কমকে বলেন, স্বামী-সন্তান নিয়ে সবসময় চিন্তার ভেতরে থাকতে হয় আমাকে। নদীতে কুমির আর বনে বাঘের আতঙ্ক! তারপর ডাঙায় লোনা পানির ক্ষত। লবণাক্ততায় ভরা জীবনকাল। তারপর চরটি নদীর ধারে হওয়াতে একটু জোয়ারের পানিতে তলিয়ে যায় বসতবাড়ি। এই লড়াই-সংগ্রাম করেই বেঁচে আছি সেই প্রথম থেকে। মাছের পোনা বিক্রি করে চলে আমাদের সংসার। আমরা সবাই এখানে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সংগ্রাম করে টিকে আছি।

নমিতা রাণী রায় বলেন, যখন বসতবাড়ি নদীর পানিতে তলিয়ে যায়, তখন স্যানিটেশন ব্যবস্থা ভেঙে পড়ে। ওই সময় অনেক কষ্টে চর এলাকার সবার দিন কাটে। শিশু সন্তানদের সবসময় নজরে রাখতে হয়। অন্যথায় নদীতে পড়ে গিয়ে ঘটতে পারে ছোট-বড় দুর্ঘটনা!

নিত্যদিনের লড়াই-সংগ্রাম

লড়াই সংগ্রামের শেষ নেই উপকূলে থাকা মানুষজনের। সর্বশেষ, ঘূর্ণিঝড় ‘রিমাল’-এর আঘাতে নদীর জোয়ারের জলে তলিয়ে যায় তাদের বসতঘর। ঘূর্ণিঝড় ‘রিমাল’ বলে কথা না! যেকোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় জোয়ারের পানিতে তাদের বসতঘর তলিয়ে যায়। তখন আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নেওয়া ছাড়া কোনো উপায় থাকে না তাদের। এমনও অনেক সময় গেছে যে, দিনের পর দিন উনুনে আগুন দিতে পারেননি তারা। ওই সময় শুকনো খাবার খেয়ে থাকতে হয়েছে তাদের। এমনও দিন গেছে, যেদিন তাদের শুধুমাত্র পানি পান করে বেঁচে থাকার জন্য লড়তে হয়েছে।

ঘরছোঁয়া জলের বানের দিকে তাকিয়ে থাকেন চুনা নদীর তীরের মানুষজন আর ভাবেন আর কত সংগ্রাম, ছবি- মৃত্যুঞ্জয় রায়,বার্তা২৪.কম

সত্যি, তাদের ভাষ্যের সঙ্গে বড়ই মিল কবি শামসুর রাহমানের ‘প্রিয় স্বাধীনতা’ কবিতার! ঘন ঘন প্রাকৃতিক দুর্যোগের সঙ্গে লড়াই করে বেঁচে থাকাটা একটা বড় প্রশ্নেরই বটে! জঙ্গল, বন্যা, নদীভাঙনের সঙ্গে অবিরাম সংগ্রাম করে টিকে থাকা একটা অকল্পনীয় ব্যাপার। অবর্ণনীয় দুঃখ-কষ্ট আর অভাবে চরের মানুষদের দৈনন্দিন জীবন। তাদের জীবনের অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে বাঁধ ভাঙন, জলোচ্ছ্বাসসহ ঘূর্ণিঝড়। প্রতিবছর এসব দুর্যোগে শেষ সম্বলটুকু হারিয়ে প্রতিনিয়ত সর্বস্বান্ত হচ্ছেন তারা। আবারও লড়াই-সংগ্রাম করে বেঁচে থাকার তাগিদে ঘুরেও দাঁড়ান তারা।

;