স্বপ্নের ভুয়া মাজার!

  • মনিরুজ্জামান বাবলু, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, চাঁদপুর, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: বার্তা২৪

ছবি: বার্তা২৪

রোকেয়া বেগম স্বপ্ন দেখেছেন মাজার। তাই রাতারাতি মাজার তৈরি করলেন। এ মাজারকে ভুয়া বলে অহিত করছেন এলাকাবাসী। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার আশ্রাফুর ইউনিয়নের চক্রা গ্রামে।

জানা গেছে, প্রায় দুই মাস পূর্বে ওই গ্রামের মৃত টুকু মিয়ার ছেলে আবদুল মমিন খন্দকার, তার দ্বিতীয় স্ত্রী রোকেয়া বেগম চক্রা গ্রামের বেনুচো নতুন বাড়িতে ঘরের সমানে দুটি নতুন কবর তৈরি করে চারদিকে লালসালু ও কয়েকটি ছবি টানিয়ে দেন। এ সংবাদ এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে সাধারণ লোকজনের মাঝে ব্যাপক চাঞ্চল্যকর সৃষ্টি হয়।

বিজ্ঞাপন

বৃহস্পতিবার সরেজমিনে ওই গ্রামের আনোয়ার হোসেন, আহসান হাবীব, সোহেল, আবু হানিফ, রফিক, ফরহাদ হোসেনসহ একাধিক লোকজনের সঙ্গে কথা হয়।

তারা জানান, এখানে পূর্বে কোনো মাজার কিংবা কবর ছিল না। আবদুল মমিন খন্দকার ও তার দ্বিতীয় স্ত্রী রোকয়ো বেগমের প্ররোচনায় গত ২৯ নভেম্বর রাতে কিছু অতি উৎসাহী লোকের সহায়তা তার ঘরের সামনে মাটি দিয়ে দুটি নতুন কবর তৈরি করেন। অথচ তারা প্রচার করছে এখানে আধ্যাত্মিকভাবে মাজার হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

এলাকাবাসী অভিযোগ করে বলেন, চক্রা গ্রামের সাধারণ মানুষকে ধোঁকা দেয় তারা। তাই তারা যাতে কোনো প্রকার প্রতারণা বা ফায়দা লুটতে না পারে, প্রশাসনকে সে ব্যবস্থা করার আনুরোধ জানান চক্রাবাসী।

মাজারের বিষয়ে আবদুল মমিনের প্রথম স্ত্রী নাছিমা বেগম বলেন, ‘এ বিষয়ে মুখ খুলতে নিষেধ আছে। এটি আমার স্বামী ও তার দ্বিতীয় স্ত্রী রোকেয়া বেগম ভাল জানেন। তবে এখানে পূর্বে কোনো কবর ছিল না।’

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jan/10/1547132696067.jpg

মাঝে মধ্যে এখানে হালকা জিকির ওয়াজের ব্যবস্থা করা হতো বলেও জানান তিনি।

জানতে চাইলে রোকেয়া বেগম মুঠোফোনে বলেন, ‘আমার স্বামী আবদুল মমিন ও আমি ফরিদপুরের আটরশির মুরিদ (ভক্ত)। আমার স্বামী কচুয়া-ঢাকা সড়কের সুরমা বাসের সুপারভাইজার। আমরা নারায়ণগঞ্জে বসবাস করি। আমি বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন মাজারে যাই। আমাকে স্বপ্নে দেখানোর ফলে আমি এটি করে তাদের আশ্রয় দিয়েছি। তবে কোন ধরনের প্রতারণার উদ্দেশ্যে এটি করি নাই। শুধু মাত্র স্বপ্নে দেখানোর ফলে তাদের আশ্রয় দেয়ার জন্য করেছি।’

‘তাদের’ কাদের জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এগুলো আলগা (জিন) জাতীয়।’

আশ্রাফপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাসুদ এলাহী সুভাস বলেন, ‘চক্রা গ্রামে আধ্যাত্মিক মাজার উঠার বিষয়ে আমার জানা নেই।’

কচুয়া থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আতাউর রহমান ভূঁইয়া বলেন, ‘চক্রা গ্রামে আধ্যাত্মিক মাজারের বিষয়ে জানা নেই। তবে এখানে কোন প্রতারণা হয় কিনা তা খোঁজ খবর নিয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।’