দক্ষিণ চীন সাগরের জলসীমা নিয়ে চীনে নতুন আইন কার্যকর
দক্ষিণ চীন সাগরের বিরোধপূর্ণ জলসীমা নিয়ে নতুন সমুদ্র আইন জারি করে তা কার্যকর করেছে চীন। নতুন এই আইনে বিরোধীপূর্ণ জলসীমায় অনুপ্রবেশের দায়ে বিদেশিদের আটক করতে পারবে দেশটি। তবে চীনের এই নতুন আইনের আন্তর্জাতিক বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে প্রতিবেশী দেশগুলো।
ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট ফার্দিনান্দ মার্কোস জুনিয়র চীনের নতুন এই বিধিকে ‘খুবই উদ্বেগজনক’ বৃদ্ধি বলে অভিহিত করেছেন।
শনিবার (১৫ জুন) কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ফিলিপাইনসহ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বেশ কয়েকটি দেশের দাবিকে উড়িয়ে দক্ষিণ চীন সাগরের প্রায় পুরোটাই দাবি করে চীন। যদিও ২০১৬ সালে দ্য হেগের আন্তর্জাতিক আদালত চীনের দাবির কোনও আইনি ভিত্তি নেই বলে রায় দেয়।
চীন সরকার নিজের বলে দাবি করা জলসীমায় দেশটির কোস্টগার্ড এবং অন্যান্য নৌযানগুলোকে টহল দেওয়ার জন্য মোতায়েন করছে। এর পাশাপাশি বেশ কয়েকটি সামরিক কৃত্রিম দ্বীপও তৈরি করেছে দেশটি।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এসব বিরোধপূর্ণ এলাকায় চীনা এবং ফিলিপাইনের জাহাজগুলো একাধিক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটিয়েছে। তাই সম্প্রতি এই আইন একটি বিস্তৃত সংঘাতের আশঙ্কা তৈরি করেছে।
অনলাইনে প্রকাশিত নতুন প্রবিধান অনুযায়ী শনিবার (১৫ জুন) থেকেই, চীনের কোস্টগার্ড ‘বিরোধপূর্ণ সীমানায় প্রবেশ এবং প্রস্থান ব্যবস্থাপনা লঙ্ঘন করার সন্দেহে’ বিদেশিদের আটক করতে পারবে। এমনকি ‘জটিল ক্ষেত্রে ৬০ দিন পর্যন্ত আটক রাখার অনুমতি দেওয়া হয়েছে ওই আইনে। যেসব বিদেশি জাহাজ অবৈধভাবে চীনের আঞ্চলিক জলসীমা এবং সংলগ্ন জলসীমায় প্রবেশ করবে, সেগুলো আটক করা যাবে।
এদিকে, শনিবার ফিলিপাইনের পররাষ্ট্র দফতর ঘোষণা করেছে- দেশটি দক্ষিণ চীন সাগরের কিছু অংশে একটি বর্ধিত মহাদেশীয় শেলফে জাতিসংঘের সামুদ্রিক নিয়মের অধীনে নিজস্ব ‘সামুদ্রিক অধিকার’ দাবি করে নিউইয়র্কের দফতরে সংশ্লিষ্ট আইনি কাগজপত্র জাতিসংঘের কাছে জমা দিয়েছে।
ফিলিপাইনের অভিযোগ, দেশটির নৌযানের বিরুদ্ধে চীনের কোস্টগার্ড ‘বর্বর ও অমানবিক আচরণ’ করেছে। তারা বিরোধপূর্ণ জলসীমায় ফিলিপাইনের নৌকাগুলোর বিরুদ্ধে একাধিকবার জলকামান ব্যবহার করেছে। এছাড়াও সংঘর্ষে ফিলিপিনো সৈন্যরা আহত হয়েছে।
ফিলিপাইনের সামরিক বাহিনীর প্রধান জেনারেল রোমিও ব্রাউনার শনিবার সাংবাদিকদের বলেন, ম্যানিলা কর্তৃপক্ষ আমাদের জেলেদের রক্ষার জন্য নেওয়া কিছু পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করছে।
ব্রাউনার আরও বলেন, ফিলিপাইনের মৎস্যজীবীদের বলা হয়েছে ভয় নেই। বেইজিংয়ের নতুন নিয়মের উপেক্ষা করে আমাদের এক্সক্লুসিভ ইকোনমিক জোনে মাছ ধরার জন্য স্বাভাবিক ক্রিয়াকলাপ চালিয়ে যেতে পারবেন।
উল্লেখ্য, শুক্রবার (১৪ জুন) শক্তিশালী অর্থনীতির গ্রুপ অব সেভেনে (জি-৭) গুরুত্বপূর্ণ জলপথে চীনের ‘বিপজ্জনক’ অনুপ্রবেশের সমালোচনা করা হয়েছে।