‘রুধিবি কি দিয়া সাগর জোয়ার আকাশে যখন উঠেছে চাঁদ’



ড. মাহফুজ পারভেজ, কন্ট্রিবিউটিং এডিটর, বার্তা২৪.কম
কবি ও গবেষক অভীক ওসমান, ছবি: বার্তা২৪

কবি ও গবেষক অভীক ওসমান, ছবি: বার্তা২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

জাগ্রত বাংলাদেশের গগনস্পর্শী অভিব্যক্তি মূর্ত হয়েছিল ঊনসত্তর, সত্তর, একাত্তরে। বাঙালি জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের অগ্নিগিরিসম লেলিহান শিখা ব্যক্তিতে, সমাজে, জনপদে, রণাঙ্গনে জ্বলে উঠেছিল সর্বব্যাপী প্লাবনে। নজরুলের দ্রষ্টার চোখ যেন দেখেছিল সেই জনবিস্ফোরণ: ‘এই যৌবন জলতরঙ্গ রুধিবি কি দিয়া বালির বাঁধ/রুধিবি কি দিয়া সাগর জোয়ার আকাশে যখন উঠেছে চাঁদ।’

স্বাধীনতার চন্দ্রালোকিত আকাশের তলে জাগ্রত বাংলাদেশ ও বাঙালিকে কোনোভাবেই থামানো যায় নি। ব্যক্তি থেকে জাতিসত্ত্বার জেগে উঠার অমোঘ পরিণতিতে জন্ম নেয় স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ। যে মানুষ ইতিহাসের নায়ক হয়ে বিনির্মাণ করেছিল ঐতিহাসিক বাংলাদেশ, তাদের সবার কথা আজো জানা হয় নি। মুক্তিযুদ্ধের গবেষকরা ছেনে বের করছেন অসম সাহসী মানুষের স্বাধীনতার স্পৃহা ও লড়াইয়ের কাহিনি।

চট্টগ্রামের কবি, নাট্যজন, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব অভীক ওসমান বাঙালি জাতির উত্থানপর্বের ঐতিহাসিক কালপর্বগুলোর ধারাবাহিকতায় বেড়ে উঠেছেন। দক্ষিণ চট্টগ্রামের শঙ্খ নদীর তীরবর্তী চন্দনাইশ থেকে কৈশোর-যৌবনে আগমন করেন শহর চট্টগ্রামে। জাতীয় আন্দোলনের অভিঘাতে চট্টগ্রামে-সৃষ্ট স্ফুলিঙ্গের স্পর্শে তিনি নিজেকে জারিত করেন। বাঙালির গণআন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধ তার জীবনের সমান্তরালে প্রবহমান।

পথনাটক, কবিতা, গবেষণা, স্মৃতিকথার পাশাপাশি অভীক ওসমান চট্টগ্রামের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের হারিয়ে যাওয়া অধ্যায়গুলোকে পুনঃনির্মাণ করছেন। রচনা করেছেন ‘শহিদ মেজর নাজমুল হক: সেক্টর ৭-এর বিস্মৃত কমান্ডারের উপাখ্যান’। দক্ষিণ চট্টগ্রামের এই বীর ও শহিদ কমান্ডারের কীর্তি ও অবদানকে বিস্মৃতির অতল থেকে তুলে এনেছেন।

বৃহত্তর চট্টগ্রামের দক্ষিণাংশের সাতকানিয়া/লোহাগাড়ার মেজর নাজমুল হক হতে চেয়েছিলেন প্রকৌশলী। কিন্তু জাতীয় ইতিহাসের পালাবদল তাকে এনে দাঁড় করায় মুক্তির ময়দানে। তিনি ৭ নং সেক্টরের কমান্ডার হয়ে শহিদ হন একাত্তরে। ২৭ সেপ্টেম্বর ১৯৭১ সাল পর্যন্ত তিনি সেক্টর কমান্ডারের দায়িত্ব পালন করেন। তার কৃতিত্ব সম্পর্কে বলা হয়, ‘পাকিস্তানি বাহিনির বিরুদ্ধে কালজয়ী সমরনায়ক সেক্টর কমান্ডার মেজর নাজমুল হকের রণকৌশল ছিল ভিন্নধর্মী। তার প্রতিটি সমরকৌশল ছিল গণমুখী ও সৃজনশীল।'

অভীক ওসমান গভীর অনুসন্ধান ও সমীক্ষায় মেজরের জন্ম, বাল্যস্মৃতি, চিঠিপত্র, ডায়েরির মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধা নাজমুলের চরিত্র কাঠামোর এক তথ্যনিষ্ঠ বয়ান উপস্থাপন করেছেন। গণআন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধ কিভাবে ব্যক্তিকে ইতিহাসের চরিত্রে রূপান্তরিত করেছিল, সে বিশ্লেষণ দিয়েছেন। সামরিক ও রাজনৈতিক নেতৃত্বের যৌথতায় একাত্তরের জনযুদ্ধে গণমানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের চিত্রটিও ভেসে আসে গবেষণার সূত্রে।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jan/19/1547881916446.jpg

একজন জাতীয় বীরের জীবনালেখ্য ও অবদানের এমন সজিব ও সচল চিত্র দেশের ইতিহাসের পাতাগুলোকেও পুষ্ট করে। একটি সংগ্রামী জাতির কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতৃত্বের সম্মিলনে জাতীয় জাগরণ ও জনযুদ্ধের ঐতিহাসিক ক্যানভাসটিও প্রতিস্ফূট হয়।

অভীক ওসমান জানাচ্ছেন, ‘সত্তর দশকের ক্রমবর্ধিষ্ণু চট্টগ্রামের নগরায়নের বাঁকে বাঁকে বিকশিত হয়েছিল জাতীয়তাবাদী চৈতন্য। পাড়ায় পাড়ায়, স্কুলে কলেজে, রাজনৈতিক দলের অফিসে, নেতাদের তৎপরতায় বাংলাদেশের পক্ষে বাড়ছিল জনসম্পৃক্ততা। একটি শোষণমূলক রাষ্ট্রকে অবলীলায় অস্বীকার করে জাতিসত্ত্বার মানসে জাগ্রত হচ্ছিল বাংলাদেশের অভিব্যক্তি, রক্তাক্ত রণাঙ্গণের মধ্য দিয়ে যা অবশেষে অর্জিত হয়েছে। ব্যক্তি থেকে সমষ্টি পর্যন্ত প্রসারিত এবং আন্দোলন থেকে সশস্ত্র যুদ্ধ পর্যন্ত কেন্দ্রিভূত সেই ইতিহাসের গতিপথ ও পরম্পরা যদিও অতীতের অংশ, তথাপি তা আমাদের ভবিষ্যতের পথনির্দেশকও বটে।’

‘আমাদের কৈশোর, যৌবন বেড়ে উঠেছিল যে আন্দোলনমুখর জাতীয় ইতিহাসের স্রোতধারায়, তা-ই মুক্তিযুদ্ধের রণাঙ্গণের বিজয়ের মাধ্যমে ভবিষ্যতমুখী বাংলাদেশের চিরউন্নত কাঠামোর নির্মাণসূত্র’, বলেন অভীক ওসমান, ‘বিশেষত ঐতিহাসিক চট্টগ্রাম বাংলার আন্দোলন, সংগ্রাম ও অর্থনীতির সূতিকাগার। বন্দর, শিল্প, বাণিজ্য, বিশ্বায়ন, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক যোগাযোগের স্তম্ভ হয়ে মুক্তিযুদ্ধের চট্টগ্রাম উজ্জ্বল বাতিঘরের মতো দাঁড়িয়ে রয়েছে বাংলাদেশ ও বিশ্বের সামনে।’

ব্লু ইকোনমি ও পূর্বমুখী অর্থনীতির সূত্র ধরে অভীক ওসমান বলেন, ‘চট্টগ্রামের অর্থনৈতিক জোন, ইস্পাত ও লৌহ শিল্প, মৎস্য ও সামুদ্রিক সম্পদ বাংলাদেশের অর্থনীতিকে সবচেয়ে বেশি পরিপুষ্ট করতে পারে। বাংলাদেশকে উন্নততর অবস্থানে এগিয়ে নিতে হলে এসব সেক্টরকে গড়ে তুলেই তা করতে হবে।’

স্বাপ্নিক ও চিন্তক অভীক ওসমান মনে করেন, ‘বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাঙালির জাতীয় জাগরণে চট্টগ্রাম ঐতিহাসিক ভূমিকা নিয়ে যেভাবে সামনের কাতারে এগিয়ে এসেছিল, বঙ্গবন্ধুকন্যা-জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের উন্নয়ন অভিযাত্রায়ও চট্টগ্রাম থাকবে সম্মুখ সারিতে।’

জাতীয় কবি কাজী নজরুলের দীপ্ত উচ্চারণের আলোকে অভীক ওসমান বিশ্বাস করেন, ‘জাতীয় জাগরণের চাঁদ উদিত হলে জনস্রোতের প্লাবন যেমনিভাবে থামানো সম্ভব নয়, উন্নয়নের চন্দ্রালোক বিচ্চুরিত হলে নির্মাণ ও অগ্রগামিতার মহাযাত্রাকেও তেমনিভাবে আটকে রাখা সম্ভব নয়। একাত্তরে স্বাধীনতাকামী যে বাংলাদেশকে কেউ থামাতে পারে নি, আজকের উন্নয়নকামী বাংলাদেশকেও কোনো শক্তি আটকে রাখতে পারবে না।’

 

   

বিশ্ব চা দিবস



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
চা / ছবি: বিং এআই

চা / ছবি: বিং এআই

  • Font increase
  • Font Decrease

কনকনে শীতে কাপছেন। সোয়েটার-চাদর মুড়ে বসলেও গা ভেতর থেকে কাঁপুনি কমছে না। অথবা কাজ করতে করতে মাথা ঝিমঝিম করছে। অস্বস্তি সহ্যও হচ্ছে না, অথচ এই স্বল্প ব্যথায় ঔষধও তো খাওয়া যায় না! কিংবা বাসায় আসা কোনো মেহমান বা বিকেলে বন্ধুদের সাথে আড্ডায় বসেছেন। শুধু মুখে বসে থেকে গল্প করতে কতক্ষণই বা ভালো লাগে? এরকম সব পরিস্থিতি সামাল দিতেই রয়েছে- চা।

আজ ২১ মে বিশ্ব চা দিবস। তথ্য অনুযায়ী ২০০৪ সালে সর্বপ্রথম চায়ের গুরুত্ব বিবেচনা করে একে স্বীকৃতি দেওয়ার কথা চিন্তা করা হয়। বিশ্ব সামাজিক ফোরাম এই সিদ্ধান্ত নেয় এবং তারপরের বছর ২০০৫ সালে প্রথমবার ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লীতে বিশ্ব চা দিবস উদযাপন করা হয়। পরবর্তীতে ২০০৬ সালে শ্রীলঙ্কায়েএই দিবস পালন করা হয়। ২০১৫ সালে চা দিবসে উদযাপন বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে যায়। ২০১৯ সালে জোতিসংঘ কয়েকটি দেশের সম্মিলিত উপস্থিতিতে ২১ , চা দিবসের আয়োজন করে।   

 চা পাতা তোলা / ছবি: বিং এআই

চায়ের জন্ম হয় ঠিক কবে হয়েছিল তার নির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে ধারণা করা হয়, আজ থেকে ৫ হাজার বছরেরও আগে সৃষ্টি হয় এই পানীয়। এশিয়ারই বৃহত্তর দেশ চীনে এর জন্ম হয়। তৎকালীন সময়ের পাওয়া জিনিসপত্রে চায়ের অস্তিত্বের প্রমান মেলে। ক্যামেলিয়া সিনেনসিস উদ্ভিদ থেকে উৎপন্ন হয় এই পানীয় তাই চীনের নামের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ।  সাধারণ পাহাড়ি অঞ্চলে শক্ত পাথুরে মাটিতে জুমচাষে চা উৎপন্ন করা হয়। আমাদের দেশেও বৃহত্তর সিলেটঅঞ্চল এবং চট্টগ্রামের কিছু অংশে চা পাতা চাষকরা হয়।    

কম-বেশি চা খান না- এমন মানুষ হাতে গুনতে পারা যায়। মূলত উদ্ভিজ এই পানীয় জনপ্রিয় তার অনন্য স্বাদ, ঘ্রাণ এবং উপকারের জন্য। কফি অনেকেই পছন্দ করেন। তবে চিকিৎসকরা অনেককে কফির উপর নিষেধাজ্ঞা দেন। চায়ের ক্ষেত্রে সেই বালাই নেই। তাই চা-কে অন্য সব পানীয়ের মতো শুধু একটি পানীয় হিসেবে বিবেচনা করা হয় না। বরং একে খাদ্যতালিকার পানির পরে পানীয় হিসেবে এক বিশেষ অংশ হিসেবে মনে করা হয়।  

চাষ করা চা পাতা শুকিয়ে নিয়ে, গরম পানি বা দুধে চিনি ও অনেকক্ষেত্রে মশলা মিশিয়ে শুকনো সেই পাতা দিয়ে বানানো হয় চা। আমাদের দেশ হোক বা বাইরের দেশে, অধিকাংশ মানুষের জীবন ধারার এক অবিচ্ছেদ্য অংশ হলো এই পানীয়।   

;

অকালে আম পাকে!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
অপরিপক্ক পাকা আম / ছবি: পিক্সাবে

অপরিপক্ক পাকা আম / ছবি: পিক্সাবে

  • Font increase
  • Font Decrease

‘বৈশাখে তোর রূদ্র ভয়াল,

কেতন ওড়ায় কালবৈশাখী!

জষ্ঠি মাসে বনে বনে

আম কাঠালের হাট বসে কি...’

রবিঠাকুরের কলমে রচিত এ পংক্তি যেন, কেবল কাগজের উপর কালিতে সাজানো কিছু শব্দ নয়। বাংলা বছরের প্রথম ঋতুর সকল বৈশিষ্ট্য খুব অল্প ভাষায় সুসজ্জ্বিত করে গানের রূপে সামনে আনেন বিশ্বকবি।

দিন গুনতে গুনতে বছরের প্রথম মাসটি অনায়াসে কেটে গেল। চলছে জৈষ্ঠ্য মাস। ভয়ংকর কাল বৈশাখী ঝড়ে লণ্ডভণ্ড হওয়ার আশঙ্কাকে পাশ কাটিয়ে; জৈষ্ঠ্যের পাকা আম, জাম, কাঁঠাল, লিচুই যেন গ্রীষ্মের আসল আনন্দ।  

গ্রীষ্মের পরিপূরক হলো আম। আম পছন্দ নয়, এমন মানুষটি খুঁজে পাওয়া দায়! এজন্যই আমকে বলে ফলের রাজা। ত্যক্ত-বিরক্ত করা গরমেও পাকা টসটসে আমের সুঘ্রাণই যেন আনন্দের স্বস্তি। তবে সে আনন্দেও বালি ঢেলে দেয় কিছু অসাধু ব্যবসায়ী। ভোজন-রসিক মানুষরা সারা বছর অপেক্ষা করে থাকে রসে টসটসে তাজা ফলের স্বাদ আস্বাদনের জন্য। অনেক ভোক্তদের সেই অপেক্ষা বৃথা হয়ে যায় অপরিপক্ক ফলের কারণে।

অনেক ব্যবসায়ী অতিরিক্ত লাভের আশায় রাসায়নিক উপাদান ক্যালসিয়াম কার্বাইড ব্যবহার করে আম পাকানোর চেষ্টা করে। আম যখন কাঁচা অবস্থায় থাকে তখন এর মধ্যে সাইট্রিক এসিড ম্যালিক এসিড, টারটারিক এসিড থাকে। এ কারণে আমের হাইড্রোজেন আয়নের ঋণাত্মক ঘনমাত্রার লগারিদম মান খুব কম হয়, ফলে আম অম্লধর্মী হয়। এছাড়া কাঁচা অবস্থায় আমে উচ্চ ওজনের পেকটিনের মজুদ বেশি থাকে।

অপরিপক্ক পাকা আম

সাধারণত প্রাকৃতিকভাবে পাঁকার সময় এই পেকটিনের ওজন কমতে থাকে। আমের মধ্যকার ভিটামিন ‘সি‘ কালক্রমে বদলে ভিটামিন ‘এ’ তে রূপান্তরিত হয়। একই সঙ্গে ক্লোরোফিল পরিবর্তিত হয়ে গ্লোবুলার ক্রোমোপ্লাস্টে রূপান্তরিত হয়। অ্যান্থোসায়ানিন পিগমেন্ট ফিনাইলপ্রোপানয়েডের সেকেন্ডারি মেটাবোলাইটসের  উপসি্থতি বাড়তে থাকে।(‘বিজ্ঞানচিন্তা’র তথ্যমতে) এই কারণে কাঁচা আমের সবুজ রঙ পরিবর্তন হয়ে লালচে-হলুদাভাব বর্ণ ধারণ করে। এভাবে পাকার ফলে আম হয় সুস্বাদু। আমের মৌ মৌ গন্ধ চারদিকে ছড়িয়ে যায়।

তবে ক্যালসিয়াম কার্বাইড (CaC2)  এর প্রয়োগের কারণে আমের মধ্যে পরিবর্তন আসে। এর মধ্যে থাকা (৮০থেকে৮৫ভাগ) ক্যালসিয়ামের কারণে আমের অম্লত্ব নষ্ট হতে শুরু করে। অম্ল-ক্ষারের প্রশমনের কারণে আমের মধ্যে থাকা ম্যালিক এসিড ও সাইট্রিক এসিডের পরিমাণ কমতে থাকে। তাই কাঁচা অবস্থাতেই আমের রঙ পরিবর্তন হতে শুরু করে।

আমের ভিটামিন বি১ পানিতে দ্রবনীয়। আমের আর্দ্র অংশের সঙ্গে ক্যালসিয়াম কার্বাইড বিক্রিয়া করে অ্যাকটেলিন গ্যাস উৎপন্ন করে। এতে আম অসময়েই পাক শুরু করে। সামগ্রিকভাবে আমের রাসায়নিক পরিবর্তন না ঘটলেও বাহ্যিকভাবে রঙের পরিবর্তনের কারণে দেখলে মনে হয় আম পেকেছে। এই অপরিপক্ক আম খেলে কেবল রুচি ও ভাবমূর্তি নষ্ট হয়, তাই নয়! শরীরের জন্যও অনেক বেশি ক্ষতিকর হতে পারে।

;

সম্মানসূচক ডি. লিট উপাধি পেল 'বিড়াল'!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে 'ম্যাক্স' নামের একটি বিড়ালকে সম্মানসূচক ‘ডক্টরেট অব লিটারেচার’ বা ডি. লিট উপাধিতে ভূষিত করা হয়েছে। দেশটির ভারমন্ট স্টেট ইউনিভার্সিটির ছাত্রদের স্নাতক অনুষ্ঠানে বিড়ালটিকে এই সম্মানসূচক ডিগ্রি দেওয়া হয়। তবে সেই অনুষ্ঠানে বিড়ালকে আমন্ত্রণ জানানোর নিয়ম না থাকায় উপস্থিত ছিল না ম্যাক্স। 

বিশ্ববিদ্যালয়টির কর্তৃপক্ষ বলছে, অনুষ্ঠানে বিড়ালটি উপস্থিত ছিল না। তাই বিড়ালের মালিক অ্যাশলে ডোর কাছে খুব শিঘ্রই এই ডিগ্রি পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।   

বন্ধুসুলভ এই বিড়ালটিকে তার ইঁদুর শিকারের দক্ষতা বা অতিরিক্ত ঘুমানোর জন্য নয় বরং তার সহচার্যের জন্যই স্বীকৃতি দিয়েছে।   বিড়ালটিকে এই ডিগ্রিতে ভূষিত করা হয়। ভারমন্ট স্টেট ইউনিভার্সিটির ক্যাসেলটন ক্যাম্পাস।

ব্রিটিশ গণমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

সম্মানসূচক ডি. লিট উপাধি পেল 'বিড়াল'!

বিশ্ববিদ্যালয়টি একটি ফেসবুক পোস্টের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, ম্যাক্স দ্য ক্যাট, অনেক বছর ধরেই ক্যাসেলটন পরিবারের একজন আদুরে সদস্য। ভারমন্ট স্টেট ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাসের প্রবেশদ্বারের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া রাস্তায় পাশেই বসবাস করে এক পরিবার। বিড়ালটি সেই পরিবারেরই পোষা।

বিড়ালের মালিক অ্যাশলে ডো বলেন, ‘বিড়ালটি ঠিক করেছে সে ক্যাম্পাসে যাবে। এরপর থেকেই সে কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আড্ডা দিতে শুরু করে। আর শিক্ষার্থীরাও তাকে আদর করতে শুরু করে।’

বিড়ালটি প্রায় চার বছর ধরে ক্যাম্পাসে আসা যাওয়া করছে। বিড়ালটিকে পথের ধারে শুয়ে থাকতে দেখলেই সবাই তার সঙ্গে সেলফি নেয়।

এমনকি সাবেক ছাত্ররাও যখনই ক্যাম্পাসে আসেন তারা তখনই বিড়ালটির খোঁজ নিতে তার মালিক ডো-এর কাছে যান। ডো তাদের কাছে বিড়ালটির মা হিসেবেই বেশি পরিচিত।

;

৯৩ বছর বয়সে বৃদ্ধের অবিশ্বাস্য কর্মকাণ্ড



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
বৃদ্ধ জন স্টারব্রুক

বৃদ্ধ জন স্টারব্রুক

  • Font increase
  • Font Decrease

শৈশবে খেলা, কৈশরে পড়ালেখা, যৌবনে চাকরি, মধ্যবয়সে সংসার, বৃদ্ধবয়সে একটা মাথা গোজার ঠাঁই খুঁজে অবসরে সময় কাটিয়ে দেওয়া। কপাল খারাপ থাকলে বিছানাতেই শোয়া বা আধশোয়া থেকে মৃত্যুর দিন গোণা। সাধারণত এভাবেই মানুষের জীবন কেটে যায়। অনেকে আবার মধ্যবয়সের পরেই নানারকম রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। অথবা শরীরকে বিভিন্ন রোগের আবাসস্থল বানিয়ে দুর্বল হয়েই বেঁচে থাকেন। তবে খড়ের গাদায় সূচের মতো দু-একজন থাকে যারা একেবারেই ব্যতিক্রম। তেমনভাবেই আলোচনায় এসেছেন ৯৩ বছরের এক বৃদ্ধ।  তার ব্যতিক্রমী জীবনযাপনের ধারাই আলোড়ন সৃষ্টি করেছে যুসমাজে।     

যুক্তরাজ্যের বাসিন্দা জন স্টারব্রুক। তিনি একজন ওয়াটার পোলো খেলোয়াড়। এটি মূলত পানির মধ্যে বাস্কেটবলের মতো একধরনের খেলা। এইখেলার সাথে কুস্তি খেলারও কিছুটা সাদৃশ্য রয়েছে। জনের বর্তমান বয়স ৯৩ বছর। এই বয়সেও যথেষ্ট সুস্থ এবং সবল তিনি। সমবয়েসীদের যেখানে সোজা হয়ে দাঁড়াতেও ২ জনের সহায়তা লাগে, সেখানে এখনো ম্যারাথনে দৌড়ে বেড়াচ্ছেন তিনি। পাশাপাশি বেশ দক্ষ সাঁতারুও বটে! ৮০ বছরেরও বেশি সময় ধরে সাঁতার কাটা অব্যাহত রেখেছেন তিনি।

প্রায় শতাব্দি ছুঁই ছুঁই বৃদ্ধের এমন কারিশমা দেখে চোখ ছানাবড়া হবার উপক্রম। জন মূলত একজন সাঁতারু। পেশাগতভাবে না হলেও অনেক ছোটবেলা থেকেই তিনি সাঁতার কাটেন তিনি। দেশের সম্মানজনক অনেপ্রতিযোগীতায় একাধিক বার চ্যাম্পিয়নের খেতাবও জেতেন। চাকরি করেছেন ‘ব্রিটিশ আর্মি মেডিক্যাল কর্পস’-। সেখানেও সাঁতারের দক্ষতার কারণে তার বেশ সুনাম ছিল।   

ম্যারাথনে দৌড়াচ্ছেন ৯৩ বছরের জন

তবে সাঁতারের পাশাপাশি এখন ম্যারাথেনেও অংশগ্রহণ করেছেন জন। ৫২ টির বেশি ম্যারাথনের দৌড় শেষ করেছেন তিনি। জানালেন এই বয়সেও তার এমন চ্যালেঞ্জিং সব কাজের অভিজ্ঞতা। সুস্থতা ধরে রাখার রহস্যও ফাঁস করলেন সকলের কাছে। ব্রিটিশ নাগরিক জন বন্ধুদের কাছে ‘দ্য লিজেন্ডনামেই পরিচিত। একই নামে তাকে আখ্যায়িত করছে ব্রিটিশ গণমাধ্যমগুলো

জন স্টারব্রুক জানান, তিনি এখনো সপ্তাহের ৬ দিনই জিমে যাতায়াত করেন। বিশেষ কোনো খাদ্যাভাস নেই তার। খাদ্যতালিকায় প্রচুর পরিমাণে শাক-সবজি রাখতে পছন্দ করেন- এই যা। তাছাড়া প্রতিদিন সকালে পোরিজ খান তিনি। তবে তিনি কখনো ধূমপান করেননি। অ্যালকোহলও খুব সীমিত পরিমাণে সেবন করতেন। মূলত এই বয়সেও এটা সবল থাকার পেছনে বংশ পরম্পরায় পাওয়া নিজের জীন আসল কারণ- বিশ্বাস করেন জন।

কারণ যাই হোক, প্রানবন্ত এই বৃদ্ধ বিশ্ববাসীকে অবাক করেছে। তার মতোই দৃঢ় মানসিকতা ধরে রাখার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন যুবক-যুবতীরা।

তথ্যসূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

;