গ্রামের মানুষের এসি ঘর

  • তোফায়েল হোসেন জাকির,ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, গাইবান্ধা, বার্তা২৪
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

গ্রামের এসি ঘর, ছবি: বার্তা২৪

গ্রামের এসি ঘর, ছবি: বার্তা২৪

গাঁও-গ্রামের মানুষের এসি ঘর হিসেবে খ্যাত মাটির তৈরি ঘর। অতীতে মাটির ঘর গরিবের শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘর বলা হত। কিন্তু এখন আর সেটা বলা যাচ্ছে না। ঝড়-বৃষ্টি থেকে বাঁচার পাশাপাশি প্রচুর গরম ও খুবই শীতে আদর্শ বাস-উপযোগী মাটির তৈরি এসব ঘর। আগের মতো এখন আর তেমন একটা নজরে পড়ে না এই মাটির ঘর-বাড়ি।

আধুনিকতায় ছোঁয়া আর কালের আবর্তে গাইবান্ধার ধাপেরহাট ইউনিয়নের বেশ কিছু গ্রামের ঐতিহ্যবাহী মাটির ঘর এখন হারিয়ে যেতে বসেছে।

বিজ্ঞাপন

হিংগারপাড়া গ্রামের জসিম উদ্দিন জানান, এঁটেল বা আঠালো মাটি কাদায় পরিণত করে দুই-তিন ফুট চওড়া করে দেয়াল তৈরি করা হত। ১০-১৫ ফুট উঁচু দেয়ালে কাঠ বা বাঁশের সিলিং তৈরি করে তার ওপর খড়-কুটা অথবা ঢেউটিনের ছাউনি দেয়া হত। আর এই মাটির ঘর অনেক সময় দোতলা পর্যন্ত করা হয়। সব ঘর বড় মাপের হয় না। গৃহিণীরা মাটির দেয়ালে বিভিন্ন রকমের আলপনা একে ঘরের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করতেন।

আলীপুর গ্রামের নুরুন্নবী মিয়া বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও বর্ষা মৌসুমে মাটির ঘরের ক্ষতি হয় বলে ইট-সিমেন্টের ঘর নির্মাণে এখন উৎসাহী হচ্ছে মানুষ।

বিজ্ঞাপন

এক সময় সাদুল্লাপুর উপজেলার ধাপেরহাট ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের ও অনেক পরিবার মাটির ঘরে বাস করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করলেও প্রবল বর্ষণে মাটির ঘরের ক্ষতি হয় বেশি। ভূমিকম্প বা বন্যা না হলে একটি মাটির ঘর শত বছরেরও বেশি স্থায়ী হয়। কিন্তু কালের আবর্তে দালান-কোঠা আর অট্টালিকার কাছে হার মানছে মাটির ঘর।

উপজেলার ছত্রগছা গ্রামের ছালমা বেগম বলেন, ১৯৮৫ সালে হামার এই মাটির ঘর বানাইছি। একনো এই ঘর ভাঙ্গে নাই। আর এই ঘর গুলোত থাকলে জীবনে অনেক শান্তি পায়'। হামরা আল্লাহর বান্দা, আর জীবন তৈরি হয়েছে মাটি দিয়ে তাই হামার জীবন এই মাটির ঘরের ভিতরে কাটতে হয়।

ধাপেরহাট ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম নওশা বলেন, মাটির ঘর বসবাসের জন্য আরামদায়ক হলেও যুগের পরিবর্তনে আধুনিকতার সময় অধিকাংশই মানুষ মাটির ঘর ভেঙ্গে অধিক নিরাপত্তা ও স্বল্প জায়গায় অনেক লোকের নিবাসকল্পে ইটের ঘর তৈরিতে মনোনিবেশ করেছেন মানুষ।