গৃহকর্মীদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার ইসলামের শিক্ষা



মুফতি আইনুল ইসলাম, অতিথি লেখক, ইসলাম
গৃহকর্মীদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার ইসলামের শিক্ষা

গৃহকর্মীদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার ইসলামের শিক্ষা

  • Font increase
  • Font Decrease

সাহাবি হজরত আনাস রাযিয়াল্লাহু বলেন, আমি ১০ বছর আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সেবায় কাজ করেছি। আল্লাহর কসম! একবারের জন্য তিনি আমাকে ‘উফ’ পর্যন্ত বলেননি, কখনও কঠোর কন্ঠে বলেননি, তুমি কেন এটা করেছ? অথবা তুমি কেন ওটা করোনি? –সহিহ বোখারি

বর্ণিত এই হাদিসে রয়েছে উম্মতের জন্য শিক্ষণীয় অনেক বিষয়। দেখুন, হজরত আনাস (রা.) বলেছেন, আমি ১০ বছর ধরে হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে চিনতাম, কিংবা বলেননি ১০ বছর তার বাসায় গিয়েছি, তিনি বলেছেন, আমি ১০ বছর তার সেবা করেছি, অর্থাৎ ১০ বছর প্রতিনিয়ত তার সঙ্গে ছিলাম। হজরত আনাস (রা.) কি এই ১০ বছরে কোনো কাজে কোনো ভুল করেননি? এটা হতে পারে না; অবশ্যই কিছু ভুল তিনি করেছিলেন। কোনো কোনো কাজ হয়তো ঠিকমতো করতে পারেননি। কিন্তু তার পরও হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) একবারের জন্যও ‘উফ’ বলেননি। বিরক্তি প্রকাশ করেননি। রাগ দেখানো তো দূরে থাক।

বস্তুত একজন মানুষ তার পরিবারের মানুষদের সঙ্গে, কাছের মানুষদের সঙ্গে কিভাবে আচরণ করে- তার মাধ্যমে তার প্রকৃত রূপ প্রকাশ পায়। কারণ বাইরের মানুষের সঙ্গে সবাই ভদ্রভাবে কথা বলে। সারাক্ষণ যাদের সঙ্গে থাকা হয়, তাদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করা বেশি কঠিন।

বর্ণিত হাদিসের মাধ্যমে আমরা জানতে পারি, সর্বক্ষণ সেবক হিসেবে কাজ করা হজরত আনাস (রা.)-এর সঙ্গে আল্লাহর রাসুল (সা.)-এর ব্যবহার কেমন কোমল, ধৈর্য্যশীল ছিল। আমরা যদি আল্লাহর রাসুল (সা.)-এর এই একটিমাত্র গুণকে নিজের মধ্যে ধারণ করতে পারি, নিজের করে নিতে পারি, তাহলে মানুষের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক চিরদিনের জন্য বদলে যাবে। কিন্তু দুঃখজনক বিষয় হলো, আমরা তা করতে পারি না। মানুষের সঙ্গে ভালো ব্যবহার তো পরের কথা, উল্টো বাসা-বাড়িতে যারা কাজ করে তাদের সঙ্গে প্রতিনিয়ত খারাপ ব্যবহার ও মারধরের ঘটনা দেখা যায়।

পারিবারিক জীবনে আমরা কম-বেশি সবাই গৃহকর্মীর ওপর নির্ভরশীল। দিন দিন বাড়ছে এই নির্ভরতা। আমাদের ছোট ছোট পরিবারের কর্তা এবং কর্ত্রী দু’জনই চাকরিজীবী। তাই তাদের বাসার বাইরে থাকতে হয়। ঘরের এবং শিশুদের দেখাশোনার পুরো কাজটি গৃহকর্মীদেরই করতে হয়। বর্তমান সমাজবাস্তবতায় গৃহকর্মীরা পরিবারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তাদের সহযোগিতায় আমাদের পরিবার সচল এবং ছন্দবদ্ধভাবে চলতে থাকে। কিন্তু তাদের পরিশ্রমের তুলনায় পারিশ্রমিক খুবই কম। বাসাবাড়িতে খাওয়া-দাওয়ার ক্ষেত্রেও একচোখা নীতি দেখা যায়। বাসাবাড়িতে অনেকে কুকুর-বিড়াল পোষেণ। কুকুর ও বিড়ালের যেভাবে যত্ন নেন, ভালো-মন্দের খোঁজ-খবর রাখেন, তার ছিটেফোঁটাও গৃহকর্মীর বেলায় দেখা যায় না। আমরা গৃহকর্মীর ভালো-মন্দের ব্যাপারে উদাসীন। অথচ গৃহকর্মী পরিবারেরই অংশ। বাসার যে জায়গাটা সবচেয়ে বেশি বিদঘুটে অন্ধকার, আলো বাতাসের সুবিধা নেই, এমন জায়গায় তাদের থাকতে দেয়া হয়। সেখানে একজন মানুষ কষ্ট করে হয়তো থাকতে পারে, কিন্তু হাত-পা ছড়িয়ে একটু আরাম করে ঘুমানোর সুযোগ নেই। আমরা যে সময় গভীর ঘুমে বিভোর থাকি ঠিক সে সময় ভোরবেলা তাদের উঠে আমাদের অফিসের জন্য খাবার তৈরি করতে হয়। ছেলে ময়েদের স্কুলে যাওয়ার জন্য তৈরি করতে হয়। অথচ আমরা তাদের সাথে একটু সুন্দর ব্যবহার করতে পারি না। বরঞ্চ সামান্য একটু এদিক-সেদিক হলেই অকথ্য গালিগালাজ ও শারীরিক নির্যাতনের খড়গ নেমে আসে। ভালো ব্যবহার, ভালো খাবার, একটু ভালো কাপড়চোপড়, অসুস্থতার জন্য চিকিৎসাটুকু তারা পান না। শুধু কি তাই! এক দিন, এক মাস কিংবা ৩৬৫ দিনেও তাদের ভাগ্যে ছুটি জোটে না। এরপরও তাদের নির্যাতনের অসহনীয় যন্ত্রণা ভোগ করতে হয়।

তারা আমাদের ভালো থাকতে সাহায্য করেন। পরিবর্তে তাদের ভাগ্যে জোটে অবহেলা। নির্যাতনের যন্ত্রণা সইতে হয়, অনেকসময় শিকার হতে হয় যৌন হয়রানির। আইন ও সালিশকেন্দ্র (আসক) চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৯ মাসে ৩৮ জন নারী গৃহকর্মীর সহিংসতার কথা বলেছে। তাদের মধ্যে ১২ জন নিহত আর তিনজন ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। ২০২০ সালে সহিংসতার শিকার হয়েছেন ৪৫ জন ও হত্যার শিকার হয়েছেন ১৩ জন। ধর্ষণের শিকার আটজন। আরেক হিসাবে দেখা গেছে, গত ১০ বছরে এক হাজার ৭০টি গৃহকর্মী নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় ৫৬৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। আমরা কেন জানি ভুলে যাই তারাও মানুষ। আমাদের মতোই তাদের পেছনে ফেলে আসা সংসার ও পরিবার রয়েছে। পরিবারের প্রতি রয়েছে মমত্ববোধ। আমাদের মতোই তাদেরও রয়েছে মানবিক অনুভূতি। তাদেরও সুখ-দুঃখের চেতনা রয়েছে, রয়েছে হাসি-কান্না-আনন্দ-উল্লাসবোধ। জীবন প্রবাহের গতিধারায় আমরা সবাই সমান। জীবন-মৃত্যুর চক্রে কে গৃহকর্তা কে গৃহকর্মী ভেদাভেদ করে না। আমরা গৃহকর্মীদের ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ বিপরীত দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করি বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই, যা ইসলামের দৃষ্টিতে তো বটেই, সাধারণ মানবিক দৃষ্টিতেও গ্রহণযোগ্য নয়।

বাংলাদেশে কত গৃহকর্মী রয়েছে তার কোনো সঠিক পরিসংখ্যান নেই। তবে এ সংখ্যা প্রায় ২০ লাখের কাছাকাছি হবে বলে ধারণা করা হয়। ২০১৩ সালে প্রকাশিত আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা-আইএলওর এক প্রতিবেদন বলছে, সারা বিশ্বে গৃহকর্মীর সংখ্যা প্রায় প্রায় ৫৩ মিলিয়ন (পাঁচ কোটি ৩০ লাখ)। এর মধ্যে ৮৩ শতাংশই নারী। তবে প্রকৃত সংখ্যাটি আরও বেশি হতে পারে তাও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু ১৫ বছরের কম বয়সী শিশু গৃহকর্মীর সংখ্যা আইএলওর প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়নি। ইতোমধ্যে এ সংখ্যা নিশ্চয় কয়েক গুণ বেড়েছে।

গৃহকর্মীরাও মানুষ; এটি আমাদের স্বীকার করতে হবে। মানুষ হিসেবে স্রষ্টার কাছে সবাই সমান। সাদা-কালো, ধনী-গরিব, এর কোনো প্রকারভেদ আল্লাহ করেননি। আল্লাহর কাছে তাদের মর্যাদাই সবচেয়ে বেশি, যারা সৎকাজ করে ও ভালো কাজের আদেশ দেয়। তারা আমাদেরই পরিবারের অংশ। অথচ আমরা তাদের মর্যাদা দিতে চাই না। আমরা তাদের বুয়া বলে ডাকি। এটি আমাদের সমাজে একটি হীনবাচক শব্দ। অনেক পরিবারে তাদের খালা বলে ডাকা হয়। এটি মার্জিত এবং সামাজিকভাবে গ্রহণীয় একটি শব্দ। তাদের খালা বলে সম্বোধন করতে কোনো অসুবিধা নেই। বুয়া ডেকে তাদের মানসিকভাবে হেয় করার অধিকার কারও নেই। তারা অর্থের বিনিময়ে শ্রম দেন। এ অর্থের পরিমাণ তাদের শ্রমের তুলনায় অনেক কম। সুতরাং কোনো না কোনোভাবে তাদের মর্যাদা দিতে হবে, হয় আর্থিকভাবে নতুবা সামাজিকভাবে। গৃহকর্মী নির্যাতনকারীরা যতই প্রভাবশালী হোক না কেন, তারা যেন রেহাই না পান বিষয়টি রাষ্ট্রকে নিশ্চিত করতে হবে। সরকার গৃহকর্মী সুরক্ষা ও কল্যাণনীতি-২০১৫ ঘোষণা করেছে। কিন্তু এটি বাস্তবায়িত হয়নি। এটি কাগজে-কলমে সীমাবদ্ধ। নীতিমালা থাকার পরও যথাযথভাবে প্রয়োগ হচ্ছে না। ফলে এক দিকে যেমন তাদের কাজ পেশা হিসেবেস্বীকৃতি পাচ্ছে না, অপর দিকে তারা নানাভাবে নির্যাতিত, নিপীড়িত ও বঞ্চিত হচ্ছে। সুবিচার পাচ্ছেন না। ফলে কর্মস্থলে তাদের অমানবিক জীবন কাটাতে হচ্ছে।

গৃহকর্মীদের নিরাপত্তার স্বাথে গৃহকর্মী নিবন্ধন চালু করা প্রয়োজন। এটি করতে পারলে তাদের সংখ্যা, বয়স, ঠিকানা সবই জানা যাবে। তারা ছুটি পাচ্ছেন কি না, নিয়মিত বেতন পাচ্ছে কি না- তা-ও জানা যাবে। এ ছাড়াও নিবন্ধন করা হলে একজন গৃহকর্মী সুরক্ষা পাবেন। কোনো গৃহকর্তা অপরাধ করে থাকলে তা-ও দ্রুত শনাক্ত করা যাবে। সর্বোপরি আমাদের মানসিক দৃষ্টিভঙ্গি পরির্বতন করা জরুরি। আমরা যদি গৃহকর্মীদের সামাজিক মর্যাদায় অধিষ্ঠিত করতে পারি তাহলে আমাদের পরিবার ও সমাজ উপকৃত হবে। সুন্দর স্বাভাবিক গতিশীল একটি সমাজ রাষ্ট্রের প্রয়োজনে গৃহকর্মীদের মর্যাদা- আমাদের মর্যাদাকেই সমুন্নত করবে।

   

রিজিক বৃদ্ধির ৪ আমল



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
কোরআন-হাদিসে রিজিক বৃদ্ধির বিভিন্ন আমলের কথা বর্ণিত হয়েছে, ছবি : সংগৃহীত

কোরআন-হাদিসে রিজিক বৃদ্ধির বিভিন্ন আমলের কথা বর্ণিত হয়েছে, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

মুমিন মাত্রই বিশ্বাস করেন যে, তার আয়-উপার্জন, জীবন-মৃত্যু এবং সৌভাগ্য-দুর্ভাগ্য ইত্যাদি র্নিধারণ হয়ে যায়; যখন তিনি মায়ের উদরে থাকেন। আর এসব তিনি লাভ করেন তার জন্য বরাদ্দ উপায়-উপকরণগুলোর মাধ্যমে। তাই আমাদের কর্তব্য হলো- হাত গুটিয়ে বসে না থেকে এর জন্য র্নিধারিত উপায়-উপকরণ সংগ্রহে চেষ্টা করা। যেমন চাষাবাদ, ব্যবসায়-বাণিজ্য, শিল্প-চারু, চাকরি-বাকরি বা অন্য কিছু।

আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘তিনিই তো তোমাদের জন্য জমিনকে সুগম করে দিয়েছেন, কাজেই তোমরা এর পথে প্রান্তরে বিচরণ করো এবং তার রিজিক থেকে তোমরা আহার করো। আর তার নিকটই পুনরুত্থান।’ -সুরা আল মুলক : ১৫

কোরআন-হাদিসে রিজিক বৃদ্ধির বিভিন্ন আমল ও উপায়ের কথা বর্ণিত হয়েছে। সেখান থেকে ৪টি আমলের কথা উল্লেখ করা হলো-

তওবা-ইস্তেগফার : তওবা-ইস্তিগফার করার মাধ্যমে বান্দার রিজিক বাড়ে। আল্লাহতায়ালা পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেছেন, ‘আমি তাদের বলেছি, নিজ প্রতিপালকের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করো। নিশ্চয়ই তিনি অতিশয় ক্ষমাশীল। তিনি আকাশ থেকে তোমাদের ওপর প্রচুর বৃষ্টি বর্ষণ করবেন এবং তোমাদের ধনসম্পদ ও সন্তানসন্ততিতে উন্নতি দান করবেন এবং তোমাদের বাগবাগিচা এবং নদীনালা দান করবেন।’ -সুরা নুহ : ১০-১২

হাদিসে হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি লাগাতার তওবা-ইস্তেগফার করবে; আল্লাহতায়ালা সংকট থেকে উত্তরণের পথ বের করে দেবেন; সব দুশ্চিন্তা মিটিয়ে দেবেন এবং অকল্পনীয় উৎস থেকে রিজিকের ব্যবস্থা করে দেবেন।’ -সুনানে আবু দাউদ : ১৫১৮

পরহেজগারি অবলম্বন এবং আল্লার ওপর ভরসা : যেসব আমলে রিজিকে প্রবৃদ্ধি ঘটে, তার মধ্যে তাকওয়া-পরহেজগারি অবলম্বন এবং তাওয়াক্কুল বা আল্লাহর প্রতি ভরসা রাখা অন্যতম। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আর যে আল্লাহর তাকওয়া অর্জন করবে, আল্লাহ তার জন্য উত্তরণের পথ বের করে দেবেন এবং তিনি তাকে এমন উৎস থেকে রিজিক দান করবেন, যার কল্পনাও সে করতে পারবে না।’ -সুরা সাদ : ৩৫

হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যদি তোমরা আল্লাহর প্রতি যথার্থভাবে ভরসা রাখো। তিনি তোমাদের সেভাবে রিজিক দান করবেন, যেভাবে তিনি পাখিদের দান করে থাকেন। পাখিরা সকালে ক্ষুধার্ত অবস্থায় (খালি পেটে) বাসা থেকে বের হয় এবং সন্ধ্যায় উদর পূর্ণ করে বাসায় ফেরে।’ -জামে তিরমিজি : ২৩৪৪

সময়মতো নামাজ আদায় এবং ইবাদতের জন্য নিজেকে মুক্ত করা : সময়মতো দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করলে রিজিক বাড়ে। নামাজ আদায় করার ফাঁকে ফাঁকে কাজ ও ব্যবসা–বাণিজ্য করতে হবে; কাজ ও ব্যবসা–বাণিজ্য করার ফাঁকে ফাঁকে নামাজ নয়। একই সঙ্গে আল্লাহর ইবাদত পালনে নিজেকে ঝামেলামুক্ত করতে হবে। ইরশাদ হয়েছে, ‘আর আপনি পরিবার-পরিজনকে নামাজ আদায়ের আদেশ দিন এবং নিজেও তার ওপর অটল থাকুন। আমি আপনার কাছে কোনো রিজিক চাই না। আমিই আপনাকে রিজিক দিই। আর মুত্তাকিদের জন্যই শুভ পরিণাম।’ -সুরা ত্বহা : ১৩২

হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেন, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘হে আদম সন্তান! আমার ইবাদতের জন্য তুমি তোমার অন্তরকে খালি করো। আমি তোমার অন্তরকে অভাবমুক্ত হিসেবে পরিপূর্ণ করে দেব এবং তোমার দরিদ্র্যের পথ দূর করে দেব। আর যদি তা না করো, আমি তোমার হাত (দুনিয়ার) ব্যস্ততায় পূর্ণ করে দেবো এবং তোমার অভাব মেটাব না।’ -জামে তিরমিজি : ২৪৬৬

রিজিক অর্জনের চেষ্টায় থাকা : পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘অতঃপর নামাজ সমাপ্ত হলে তোমরা পৃথিবীতে (জমিনে) ছড়িয়ে পড়ো আর আল্লাহর অনুগ্রহ (রিজিক) সন্ধান করো এবং আল্লাহকে অধিক পরিমাণে স্মরণ করো; যাতে তোমরা সফলকাম হও।’ -সুরা জুমা : ১০

হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমাদের কেউ যদি রশি নিয়ে সকালবেলা পাহাড়ের দিকে বের হয়। এরপর লাকড়ি সংগ্রহ করে তা বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করে এবং দানও করে। মানুষের কাছে হাত পাতার চেয়ে তার জন্য এটা উত্তম।’ -সহিহ বোখারি : ১৪৮০

;

গরমে মুমিনের আমল



মুফতি উমর ফারুক আশিকী
গরমে পশুপাখির প্রতি সদয় আচরণ কাম্য, ছবি : সংগৃহীত

গরমে পশুপাখির প্রতি সদয় আচরণ কাম্য, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সাহাবি হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘জাহান্নাম তার রবের কাছে অভিযোগ করে বলে, হে রব! আমার এক অংশ অন্য অংশকে খেয়ে ফেলছে। আল্লাহতায়ালা তখন তাকে দুইটি নিশ্বাস ফেলার অনুমতি দেন। একটি নিশ্বাস শীতকালে আরেকটি গ্রীষ্মকালে। কাজেই তোমরা গরমের তীব্রতা এবং শীতের তীব্রতা পেয়ে থাকো।’ -সহিহ বোখারি : ৩২৬০

মুমিন বান্দারা দয়াময় আল্লাহর রহমতের প্রত্যাশী হয়ে গ্রীষ্মের এই গরম সময়ে অফুরন্ত সওয়াব লাভের জন্য বেশ কিছু আমল করতে পারেন। আশা করা যায়, মহান আল্লাহর দয়ায় পরিস্থিতি অনুকূলে আসবে- ইনশাআল্লাহ।

তওবা করা : মানুষের পাপের কারণে মানুষের ওপর নানা ধরনের বিপদাপদ আসে, তাই প্রতিকূল অবস্থাকে অনুকূলে আনতে মহান আল্লাহর কাছে তওবা করার কোনো বিকল্প নেই।

পবিত্র কোরআনে আল্লাহ নিজেই বলেছেন, ‘আর বলেছি, তোমাদের রবের কাছে ক্ষমা চাও; নিশ্চয়ই তিনি পরম ক্ষমাশীল। তিনি তোমাদের ওপর মুষলধারে বৃষ্টি বর্ষণ করবেন, আর তোমাদেরকে ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি দিয়ে সাহায্য করবেন এবং তোমাদের জন্য বাগ-বাগিচা দেবেন আর দেবেন নদী-নালা।’ -সুরা নুহ : ১০-১২

ইবাদতে গাফিলতি না করা : গরমের কারণে ইবাদত-বন্দেগিতে গাফিলতি না করা। কারণ জাহান্নামের আগুন দুনিয়ার গরমের চেয়ে বহুগুণে উত্তপ্ত। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন, ‘পেছনে থাকা লোকগুলো আল্লাহর রাসুলের বিপক্ষে বসে থাকতে পেরে খুশি হলো। আর তারা অপছন্দ করল তাদের মাল ও জান নিয়ে আল্লাহর রাস্তায় জেহাদ করতে এবং তারা বলল, ‘তোমরা গরমের মধ্যে বের হয়ো না।’ বলো, জাহান্নামের আগুন অধিকতর গরম, যদি তারা বুঝত।’ -সুরা তওবা : ৮১

পিপাসার্তকে পানি পান করানো : হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, হজরত সাদ ইবনে উবাদা (রা.) বলেন, (এক দিন) আমি (নবীজিকে) বললাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ! কোন সদকা উত্তম? তিনি বলেন, পানি পান করানো। -সুনানে নাসায়ি : ৩৬৬৫

চলমান গরমের সময় শহরেরে বিভিন্ন স্থানে পথচারীদের জন্য ঠাণ্ডা পানির ব্যবস্থা রাখা হয় বিভিন্ন অফিস, দাতব্য সংগঠন কিংবা ব্যক্তি উদ্যোগে। এটা অত্যন্ত ভালো কাজ, সওয়াবের কাজ।

কেউ পানি চাইলে তা দিতে অস্বীকৃতি জানাতে নিষেধ করেছেন নবী কারিম (সা.)। ইরশাদ হয়েছে, হজরত আয়েশা (রা.) বলেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ! এমন কী জিনিস আছে, যা কেউ চাইলে না দিয়ে তাকে বিদায় দেওয়াটা ঠিক নয়?

তিনি বলেন, পানি, লবণ ও আগুন। হজরত আয়েশা (রা.) বলেন, আমি বললাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ! এই পানি সম্পর্কে তো আমরা জানি, কিন্তু লবণ ও আগুনের ব্যাপারে কেন বাধা দেওয়া যাবে না? তিনি বলেন, হে হুমায়রা! যে ব্যক্তি আগুন দান করল, সে যেন ওই আগুন দিয়ে রান্না করা যাবতীয় খাদ্যই দান করল।
যে ব্যক্তি লবণ দান করল, ওই লবণে খাদ্য যতটা সুস্বাদু হলো তা সবই যেন সে দান করল। যে ব্যক্তি কোনো মুসলমানকে এমন স্থানে পানি পান করালো, যেখানে তা সহজলভ্য, সে যেন একটি গোলামকে দাসত্বমুক্ত করল এবং যে ব্যক্তি কোনো মুসলমানকে এমন স্থানে পানি পান করালো, যেখানে তা দুষ্প্রাপ্য, সে যেন তাকে জীবন দান করল। -সুনানে ইবনে মাজাহ : ২৪৭৪

অন্যের দিকে সাহায্যের হাত বাড়ানো : তীব্র গরমে অনেক সময় মানুষ দুর্বল হয়ে পড়ে। বয়োবৃদ্ধরা তাদের প্রয়োজনীয় কাজের জন্য বাইরে যেতে পারেন না, তখন তাদের সাহায্য করার মাধ্যমে সদকার সওয়াব মেলে।

হজরত আবু জার (রা.) বলেন, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, তোমার হাস্যোজ্জ্বল মুখ নিয়ে তোমার ভাইয়ের সামনে উপস্থিত হওয়া তোমার জন্য সদকাস্বরূপ। তোমার সৎকাজের আদেশ এবং তোমার অসৎ কাজ থেকে বিরত থাকার নির্দেশ তোমার জন্য সদকাস্বরূপ। পথহারা লোককে পথের সন্ধান দেওয়া তোমার জন্য সদকাস্বরূপ, স্বল্প দৃষ্টিসম্পন্ন লোককে সঠিক দৃষ্টি দেওয়া তোমার জন্য সদকাস্বরূপ। পথ থেকে পাথর, কাঁটা ও হাড় সরানো তোমার জন্য সদকাস্বরূপ। তোমার বালতি দিয়ে পানি তুলে তোমার ভাইয়ের বালতিতে ঢেলে দেওয়া তোমার জন্য সদকাস্বরূপ। -জামে তিরমিজি : ১৯৫৬

পশুপাখির প্রতি সদয় হওয়া : গরমে মানুষের পাশাপাশি পশুপাখিও কষ্টে পড়ে। তাই মানুষের উচিত তাদের পশুপাখির প্রতি সদয় হওয়া।

হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, এক ব্যভিচারিণীকে ক্ষমা করে দেওয়া হয়; সে একটি কুকুরের কাছ দিয়ে যাচ্ছিল। তখন সে দেখতে পেল, কুকুরটি একটি কূপের পাশে বসে হাঁপাচ্ছে। বর্ণনাকারী বলেন, পানির পিপাসা কুকুরটাকে মুমূর্ষ করে দিয়েছিল। তখন সেই নারী তার মোজা খুলে ওড়নার সঙ্গে বাঁধল। অতঃপর সে কূপ হতে পানি তুলল (এবং কুকুরটিকে পানি পান করালো), এ কারণে তাকে ক্ষমা করে দেওয়া হলো। -সহিহ বোখারি : ৩৩২১

গরমের কারণে দুনিয়ার এই হাহাকার পরিস্থিতি অনুকূলে আনতে, মহান রবের সন্তুষ্টি পেতে বর্ণিত আমলগুলো বেশি বেশি করা জরুরি।

 

;

আগামীতে হজ ব্যবস্থাপনা হবে বিশ্বের মধ্যে অন্যতম স্মার্ট: ধর্মমন্ত্রী



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ধর্মমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত রূপকল্প-২০২১ ও ২০৪১ অনুসারে উন্নত-সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার অংশ হিসেবে হজ ব্যবস্থাপনায় আধুনিক তথ্য-প্রযুক্তির সন্নিবেশ ঘটানো হয়েছে।

তিনি বলেন, হজ ব্যবস্থাপনাকে ডিজিটালাইজড করা হয়েছে। এ সংক্রান্ত যে পোর্টালটি রয়েছে সেখানে আমরা নতুন নতুন ফিচার যুক্ত করছি। আগামী দিনে বাংলাদেশের হজ ব্যবস্থাপনা হবে বিশ্বের মধ্যে অন্যতম স্মার্ট হজ ব্যবস্থাপনা।

বুধবার (২৪ এপ্রিল) সকালে ঢাকা হজ অফিসের সম্মেলন কক্ষে হজযাত্রী প্রশিক্ষণ ২০২৪ ’র উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ধর্মমন্ত্রী এ কথা বলেন।

ফরিদুল হক খান বলেন, আপনারা সকলেই যাতে সহী-শুদ্ধভাবে হজব্রত পালন করতে পারেন সেজন্যই মূলত আজকের এই প্রশিক্ষণ। আমরা প্রশিক্ষণের জন্য অত্যন্ত দক্ষ প্রশিক্ষক নির্বাচন করেছি। আপনারা যদি প্রশিক্ষণের প্রতি মনযোগী হতে পারেন তাহলে আপনারা হজের নিয়ম-কানুন, হুকুম-আহকাম, ধারাবাহিক আনুষ্ঠানিকতা- সবকিছু আয়ত্তে আনতে পারবেন।

তিনি বলেন, আমাদের দেশের বেশিরভাগ মানুষেরই প্রবণতা হলো জীবনের শেষ প্রান্তে এসে হজ পালন করা। হজ অনেক পরিশ্রমসাধ্য ইবাদত, এর জন্য শারীরিক সামর্থ্য থাকা বাঞ্চনীয়। অনেকেরই সেই শারীরিক সামর্থ্য থাকে না। যার কারণে তাদের পক্ষে হজের আনুষ্ঠানিকতা সম্পাদন করা অনেক কষ্টকর হয়ে যায়।

তিনি বলেন, অনেকেই দীর্ঘদিন ধরে জমানো সঞ্চয় দিয়েই হজব্রত পালন করতে যান। এদেশের অধিকাংশ মানুষেরই দ্বিতীয় বার হজ করার মতো আর্থিক সঙ্গতি থাকে না। সে কারণে আপনার পরিশ্রম ও অর্থ যেন বিফলে না যায় সেজন্য অবশ্য মহানবী হযরত মুহাম্মদ (স.)’র নির্দেশিত পথ অনুসরণ করে হজ সম্পাদন করতে হবে। সহী ও শুদ্ধভাবে হজব্রত পালন করতে হবে।

ফরিদুল হক খান বলেন, সৌদি আরবে আপনার পরিচয় শুধু একজন হজযাত্রী নয়, আপনার পরিচয়-আপনি একজন বাংলাদেশি। আপনার আচার-আচরণ, কথাবার্তা ও চালচলনের মাধ্যমেই বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি প্রকাশ পাবে।

তিনি সৌদি আরবের আইন-কানুন, নিয়ম-শৃঙ্খলা প্রতিপালনে কোনরূপ বিচ্যুতি না ঘটে সেদিকে যত্নবান থাকার আহ্বান জানান।

এছাড়া, কারো জন্য দেশের ভাবমূর্তি ও সম্মান যেন ক্ষুন্ন না হয় সেদিকে বিশেষভাবে সর্তক থাকার জন্য হজযাত্রীদেরকে অনুরোধ জানান তিনি।

ধর্মসচিব মু. আ. হামিদ জমাদ্দারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় অন্যদের মধ্যে হজ অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. মতিউল ইসলাম, যুগ্মসচিব ড. মো. মঞ্জরুল হক ও ঢাকা হজ অফিসের পরিচালক মুহম্মদ কামরুজ্জামান বক্তব্য রাখেন।

প্রশিক্ষণে সরকারি মাধ্যমে নিবন্ধিত ঢাকার হজযাত্রীরা অংশগ্রহণ করছেন।

;

সুষ্ঠু হজ ব্যবস্থাপনা নিয়ে আশঙ্কা এজেন্সি মালিকদের



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

এবারের হজ ব্যবস্থাপনায় বিশৃঙ্খলার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন হজ এজেন্সির মালিকেরা। তাই সুষ্ঠু হজ ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে দ্রুত সকল প্রতিবন্ধকতা নিরসনে প্রধানমন্ত্রীর সরাসরি হস্তক্ষেপ কামনা করেন এজেন্সি মালিকেরা।

বুধবার (২৪ এপ্রিল) সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান অপারেটিং হজ এজেন্সির মালিকরা।

সুষ্ঠু হজ ব্যবস্থাপনায় জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে বলে হাবিবুল্লাহ মুহাম্মদ কুতুবুদ্দীন লিখিত বক্তব্যে বলেন, ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কিছু ঊর্ধতন কর্মকর্তা এবং মক্কা হজ মিশনের কিছু কর্মকর্তাদের অবহেলা ও দায়িত্বহীনতার কারণে হজ ব্যবস্থাপনায় জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। এতে করে এবারের হজ ব্যবস্থাপনায় বিশৃঙ্খলার আশঙ্কা করছেন তারা।

তিনি আরও বলেন, গত ১৮ এপ্রিল ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের হজ ১ শাখা থেকে সৌদি সরকারের একটি চিঠির বরাতে জানানো হয়- আগামী ২৯ এপ্রিল হজ যাত্রীদের ভিসা ইস্যু বন্ধ হয়ে যাবে।

চিঠিতে আরও জানানো হয়, ২৯ এপ্রিলের মধ্যে আবশ্যিকভাবে হজযাত্রীদের ভিসা সম্পন্ন করতে হবে। এজেন্সীর অবহেলার কারণে হজযাত্রীদের হজে গমন অনিশ্চিত হলে সে এজেন্সীর বিরুদ্ধে হজ ও উমরাহ ব্যবস্থাপনা আইন ২০২১ অনুসারে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এর আগে, গত ১০ ফ্রেব্রুয়ারি ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের এক চিঠিতে জানানো হয়, সৌদি সরকারের হজ ও উমরা মন্ত্রণালয়ের আবাসন, ক্যাটারিং সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে সকল প্রকার অনলাইন চুক্তি (সার্ভিস কোম্পানি, পরিবহান, ইত্যাদি) সম্পন্ন করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। অথচ এখনো অনেক এজেন্সির ৮০ শতাংশ কার্যক্রম বাকি।

এমন অবস্থায় সুষ্ঠু হজ ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে এবং সকল প্রতিবন্ধকতা নিরসনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চেয়ে হজ এজেন্সি মালিকেরা অনুরোধ করেন।

এছাড়াও কিছু সুনির্দিষ্ট সুপারিশ করেন তারা। সেগুলো হলো- দ্রুত সময়ের মধ্যে সকল হাজির মিনার জোন নির্ধারণ করে ই হজ সিস্টেম আপডেট করতে হবে। ফাইনাল ফ্লাইট শিডিউল ঘোষণা ও সকল এজেন্সির হজযাত্রী অনুপাতে টিকেট নিশ্চিত করতে হবে। মোয়াজ্জেমদের জন্য বারকোড ভিসার বিষয়টি নিশ্চিত করা। যাদের সৌদি একাউন্টে এখনো রিয়াল জমা হয়নি তাদের একাউন্টে দ্রুত রিয়াল জমার ব্যবস্থা করা।

তারা বলেন, বর্তমানে সৌদি একাউন্টে টাকা ঢুকতে দেড় মাস সময় লাগে। যদি কারো একাউন্টে ১ পয়সাও কম থাকে তাহলে তার হজে যাওয়া সম্ভব হবে না। এবং বর্তমানে সরকারের বিভিন্ন চার্জ একবারে হিসাব করে পাঠানো অনেকটা অসম্ভব। এছাড়া যাদের এখনো মেননজাইটিস ও ইনফ্লুয়েঞ্জা টিকা হয়নি তাদের জন্য দ্রুত টিকার ব্যবস্থা করতে হবে।

এছাড়াও ভিসা ইস্যু কার্যক্রম অন্যান্য বছরের মতো সর্বশেষ ফ্লাইটের এক সপ্তাহ পূর্ব পর্যন্ত চালু রাখার দাবি জানান তারা। আরও বলেন, অতীতে দেখা গেছে অনেকে হজ করতে যাওয়ার ইচ্ছে করলেও সকল প্রস্তুতির পর মারা গেছেন। আবার কেউ মারাত্মক রোগাক্রান্ত হয়েছেন। এছাড়াও দুর্ঘটনা ইত্যাদি কারণে যেতে পারেন না। তাই সেই হজযাত্রীর পরিবর্তে তার পরিবারের অন্য কোন সদস্যদের যাওয়ার ব্যবস্থা করা যেতো তাহলে জমাকৃত টাকা গচ্চা যেতো না। বর্তমানে যে অবস্থা আছে তাতে ভিসা ইস্যু এতো আগে বন্ধ হয়ে গেলে অহেতুক প্রচুর টাকা সৌদি আরবে চলে যাবে। এতে দেশের ক্ষতি হবে। যদি বিষয়টি সৌদি সরকারকে বুঝাতে আমরা সক্ষম হই তাহলে আমাদের বিশ্বাস সৌদি সরকার বাস্তবতা বুঝে অবশ্যই বিবেচনা করবেন।

;