আল্লাহর মেহমানদের সন্তুষ্টিই আমাদের মূলধন



জাহিদুর রহমান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
মক্কা প্রবাসী ব্যবসায়ী মো. কামাল উদ্দিন, ছবি: বার্তা২৪

মক্কা প্রবাসী ব্যবসায়ী মো. কামাল উদ্দিন, ছবি: বার্তা২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

মক্কা মোকাররমা (সৌদি আরব) থেকে: পবিত্র নগরী মক্কা মোকাররমায় আজ তিনি সফল ব্যবসায়ী। প্রবাসীদের কাছে আইকন। বৈদ্যুতিক মিস্ত্রীর জোগালি থেকে আজ আমি এখানে- বেশ গর্বের সঙ্গেই নিজের অতীত নিয়ে গর্ব করেন তিনি।

প্রবাসীদের কাছে নিজের জীবন সংগ্রামের এই গল্প বলে তাদের পাশে থেকে জুগিয়ে যান প্রেরণা।

তিনি মো. কামাল উদ্দিন (৫৮)। চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি থানার দুরং গ্রামের নবীর হোসেনের ছেলে। চার ভাই দুই বোনের মধ্যে সবার বড়।

চট্টগ্রাম কলেজের শিক্ষার্থী। অভাব-অনটনের সঙ্গে নিত্য যুদ্ধ। পরিবারের আর্থিক স্বচ্ছলতা ফেরাতে অনার্স পরীক্ষা না দিয়েই ১৯৮১ সালে পাড়ি দেন মধ্যপ্রাচ্যের তেলসমৃদ্ধ দেশ সৌদি আরবে।

তখন নিয়ম-কানুন এত কঠিন ছিলো না। এক আদম ব্যবসায়ী মাত্র একটা ছবি নিয়ে গলাকাটা পাসপোর্টে আলী আহমেদ নামে আমাকে পাঠালেন এদেশে। শর্ত হলো- এ দেশে কাজ করে তার টাকা শোধ করে দেবো।

হজ ভিসায় মক্কায় এলাম। তখনো চেহারা থেকে কলেজ ছাত্রের আবেশটা যায়নি। সমস্যা হলো- আমাকে কেউ কাজে নিচ্ছেন না।

মেসফালায় যে মেসে আমার ঠাঁই হলো, সেখানকার বাসিন্দাদের চিঠি লিখে দিতাম। এক মামার সূত্রে হয়ে গেলাম সকলের ভাগ্নে।

পরে মেসফালায় ইসমাঈল নামে এক এসি মেরামতকারীর কাছে কাজ শেখা শুরু করলাম। হাতুড়ি দিয়ে দেয়াল কাটা অর্থাৎ কনসেল ওয়্যারিং'র কাজ করলাম দু’মাস। হাতখরচ চাইতেই সাফ জবাব, কাজ শিখলে কি আবার টাকা দিতে হয়?

মনের দুঃখে গিয়ে দাঁড়ালাম এখানকার- শ্রমিক বাজারে। যেখানে কাজের সন্ধানে মানুষ জড়ো হন। চাহিদামতো কর্মীকে দিনচুক্তিতে কাজে নেওয়ার জন্য এলেন এক মিসরি।

বুকপকেটে টেস্টার দেখে এগিয়ে এলেন আমার সামনে। আমিসহ আরেকজন লেবারকে নিলেন। আমার দৈনিক হাজিরা ৫০ রিয়াল। এখানে মাস তিনেক কাজ করে ইলেকট্রিক্যাল কাজের পাশাপাশি, তালা-চাবির কাজ ও টেলিভিশন মেরামতসহ নানা ব্যতিক্রমী কাজ শিখে ফেললাম।

দেড় বছরের মাথায় আমার দৈনিক বেতন হলো- ১২০ রিয়েল। ততদিনে প্রায় ৫ হাজার রিয়াল জমিয়েছি।

দেশে ফিরলাম। এবার সরাসরি লেবার ভিসায় নিজনামে কাগজপত্র বানিয়ে এলাম সৌদি আরবে। সময়টা ১৯৮৩ সাল। ততদিনে আমি পুরোদস্তুর মিস্ত্রী।

১৯৮৭ সালে একটি রুমে উঠলাম। সেই রুমের আশেপাশে রুমগুলো তখন ফাঁকা। মালিককে বললাম, আমি ফাঁকা রুমগুলো ভাড়া নিতে চাই। এর মাঝে মিস্ত্রীর কাজ ছেড়ে পাশের একটি হোটেলের রিসেপশনে ১৫শ' রিয়াল বেতনে কাজ নিলাম। এখানে বখশিশ মিলতো। সেই সঙ্গে বেতন আর রুমভাড়া মিলিয়ে আয়টা বেশ হতো।

এভাবে রমজান মাস থেকে হজের মৌসুমে হোটেল চুক্তি নিয়ে ভাড়া দিলাম। ১৯৮৭ সালে দেশে গিয়ে বাবার পছন্দে বিয়ে করলাম নাদিরা আক্তার রুবিকে। ততদিনে হোটেল ব্যবসাটা রপ্ত করে ফেলেছি। আমরা যেখানে থাকতাম, সেই ভবনে এসে উঠলেন- নোয়াখালীর নুর মোহাম্মদ ভূইঁয়া।

১৯৯০ সাল। ইরাক আক্রমণ করে বসলো কুয়েতে। মধ্যপ্রাচ্যে টালমাটাল অবস্থা। এর মধ্যে প্রতিবেশী নুর মোহাম্মদ ভূইঁয়াসহ তিনজন মিলে শুরু করলাম আবাসিক হোটেল ব্যবসা। প্রথম পর্বে জনপ্রতি ৭ হাজার রিয়াল লাভ। তারপর থেকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। বর্তমানে মক্কায় মসজিদুল হারামের পাশে হিলটনের হোটেলের পেছনে প্রাইম লোকেশনে বুরুজ আল সুলতান, আরিজ আল ফালাহ, নোয়ারাত আল সামস, রাওয়াবি শামেক নামের চারটি হোটেল পরিচালনা করছি। যেখানে আমরা ১ হাজার ৫৪৩ জনকে একসঙ্গে সার্ভিস দেই।

আমাদের কথা একটাই, এখানে যারা আসেন- সবাই আল্লাহর মেহমান। তাদের সন্তুষ্টিই আমাদের প্রেরণা। সব কর্মীকে বলা আছে, কোনো মেহমান যাতে মনে কষ্ট না পায়। আর সেটা ধরে রেখেছি বলেই, আল্লাহতায়ালা ইজ্জত ও সন্মানের সঙ্গে আমাদের টিকিয়ে রেখেছেন।

এইটুকু বলে বিরতি নেন কামাল উদ্দিন।

সততা, পরিশ্রম আর একগ্রতা থাকলে জীবনে সাফল্য যে সোনার হরিণ নয়, সেটা প্রমাণ করেছেন কামাল উদ্দিন। বিনয় আর ভালোবাসাটাই যেন তার মূলধন।

দেশেও মানুষের কল্যাণে গড়ে তুলেছেন মাতৃ ও শিশু কল্যাণ সংস্থা নামের ফাউন্ডেশন। যেখানে বিনামূল্যে প্রসূতি নারী ও শিশুদের দেওয়া হয় স্বাস্থ্যসেবা।

এছাড়া আধুনিক চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে চট্টগ্রামে অংশীদারদের নিয়ে গড়ে তুলেছেন ন্যাশনাল হসপিটাল ও পার্কভিউ হসপিটাল নামের দু’টি হাসপাতাল।

মৃত্যুর আগ পর্যন্ত নিজেকে বিলিয়ে দিতে চাই। সেবা দিয়ে মানুষের কল্যাণে নিজেকে নিয়োজিত রাখতে চাই- বলেন মক্বায় হোটেল ব্যবসার অগ্রপথিক কামাল উদ্দিন।

   

মক্কা প্রবেশে কঠোর বিধি-নিষেধ, ১৩৮ ভাষার অনুবাদ ডিভাইস



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
মক্কার একটি চেকপয়েন্ট, ছবি: সংগৃহীত

মক্কার একটি চেকপয়েন্ট, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সৌদি আরবের স্থানীয় হিসাবে বৃহস্পতিবার জিলকদ মাসের ১৫ তারিখ। আজ থেকে সৌদি আরবের মক্কা নগরীতে প্রবেশে কঠোর বিধি-নিষেধ আরোপ শুরু হয়েছে। পবিত্র হজের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে এ নির্দেশনা জারি করেছে দেশটির জননিরাপত্তাবিষয়ক অধিদপ্তর।

বৃহস্পতিবার (২৩ মে, ১৫ জিলকদ) থেকে শুরু হওয়া এ বিধি-নিষেধ হজের পুরো কার্যক্রম সম্পন্ন হওয়া পর্যন্ত জারি থাকবে। এ সময়ে স্থানীয়দের মক্কায় প্রবেশে প্রয়োজন হবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমোদন।

আরব নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়, আসন্ন হজের প্রস্তুতি এবং হজযাত্রীদের নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা নিশ্চিত করতে বিনা অনুমতিতে মক্কায় প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ থেকে হজের স্থানগুলোতে কাজ করার অনুমোদন, মক্কায় বসবাসকারীর আইডি ও হজের অনুমোদন ছাড়া মক্কায় প্রবেশ করতে পারবে না।

নির্দেশনায় আরও বলা হয়, অনুমোদন ছাড়া যারা মক্কায় প্রবেশ করতে চাইবে তাদের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ফিরিয়ে দেবে।

সব ধরনের ভিজিট ভিসায় মক্কায় প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। শুধুমাত্র হজ ভিসাধারীরা মক্কায় প্রবেশ করতে পারবেন। ভিজিট ভিসার ধরন যাই হোক না কেন, এটি হজ পারমিট নয় এবং এই ধরনের ভিসাধারী ব্যক্তিদের হজ করার অনুমতি নেই'। মন্ত্রণালয় সতর্কতা জারি করে আরও বলেছে, কোনো ভিজিট ভিসাধারী যদি মক্কায় থাকে, তাদের অবিলম্বে চলে যেতে হবে। হজ ভিসা ব্যতীত অন্য যেকোনো ধরণের ভিসাধারীরা মক্কায় প্রবেশের চেষ্টা করলে বা মক্কার ভেতরে পাওয়া গেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

১৩৮ ভাষায় তাত্ক্ষণিক অনুবাদ ডিভাইস
সৌদি পাসপোর্ট ও ইমিগ্রেশন বিভাগের মুখপাত্র মেজর নাসির আল ওতাইবি জানিয়েছেন, ‘বিভিন্ন দেশ থেকে আগত হজযাত্রীদের সেবা করার জন্য, কর্মকর্তাদের ১৩৮ ভাষায় দ্রুত অনুবাদের ডিভাইস সরবরাহ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে হজযাত্রীদের সম্ভাব্য সব সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।’

তিনি আরও জানিয়েছেন, আকাশ, স্থল ও সমুদ্রপথে বিভিন্ন দেশ থেকে ৩ লাখের বেশি হজযাত্রী সৌদি আরব পৌঁছেছেন।

;

৬৫ বছর বয়সী ভ্যানচালকের উমরার স্বপ্নপূরণ



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ভ্যানচালক মো. ফরিদ বেপারী, ছবি: সংগৃহীত

ভ্যানচালক মো. ফরিদ বেপারী, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

দীর্ঘ দিনের ইচ্ছে ছিল সৃষ্টিকর্তা দয়াময় আল্লাহতায়ালার ঘর তওয়াফ ও মদিনা শরিফে হজরত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের রওজা মোবরক জিয়ারত করার, রাসুলের রওজায় সালাম পেশ করার। অবশেষে লালিত সেই স্বপ্ন ২০২৪ সালের ২ মে পূরণ করেছেন ভ্যানচালক মো. ফরিদ বেপারী। ৬৫ বছর বয়সী এই ভ্যানচালক বরিশালের মুলাদী পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ড বড়চর মাধবপুরের মো. আ. রব বেপারীর ছেলে।

পবিত্র উমরার স্বপ্নপূরণ প্রসঙ্গে ফরিদ বেপারী বলেন, ‘ভালো কাজের নিয়ত করলে আল্লাহতায়ালা তার ব্যবস্থা করে দেন। আল্লাহর অশেষ মেহেরবানীতেই আমার উমরা পালন করা সম্ভব হয়েছে।’

জানা গেছে, ভ্যান চালিয়ে মাসে দুই থেকে তিন হাজার টাকা আয় করেন। সংসারের খরচ চালানোর পরে হাতে কিছুই থাকে না। তার পাঁচ ছেলে সন্তান রয়েছে। ছোট ছেলে তার সঙ্গে থাকে। বাকি ছেলেরা আলাদা সংসার করে। নিজের আয় দিয়েই উমরা পালন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এ জন্য তিনি দিন-রাত ভ্যান চালিয়ে টাকা সংগ্রহ করেন।

গত ৩০ বছর ধরে তিনি ভ্যান চালিয়ে যাচ্ছেন। স্ত্রীর শরীরের অবস্থা ভালো না থাকায় উমরা পালনে সঙ্গে নিয়ে যেতে পারেননি বলে মনে অনেক দুঃখ তার। উমরা পালন করতে তার খরচ হয়েছে প্রায় দেড় লাখ টাকা। উমরা পালন করতে কোনো ঋণ করেননি তিনি। কষ্ট করে ভ্যান চালিয়ে টাকা উপার্জন করে উমরা পালন করেছেন তিনি।

ফরিদ বেপারী আবারও উমরা পালন করার আশা করছেন। এ জন্য সবার দোয়াও কামনা করেন তিনি।

;

ইন্দোনেশিয়ান নারীর ২২ বার হজ-উমরার অবিস্মরণীয় স্মৃতি



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ইন্দোনেশিয়ান হজযাত্রী মরিয়ম মোহাম্মদ মুনির, ছবি: সংগৃহীত

ইন্দোনেশিয়ান হজযাত্রী মরিয়ম মোহাম্মদ মুনির, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

১৯৬৪ সালে ছয় বছর বয়সী ইন্দোনেশিয়ান মরিয়ম মোহাম্মদ মুনির বাবা-মায়ের সঙ্গে প্রথমবারের মতো হজপালন করতে সৌদি আরব যান। তারপর থেকে তিনি উমরা এবং হজপালনের জন্য আরও ২২ বার মক্কা-মদিনা ভ্রমণ করেছেন।

সুরাবায়া বিমানবন্দরের মক্কা রুট ইনিশিয়েটিভ হলে মরিয়ম মুনির তার ২২ বার সৌদি আরব ভ্রমণের স্মৃতি ও অভিজ্ঞতার কথা স্মরণ করে আলাপ করছিলেন সৌদি প্রেস এজেন্সির এক প্রতিনিধির সঙ্গে।

আলাপকালে তিনি বলেন, আজ থেকে ৬০ বছর আগে, তার পরিবার হজ করার জন্য প্রথম ভ্রমণ করেন, ভ্রমণটি ছিল বেশ ব্যয়বহুল। একটি পুরোনো জাহাজে করে সৌদি আরব আসতে পাঁচ থেকে আট মাস সময় লেগেছিল।

জাহাজগুলো প্রথমে জাকার্তা বন্দর থেকে যাত্রা শুরু করে। পরে ভারত, আরব সাগর এবং লোহিত সাগরের মধ্য দিয়ে জেদ্দা বন্দরে পৌঁছায়। তিনি বলেন, যাত্রাটি বিপদ, চ্যালেঞ্জ এবং ভয়ে পরিপূর্ণ ছিল। তবে, ফরজ ইবাদতপালনের বাধ্যবাধকতার জন্য তার পরিবারের ইচ্ছা ও সাধনা পথের কষ্ট সেভাবে দাগ কাটেনি। বরং এ সময়টা আমাদের আরও শক্তি জুগিয়েছে। কাবা দেখার ইচ্ছাকে প্রবল করেছে। মসজিদে নববিতে যাওয়ার এবং রাসুলের রওজা জিয়ারতের ভালোবাসা সব কষ্ট ভুলিয়ে দিয়েছে।

তিনি বলেন, মক্কা নগরিতে পৌঁছার পর আমাদের শরীর পুরোপুরি সতেজ হয়ে উঠে। আর মসজিদে নববিতে যেয়ে মনে হতো, আত্মা যেন সতেজ হয়ে উঠছে।

মুনির অতীতে হজকে ঘিরে ইন্দোনেশিয়ানদের বিভিন্ন ঐতিহ্য সম্পর্কেও কথা বলেন।

ইন্দোনেশিয়া থেকে সবচেয়ে বেশি মানুষ হজপালনে সৌদি আরব যান

মরিয়ম মোহাম্মদ মুনির বলেন, হজযাত্রীরা সবাই জাকার্তায় জড়ো হবেন এবং যাত্রার আগে তাদের পরিবারের সদস্যদের বিদায় জানাবেন- এটাই আমাদের রীতি। হজ শেষ করে দেশে ফেরার পর হজযাত্রীদের পরিবার তাদের নিরাপদে প্রত্যাবর্তন এবং তাদের ধর্মীয় যাত্রার পরিপূর্ণতা উদযাপন করে বিভিন্ন উপহার দিয়ে উষ্ণভাবে স্বাগত জানায়।

মরিয়মের মতে, উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে মক্কায় ভ্রমণ এখন অনেক সহজ হয়েছে, যার ফলে পবিত্র নগরীতে উমার ও হজপালনকারীদের সংখ্যা বাড়ছে। অতীতের হজযাত্রাকে বর্তমান যাত্রার সঙ্গে তুলনা করলে দেখা যায় ভিন্নতার জগৎ।

তিনি বলেন, এখন মনে হচ্ছে তারা এখানে (ইন্দোনেশিয়া) বসে মক্কায় পৌঁছেছে। সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়েছে, যা সৌদি সরকারের একটি অনুকরণীয় অর্জন। এ সময় মুনির সৌদি সরকারের প্রতি আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

জনসংখ্যার নিরিখে ইন্দোনেশিয়া হলো, সবচেয়ে বড় মুসলিম দেশ। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এই দেশ থেকে সবচেয়ে বেশি হজযাত্রী প্রতিবছর হজপালনে সৌদি আরব যান। চলতি বছর ইন্দোনেশিয়া থেকে ২ লাখ ৪১ হাজার হজযাত্রী সৌদি আরব যাবেন। ১২ মে থেকে দেশটির হজফ্লাইট শুরু হয়েছে।

;

হজের প্রস্তুতিতে ওপরে তোলা হলো কাবার গিলাফ



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
হজের প্রস্তুতিতে ওপরে তোলা হলো কাবার গিলাফ, ছবি: সংগৃহীত

হজের প্রস্তুতিতে ওপরে তোলা হলো কাবার গিলাফ, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

পবিত্র কাবাঘরের কিসওয়া তথা কালো গিলাফ নিচ থেকে ওপরে তিন মিটার তুলে তাতে সাদা কাপড়ে মোড়ানো হয়েছে। কেউ বলেন, কাবাকে ইহরাম পড়ানো হয়েছে, এর মাধ্যমে হজের প্রস্তুতির স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়।

বুধবার ২২ মে (১৫ জিলকদ) প্রতিবছরের মতো এবারের হজের প্রস্তুতি হিসেবে তা করা হয়। কিন্তু প্রতিবছর এভাবে কাবার গিলাফের নিচের অংশ ওপরের তোলার কারণ কী, তা অনেকের অজানা।

মূলত হজের সময় পবিত্র মসজিদে হারামে বেশ কিছু পরিবর্তন আসে। কাবা ঘরের কালো গিলাফের কিছু অংশ ওপরে উঠিয়ে রাখা এর অন্যতম। এর বদলে একটি সাদা কাপড় ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। সেই কাপড়টি আড়াই মিটার চওড়া এবং চার দিকে ৫৪ মিটার দীর্ঘ।

কিসওয়াটি বেশ কয়েকটি পর্যায়ে উত্তোলন করা হয়। প্রথমে চারদিক থেকে কভারের নীচের অংশটি খুলে দেওয়া হয়, ফলে কোণগুলো আলাদা হয়ে যায়। তার পর নীচের দড়ি খুলে ফিক্সিং রিং থেকে সরিয়ে ওপরের দিকে টেনে তোলা হয়।

ইসলামের সূচনাকাল থেকে হজের সময় কাবার গিলাফ সুরক্ষায় এই রীতি চলে আসছে। অতীতে গিলাফের কিছু অংশ হাতের কাছে পেয়ে কিছু অংশ কেটে ফেলার ঘটনা ঘটে।

অনেকে গিলাফকে নিজের উদ্দেশ্য পূরণে সহায়ক বস্তু বলে মনে করে। অনেকে সেই কাপড়ে নিজের নাম লিখে স্বস্তিবোধ করে। অথচ এসব কাজের সঙ্গে বাস্তবতার কোনো মিল নেই। তাই হাজিদের ভিড়ের মধ্যেও গিলাফ সুরক্ষিত রাখতে এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

কাবার গিলাফ ওপরে তোলা হচ্ছে, ছবি: সংগৃহীত

আর খালি স্থানে সাদা কাপড় দিয়ে কাবাঘর মোড়ানো হয়। মূলত এর মাধ্যমে হজের সময় ঘনিয়ে আসার কথা স্মরণ করানো হয়। কাবার দেয়ালের সাদা কাপড় হজের পূর্বপ্রস্তুতির জানান দেয়। হজের শেষ সময় পর্যন্ত সাদা কাপড় থাকে। এরপর আগের মতো পুনরায় কালো গিলাফ নামিয়ে দেওয়া হয়।

প্রতিবছর ১৫ জিলকদ বা এর এক দিন আগে-পরে কাবার গিলাফের অংশ ওপরে তোলা হয়। এরপর থেকেই হাজিদের ভিড় ও তাওয়াফ শুরু হয়। প্রচণ্ড ভিড়েরর কারণে তখন আর গিলাফ ওপরে তোলা সম্ভব হয় না।

কাবার গিলাফ ওপরে তুলতে বুধবার রাতে নিরাপত্তা কর্মীরা পবিত্র কাবাকে ঘিরে নিরাপত্তা বলয় তৈরি করেন। এ সময় বিশেষ প্রযুক্তিগত দল কিসওয়া ওপরে উঠানোর কাজ করে। ১০টি ক্রেনের সাহায্যে ৩৬ জন কর্মী কাজটি সম্পন্ন করেন।

রীতি অনুযায়ী ৯ জিলহজ পর্যন্ত সাদা কাপড় থাকবে। এরপর হজের দিন নতুন গিলাফ লাগানো হয়।

;