সার্বজনীন স্বাস্থ্যবীমা বাস্তবায়নের দাবি ড. আতিউরের

  • স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. আতিউর রহমান

ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. আতিউর রহমান

সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করে একটি সার্বজনীন স্বাস্থ্যবীমা অবিলম্বে বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান। শনিবার রাজধানী ঢাকায় বাংলাদেশ ক্যানসার এইড ট্রাষ্ট আয়োজিত মোবাসসার মেমোরিয়াল আলোক নিবাস-২ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এই দাবি জানান তিনি। 

ড. আতিউর রহমান আরও বলেন, ‘আমরা সমাজে বাঁচি শুধু নিজের জন্য না, আমরা বাঁচি সবার জন্য। রবীন্দ্রনাথ বলতেন, সমাজ যদি সচেষ্ট হয়, অর্থ সমাজ নিজে যদি উদ্যোগী হয়, তাহলে সেই সমাজ চলতে থাকে। সেই সমাজ আরও নিরন্তর উন্নয়ন করতে থাকে। সেটাই টেকসই। সরকার আসে সরকার যায় কিন্তু সমাজ টিকে থাকে। যদি আমরা সমাজে সেই শক্তিটা জ্বালিয়ে দিতে পারি।’

বিজ্ঞাপন

দূরারোগ্য ব্যাধির ঝুঁকিতে থাকা সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা বিবেচনায় সার্বজনীন স্বাস্থ্যবীমার গুরুত্বের কথা তুলে ধরে আতিউর রহমান বলেন, ‘সার্বজনীন স্বাস্থ্যবীমা খুব প্রয়োজন। মধ্যবিত্ত, উচ্চ মধ্যবিত্ত কেউ যদি বড় অসুখে ধাক্কা খান সেই ধাক্কা মোকাবেলা করবার জন্য শেষ সম্বলটুকু বিক্রি করে হয়তো তিনি সামলাবেন কিন্তু পরবর্তীতে তার সন্তানরা কিভাবে বেঁচে থাকবেন? ভবিষ্যতে সরকার-সমাজ এবং বাজার সবাই মিলে একটি উন্নত ব্যবস্থা তৈরি করতে চাই যাতে একেবারে যারা সাধারণ মানুষ তাদের যাতে আমরা এই পদ্ধতির মধ্যে নিয়ে আসতে পারি।’

https://imaginary.barta24.com/resize?width=700&quality=75&path=uploads/news/2023/Nov/12/1699804643948.jpg

সমাজ ও পরিবারের সহানুভূতি প্রতিটি মানুষের জীবনে খুবই প্রয়োজন উল্লেখ করে বিশিষ্ট এই অর্থনীতিবিদ বলেন, ‘জীবনের নানা সংগ্রামে, বিশেষ করে দুঃখের দিনগুলিতে সমাজ-পরিবার পাশে থাকে। আর সবাই চলে যায়। সেইজন্য আমরা দিনশেষে পরিবারেই ফিরে যাই এবং পরিবার যেভাবে অনুভব করে অন্য আর কেউই সেভাবে অনুভব করে না। আমরা যদি সেই আত্মীয়তা বাড়ানোর চেষ্টা করি তবেই সামাজিক পুঁজি আরও বাড়তে থাকবে।’

বিজ্ঞাপন

তিনি উল্লেখ করেন, ‘সম্পদ নিয়ে যাদের দুশ্চিন্তা আছে, যাদের সম্পদ ছেড়ে দিলেও অসুবিধে হবে না, তারা কেন দেবেন না মানবিক কাজে? এক্ষেত্রে সরকারেরও রাজস্ব প্রণোদনা দেওয়ার সুযোগ আছে। এধরণে সেবা প্রতিষ্ঠান ও ফাউন্ডেশনে অনুদান দেবেন তাদের যেন সরকার কিছু সুবিধা বা কর ছাড় পাবেন এমন যদি নিয়ম করা যায় তবে অনেকেই এরকম কাজে এগিয়ে আসবে।’

বাংলাদেশে অন্তর্ভূক্তিমূলক অর্থনীতির প্রবক্তা হিসেবে পরিচিত অধ্যাপক আতিউর রহমান সামাজিক পুঁজি বাড়ানোর তাগিদ দিয়ে বলেন, ‘মোসাব্বির আলোক নিবাসে এসে কতগুলি সম্ভাবনার কথা আমরা জানতে পেরেছি। আমাদের এখানেই থেমে থাকলে চলবে না। আমরা যদি একে আরও বড় করতে চাই, তবে সবাইকে হাত মেলাতে হবে। একা মানুষ টুকরো মাত্র। সবাই মিলে হাত দিলে তবেই বড় কাজ হয়। একেই বলে সামাজিক পুঁজি।’


‘আর্থিক পুঁজি যত ব্যবহার করবেন ততো কমবে। কিন্তু যদি সামাজিক পুঁজি…হাতে হাত মেলানোর যে পুঁজি এই পুঁজি যদি আমরা বেশি ব্যবহার করি তবে এটি আরও বাড়বে। এটিই এই পুঁজির ধর্ম। রবীন্দ্রনাথ বলছেন, একা খেয়ে পেট ভরে, পাঁচ জনে মিলে খেলে আত্মীয়তা বাড়ে’-যোগ করে ড. রহমান।

বাংলাদেশ ক্যানসার এইড ট্রাস্টের প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক নাজমুস আহমেদ আলবাব, ট্রাস্টের সভাপতি আনিস এ খান ও সিঙ্গাপুরের পার্কওয়ে ক্যান্সার সেন্টারের সিনিয়র কনসালট্যান্ট ডা. ফ্রেডি টিও অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন। এসময় ট্রাস্টকে সহযোগিতা দেওয়া বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্তা ব্যক্তিরাও উপস্থিত ছিলেন।