গাজায় থেমে নেই ইসরায়েলি আগ্রাসন, আরও ৫১ জন নিহত
গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় প্রতিনয়ত বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। গত ২৪ ঘণ্টায় উপত্যকাটিতে আরও ৫২ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এতে করে উপত্যকাটিতে নিহতের মোট সংখ্যা প্রায় ৪৩ হাজার ৮০০ জনে পৌঁছেছে।
রোববার (১৭ নভেম্বর) কাতার ভিত্তিক গণমাধ্যম আল জাজিরা এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানায়।
আল জাজিরা জানায়, ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী গাজায় অনবরত হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। শনিবার বেইট ফুরিকের অধিকৃত পশ্চিম তীরের গ্রামে হামলা চালিয়ে বাড়িঘর ও যানবাহনে আগুন দিয়েছে তারা। এ হামলায় কমপক্ষে ৫১ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
- গাজার মানবতার প্রশ্নে নিস্তব্ধ বিশ্ব, শরণার্থী শিবিরও নিরাপদ নয়
- উত্তর গাজার বাসিন্দারা দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে: ইউএনআরডব্লিউএ প্রধান
- গাজায় এখন পর্যন্ত নিহতদের ৭০ শতাংশ নারী ও শিশু: জাতিসংঘ
এদিকে এ হামলায় বাস্তুচ্যুতের সংখ্যাও বাড়ছে। জাতিসংঘের মতে, ইসরায়েলের বর্বর আক্রমণের কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। আর খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি এবং ওষুধের তীব্র সংকটের মধ্যে গাজার সকলেই এখন খাদ্য নিরাপত্তাহীন অবস্থার মধ্যে রয়েছেন।
এছাড়া অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডের ৬০ শতাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। ইসরায়েল ইতোমধ্যেই আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছে।
এদিকে গত রোববার, গাজার উত্তরাঞ্চলের মানুষ দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে রয়েছে বলে সতর্ক করেছে ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের জন্য নিযুক্ত জাতিসংঘের ত্রাণ কার্যক্রম সংস্থা (ইউএনআরডব্লিউএ'র) প্রধান ফিলিপ লাজারিনি।
তিনি জানান, অঞ্চলটিতে পর্যাপ্ত ত্রাণ সহায়তা দেওয়া হচ্ছে না। এই অঞ্চলে গড়ে প্রতিদিন ৩০ ট্রাক খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে। যা বাসিন্দাদের বেঁচে থাকার জন্য যথেষ্ট নয়। এই পরিমাণ ত্রাণ দৈনিক চাহিদার মাত্র ৬ শতাংশের বেশি। ইসরায়েল তাদেরকে খাদ্যসহ মৌলিক অধিকারগুলো থেকে বঞ্চিত করছে। ত্রাণ কার্যক্রমে তারা বাধা দিচ্ছে।
এর আগে জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থাটি জানিয়েছে, গত ৭ অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত গাজায় নিহতদের তথ্য যাচাই-বাছাই করা হয়েছে। এতে গাজার মানুষের "ভয়াবহ বাস্তবতা" উন্মোচিত হয়েছে। নিহতদের মধ্যে ৭০ শতাংশই নারী ও শিশু।
জাতিসংঘ বলছে, প্রতিনিয়ত ইসরায়েলি হামলায় গাজায় নারী ও শিশু নিহত হচ্ছে। পুরুষও বাদ যাচ্ছে না। শুধু তাই নয় তারা ত্রাণ কার্যক্রম চালাতেও সেখানে বাধা দিচ্ছে। এছাড়াও প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সামগ্রী সরবরাহেও বাধা সৃষ্টি করা হচ্ছে। এমন পরিস্থিতি চলতে থাকলে অঞ্চটির মানুষ চরম হুমকির মুখে পড়বে।
উল্লেখ্য, এ হামলায় এখন পর্যন্ত আহতের সংখ্যা পৌঁছেছে ১ লাখ ৩ হাজার ৬০১ জনে।