পর্যটক টানছে বরিশালের গুঠিয়া মসজিদ

  • সুমাইয়া তারিন, কন্ট্রিবিউটিং করেসপন্ডেন্ট
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

অপূর্ব কারুকার্যে তৈরি গুঠিয়া মসজিদ

অপূর্ব কারুকার্যে তৈরি গুঠিয়া মসজিদ

বায়তুল আমান জামে মসজিদ ও ঈদগাহ কমপ্লেক্স। স্থানীয়দের কাছে যা গুঠিয়া মসজিদ নামে পরিচিত। বরিশাল জেলাধীন উজিরপুর থানায় গুঠিয়া ইউনিয়নের চাংগুরিয়া গ্রামে অপূর্ব কারুকার্যে তৈরি মসজিদটির অবস্থান। সুবিশাল মসজিদটি গড়ে তোলা হয়েছে প্রায় ১৪ একর জমির ওপর। সারা বছরই মসজিদটিতে পর্যটকদের ভিড় লেগে থাকে। শুধু মুসলিমরাই নয়, এখানে আনাগোনা রয়েছে সব ধর্ম-বর্ণের মানুষেরই।

স্থানীয় ব্যবসায়ী এস সরফুদ্দিন আহমেদ সান্টু মসজিদটির প্রতিষ্ঠাতা। ২০০৩ সালে ব্যক্তি উদ্যোগে মসজিদটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়। প্রায় ১৪ একর জমির ওপর স্থাপিত এই মসজিদ কমপ্লেক্স নির্মাণে ব্যয় হয়েছে প্রায় ২০ কোটি টাকা। এটি নির্মাণে প্রায় দুই লাখ শ্রমিকের সময় লেগেছে প্রায় তিন বছর। ২০টি গম্বুজের স্থাপত্যকলায় সাজানো হয়েছে মসজিদটি। মসজিদ কমপ্লেক্সে প্রায় ৫ হাজার মানুষ একসাথে নামাজ আদায় করতে পারেন যেখানে নারী, পুরুষদের জন্য রয়েছে আলাদা নামাজের স্থান।

বিজ্ঞাপন

মসজিদ ও ঈদগাহ কমপ্লেক্সের মূল গেট দিয়ে প্রবেশ করলে ডান পাশে রয়েছে একটি পুকুর, পুকুরটির চারপাশ নানান রঙের ফুল ও গাছ দিয়ে সাজানো। দর্শনার্থীদের চলাচলের জন্য পুকুর পাড়ের রাস্তা পাকা করে দেওয়া হয়েছে। মসজিদটির দক্ষিণ দিকে রয়েছে প্রায় ১৯৩ ফুট উচ্চতার একটি মিনার। পুরো মসজিদ জুড়ে রয়েছে ছোট বড় ৯টি গম্বুজ। মসজিদ ভবনকে ঘিরে বিভিন্ন স্থানে ক্যালিগ্রাফির মাধ্যমে লেখা হয়েছে আয়াতুল কুরসি, সুরা আর রহমানসহ আল কোরআনের বিভিন্ন আয়াত ও সুরা।

গুঠিয়া মসজিদের সৌন্দর্য ফুটে ওঠে সন্ধ্যার পর

মসজিদ ভবনের সৌন্দর্য বাড়াতে বিভিন্ন স্থানে বর্ণিল কাচ, মূল্যবান মার্বেল পাথর, গ্রানাইট ও সিরামিক দিয়ে করা হয়েছে নকশার কাজ। মসজিদের দৃষ্টিনন্দন ঝাড়বাতি ছাড়াও রয়েছে বাহারি নকশার আলোকবাতির ব্যবস্থা। এছাড়া বাইরে মসজিদ ও ঈদগাহ কমপ্লেক্স ঘিরেও রয়েছে বাহারি আলোকবাতি। যা রাতের বেলা মসজিদের শোভা কয়েকগুণ বাড়িয়ে দেয়। মসজিদটির তিন পাশে খনন করা হয়েছে কৃত্রিম লেক।

মসজিদের প্রতিষ্ঠাতা সরফুদ্দিন আহমেদ সান্টু জানিয়েছেন তিনি তার কয়েকজন স্থপতি বন্ধুকে নিয়ে দুবাই, তুরস্ক, মদিনা শরীফ, ভারত ও পাকিস্তানসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যান। সেখানে তারা বিভিন্ন মসজিদ ঘুরে দেখেন ও সেসব মসজিদের স্থাপত্যশৈলী প্রয়োগ করে গুঠিয়ায় মসজিদটি নির্মাণ করেন। মসজিদটির আরেকটি বিশেষ দিক হলো, এর সামনের পুকুরটি এমনভাবে খনন করা হয়েছে যাতে পানিতে মসজিদটির পুরো প্রতিবিম্ব দেখা যায়।

বরিশাল শহরের নথুল্লাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে বাস বা মাহিন্দ্রায় করে আধঘণ্টার মধ্যেই পৌঁছানো যায় গুঠিয়া মসজিদে। বরিশাল-বানারীপাড়া আঞ্চলিক মহাড়কের পাশে হওয়ায় বাস বা অটো থেকে নেমেই মসজিদটি চোখে পড়বে। সন্ধ্যার সময় মসজিদটি ভ্রমণের জন্য উপযুক্ত সময়। কারণ মসজিদটি তার রূপ দিন অপেক্ষা রাতেই বেশি মেলে ধরে।