যুদ্ধবিরতি, বন্দিমুক্তির আলোচনা করতে দোহায় ব্লিনকেন

  • আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

গাজা উপত্যকায় স্থায়ী যুদ্ধবিরতি, হামাস ও ইসরায়েলের হাতে আটক বন্দি বিনিময়ে ইসরায়েল, সেইসঙ্গে মিশরের নেতাদের সঙ্গে আলোচনার পর কাতারের রাজধানী দোহায় আসেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন।

বিজ্ঞাপন

বুধবার (২১ আগস্ট) কাতারের সংবাদমাধ্যম দোহা নিউজ জানায়, মিশর সফর শেষে মঙ্গলবার দোহায় এসে পৌঁছান অ্যান্টনি ব্লিনকেন।

সংবাদমাধ্যমটি জানায়, এসময় কাতারের আমির তামিম বিন হামাদ আল-থানি বিদেশ সফরে থাকায় তার সঙ্গে ফোনে কথা হয় মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর। ইসরায়েল এবং মিশরের নেতাদের সঙ্গে আলোচনার অগ্রগতি বিষয়ে তাকে অবহিত করেন।

গাজায় যুদ্ধবিরতি, বন্দি বিনিময়ে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, মিশর এবং কাতার।

খবরে আরো জানানো হয়, অ্যান্টনি ব্লিনকেন কাতারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মেদ আল খুলাইফির সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। এসময় দুই পক্ষই যুদ্ধবিরতি এবং বন্দি বিনিময়ে আরো ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রাখার বিষয়ে আলোচনা করেন।

তাদের মধ্যকার আলোচনার বিষয়ে কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতি প্রকাশ করে। তাতে বলা হয়, গাজায় যুদ্ধবিরতি এবং বন্দি বিনিময়ে দুই দেশের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। এসময় তারা মধ্যপ্রাচ্যে আরো যুদ্ধ বিস্তৃতি রোধে সব পক্ষকে শান্ত থাকার আহ্বান জানান। এছাড়া পরবর্তীতে আরো করণীয় বিষয়ে তারা আলোচনা করেছেন।

এরপর বুধবার কাতার ত্যাগ করেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন।

উল্লেখ্য, ১৫ ও ১৬ আগস্ট কাতারের রাজধানী দোহায় দু’দিনব্যাপী গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, মিশর ও কাতারের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা শেষে বিস্তারিত জানাতে ইসরায়েল যান মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। সেখানে ইসরায়েলের প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হেরজোগ ও প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর সঙ্গে দেখা করেন তিনি।

যুদ্ধবিরতিতে ইসরায়েলের ওপর চাপ প্রয়োগ করতে তেল আবিব যান তিনি। সেখানে যে আলোচনা হয়েছে, সে বিষয়ে আলোচনা এবং পরবর্তীতে করণীয় হিসেবে মিশর সফর করেন অ্যান্টনি ব্লিনকেন। সেখানে তিনি মিশরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসির সঙ্গে বৈঠক করেন।

এরপর মঙ্গলবার কাতারের রাজধানী দোহায় যান মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

ইসরায়েল ত্যাগের আগে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন বলেন, ইসরায়েলে প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর সঙ্গে তার অত্যন্ত গঠনমূলক আলোচনা হয়েছে। হামাস এবং ইসরায়েলের মধ্যে সেতুবন্ধনের বিষয়ে ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে। দোহায় দুদিনব্যাপী যুদ্ধবিরতি এবং হামাস ও ইসরায়েলের বন্দি বিনিময়ের  প্রস্তাব গ্রহণ করেছে ইসরায়েল।

প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ভেতরে ঢুকে হামাসের হামলার পর হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধ শুরু হয়। তারপর থেকে নবমবারের মতো ইসরায়েল সফর করেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন।

ইসরায়েলের প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হেরজোগের সঙ্গে আলোচনার আগে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মধ্যপ্রাচ্যে আরো যুদ্ধ বিস্তৃতি নিরসনহ গাজায় যুদ্ধ বন্ধে তিনি সবপক্ষের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন।

ব্লিনকেন বলেন, গাজায় ১০ মাস ধরে যুদ্ধ চলমান। উভয় পক্ষের (হামাস ও ইসরায়েল) মধ্যে যে শূন্যতা বিরাজ করছে, তা কমিয়ে আনতে ১৫ আগস্ট মার্কিন যুক্তের যুদ্ধবিরতির আলোচনার ভিত্তিতে কাজ করে যাচ্ছি।

তিনি আরো বলেন, গাজায় যুদ্ধবিরতি এবং বন্দি বিনিময়ের এটাই হয়ত শেষ সুযোগ! আমি মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের পক্ষে  প্রস্তাবিত চুক্তির বিষয়ে আলোচনা করে উভয় পক্ষকে আলোচনার টেবিলে বসার জন্য এখানে (তেল আবিব) এসেছি।

এখন আর কোনো পক্ষের ‘না’ বলার সুযোগ নেই। এখনই সময় কিছু করার। এখন আলোচনা থেকে বিচ্যুতির আর কোনো সুযোগই নেই।

ব্লিনক্লেন বলেন, মধ্যপ্রাচ্যে যাতে আর যুদ্ধের বিস্তৃতি না ঘটে, সে লক্ষ্যে কাজ করছি আমরা। এ আলোচনা থেকে আর সরে যাওয়ার কোনো কোনো উপায় নেই।

এদিকে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং পশ্চিমা দেশের নেতারা ইরান এবং হেজবুল্লাহর প্রতি আহ্বান জানায় এখন যেন তারা ইসরায়েলে প্রতিশোধমূলক হামলা না করে।

অপরদিকে, গাজায় যুদ্ধবিরতি এবং হামাস ও ইসরায়েলের হাতে বন্দি বিনিময়ের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, মিশর এবং কাতার মধ্যস্থতকারীর ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে।