কোভিশিল্ড ও কোভ্যাক্সিন ব্যবহারের চূড়ান্ত অনুমোদন ভারতে
করোনা টিকানতুন বছরে ভারতের জনগণকে এক জোড়া করোনাভাইরাসের টিকা দিল দেশটির সরকার। রোববার (৩ জানুয়ারি) অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনা টিকা ‘কোভিশিল্ড’ এবং ভারত বায়োটেকের তৈরি কোভ্যাক্সিনের জরুরি ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে ড্রাগ কন্ট্রোলার জেনারেল অব ইন্ডিয়া (ডিসিজিআই)।
এর আগে শুক্রবার অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনা টিকা ‘কোভিশিল্ড’ এর জরুরি ব্যবহারের সুপারিশ করে ছাড়পত্র দিয়েছিল বিশেষজ্ঞ কমিটি। পরেরদিন শনিবার ভারতীয় সংস্থা, হায়দরাবাদের ভারত বায়োটেক-এর তৈরি কোভ্যাক্সিন ব্যবহারের সুপারিশ করে কমিটি।
ডিসিজিআই এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছে, সেরাম ইনস্টিটিউট তৈরি কোভিশিল্ড এবং ভারত বায়োটেকের কোভ্যাক্সিন বিভিন্ন পর্যায়ে তাদের ট্রায়াল সম্পন্ন করেছে। সেই প্রতিবেদন তারা পেশ করেছে ড্রাগ কন্ট্রোলরের কাছে। তা সন্তোষজনক হওয়ায় এই দুইটি টিকার নিয়ন্ত্রিত ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
এদিকে সংবাদ সম্মেলন শেষ না হতেই টিকার অনুমোদন নিয়ে টুইট করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি জানান, যে দুইটি টিকার জরুরি ব্যবহারের জন্য ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে, সেই দুইটিই ভারতে তৈরি হয়েছে। এটা প্রত্যেক ভারতীয়র জন্য গর্বের বিষয়। আত্ম নির্ভর ভারতের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে আমাদের বিজ্ঞানী সমাজ কতটা আগ্রহী ও উৎসাহী এতেই তা প্রমাণিত হলো।
অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনার টিকা ভারতে জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন পাওয়ায় টিকার পাওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশেও একধাপ এগিয়ে গেল। গত ৫ নভেম্বর ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটে উৎপাদিত করোনার টিকা নিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, সেরাম ইনস্টিটিউট ও বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের মধ্যে ত্রিপক্ষীয় চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
চুক্তিতে বলা আছে, তারা ভারত ও বাংলাদেশের বাজারে একই সময়ে টিকা দেবে। সেরাম ইনস্টিটিউটে উৎপাদিত টিকা ভারতে জরুরি ব্যবহারের জন্য অনুমোদন পেলে তখন তা বাংলাদেশেও আসবে। চুক্তি অনুসারে সেরাম ইনস্টিটিউটের কারখানায় তৈরি অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ৩ কোটি ডোজ টিকা পাবে বাংলাদেশ। এই টিকা দেড় কোটি মানুষকে দেওয়া সম্ভব হবে।
এছাড়া সরকারের মন্ত্রী সচিব থেকে শুরু করে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বারবার জানুয়ারিতে টিকা আসবে বলে জানিয়ে আসছেন। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক জানিয়েছেন ৫০ লাখ করে ৬ মাসে তিন কোটি ডোজ টিকা আসবে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শনিবার জানিয়েছে, প্রথম ধাপে ৫০ লাখ টিকা পেতে রোববার সেরাম ইনস্টিটিউটের কাছে ৬০০ কোটির বেশি টাকা ব্যাংকে জমা দেবে বাংলাদেশ সরকার। বিনিময়ে সেরাম ইনস্টিটিউট একটা ব্যাংক গ্যারান্টি দেবে।
প্রথম চালানের টিকা বাংলাদেশে আসার পর সেরাম ইনস্টিটিউট ব্যাংক থেকে টাকা তুলে নিতে পারবে। টিকা সরবরাহ শুরু হলে বাকি টাকা দেওয়া হবে।