হাদিসে বর্ণিত তিন সংখ্যা, বিশ্লেষণ ও মর্মকথা



মোহাম্মদ নিজামুল ইসলাম, অতিথি লেখক, ইসলাম
হাদিসে বর্ণিত তিন সংখ্যা, বিশ্লেষণ ও মর্মকথা, ছবি: সংগৃহীত

হাদিসে বর্ণিত তিন সংখ্যা, বিশ্লেষণ ও মর্মকথা, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অনেক হাদিসে তিন সংখ্যার বিশেষত্ব দেখা যায়। কোনো হাদিসে তিনি বিশেষ তিনটি গুণ অর্জনের ব্যাপারে উৎসাহিত করেছেন। আবার কোনো হাদিসে বিশেষ তিনটি দোষের পরিণতি সম্পর্কে সতর্ক করেছেন। কখনও বিশেষ তিনটি কাজের ফলাফল বর্ণনা করেছেন। আবার কখনও তিন ব্যক্তি সম্পর্কে কোনো বিশেষত্ব বর্ণনা করেছেন। এ ধরনের কয়েকটি হাদিস বর্ণনা করা হলো।

তিনটি গুণ অর্জনে ঈমানের স্বাদ
হজরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যার মধ্যে তিনটি গুণ আছে, সে ঈমানের স্বাদ পাবে। ১. আল্লাহ তার রাসূল অন্য সব কিছু থেকে তার কাছে অধিক প্রিয় হওয়া, ২. কাউকে একমাত্র আল্লাহর জন্য ভালোবাসা ও ৩. কুফুরিতে প্রত্যাবর্তনকে আগুনে নিক্ষিপ্ত হওয়ার মতো অপছন্দ করা।’ –সহিহ মুসলিম: ১৬

তিন কাজের আদেশ
হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) আমাকে তিনটি কাজের অসিয়ত করেছেন। ১. প্রতি মাসে তিন দিন রোজা পালন করা, ২. চাশতের নামাজ আদায় করা, ৩. বিতরের নামাজ আদায় করে শয়ন করা। -সহিহ বোখারি: ১১৭৮

তিনটি সন্তান মৃত্যুবরণ করলে জান্নাত
হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, কোনো নারীর তিনটি নাবালেগ সন্তান মৃত্যুবরণ করলে, তার জন্য জাহান্নামের আগুন হারাম। -সহিহ বোখারি: ১০১

তিন ধরনের লোকের জন্য পুরস্কার
হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, তিন ধরনের লোকের জন্য দু’টি করে পুরস্কার রয়েছে। ১. ওই আহলে কিতাব, যে তার নবীর ওপর ঈমান এনেছে এবং রাসূল (সা.) ওপর ঈমান এনেছে। ২. যে কৃতদাস আল্লাহর হুকুম পালন করে এবং তার মালিকের হুকুম পালন করে ও ৩. ওই মালিক, যে তার কৃতদাসীকে মুক্ত করে দিয়ে তাকে বিয়ে করে। -সহিহ বোখারি: ৯৭

সত্যবাদী ব্যবসায়ীরা তিন ব্যক্তির সঙ্গে থাকবে
হজরত আবু সাঈদ (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, সত্যবাদী ও বিশ্বস্ত ব্যবসায়ীরা (আখেরাতে) নবী, সিদ্দিক (সত্যবাদী) ও শহীদদের সঙ্গে থাকবে। -সুনানে তিরমিজি: ১২০৯

মৃত্যুর পরেও তিন আমলের সওয়াব পাওয়া যায়
হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যখন মানুষ মৃত্যুবরণ করে তখন তার সব আমল বন্ধ হয়ে যায় তিন প্রকার আমল ছাড়া। ১. সদকায়ে জারিয়া, ২. এমন ইলম যার দ্বারা উপকার হয় ও ৩. পুণ্যবান সন্তান যে তার জন্য দোয়া করতে থাকে। -সহিহ মুসলিম: ৪১১৫

তিন ব্যক্তির দোয়া কবুল হয়
হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, তিন ব্যক্তির দোয়া নিঃসন্দেহে কবুল হয়। মজলুমের দোয়া, মুসাফিরের দোয়া ও সন্তানের জন্য পিতার দোয়া। -সুনানে ইবনে মাজাহ: ৩৮৬২

ঘুমন্ত অবস্থায় শয়তান মানুষকে তিনটি গিট দেয়
আল্লাহর রাসূল (সা.) বলেছেন, তোমাদের কেউ যখন ঘুমিয়ে পড়ে তখন শয়তান তার ঘাড়ের পশ্চাদংশে তিনটি গিট দেয়। প্রতি গিটে সে এ বলে চাপড়ায়, তোমার সামনে রয়েছে দীর্ঘ রাত, অতএব তুমি শুয়ে থাকো। অতঃপর সে যদি জাগ্রত হয়ে আল্লাহকে স্মরণ করে তাহলে একটি গিট খুলে যায়, পরে অজু করলে আরেকটি গিট খুলে যায়, অতঃপর নামাজ আদায় করলে আরেকটি গিট খুলে যায়। তখন তার প্রভাত হয় উৎফুল্ল। অন্যথায় সে সকালে উঠে কলুষ কালিমা ও আলস্য সহকারে। -সহিহ বোখারি: ১১৪২

আল্লাহ বান্দার তিনটি কাজ অপছন্দ করেন
সাহাবি হজরত মুগিরা ইবনে শুবাহ (রা.) বলেন, আমি আল্লাহর রাসূলকে (সা.) বলতে শুনেছি, আল্লাহ তোমাদের তিনটি কাজ অপছন্দ করেন- ১. অনর্থক কথাবার্তা, ২. সম্পদ নষ্ট করা এবং ৩. অত্যধিক সওয়াল করা। -সহিহ বোখারি: ১৪৭৭

তিনটি জিনিস বান্দার কবর পর্যন্ত যায়
হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, তিনটি বস্তু মৃত ব্যক্তির অনুসরণ করে। দু’টি ফিরে আসে, আরেকটি তার সঙ্গে থেকে যায়। তার পরিবারবর্গ, তার ধন-সম্পদ এবং তার আমল তার অনুসরণ করে। পরিবারবর্গ ও তার ধন-সম্পদ ফিরে আসে এবং তার আমল তার সঙ্গে থেকে যায়। -সহিহ বোখারি: ৬৫১৪

মুনাফিকের তিনটি আলামত
হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, মুনাফিকের আলামত তিনটি- ১. সে কথা বললে মিথ্যা বলে, ২. ওয়াদা করলে ভঙ্গ করে ও ৩. তার কাছে আমানত রাখা হলে খেয়ানত করে। -সহিহ মুসলিম: ১১৫

উম্মতে মুহাম্মদিকে তিনটি জিনিস দিয়ে সম্মানিত করা হয়েছে
হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, অন্যসব উম্মতের চেয়ে তিনটি বিষয়ে আমাদের (উম্মতে মুহাম্মদিকে) মর্যাদা দান করা হয়েছে। ১. আমাদের (নামাজের) কাতার ফেরেশতাদের কাতারের মতো করা হয়েছে, ২. সমগ্র পৃথিবী আমাদের জন্য মসজিদ করে দেওয়া হয়েছে ও ৩. পানি না পেলে পৃথিবীর মাটিকে আমাদের জন্য পবিত্রতা অর্জনের উপকরণ করে দেওয়া হয়েছে। - সহিহ মুসলিম: ১০৫২

তিন সময়ে নামাজ পড়া নিষেধ
উকবা ইবনে আমির আল জুহানি (রা.) বলেন, আমি হজরত রাসূলুল্লাহকে (সা.) বলতে শুনেছি। হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) তিন সময়ে নামাজ আদায় করতে এবং মৃতদের দাফন করতে নিষেধ করেছেন- ১. সূর্য যখন আলোকোদ্ভাসিত হয়ে উদয় হতে থাকে তখন থেকে তা পরিষ্কারভাবে উপরে ওঠা পর্যন্ত, ২. সূর্য যখন ঠিক দ্বিপ্রহরের সময় থেকে হেলে যাওয়া পর্যন্ত ও ৩. সূর্য ক্ষীণ আলোক হওয়া থেকে তা সম্পূর্ণ অস্ত যায়া পর্যন্ত। -সহিহ মুসলিম: ১৮১৪

আল্লাহর নিকট তিন কাজ হারাম, অপর তিন কাজ অপছন্দনীয়
হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, নিশ্চয়ই আল্লাহতায়ালা তোমাদের ওপর হারাম করেছেন মায়েদের অবাধ্য হওয়া, জীবন্ত কন্যা সন্তানকে মাটিতে পুঁতে ফেলা এবং অন্যের হক আদায় না করা। আর তিনটি বিষয় তিনি তোমাদের জন্য অপছন্দ করেন। তা হলো- ১. নিরর্থক কথা বলা, ২. অধিক প্রশ্ন করা ও ৩. সম্পদ বিনষ্ট করা। -সহিহ মুসলিম: ৪৩৭৫

তিন জায়গায় মিথ্যা বলা জায়েজ
ইবনে শিহাব (রহ.) বলেন, তিনটি স্থান ছাড়া আর কোনো বিষয়ে হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) মিথ্যা বলার অনুমতি দিয়েছেন বলে আমি শুনিনি। ১. যুদ্ধ কৌশলের ক্ষেত্রে, ২. মানুষের মধ্যে আপস-মীমাংসা করার জন্য ও ৩. সহধর্মিণীর সঙ্গে স্বামীর কথা ও স্বামীর সঙ্গে সহধর্মিণীর কথা বলার ক্ষেত্রে। -সহিহ মুসলিম: ৬৫২৭

তিন ব্যক্তি জান্নাতে যাবে না
হজরত আম্মার ইবনে ইয়াসার (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত রাসূল (সা.) বলেছেন, তিন শ্রেণির মানুষ কখনও জান্নাতে যাবে না। ১. যে ব্যক্তি তার পরিবারে বেহায়াপনার সুযোগ দেয়, ২. পুরুষের বেশধারী নারী ও ৩. নিয়মিত নেশাদার দ্রব্য পানকারী। -তাবরানি, তারগিব: ৩৩৮১

অন্য হাদিসে হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, প্রতারক, ধোঁকাবাজ, কৃপণ এবং উপকার করে খোটা দানকারী জান্নাতে যেতে পারবে না। -তিরমিজি: ১৯৬৩

   

হজযাত্রীর কাছে নুসুক কার্ড না পেলেই আটক



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
নুসুক কার্ড, ছবি: সংগৃহীত

নুসুক কার্ড, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

চলতি বছর নুসুক কার্ড ছাড়া কেউ হজ করতে পারবেন না। সৌদি সরকারের হজ ও উমরা মন্ত্রণালয়ের অনুমতি ছাড়া হজযাত্রী প্রতিরোধ করতে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

শনিবার (২৫ মে) ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত একটি চিঠি হজ এজেন্সির মালিকদের কাছে পাঠানো হয়েছে।

চিঠিতে বলা হয়েছে, জেদ্দা হজ অফিস থেকে এ সংক্রান্ত প্রাপ্ত পত্রের ছায়ালিপি পাওয়ার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশ দিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।

জেদ্দা হজ অফিস থেকে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, মাশায়ের (মিনা, আরাফাত ও মুজদালিফ) এলাকাসহ মক্কা নগরীর গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে মক্কায় প্রবেশের তাসরিহ বা নুসুক কার্ড ছাড়া কাউকে পাওয়া গেলে প্রথমবার ১০ হাজার সৌদি রিয়াল অর্থদণ্ড এবং পুনরায় অপরাধে দ্বিগুণ জরিমানা ও কারাদণ্ডের বিধান করা হয়েছে। হজের অনুমতি নেই, এমন কোনো ব্যক্তিকে পরিবহন করা হলে পরিবহনকারীকে ছয় মাসের কারাদণ্ড এবং ৫০ হাজার সৌদি রিয়াল জরিমানা করা হবে।

এ ছাড়া মিনা ও আরাফাতে হাজির তাঁবুতে নুসুক কার্ড ছাড়া কাউকে পাওয়া গেলে তাকে অর্থদণ্ড আরোপ এবং দেশে প্রত্যাবর্তনের মতো শাস্তি প্রদানের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এরূপ কর্মের সহযোগিতাকারীকেও শাস্তির আওতায় নিয়ে আসা হবে।

হজের অনুমতি নেই কিংবা নুসুক কার্ডবিহীন কাউকে মাশায়েরে পরিবহন করলে গাড়িচালকসহ উভয়েই শাস্তির আওতায় আসবেন। ই-হজ সিস্টেমে ভাড়াকৃত বাড়ি বা হোটেলে হাজি আবাসন না করে অন্যত্র হাজি আবাসন করা হলে অথবা সিস্টেমে এক হোটেল এন্ট্রি দিয়ে অন্য হোটেলে হাজি ওঠানো হলে এজেন্সি বা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে শাস্তির আওতায় নিয়ে আসা হবে।

ধর্ম মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, ডিজিটাল এই নুসুক কার্ডে সংশ্লিষ্ট হজযাত্রীর প্রয়োজনীয় সব তথ্য মজুদ থাকবে এবং হজের জন্য পবিত্র কাবার প্রাঙ্গণে প্রবেশ করতে চাইলে এই কার্ড অবশ্যই প্রদর্শন করতে হবে। হজের অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা পালনেও বিভিন্ন জায়গায় কার্ডটি দেখাতে হবে।

;

মক্কায় প্রতিবন্ধীদের জন্য বিশেষ রাস্তা ও ইবাদতের স্থান



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
প্রতিবন্ধীদের জন্য নির্ধারিত মসজিদে হারামের ৯১ নম্বর গেট, ছবি: সংগৃহীত

প্রতিবন্ধীদের জন্য নির্ধারিত মসজিদে হারামের ৯১ নম্বর গেট, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

আগে থেকে ব্যবস্থা থাকলেও চলতি হজ মৌসুমে মক্কার মসজিদে হারামে অসুস্থ, বয়স্ক ও বিশেষভাবে অক্ষম প্রতিবন্ধীদের জন্য বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করেছে হারামাইন পরিচালনা পরিষদ। তাদের দেখাশোনা, রাস্তা দেখানো ও যেকোনো ধরনের সাহায্যের জন্য বিশেষভাবে প্রশিক্ষিত ২ শতাধিক গাইড নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

এবার মসজিদে হারামের কয়েকটি স্থান বিভিন্ন শ্রেণির প্রতিবন্ধীদের জন্য সংরক্ষিত করা হয়েছে, যাতে তাদের ইবাদত-বন্দেগি ও চলাচলে কোনো অসুবিধায় পড়তে না হয়।

সৌদি আরবের সরকারি বার্তা সংস্থা এসপিএ জানিয়েছে, মসজিদে হারামে চলাচলে অক্ষম প্রতিবন্ধীদের হুইলচেয়ারের জন্য বিশেষ পথ তৈরি করা হয়েছে। সেই সঙ্গে যেখানে তাদের বসার স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে, সেখানে পানিসহ অন্যান্য সুবিধা দেওয়া হয়েছে।

পুরুষ ও নারী প্রতিবন্ধীদের জন্য মসজিদে হারামে পৃথক তিনটি স্থান সংরক্ষিত রয়েছে, যা প্রধান ফটকের কাছে। ফলে তাদের যাতায়াতের ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা হবে না। জায়গাগুলো হলো- মসজিদে হারামের ৯১ নম্বর গেট এবং আল শাবাকা ব্রিজের কাছে ৬৮ নম্বর গেট (নিচতলায়)।

মসজিদে হারামে প্রতিবন্ধীদের চলাচলে রয়েছে আলাদা ব্যবস্থা, ছবি: সংগৃহীত

আর নারীদের হুইলচেয়ার ব্যবহার করার জন্য বাদশাহ ফাহাদ এক্সটেনশনের গেট নম্বর ৮৮ এবং নিচতলার গেট নম্বর ৬৫ ছাড়াও মাতাফের (কাবা চত্বর) সামনে নামাজের জন্য একটি স্থান (মুসাল্লা নম্বর ১৫) সংরক্ষিত ঘোষণা করা হয়েছে, যেখানে হুইলচেয়ারসহ নারীরা আরামে বসতে পারেন৷

এ ছাড়া বয়স্কদের জন্য ডিজিটাল কোরআন এবং অন্ধদের জন্য ব্রেইল সংস্করণ ছাড়াও শ্রবণ ও বাক প্রতিবন্ধীদের জন্য সাংকেতিক ভাষায় জুমার খুতবার শোনার বিশেষ ব্যবস্থা করা হয়েছে।

;

সোমবার ছায়াশূন্য কাবার দেখা মিলবে



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
সোমবার ছায়াশূন্য কাবার দেখা মিলবে, ছবি: সংগৃহীত

সোমবার ছায়াশূন্য কাবার দেখা মিলবে, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সোমবার পবিত্র কাবা ঘরের ঠিক ওপরে উঠে আসবে সূর্য। ওই সময়ে ছায়াশূন্য পবিত্র কাবার দেখা মিলবে।

জ্যোতির্বিদরা জানিয়েছেন, সোমবার (২৭ মে) স্থানীয় সময় দুপুর ১২টা ১৮ মিনিটে পবিত্র কাবার ঘরের ঠিক ওপর সূর্য থাকবে। বছরের দুইবার এমন ঘটনা ঘটলেও চলতি বছরে প্রথমবারের মতো এ ঘটনা ঘটতে যাচ্ছে।

আল আরাবিয়া নিউজকে জেদ্দা অ্যাস্ট্রোনোমিক্যাল সোসাইটির প্রধান মাজেদ আবু জাহরা জানিয়েছেন, সোমবার দুপুর নাগাদ মক্কার পবিত্র কাবা ঘরের সঙ্গে সূর্য একই লাইনে অবস্থান করবে। এ সময় সূর্যের কেন্দ্রবিন্দুটি কাবার ঠিক ওপরে উঠে আসবে।

জ্যোতির্বিদরা জানিয়েছেন, সূর্যের এই অবস্থানকে ‘ছায়াশূন্য’ (জিরো শ্যাডো) অবস্থা বলেই চিহ্নিত করেন মহাকাশ বিজ্ঞানীরা। বছরে অন্তত দুইবার পবিত্র মক্কা নগরীর ক্ষেত্রে এই ঘটনা ঘটে। প্রতিবছর ২৭ বা ২৮ মে ছাড়াও ১৫ বা ১৬ জুলাই তারিখে একই ঘটনা ঘটে থাকে। পবিত্র কাবাঘরটি বিষুবরেখা ও কর্কটক্রান্তির মাঝে অবস্থিত হওয়ার কারণেই এমনটা ঘটে।

তারা আরও জানান, মক্কায় সোমবার ভোর ৫টা ৩৮ মিনিটে সূর্যোদয় হবে। উত্তরপূর্ব দিকটি থেকে সূর্য ধীরে ধীরে ওপরে উঠতে শুরু করবে। সে কারণে সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য হলেও পবিত্র এই মসজিদ ঘরের কোনো দিকে কোনো ছায়া থাকবে না।

পৃথিবীর অক্ষরেখায় সূর্য ২৩.৫ ডিগ্রি কৌণিক অবস্থান নিয়ে বিষুব রেখার উত্তর ও দক্ষিণ দিকে ঘুরতে থাকে।

এভাবে একবার উত্তর গোলার্ধে একবার দক্ষিণ গোলার্ধে যায়। আর এই আসা যাওয়ার পথে বছরে দুইবার সরাসরি ওপরে অবস্থান নিয়ে পবিত্র কাবাকে ছায়াশূন্য করে দেয়।

জ্যোতির্বিদ আবু জাহরা আরও জানান, কাঠের কোনো কাঠি মাটিতে লম্বালম্বী করে মানুষ কাবার সঠিক দিক নির্ধারণ করতে পারবে। এর মাধ্যমে কিবলার দিকটি কাঠির ছায়ার ঠিক বিপরীতে দেখতে পাবে।

;

হজযাত্রীদের জন্য ২ শতাধিক বিশেষ গাইড, সাড়ে ৩ হাজার বাস



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
শায়খ সুদাইস এক হজযাত্রীকে উপহার দিচ্ছেন, ছবি: সংগৃহীত

শায়খ সুদাইস এক হজযাত্রীকে উপহার দিচ্ছেন, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

আসন্ন হজে মসজিদ হারাম এবং মসজিদে নববিতে আগত বয়স্ক, প্রতিবন্ধী এবং অসুস্থদের বিশেষ যত্ন ও সেবার লক্ষে বিশেষ দল নিয়োগ করা হয়েছে।

হারামাইন প্রেসিডেন্সির উদ্যোগে চলতি হজ মৌসুমে ‘ইনসানিয়্যুন’ মানবিক উদ্যোগ শিরোনামে এই কর্মসূচি পারিচালিত হবে। এর মাধ্যমে হজযাত্রীদের অভিজ্ঞতা সমৃদ্ধ হবে। যারা অসুস্থ, বয়স্ক এবং প্রতিবন্ধী- তারা নির্বিঘ্নে ও আরামের সঙ্গে গ্র্যান্ড মসজিদ এবং মসজিদে নববি পরিদর্শন, জিয়ারত ও ইবাদত-বন্দেগি পালন করতে পারবেন।

মসজিদে হারাম এবং নববির ধর্ম বিষয়ক প্রধান শায়খ আবদুর রহমান আস-সুদাইস এই কর্মসূচি উদ্বোধন করে বলেন, ‘মানবতাবাদী উদ্যোগের লক্ষ্য হলো- আচরণ উন্নত করা এবং প্রেসিডেন্সি কর্তৃক প্রদত্ত পরিষেবাগুলোকে বিভিন্ন সেক্টর এবং বিভাগজুড়ে বিস্তৃতি করা। আমরা সব ধরনের হজযাত্রীদের জন্য একটি উপযুক্ত উপাসনার পরিবেশ উপহার দিতে চাই। আমাদের উদ্দেশ্য, মুসলমানদের উদার মনোভাব বাড়ানো এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে সেবার মান উন্নত করা।’

এই উদ্যোগের জন্য বিশেষভাবে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ২ শ গাইড নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। যারা এই শ্রেণির হজযাত্রীদের ধর্মীয় চাহিদা মেটাতে প্রযুক্তি, মেধা ব্যবহার করবে। তারা অসুস্থ, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধী হজযাত্রীদের ধর্মীয়ভাবে সচেতনতা বৃদ্ধি ও দিকনির্দেশনার জন্য নিবিঢ়ভাবে কাজ করবে।

এ সময় তিনি বলেন, হজপালনকারীদের সেবা দিতে ধর্মীয় বিষয়ক সংস্থার পক্ষ থেকে কোনো অবহেলা সহ্য করা হবে না।

তিনি আরও বলেন, হারামাইনের ধর্মবিষয়ক অধিদপ্তর হজ মৌসুমে বিভিন্ন দেশ থেকে আগত হজযাত্রীদের জন্য বিভিন্ন ভাষায় বিষয়ভিত্তিক ধর্মীয় পুস্তিকা তৈরি করেছে, যা হজযাত্রীদের দেওয়া হবে।

মিনা-আরাফাতের জন্য সাড়ে ৩ হাজার বাস : সৌদি আরবে হজ ব্যবস্থাপনায় সেন্ট্রাল ট্রান্সপোর্ট অথরিটি চলতি হজের পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে। ঘোষণায় বলা হয়, হাজিদের পরিবহনের জন্য ৩ হাজার ৫০০টি বাস প্রস্তুত। এসব বাস চলতি হজ মৌসুমে মসজিদে হারামের চারপাশে অবস্থিত ৯টি স্টেশন থেকে চলাচল করবে। বাসগুলো হজযাত্রীদের মিনা ও আরাফাতে আনা-নেওয়া করবে। এ জন্য ১২টি রুট নির্ধারণ করা হয়েছে।

;