বাংলাদেশের একমাত্র বিদেশি ‘বীরপ্রতীক’ ওডারল্যান্ড

  • জাভেদ পীরজাদা, কন্ট্রিবিউটিং করেসপন্ডেন্ট
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

রণাঙ্গনে ডব্লিউ এ এস ওডারল্যান্ড বীরপ্রতীক

রণাঙ্গনে ডব্লিউ এ এস ওডারল্যান্ড বীরপ্রতীক

অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক ডব্লিউ এ এস ওডারল্যান্ড বাটা কোম্পানিতে চাকরি করতে এসেছিলেন এ দেশে। ১৯৭১ সাল। টঙ্গীতে তাঁর কার্যালয়। পাকিস্তানিদের সেনাদের ২৫ মার্চ—বাঙালিদের গণহত্যা ওডারল্যান্ডকে বিচলিত করে তোলে। সেসময় ৫৪ বছর বয়সী ওডারল্যান্ড মুক্তিযুদ্ধে জড়িয়ে পড়েন। বিদেশি বলে পশ্চিম পাকিস্তানিরা তাকে সন্দেহের চোখে দেখত না।

তার সঙ্গে ভলো সম্পর্কও ছিল লেফটেন্যান্ট জেনারেল টিক্কা খান, নিয়াজি, রাও ফরমান আলীসহ পাকিস্তানি সেনাদের উচ্চপদের কর্মকর্তাদের। সেই সুবাদে পাকিস্তানিদের অনেক গোপন পরিকল্পনা, নানা ধরনের সমর তথ্য জানার সুযোগ হয় তাঁর। ওডারল্যান্ড সেসব তথ্য নিয়মিত পাঠাতে থাকেন ২ নম্বর সেক্টরের মেজর এ টি এম হায়দারের কাছে। যোগাযোগ রাখতেন মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সেনাপতি কর্নেল এম এ জি ওসমানীর সঙ্গেও।

বিজ্ঞাপন

কর্নেল এম এ জি ওসমানীর সঙ্গে ওডারল্যান্ড

২ নং সেক্টরের মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে টঙ্গী-ভৈরব রেললাইনে থাকা একের পর এক ব্রিজ আর কালভার্ট উড়িয়ে দিয়ে ওডারল্যান্ড পাকিস্তানি বাহিনীর অগ্রগতি রুখে দিতে থাকেন। তাঁর পরিচালনায় মুক্তিযোদ্ধারা ঢাকার আশেপাশে পাক সেনাদের ক্যাম্পগুলোতে গেরিলা হামলা চালাতে থাকে। ঢাকার অস্ট্রেলিয় হাইকমিশন এই সময়ে ওডারল্যান্ডকে গোপনে অনেক সাহায্য করেছিল।

ওডারল্যান্ড মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য খাদ্য,  চিকিৎসা সামগ্রী, গরমকাপড় ও অস্ত্রশস্ত্র আনিয়েছিলেন বাংলাদেশে।

বাটা আজও শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে তাঁর সাহসিকতা

দেশ স্বাধীন হলে ১৯৭৮ সালে অস্ট্রেলিয়ায় ফেরত যান বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধা ডব্লিউ এ এস ওডারল্যান্ড ‘বীর প্রতীক’। ওই বছরই তাকে ‘বীরপ্রতীক’ খেতাব দেওয়া হয়। একমাত্র বিদেশি যিনি এ স্বীকৃতি পেয়েছিলেন।

২০০১ সালের ১৮ মে পার্থের একটি হাসপাতালে তিনি মারা যান।