করোনাভাইরাস: মানুষ বনাম রোগের মহাযুদ্ধ!

  বাংলাদেশে করোনাভাইরাস


ড. মাহফুজ পারভেজ, অ্যাসোসিয়েট এডিটর, বার্তা২৪.কম
করোনায় মানুষ বনাম রোগের মহাযুদ্ধ চলছে, ছবি: সংগৃহীত

করোনায় মানুষ বনাম রোগের মহাযুদ্ধ চলছে, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

জার্মান চ্যান্সেলর গিয়েছিলেন ডাক্তারের কাছে। ডাক্তার যে আক্রান্ত, তা ডাক্তার নিজে বা অন্য কেউই জানতেন না। ফলে রোগী ও ডাক্তার উভয়েই আক্রান্ত হলেন অতি ছোঁয়াচে, অতি অচেনা করোনাভাইরাসে।

করোনাভাইরাস অচেনা ও নতুন, তাই বলে মারাত্মকও। কেউ কিছু চেনার, বোঝার আগেই আক্রান্ত হচ্ছেন। যারা ভাইরাস বহন করছেন, তারা যেমন এ সম্পর্কে জানতেন না, যাদের মধ্যে সংক্রামিত হয়েছে, তারাও তেমনি কিছুই জানতেন না।    

উৎপত্তিস্থল চীনেও এমন ঘটনাই ঘটেছিল। হুবেই রাজ্যের উহান শহরের হাসপাতালে ২০১৯ সালের ১৮ থেকে ২৯ ডিসেম্বরের মধ্যে পাঁচ জন রোগী ভর্তি হন তীব্র নিউমোনিয়ার লক্ষণ নিয়ে। পাঁচ দিনের মাথায় এক জন মারাও যান। কী হচ্ছে, গোড়ায় তা বুঝতেই পারেন নি কেউই।

২০২০ সালের ২ জানুয়ারির মধ্যে ল্যাবরেটরির রিপোর্ট নিশ্চিত ভাবে জানালো, হাসপাতালে ভর্তি ৪১ জন রোগী ভুগছেন নোভেল করোনাভাইরাস (সার্স-সিওভি-২) সংক্রমণে। তাদের অর্ধেকের মধ্যে আগে থেকে ছিল নানা ধরনের অসুস্থতা, যেমন ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ বা হৃদ্‌রোগ, যার ফলে এই নতুন ও অচেনা ভাইরাসের সংক্রমণের তীব্রতা আন্দাজ করা কঠিন হয়।

তারপরের ঘটনা সবার জানা। প্রস্তুত হতে না হলেই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে থাকে মৃত ও আক্রান্তের সংখ্যা। গাণিতিক হারে দ্বিগুণ, চতুর্গুণ হয়ে ছড়াতে থাকে বিশ্বময়। এবং সর্বপ্রথম আঘাতে চীন করোনায় মৃত্যু ও আক্রান্তের নিরিখে সবচেয়ে মারাত্মক পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়।

তারপর ভয়াবহতা ও ক্ষতির দিক থেকে শীর্ষস্থান দখল করে ইতালি এবং সেটা স্পেন, যুক্তরাজ্য, ইরান ও বিশ্বের দেড় শতাধিক দেশে ছড়িয়ে পড়ে। প্রায়-প্রতিটি দেশেই এক-দুজনের মৃত্যু ও বহু আক্রান্তের ঘটনা ঘটেছে। দেশগুলোতে করোনা মহামারি আকারে বিস্তৃত হওয়ার চরম ঝুঁকি তৈরি করেছে।

প্রতি মুহূর্তে করোনায় মৃত্যু ও আক্রান্তের সংখ্যাগুলো যে ভাবে বেড়ে চলেছে, তা ভয়প্রদ। সার্স-সিওভি-২ যে রোগ লক্ষণগুলো তৈরি করছে তাকেই সাধারণ ভাবে বলা হচ্ছে সিওভিআইডি-১৯ বা কোভিড-১৯। বলা হচ্ছে, উহানের সামুদ্রিক জীব ও কাঁচা মাংসের পাইকারি বাজার থেকে এই রোগ ছড়িয়েছে। তবে এই ধারণা সুনিশ্চিত নয়।

অনেকের ধারণা, সংক্রমণ ছড়িয়েছে  বাদুড় থেকে। বাদুড় খোলা বাজারে বিক্রি হয় না, তবে চীনদেশে অনেকে বাদুড় ধরে বিক্রি করেন বিশেষ রেস্তোরাঁগুলোতে। খুব সম্ভব বাদুড় আর মানুষের মধ্যে অন্য কোনও প্রাণী মধ্যস্থতা করেছে, মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে, বাদুড় থেকে সংক্রমণ ছডিয়েছে সেই প্রাণীর মধ্যে। সেই প্রাণীর শরীরে ওই ভাইরাসের গঠনে দ্রুত পরিবর্তন (মিউটেশন) হয়েছে, যার ফলে তা থেকে সংক্রমণ হয়েছে তার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ মানুষে।

করোনা বিস্তার সম্পর্কে এইসব মতামতের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে চীন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নাম। অভিযোগ রয়েছে যে, এসব দেশ ল্যাবরেটোরিতে জীবাণু নিয়ে কাজ করছিল। জীবাণু-অস্ত্র তৈরি করছিল প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার জন্য। আর সেখান থেকেই বিপদের উৎপত্তি।

করোনাভাইরাস ছড়ানো ও উৎপত্তি সম্পর্কে নানামুখী মত ও সঠিক ধারণা পাওয়া না গেলেও একটি বিষয়ে সকলে একমত। তা হচ্ছে, অচেনা ভাইরাসটি অতি ছোঁয়াচে, মারাত্মক। মানুষ থেকে মানুষে ছড়ায়। আর ছড়িয়ে পড়ার ব্যাপারটি ঘটে দুইভাবে।

প্রথমত, যারা পরস্পরের কাছাকাছি আছেন (ছয় ফুটের কম দূরত্বে), দ্বিতীয়ত,  তরল ফোঁটার মাধ্যমে, যদি সংক্রমিত ব্যক্তি হাঁচেন বা কাশেন। রোগলক্ষণ যখন দেখা দেয়নি, তখনও সংক্রমিত ব্যক্তির থেকে রোগ ছড়াতে পারে, তবে যাদের রোগলক্ষণ দেখা গিয়েছে, সেই অসুস্থ ব্যক্তিদের থেকেই ছড়ায় বেশি।

আশ্চর্য এই যে মানবদেহের বাইরেও অনেকটা সময় এর অস্তিত্ব দেখা গিয়েছে। যেমন এয়ারোসোলের ফোঁটায় তিন ঘণ্টা, ধাতব বস্তুতে চার ঘণ্টা, কার্ডবোর্ডে ২৪ ঘণ্টা, এবং প্লাস্টিক ও স্টেনলেস স্টিলে তিন দিন অবধি বেঁচে থাকে করোনাভাইরাস। যা থেকে মনে হয়, হাওয়া থেকে বা কোনও জীবাণুদূষিত বস্তু স্পর্শ করার মাধ্যমেও মানুষের দেহে এটা আসতে পারে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, নতুন এই ভাইরাস সংক্রমণের বিষয়ে আরও যা বিচার করা দরকার, তা হল কত সহজে তা মানুষ থেকে মানুষে ছড়াতে পারে, এবং অনেক বড় জনসংখ্যায় তার সংক্রমণ দীর্ঘমেয়াদি হতে পারে কি না। দুর্ভাগ্যবশত, কোভিড-১৯ বেশ সহজে ছড়াচ্ছে, টিকেও থাকছে নানা দেশে। বিদেশযাত্রার জন্য বিশ্বের মানুষ এখন পরস্পরের কাছাকাছি, তাই এই ভাইরাস দেশ থেকে দেশে সহজেই ছড়াচ্ছে।

কতটা সংক্রামক কোভিড-১৯, তা-ও গবেষণা থেকে বোঝা যাচ্ছে। কাছাকাছি এলে এক ব্যক্তির থেকে দুই-তিন জনে ছড়িয়ে পড়তে পারছে ভাইরাসটি। সহজে বোঝা যায়, এর ফলে কত কম সময়ে কত বড় জনসংখ্যা ও কমিউনিটি সংক্রমিত হতে পারে। যদিও এখন করোনার মৃত্যুহার ২-৩ শতাংশ, ফ্লুতে সেখানে ০.১ শতাংশ। অর্থাৎ কোভিড-১৯ ফ্লুয়ের তুলনায় ২০ থেকে ৩০ শতাংশ বেশি প্রাণঘাতী। তবে অচীরেই সার্স (১০ শতাংশ) বা মার্সের (৩৬ শতাংশ) জায়গা দখল করতে চলেছে কোভিড-১৯-এর মৃত্যুহার, এমনই আশঙ্কা করেছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞগণ।

নতুন ও অচেনা করোনা নিয়ে একটি ভুল ছিল প্রথমে। যদিও গোড়ায় মনে হয়েছিল যে প্রধানত ষাটোর্ধ্ব ব্যক্তিরাই কোভিড-১৯-এ আক্রান্ত হচ্ছেন। কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে দেখা যাচ্ছে, শিশুরাও আক্রান্ত হচ্ছে। আবার এমন তথ্যও পাওয়া গেছে, যেখানে দেখা যাচ্ছে, অধিকাংশ মৃত্যু হয়েছে পুরুষদের।

এমনটি কেন হচ্ছে, তা নিয়ে বিশেষজ্ঞরা বলছেন,  জৈবিক এবং জীবনযাপনের শৈলী, দুই কারণেই হতে পারে এমনটি। যদিও ঠিক কারণ জানা যায়নি। তবে আশা করা হচ্ছে যে এই ভাইরাসের সংক্রমণ সিজনাল বা মৌসুমী। এটা যে শতভাগ ঠিক, তাও বলছেন না বিশেষজ্ঞরা। যদি তা সত্যি হয়, তা হলে হয়তো রোগের প্রতি এক ধরনের প্রতিরোধ গড়ে উঠতে পারে, যা ভবিষ্যতে সংক্রমণ কমিয়ে দিতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।

পাশাপাশি আরেকটি ধারণা সামনে নিয়েও কাজ হচ্ছে। তা হলো, গরমে ভাইরাস ছড়ায় কম। যদিও এখন পর্যন্ত এই ধারণার কোনও সুনিশ্চিত ভিত্তি পাওয়া যায়নি। তবে, বিশ্বের দেশে দেশে যতই নতুন নতুন সংক্রমণের ঘটনা সামনে আসছে, ততই বোঝা যাচ্ছে যে এই নতুন বিপদ সম্পর্কে আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞানের জানা-বোঝার পরিধি খুবই সীমিত। শুধু একটি বিষয়ই স্পষ্ট জানা যাচ্ছে যে, করোনাভাইরাস অতিদ্রুত ছড়িয়ে পড়ে এবং অত্যন্ত তা অত্যন্ত সংক্রামক, মারাত্মক,  সংবেদনশীল ও ছোঁয়াচে।   

তারপরেও বিশ্বব্যাপী চিন্তার শেষ নেই। কী করে কমানো যায় কোভিড-১৯, তাই এখন সারা পৃথিবীর সামনে একমাত্র চ্যালেজ্ঞ। বিশ্বের যেসব দেশে করোনা দ্রুত গতিতে ছড়াচ্ছে, তার অভিজ্ঞতার আলোকে বোঝা যাচ্ছে যে, কেবল এর ছড়ানো রোধ করাই যথেষ্ট নয়। বরং এই ভাইরাসের মহামারীর মতো বিস্তারের বৃদ্ধির হার কমিয়ে আনাই আপাতত জরুরি। যেজন্য দরকারি কয়েকটি বিষয়কে চিহ্নিত করেছেন বিশেষজ্ঞগণ:

১. ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা (বার বার সাবান দিয়ে হাত ধোয়া, চোখ-নাক-মুখ স্পর্শ না করা)।

২.  সংক্রমিত ব্যক্তিকে বিচ্ছিন্ন রাখা (স্বেচ্ছায় আলাদা থাকা, বা নিজেই ঘরে থাকা),

৩. স্কুল-কলেজ সহ যে কোনও জমায়েত বন্ধ রাখা, যথাসম্ভব এবং যত দিন সম্ভব টেলিসংযোগের মাধ্যমে কাজ করা।

অচেনা ও নতুন এই প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে এসবই এখন পর্যন্ত একমাত্র ও অতি-আবশ্যক প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা। কারণ, সারা বিশ্বে টিকা তৈরির কাজ তীব্র গতিতে চললেও সংশ্লিষ্টদের মতে, নিরাপদ ও কার্যকর ভ্যাকসিন পেতে কমপক্ষে ১২ থেকে ১৮ মাস সময় লাগবে, তা-ও যদি গবেষণা সফল হয় ও ভাগ্য সহায় থাকে।

এমতাবস্থায়, অন্যান্য অসুখ সারাতে ব্যবহৃত ওষুধ কোভিড-১৯-এর বিরুদ্ধে কাজ করে কি না, তা দেখা হচ্ছে। মার্স-এর বিরুদ্ধে ‘রেমডেসিভির’ ওষুধটি প্রাণীদের উপর প্রয়োগ করে ভাল ফল মিলেছে, তাই কোভিড-১৯-এর জন্যও এর পরীক্ষা শুরু হয়েছে। আর একটি ছোট পরীক্ষা হচ্ছে ম্যালেরিয়া-বিরোধী ওষুধ 'ক্লোরোকুইন' নিয়ে। যে রোগীরা কোভিড-১৯-এ আক্রান্ত হওয়ার পর সেরে উঠেছেন, তাদের দেহ থেকে পাওয়া অ্যান্টিবডিও রোগ নিরাময়ে কাজে আসতে পারে বলে মনে করছেন স্বাস্থ্যবিজ্ঞানীরা। 

কিন্তু যা সব চাইতে জরুরি, তা হল এই ভয়ঙ্কর সম্ভাবনার জন্য প্রস্তুত থাকা যে, কোভিড-১৯ গোটা বিশ্বে অতি মহামারি বা পেনডেমিক আকারে ছড়াচ্ছে এবং তা অচীরেই নিরসনের দিকে না গিয়ে আরও প্রবল হতে পারে। ফলে বিশ্ব সম্প্রাদায়, রাষ্ট্র ও সরকার, সমাজ ও মানুষ, সকলের সামনেই ভয়াবহ বিপদ আর এই বিপদ থেকে উত্তরণের দায়িত্ব বর্তেছে।

ফলে বিশ্ববাসী সকলেরই সম্মিলিত ও ব্যক্তিগত কর্তব্য হলো, অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে এবং বিবেকবান ও দায়িত্বশীলতার মাধ্যমে করোনাভাইরাসের বিস্তার প্রতিরোধের নির্দেশিত পন্থা অনুযায়ী কাজ করা। যত দিন না এর কার্যকর চিকিৎসা খুঁজে পাওয়া যায়, ততদিনই কাজ করে যেতে হবে।

অচেনা, নতুন ও মারাত্মক করোনাভাইরাস-জনিত বিশ্বময় জনস্বাস্থ্যের চরমতম সঙ্কটের মোকাবেলাকে বিশ্বসম্প্রদায় তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ বলেছেন। এই মহাযুদ্ধে লড়ছে সবাই। মানুষ বনাম রোগের মহাসমরে যে যেখানে, যে অবস্থায় আছে, সেখান থেকেই লড়াই চালিয়ে যেতে হচ্ছে। মানুষ, পৃথিবী ও মানবতাকে রক্ষা করার সঙ্কল্পে প্রতিটি মানুষকেই ঘরে-বাইরে যোদ্ধার ভূমিকা পালন করতে হচ্ছে। এই মহাযুদ্ধের উপরই নির্ভর করছে পৃথিবী ও মানবজাতির ভবিষ্যৎ।

   

প্রকৃতিতে শোভা ছড়াচ্ছে ‘সোনালু ফুল’



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নওগাঁ
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

সবুজের ফাঁকে উঁকি দিয়ে হলুদ আভায় মুগ্ধতা ছড়ানো ফুল সোনালু। নজরকাড়া সৌন্দর্যে মুখরিত এই ফুল পথিকের মনে এনে দিচ্ছে প্রশান্তির ছোঁয়া। পরিবেশ ও প্রকৃতির শোভা বর্ধনে সোনালু দারুণ এক নিসর্গ মায়া এনে দিয়েছে। এই ফুলের দেখা মিলছে নওগাঁর বিভিন্ন পথে প্রান্তরে।

মঙ্গলবার (৭ মে) বিকেলে সরেজমিন দেখা যায়, নওগাঁ শহরের বরেন্দ্র অফিসের পাশে থোকায়-থোকায় হলুদ আভায় ঝুলে আছে সোনালু। ফুলের মাথা হতে লম্বা লতার মত বড় হয়েছে।

শীতকালে সব পাতা ঝরার পর বসন্তে একেবারেই মৃতের মতো দাঁড়িয়ে থাকে গাছটি। গ্রীষ্মের শুরুতে দু’একটি কচিপাতার সাথে ফুল ফুটতে শুরু করে। হলুদ সোনালি রঙের অসংখ্য ফুল সারা গাছজুড়ে ঝাড় লণ্ঠনের মতো ঝুলতে দেখা যায়।


জানা যায়, সোনালু গাছের পাতাঝরা মাঝারি আকৃতির । এটি আট থেকে ৯ মিটার উঁচু হয়। হলুদ বরণ এ ফুল দেখতে যেমন আকর্ষণীয় তেমনি আছে তার বাহারি নামও। পরিচিত নামগুলো হলো সোনালু, সোনাইল, সোঁদাল, বান্দরলাঠিসহ আরো অনেক। ফুল থেকে ধীরে ধীরে লাঠির মত কালো রঙের ফল হয়ে সেটি কয়েক সেন্টিমিটার অব্ধি লম্বা হয়ে থাকে।

পথচারী আলমগীর বলেন, সোনালু দিন দিন বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। আর শহরের মধ্যে চোখে পড়েনা বললেই চলে। যতবার দেখি খুব সুন্দর লাগে। মনের মধ্যে এনে দেয় এক প্রশান্তি। 

স্থানীয় বাসিন্দা মিঠু বলেন, আমি মোবাইল দিয়ে প্রচুর ছবি তুলেছি এই ফুলের। আমার খুব ভালো লাগে সোনালু ফুল। তবে এই ফুল যেন হারিয়ে না যায় সেজন্য আমাদের গাছ লাগানো উচিৎ। আমাদের বাড়ির আশেপাশে অনেক সোনালু গাছ আছে যা আমাদের মুগ্ধ করে।


নওগাঁ সরকারি কলেজের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. এনায়েতুস সাকালাইন বার্তা২৪.কমকে বলেন- এটি মূলত সৌন্দর্য বর্ধনে রোপণ করা হয়। গ্রাম বাংলায় এই ফুলকে বাদর লাঠি গাছ বলেও ডাকা হয়। এটির বৈজ্ঞানিক নাম 'কেসিয়া ফিসটুলা (Cassia Fastula)। এই উদ্ভিদ বাংলাদেশে অনেক জাতের আছে। ফুলটার জন্য বেশি খ্যাতি রয়েছে বলে অনেক জায়গায় লাগানো হয়। গাছের কাঠগুলো জ্বালানি কাজে ব্যবহার করা হয়।

  বাংলাদেশে করোনাভাইরাস

;

দৌলতদিয়ায় মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে কৃষ্ণচূড়া



সোহেল মিয়া, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রাজবাড়ী
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

প্রখর তাপপ্রবাহের বিরূপ প্রভাবে বিপর্যস্ত প্রকৃতি। কোথাও নেই শান্তি। গ্রীষ্মের রুক্ষতা আর সব ক্লান্তি ছাপিয়ে আপন মহিমায় সৌন্দর্য ছড়াচ্ছে কৃষ্ণচূড়া ফুল। জানান দিচ্ছে শিল্পের দ্যোতনা। পাশাপাশি প্রশান্তির বার্তা বয়ে দিচ্ছে জনমনে।

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দের দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায় দেখা যায় কৃষ্ণচূড়ার এমন সৌন্দর্য। ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের দৌলতদিয়া অংশের দুই পাশে শোভাবর্ধন করছে কৃষ্ণচূড়া ফুল। শত কষ্টের মাঝে এই মহাসড়ক পার হওয়ার সময় হাজারো পথচারীদের হৃদয়ে প্রশান্তির হাতছানি দেয় এই কৃষ্ণচূড়া ফুল। দৌলতদিয়া ঘাট দিয়ে প্রতিদিন শত শত যানবাহন এ মহাসড়ক দিয়ে চলাচল করে।এ সড়কে যাতায়াতকারীদের নজর কাড়ছে লাল কৃষ্ণচূড়া ফুল।


সরেজমিন দেখা যায়, মহাসড়কের দু’পাশের গাছগুলো ছেয়ে গেছে লাল কৃষ্ণচূড়ায়। দূর থেকে দেখলে মনে হবে যেন বৈশাখের প্রখর রোদ্দুরের সবটুকু উত্তাপ গায়ে মেখে নিয়েছে রক্তিম পুষ্পরাজি; সবুজ চিরল পাতার মাঝে যেন আগুন জ্বলছে। এই আগুনেই সেলফি তুলতে ব্যস্ত পথচারীরা। নিজেদেরকে কৃষ্ণচূড়ার সাথে একাকার করে স্মৃতিময় করে রাখতে ব্যস্ত সবাই।

দৌলতদিয়া ৭ নম্বর ফেরিঘাটের বাইপাস সড়ক থেকে শুরু করে ক্যানাল ঘাট এলাকার মহাসড়কের দুইপাশে ছেয়ে গেছে লাল কৃষ্ণচূড়া ফুল। গ্রীষ্মের দাবদাহে মানুষ আর পশু পাখি যখন বেসামাল,ঠিক তখনই কৃষ্ণচূড়ার ফুলে বিচিত্র রূপ নিয়েছে দৌলতদিয়ার মহাসড়ক। এ যেন কৃষ্ণচূড়ার রঙে মেতেছে সড়কটি। কৃষ্ণচূড়া ফুলে ভরা গাছগুলো নজর কাড়ছে দর্শনার্থীসহ এই মহাসড়ক দিয়ে যাতায়াতকারী যাত্রী ও পথচারীদের।


স্থানীয়রা জানান, প্রতি বছরই দৌলতদিয়া ঘাটের এই অংশটুকুতে (ঢাকা-খুলনা মহাসড়ে) সৌন্দর্য বিলায় কৃঞ্চচূড়া। পুরো এলাকা কৃষ্ণচূড়া ফুলের লাল রঙে রঙিন হয়ে যায়। প্রখর রোদে মনে হয় যেন প্রকৃতিতে আগুন লেগেছে। পড়ন্ত বিকেলে পূর্ব আকাশের রক্তিম আভায় কৃঞ্চচূড়া মিশে যেন একাকার হয়ে যায়। প্রতি বছর এই সময়ে ঘাটের বাইপাস সড়ক নতুন রূপে সাজে। দূর-দূরান্ত থেকে দর্শনার্থীরা এখানে আসেন ছবি তুলতে।

পথচারীরা জানান, ফুলগুলো দেখলে মন প্রশান্তিতে ভরে যায়। গাছের ছায়া ও বাতাসে প্রাণটা জুড়িয়ে যায়। প্রখর রোদের মধ্যেও যেন এখানে একটু সবুজের শান্তি পাওয়া যায়।

  বাংলাদেশে করোনাভাইরাস

;

নগরে ফুলের জলসা, গ্রীষ্মের উত্তাপে সৌরভ, স্বস্তি 



মানসুরা চামেলী, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
হাতিরঝিলে নাগরিক পর্যটকদের স্বাগত জানায় উচ্ছল জারুল, রক্তলাল কৃষ্ণচূড়া ও সোনাইল/ছবি: নূর এ আলম

হাতিরঝিলে নাগরিক পর্যটকদের স্বাগত জানায় উচ্ছল জারুল, রক্তলাল কৃষ্ণচূড়া ও সোনাইল/ছবি: নূর এ আলম

  • Font increase
  • Font Decrease

চারিদিকে খাঁ খাঁ রোদ্দুর। যেন বইছে গনগনে আগুনের ফুলকি। চারপাশের পরিবেশ ফুটন্ত কড়াইয়ে মতো টগবগে। দাবদাহের তেজে ব্রহ্মতালু ফেটে যাওয়ার উপক্রম। তাপদগ্ধ চরাচর ক্লান্ত, স্তব্ধ, স্থবির। বৈশাখের রুদ্র রূপে বিপর্যস্ত নাগরিক পরিসর আর জনজীবন। রবীন্দ্রনাথের কবিতায় উচ্চারিত গ্রীষ্মের প্রতিচ্ছবিই দেখা যাচ্ছে রাজধানীর প্রকৃতিতে: 'প্রখর তপনতাপে, আকাশ তৃষায় কাঁপে,/বায়ু করে হাহাকার।’

পরিস্থিতি যখন এমনই খরতাপে পোড়া ও তামাটে, ঠিক তখন একপশলা বৃষ্টির ছোঁয়া ঢাকা নগরীর পথে পথে জাগিয়েছে খণ্ড খণ্ড ফুলের জলসা। গ্রীষ্মের এই রংবাহারের উজ্জ্বলতা এবং সৌরভ; নাগরিক বিড়ম্বনা মুছে বুলিয়ে দিয়েছে অনিন্দ্য স্বস্তির পরশ।

সাদা গোলাপীর মিশলে সোনাইল—দূর থেকে মনে হয় পুষ্পিত পোস্টকার্ড/ছবি: নূর এ আলম


নগরের ইটপাথর, কংক্রিটের কংকালের মধ্যে তাপ ও দূষণের সাম্রাজ্যে নানা রঙের বর্ণিল ফুলের বৃন্ত ও পত্রালীতে খেলা করছে মুক্তি ও স্বাধীনতার আরাম। কৃষ্ণচূড়ার বুনো ঘ্রাণ, টগরের শুভ্রতা এবং সোনালুর স্নিগ্ধ সৌন্দর্য দাবদাহে পীড়িত রাজধানীতে বসিয়েছে ফুলের জলসা। নিয়ে এসেছে রঙের উল্লাস। গন্ধের মাদকতা। ভালোলাগার এক অনির্বচনীয় অনুভূতি।

উচ্ছল জারুল


গ্রীষ্মের তপ্ত রোদের মধ্যেই শুক্রবার ও শনিবার ছুটির জোড়া দিনে হাতিরঝিলের নাগরিক পর্যটকদের স্বাগত জানাল উচ্ছল জারুল, রক্তলাল কৃষ্ণচূড়া, কনকচূড়া ও সাদা গোলাপীর মিশলে সোনাইল। খুব কাছ থেকে দেখলে মনে হাতিরঝিলে ‘সোনাইল ব্লসম উৎসব’ চলছে। আর দূর থেকে মনে হয় পুষ্পিত পোস্টকার্ড।

কৃষ্ণচূড়ার বুনো ঘ্রাণ, টগরের শুভ্রতা এবং সোনালুর স্নিগ্ধ সৌন্দর্য দাবদাহে পীড়িত রাজধানীতে বসিয়েছে ফুলের জলসা/ছবি: নূর এ আলম


হালকা বাতাসে সোনাইল দুলুনির সমান্তরালে গুঞ্জরিত রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘ফুলে ফুলে ঢলে ঢলে বহে কিবা মৃদু বায়' গানের শিহরণ জাগানিয়া আবেশ। হাতিরঝিলের পথে পথে হেঁটে ক্লান্ত হলে ছায়া দিতেও প্রকৃতি তৈরি হয়ে আছে। ফুলে ভরা মেঘশিরীষ গাছ প্রসারিত শাখা ও পল্লবে কাছে টানছে পথিকের মনোযোগ। এখানে জারুলের এমন অপূর্ব রূপ— চলতি পথে গাড়ি থামিয়ে, হাঁটতে হাঁটতে থমকে গিয়ে ক্যামেরাবন্দী করছেন নগরীর মানুষ।

নানা রঙের বর্ণিল ফুলের বৃন্ত ও পত্রালীতে খেলা করছে মুক্তি ও স্বাধীনতার আরাম/ছবি: নূর এ আলম


‘কি বলব- এত গরম, সহ্য করার মতো না। আমার বাসা মধুবাগে। প্রায় হাতিরঝিলে বাতাস খেতে আসি। এত ভালো লাগে বোঝাতে পারব না। তার সঙ্গে বাহারি ফুল তো রয়েছেই। অনেক ফুল চিনি না— কিন্তু ব্যাপারটা অসাম’, বলছিলেন হাতিরঝিলের বেঞ্চ বসা ইরাব নামের এক টগবগে যুবক। এখানকার প্রকৃতি যেন অগোচরে ইরাবের মতো অনেক তরুণ-যুবককে প্রকৃতিপ্রেমী ও ভাবুক বানিয়ে দিয়েছে।

নতুন শহর পূর্বাচলের সড়কে করবী/ছবি: নূর এ আলম


গ্রীষ্মের এই রূপ শুধু ঢাকার পর্যটন-হটস্পট হাতিরঝিলে নয়, প্রাচীন ও রমনীয় রমনা পার্ক, কলোনিয়াল আরবান নস্টালজিয়া মিন্টো রোড, আধুনিক এয়ারপোর্ট রোড, কুড়িল, স্থাপত্যকলার নান্দনিক সংসদ ভবন এলাকা ও ক্রিসেন্ট লেকসহ যেদিকে চোখ যায়- শুধু চোখে পড়ে ফুলের হাসি, রঙের খেলা। ইন্দ্রিয় স্পন্দিত হয় উদ্ভিদজাত গন্ধে ও সৌরভে।

কুড়িলে কৃষ্ণচূড়ার উচ্ছ্বাস/ছবি: নূর এ আলম


নগরীর সর্বাধুনিক সংযোজন মেট্রোরেলে বা এক্সপ্রেস ওয়ে থেকে বিস্তৃত রাজধানীর দিকে তাকালে সুবিশাল দালান-কোঠা আর সবুজের ফাঁকে মাথা চাড়া দিচ্ছে জারুল, কৃষ্ণচূড়া ও গ্রীষ্মকালীন গাছপালার উচ্ছ্বাস। কোথাও কোথাও ছাদবাগানের বিভা। ফুলে ফুলে রঙিন এসব দৃশ্য প্রাচ্যের রোমান্টিক নগরী ঢাকার প্রাচীন স্মৃতি মনে দোলা দেয়। ক্ষণিকের জন্য বর্ণিল ফুলে ছাওয়া এক অন্য ঢাকা হৃদয়ের অলিন্দে জায়গা করে নেয় সুভাষিত আবাহনে।

সবুজ পাতা ছাপিয়ে সোনালি রঙের ফুলে সেজেছে সোনালু গাছ/ছবি: নূর এ আলম


সংসদ ভবন এলাকা ও ক্রিসেন্ট লেকে গেলে তো মনে হবে সুনীল আকাশের পানে চেয়ে কৃষ্ণচূড়া বলছে- ‘কৃষ্ণচূড়ার রাঙা মঞ্জুরি কর্ণে-/আমি ভুবন ভোলাতে আসি গন্ধে ও বর্ণে’। এখানে চোখে পড়ে লেকের দু’ধারে কৃষ্ণচূড়ার সুদৃশ্য বীথি-  ‘ডাক দিয়ে যায় পথের ধারের কৃষ্ণচূড়ায়।’ বাতাসে কৃষ্ণচূড়ার পাপড়ি ঝরে রঙিন হয়ে ওঠা চলার পথ।

চন্দ্রিমা উদ্যান; গাছের পাতার সবুজ রঙ আজ যেন আরও গাঢ় হয়েছে


এমন মনোরম প্রকৃতিতে ক্রিসেন্ট লেকে গরম নিবারণে নেমে পড়েছে একদল ডানপিটে কিশোর। যারা কৈশারকাল উদযাপনে মেতেছে। 

পাশেই চন্দ্রিমা উদ্যান; গাছের পাতার সবুজ রঙ আজ যেন আরও গাঢ় হয়েছে। গত রাতে ঝরেছে বহু প্রতীক্ষার বৃষ্টি। দীর্ঘ তাপদাহে পোড়ার পর বৃষ্টির পরশ পেয়ে গাছগুলো যেন- প্রাণ পেয়েছে। চড়া রোদে স্নিগ্ধ হয়ে দেখাচ্ছে সবুজ পাতা। নেতিয়ে পড়া ফুল আড়মোড়া ভেঙে সুভাষ ছড়াচ্ছে। প্রাণবন্ত সবুজ পাতার ফাঁক গলে উঁকি দিচ্ছে হরেক রঙ ও রূপের ফুল।

কংক্রিটের নগরীতে কৃষ্ণচূড়ার স্পর্শ/ছবি: নূর এ আলম


‘শোনো বন্ধু শোনো,/ প্রাণহীন এই শহরের ইতিকথা/ ইটের পাঁজরে, লোহার কাটায়/দারুণ মর্মব্যথা।/এখানে আকাশ নেই,/এখানে বাতাস নেই,/ এখানে অন্ধ গলির নরকে/মুক্তির আকুলতা।/জীবনের ফুল মুকুলেই ঝরে...।

হেমন্ত মুখোপাধ্যায় তার গানে নগরীকে তুলনা করেছেন ইটপাথরের প্রাণহীন গলি হিসেবে। যেখানে ব্যস্ততার ফাঁকে লুকিয়ে থাকে নানা কষ্ট। তবে এমন প্রাণহীন নগরীতে প্রশান্তির গান ধরেছে আগুন ঝরা কৃষ্ণচূড়া, সোনালু আর জারুল। সঙ্গে অফুরান শোভা ছড়িয়েছে ডুলি চাপা, বরুণ, নাগলিঙ্গম, মাধবীলতা ও কাঠগোলাপ। গরমে ওষ্ঠাগত জীবনে ঢাকার প্রকৃতির রূপ-রস মনে শান্তির সু-বাতাস বইয়ে দিচ্ছে। বিশেষ করে নগরীর ফুলের নৈসর্গিকতা উপভোগ করার সবচেয়ে ভালো সময় ছুটির দিন।

হাতিরঝিলের পথে দেখা মেলে কাঠগোলাপের


‘উষ্ণ তাপমাত্রার সঙ্গে তাল মিলিয়ে সবুজ ও মনোরম পরিবেশ তৈরির দিকে জোর দেওয়া প্রয়োজন’ বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ জসীমউদ্দিন।

তিনি বলেন, ঢাকার প্রকৃতিকে মনোমুগ্ধকর করতে দেশি ফুলের গাছ দিয়ে সাজালে আরো ভালো হত। পরিকল্পিতভাবে ১০টি প্রধান অ্যাভিনিউকে ফুলের গাছ দিয়ে সাজানো যেতে পারে। তাহলে শোভা বর্ধনের পাশাপাশি মানুষকে প্রশান্তি দিত- এই নগর।

সোনালুর ছায়া মাখানো পথ/ছবি: নূর এ আলম


মাঝে মাঝে এই ঢাকা, একদিন স্বপ্নের দিন হয়ে, ফুলের জলসার মুগ্ধতা দগ্ধ নাগরিক জীবনের সকল গ্লানি মুছে দিয়ে যায়।  

  বাংলাদেশে করোনাভাইরাস

;

হারিয়ে যাওয়া বিয়ের আংটি খুঁজে পেলেন ৫৪ বছর পর!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

৫৪ বছর পর হারিয়ে যাওয়া বিয়ের আংটি খুঁজে পেয়েছেন ম্যারিলিন বার্চ (৭৬)। তিনি যুক্তরাজ্যের ওয়েলসের পন্টারডাউইর বাসিন্দা।

ব্রিটিশ গণমাধ্যম স্কাই নিউজের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

ম্যারিলিন বার্চ স্কাই নিউজকে বলেন, এতো বছর পর আংটিটি খুঁজে পাওয়া সত্যিই অবাক করা বিষয়। ১৯৭০ সালে পারিবারিক খামারে গরুকে খড় খাওয়ানোর সময় আংটিটি হারিয়ে গিয়েছিল। পরে অনেক খোঁজার পরও না পেয়ে আশা ছেড়ে দিয়েছিলাম। ভেবে নিয়েছিলাম এটা আর কখনো পাবো না।

তবে শনাক্তবিদ কিথ ফিলিপসের মনে ছিল অন্য কিছু। তিনি খামারের লোকজনকে বিভিন্ন সময় সেখানকার ভূমি খননের পরামর্শ দিয়ে আসছিলেন। তাঁর হিসাবে, সেখানে মাটির নিচে অনেক মূল্যবান জিনিস থাকতে পারে।

সেখান থেকে পাওয়া বিভিন্ন মুদ্রা এবং বিটের টুকরা আমাদের দেখাতেন। কিন্তু আংটিটির খোঁজ মেলেনি। 

ম্যারিলিন বলেন, ‘এক সন্ধ্যায় ফিলিপস যখন খামার ত্যাগ করছিলেন, আমি তাঁকে ঠাট্টাচ্ছলে বলি, ফিলিপস শোনো, যেসব আবর্জনা তুমি উদ্ধার করেছ এসব ফেলো। যাও, আমার বিয়ের আংটিটি খুঁজে বের করতে পার কি না, দেখো।’

এ কথা শোনার পর তারা দুজনেই তখন হেসেছিল। তবে এক সপ্তাহ বা তারও কিছু সময় পরে ফিলিপস ম্যারিলিনের আংটিটি নিয়ে হাজির হন।

ম্যারিলিন বলেন, আংটিটিকে খামারের মাঠে মাটির প্রায় ৮ ইঞ্চি নিচ থেকে উদ্ধার করা হয়। পরে সেটিকে তিনি ব্রাশ দিয়ে পরিষ্কার করেছেন এবং তখন থেকেই তিনি এটিকে আঙ্গুল দিয়ে রেখেছেন।

মিসেস বার্চের স্বামী পিটার বার্চ গত জানুয়ারিতে ৮০ বছরে পা দিয়েছেন। সে উপলক্ষে অনুষ্ঠান করার কথা ছিল। কিন্তু এমন ঘটনার পর সব আয়োজন স্থগিত করা হয়েছে। এখন সবকিছু এই আংটিটি ঘিরেই হচ্ছে।

  বাংলাদেশে করোনাভাইরাস

;