উত্তর কোরিয়ার পর ভিয়েতনামে পুতিন
উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের সঙ্গে প্রতিরক্ষা চুক্তি স্বাক্ষরের একদিন পরই বৃহস্পতিবার (২০ জুন) ভিয়েতনামে রাষ্ট্রীয় সফর শুরু করেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
পুতিন এবং কিম পিয়ংইয়ংয়ে একটি শীর্ষ সম্মেলনে কৌশলগত চুক্তি স্বাক্ষর করেছেন। ওই চুক্তির আওতায় আক্রান্ত হলে একে অপরের সাহায্যে এগিয়ে আসবে রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়া।
এছাড়াও ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার যুদ্ধে ‘পূর্ণ সমর্থনের’ প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন কিম।
এতোদিন ওয়াশিংটন এবং তার মিত্ররা ইউক্রেনে যুদ্ধের জন্য মস্কোকে গোলাবারুদ এবং ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করার জন্য পিয়ংইয়ংকে অভিযুক্ত করে আসছিল। তাই এই চুক্তি পশ্চিমাদের সেই ভয়কে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
যখন একজন শীর্ষ ইউক্রেনের কর্মকর্তা ইউক্রেনীয়দের ওপর গণহত্যা চালাতে পিয়ংইয়ংয়ের বিরুদ্ধে মস্কোকে মদত দেওয়ার অভিযোগ করেছেন, তখন মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর বলেছে, ‘রাশিয়া-উত্তর কোরিয়া সম্পর্ক ভালো হওয়া গভীর উদ্বেগের বিষয়।’
গত বুধবার ২৪ বছরের মধ্যে বিচ্ছিন্ন উত্তর কোরিয়ায় প্রথম সফরে গিয়ে পুতিন বলেন, তিনি পিয়ংইয়ংয়ের সঙ্গে সামরিক-প্রযুক্তিগত সহযোগিতা অস্বীকার করেন না। কারণ, মস্কোর মতো বিশ্বের অন্যতম পরমাণু শক্তিধর একটি দেশ আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার অধীনে রয়েছে।
পুতিন বলেন, ‘আজ আমরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং তার উপগ্রহের আধিপত্যবাদ এবং নয়া-ঔপনিবেশিক অনুশীলনের বিরুদ্ধে একসঙ্গে লড়াই করছি।’
প্রসঙ্গত, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর উত্তর কোরিয়ার প্রতিষ্ঠা লাভের পর থেকে দেশ দুটি একে অপরের মিত্র ছিল এবং ২০২২ সালে রাশিয়ার ইউক্রেনে আক্রমণের পর থেকে বিশ্বব্যাপী পুতিনকে বিচ্ছিন্ন করার পর দেশ দুটির মধ্যে ঘনিষ্টতা আরো জোরদার হয়েছে।
পিয়ংইয়ং সফরের প্রতিক্রিয়ায় মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের এক মুখপাত্র বলেন, ‘পুতিনকে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে তার আগ্রাসনের যুদ্ধের প্রচারের জন্য কোনও দেশেরই প্ল্যাটফর্ম দেওয়া উচিত নয়।’
ওই মুখপাত্র আরও বলেন, ‘রাশিয়া এবং উত্তর কোরিয়ার মধ্যে গভীর সহযোগিতা একটি প্রবণতা, যা কোরীয় উপদ্বীপে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে আগ্রহী সকলের জন্য অত্যন্ত উদ্বেগের বিষয় হওয়া উচিত।’
এদিকে, উত্তর কোরিয়ার রাজধানীতে একটি উচ্ছ্বসিত অভ্যর্থনা পেয়েছেন পুতিন। বিমান থেকে নামলে পুতিনকে আলিঙ্গন করেন কিম এবং উল্লাসিত জনতা, নৃত্যশিল্পী এবং উভয় দেশের পতাকা নাড়িয়ে শিশুরা স্বাগত জানান।
তার অভ্যর্থনা ভিয়েতনামে আরও বড় আঙ্গিকে হতে পারে বলে ধারণা করছেন বিশ্লেষকরা। কারণ, দেশটি সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব করতে চাইছে, কিন্তু কারো সঙ্গেই সুসম্পর্ক করতে পারছে না।
বিশেষ করে, এটি ক্রমবর্ধমান মার্কিন-চীন প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পক্ষ বাছাই এড়াতে চাচ্ছে। পুতিন বৃহস্পতিবার ভিয়েতনামের সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাত করেন বলে জানা গেছে।