করোনার বিরুদ্ধে লড়তে ভারতে ‘গণ টিকাদান’ কর্মসূচির শুরু আজ
করোনা টিকাগণহারে টিকাপ্রয়োগের মধ্য দিয়ে করোনাভাইরাস মহামারি বিরুদ্ধে শনিবার (১৬ জানুয়ারি) লড়াই শুরু করতে যাচ্ছে ভারত। এদিন ভারতের তিন হাজার ছয়টি কেন্দ্রে করোনাভাইরাসের টিকা দেওয়া শুরু হবে।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী স্থানীয় সময় সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে টিকাদান কর্মসূচির উদ্বোধন করবেন।
টিকা কেন্দ্রগুলোতে প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত টিকা দেওয়া হবে। ৭০০ জেলায় দেড় লাখ প্রশিক্ষিত স্বাস্থ্যকর্মী এই টিকাদান কর্মসূচির দায়িত্বে রয়েছেন।
প্রথম দফায় স্বাস্থ্যকর্মীসহ সম্মুখসারির তিন কোটি মানুষকে বিনামূল্যে টিকা দেওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছে দেশটির সরকার। স্বাস্থ্যকর্মী ছাড়াও পরিচ্ছন্নতাকর্মী, সেনাবাহিনী এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মীদের নাম রয়েছে প্রথম তালিকায়।
দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষবর্ধন জানান, দীর্ঘ প্রতীক্ষিত টিকাদান কর্মসূচির প্রথম দিনেই তিন লাখের বেশি স্বাস্থ্যকর্মীকে টিকা দেওয়ার কথা রয়েছে। তিনি এই কর্মসূচিকে ‘করোনাভাইরাস নির্মূলের সূচনা’ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন।
এনডিটিভির প্রতিবেদনে দিল্লির টাস্ক ফোর্সের ডা. সুনীলা গার্গ বলেন, প্রধমে যারা টিকা পাবেন তাদের বয়স ৫০ বছরের কম। এই তালিকায় থাকা বেশিরভাগই নার্স, ওয়ার্ড বয়, পরিচ্ছন্নতাকর্মী এবং তরুণ চিকিৎসক। আমাদের স্বাস্থ্যকর্মীদের ৮০ শতাংশের বেশির বয়স ৫০ বছরের নিচে।
এর আগে নতুন বছরের শুরুতে দুটি টিকার জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দেয় দেশটির ওষুধ নিয়ন্ত্রণক সংস্থা। এগুলো হলো অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি টিকা ভারতে উৎপাদিত সেরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়ার কোভিশিল্ড। আর ভারতীয় কোম্পানি ভারত বায়োটেকের কোভ্যাক্সিন।
এদিকে করোনার টিকাপ্রদান কর্মসূচির বিষয়ে সব তথ্য সংগ্রহ করতে প্রধানমন্ত্রী মোদী ‘কো-উইন ভ্যাকসিন ডেলিভারি ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম’ নামের একটি ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মেরও অনুমোদন দিয়েছেন। এর মাধ্যমে টিকার মজুত, সংরক্ষণের তাপমাত্রা এবং বিতরণ পরিস্থিতির তাৎক্ষণিক তথ্য পাওয়া যাবে।
বর্তমানে ভারতের হাতে সেরাম ইন্সটিটিউটের উৎপাদিত এক কোটি ১০ লাখ ডোজ এবং ভারত বায়োটেক উৎপাদিত ৫৫ লাখ ডোজ টিকা আছে।
১০০ কোটি ৩০ লাখ মানুষের এ দেশের অন্তত ৩০ কোটি নাগরিককে আগামী ছয় থেকে আট মাসের মধ্যে টিকা দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে দেশটির সরকার।
ভারতে শুক্রবার পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা এক কোটি পাঁচ লাখ ২৭ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত দেশের মধ্যে দ্বিতীয় অবস্থানে ভারত। প্রাণহানি ঘটেছে প্রায় দেড় লাখ মানুষের।