৩ বছর পর সন্তানের পরিচয় নিয়ে সন্দেহ!
তিন বছর মেয়েকে লালন-পালন করার পর নিজের এবং স্ত্রীর চেহারার সঙ্গে মেয়ের সাদৃশ্য না থাকায় বাবার পরিচয় নিয়ে মনে সন্দেহ তৈরি হয়। সেই সন্দেহ দূর করতে তিনি ডিএনএ পরীক্ষা করানোর সিদ্ধান্ত নেন। সেই পরীক্ষায় বেরিয়ে আসে আসল তথ্য। জানতে পারেন তিনি পালিত মেয়েটির জৈবিক পিতা নন। ঘটনাটি ঘটেছে ভিয়েতনামে।
তার মনে এই সন্দেহ তৈরি হয় যখন মেয়েটির স্কুলে একই তারিখে জন্ম নেওয়া আরেকটি মেয়ের সঙ্গে তার দেখা হয়।
ওই ব্যক্তির নাম প্রকাশ করা না হলেও স্ত্রী ও মেয়েরটির নাম প্রকাশ করা হয়েছে। গণমাধ্যমটি স্ত্রীর নাম হং ও মেয়েটির নাম ল্যান বলে প্রকাশ করেছে।
চীনা গণমাধ্যম সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের এক প্রতিবেদনে এ তথ্যের সন্ধান মিলেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ল্যান যখন কিশোর বয়সে ক্রমশ সুন্দর হয়ে বেড়ে ওঠে, তখন সে লক্ষ্য করে মেয়েটি তার কিংবা স্ত্রীর চেহারার সঙ্গে কোন মিল নেই। এই সন্দেহই তাকে ডিএনএ পরীক্ষা করতে প্ররোচিত করে।
এই ঘটনা তাকে বিচলিত করে তোলে। প্রায়ই মাতাল হয়ে বাড়ি আসতো। একরাতে তিনি মাতাল হয়ে বাড়ি ফিরে স্ত্রীকে সব খুলে বলে ডিএনএ পরীক্ষার কথা জানান। কিন্তু তার স্ত্রী এটি করতে অস্বীকৃতি জানালে তাকেও অবিশ্বাস করতে শুরু করেন। পরবর্তীতে সে নিজের সিদ্ধান্তে অটুট থেকে ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে নিশ্চিত হন মেয়েটি তার জৈবিক কন্যা নয়।
কিন্তু তার স্ত্রী হং এই বিষয়টি মানতে না পেরে বাড়ি ছেড়ে মেয়েকে নিয়ে উত্তরের রাজধানী শহর হ্যানয়ে চলে যান। এর প্রভাবে মেয়েটির স্কুল পরিবর্তন করতে হয়। পরে সেখানে গিয়ে স্কুলের তার এক সহপাঠীর সঙ্গে পরিচয়ের মাধ্যমে জানতে পারে তারা দুজন একই তারিখে একই হাসপাতালে জন্মগ্রহণ করেছিলেন।
তাদের দুজনের পরিচয় হয় তার বন্ধুর মায়ের আয়োজিত একটি যৌথ জন্মদিনের পার্টিতে। সেই পার্টিতে ল্যানের বন্ধুর মা তাকে দেখে খুব হতবাক হয়েছিলেন, কারণ মেয়েটির সঙ্গে তার ছোটবেলার স্বভাবের একটি আকর্ষণীয় মিল ছিল।
পরে মেয়েটির পরিবারের অনুরোধে হং একটি ডিএনএ পরীক্ষায় সম্মত হন। যাতে উঠে আসে ল্যান তার বন্ধুর মায়ের মেয়ে। জন্মের সময় হাসপাতালের কর্মীদের দ্বারা দুজন আলাদা হয়ে গেছে বলেও জানায় গণমাধ্যমটি।
এখন দুই পরিবার নিয়মিত একসাথে সময় কাটায় এবং সঠিক সময়ে মেয়েদের কাছে সত্য প্রকাশ করার জন্য একমত হয়েছে।
তবে তারা হাসপাতালের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেবেন কি না তা প্রকাশ করা হয়নি।
এই খবর প্রকাশ হলে সেখানে একজন মন্তব্য করে লিখেন, “চিকিৎসা কর্মীরা একটি হাস্যকর ভুল করেছে। সৌভাগ্যক্রমে, সত্য অবশেষে বেরিয়ে এলো। অন্যথায়, ওই নারীকে সারাজীবন মিথ্যা আপসোস নিয়ে থাকতে হতো।”