অহঙ্কারমুক্ত জীবন, জান্নাত লাভের কারণ



মো. আকতার হোসেন, অতিথি লেখক, ইসলাম
নিশ্চয়ই আল্লাহ এমন লোককে পছন্দ করেন না, যে বড় হওয়ার গৌরব করে ও অহঙ্কার করে

নিশ্চয়ই আল্লাহ এমন লোককে পছন্দ করেন না, যে বড় হওয়ার গৌরব করে ও অহঙ্কার করে

  • Font increase
  • Font Decrease

মানুষ যখন নিজকে অন্যকোনো মানুষ থেকে উন্নত, উত্তম, ক্ষমতাধর কিংবা বড় মনে করে অথবা কাউকে কোনোভাবে নিজের চেয়ে হেয় মনে করে তখন তার এই মানসিকতাকে অহঙ্কার বলে। এটি একটি মানসিক অনুভূতি, তবে কাজে-কর্মে এর প্রকাশ ঘটে। হাদিসের ভাষ্য অনুযায়ী, অহঙ্কার একমাত্র আল্লাহর অধিকার। কোনো মানুষ যখন গর্ব অহঙ্কার করে তখন মূলত সে আল্লাহর অধিকারে হস্তক্ষেপ করে। কারণ মানুষ আল্লাহ প্রদত্ত নেয়ামত নিয়েই অহঙ্কারে লিপ্ত হয়।

আল্লাহতায়ালা পৃথিবীতে সবাইকে তার নেয়ামত ধন-সম্পদ, ক্ষমতা, মেধা ও যোগ্যতা সমানভাবে প্রদান করেন না। তার এই নেয়ামত কাউকে দেন আবার কাউকে দেন না, কারও ক্ষেত্রে কমবেশি করেন। মানুষের উচিত হলো, আল্লাহ প্রদত্ত নেয়ামতের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা। মানুষ যখন আল্লাহর নেয়ামতের কথা ভুলে এটাকে নিজের সম্পদ কিংবা উপার্জন মনে করে, তখনই অহঙ্কারের সূত্রপাত হয়। অহঙ্কারের কারণে আল্লাহর সঙ্গে বান্দার সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে যায়।

কোরআন ও হাদিসে অহঙ্কারী ব্যক্তির পরিণতি ও শাস্তি সম্পর্কে বিশদ আলোকপাত করা হয়েছে। আল্লাহ অহঙ্কারীকে ভালোবাসেন না ও পছন্দ করেন না। কোরআনে কারিমের বিভিন্ন স্থানে আল্লাহর ঘোষণা-

‘নিশ্চয়ই আল্লাহ এমন লোককে পছন্দ করেন না, যে বড় হওয়ার গৌরব করে ও অহঙ্কার করে।’ –সুরা আন নিসা : ৩৬

‘মানুষের দিক থেকে মুখ ঘুরিয়ে রেখে কথা বলো না এবং পৃথিবীতে গর্বের সঙ্গে চলবে না। নিশ্চয়ই আল্লাহ কোনো বড়াইকারী ও অহঙ্কারীকে পছন্দ করেন না।’ -সুরা লুকমান : ১৮

‘যাতে তোমাদের যতটুকুই ক্ষতি হয়ে গেছে সে জন্য তোমরা হতাশ না হও এবং আল্লাহ তোমাদেরকে যা কিছু দিয়েছেন তাতে তোমরা খুশিতে আত্মহারা না হও। আল্লাহ এমন লোকদেরকে পছন্দ করেন না, যারা নিজেদেরকে বড় মনে করে এবং অহঙ্কার করে।’ –সুরা হাদিদ : ২৩

অহঙ্কারী ব্যক্তির সর্বশেষ পরিণতি হলো- জাহান্নাম। কেননা সে অহঙ্কারের মাধ্যমে আল্লাহর গোলামি হতে নিজেকে মুক্ত করে বেপরোয়া হয়ে যায়। নিজকে অনেক বড় ও ক্ষমতাবান এবং শক্তিশালী মনে করে এবং মানুষকে অবজ্ঞা ও তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য মনে করে।

এ প্রসঙ্গে হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) হাদিসে ইরশাদ করেন, ‘যার অন্তরে অণু পরিমাণ অহঙ্কার রয়েছে সে জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না। এক ব্যক্তি বললেন, কোনো ব্যক্তি পছন্দ করে তার কাপড় সুন্দর হোক, তার জুতা সুন্দর হোক (তাও কি অহঙ্কার?) হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, নিশ্চয়ই আল্লাহতায়ালা সুন্দর এবং তিনি সৌন্দর্যকে পছন্দ করেন। প্রকৃতপক্ষে অহঙ্কার হলো- আল্লাহর গোলামি থেকে বেপরোয়া হওয়া এবং মানুষকে অবজ্ঞা করা।’ –সহিহ মুসলিম

শুধু পরকাল নয়, মহান আল্লাহ অহঙ্কারের শাস্তি দুনিয়াতেও প্রদান করে থাকেন। ইতিহাসে দেখা যায়, পূর্বের অনেক জাতিকে ধন-সম্পদ ও শাসনক্ষমতা নিয়ে অহঙ্কার ও বাড়াবাড়ির কারণে আল্লাহ দুনিয়াতেই দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করেছেন।

ইরশাদ হয়েছে, ‘এমন কত জনপদ আমি ধ্বংস করে দিয়েছি, সেখানকার লোকেরা ধন-সম্পদের অহঙ্কার করত। এই যে তাদের বাড়িঘর পড়ে আছে, যেখানে তাদের পর কম লোকই বসবাস করেছে। শেষ পর্যন্ত আমি (এ সবেরই) ওয়ারিশ হয়েছি।’ –সুরা কাসাস : ৫৮

আদ, সামুদ, মাদিয়ান ও লুত (আ.)-এর সম্প্রদায়ের ধ্বংসের ইতিহাস কোরআন-হাদিসে বর্ণিত হয়েছে। এ ছাড়া পূর্ববর্তী আরও অনেক শাসক ও ক্ষমতাধরদের অহঙ্কার প্রদর্শন করায় আল্লাহ তাদের সমুচিত শিক্ষা দিয়েছেন এবং তাদের করুণ পরিণতির ইতিহাস বিশ্ববাসীর জন্য দৃষ্টান্ত হয়ে আছে। ফেরাউন, হামান, নমরুদের মতো শাসকদের ইতিহাস আজো মানুষ ঘৃণাভরে স্মরণ করে।

প্রকৃত মুমিন ও আল্লাহর দ্বীনের পথের দায়ীরা (ইসলামের পথে আহ্বানকারী) যেকোনো অবস্থায় গর্ব ও অহঙ্কার পরিত্যাগ করবে। তাদের কথা, কাজ ও আচরণে অহঙ্কার নয় বিনয় প্রকাশ পাবে। কেননা মুমিনের ভূষণ আর অহঙ্কার খোদাদ্রোহী ও আখেরাতে অবিশ্বাসীদের ভূষণ।

মুমিনদের উদ্দেশে মহান আল্লাহ বলেন, ‘মাটির বুকে গর্বের সঙ্গে চলবে না। নিশ্চয়ই তুমি কখনও পদচাপে জমিনকে বিদীর্ণ করতে পারবে না, আর পাহাড়ের সমান উঁচু হতেও পারবে না।’ –সুরা বনি ইসরাইল : ৩৭

হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, আল্লাহতায়ালা আমার কাছে এই মর্মে অহি প্রেরণ করেছেন, তোমরা সকলে বিনয়ী হও, যাতে কেউ কারোর সঙ্গে বাড়াবাড়ি করতে না পারে এবং কেউ কারোর সঙ্গে গর্ব করতে না পারে। -সুনানে আবু দাউদ

অনেক মানুষ আছে, যারা দামি ও মূল্যবান পোশাক পরিধান করে অহঙ্কার প্রকাশ করে। তাদের ব্যাপারে হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি অহঙ্কারবশত স্বীয় বস্ত্র মাটির ওপর দিয়ে টেনে চলে, কেয়ামতের দিন আল্লাহ তার দিকে তাকাবেন না। তখন হজরত আবু বকর (রা.) বলেন, আমার লুঙ্গি অসতর্ক অবস্থায় ঢিলা হয়ে পায়ের গিরার নিচে চলে যায়, যদি না আমি তা ভালোভাবে বেঁধে রাখি। অতঃপর রাসুল (সা.) বলেন, তুমি তা অহঙ্কারবশত কর না। -সহিহ বোখারি

অহঙ্কার নেক আমল নষ্ট করে দেয়। অহঙ্কার থেকে বাঁচতে আল্লাহ প্রদত্ত ধন-সম্পদ, জ্ঞান যোগ্যতাকে আল্লাহ প্রদত্ত দয়া, রহমত ও নেয়ামত ভেবে এসবের শোকরিয়া আদায় করতে হবে। আর যে ব্যক্তি এসব নেয়ামত পাননি তার জন্য মহান রবের দরবারে দোয়া করতে হবে। যাতে আল্লাহ তাকেও এসব নেয়ামত দান করেন। আর এই মানসিকতা পোষণ করতে হবে, আমি যে ইবাদত-বন্দেগি করছি তা আল্লাহ প্রদত্ত নেয়ামতের তুলনায় অতি নগণ্য। কাজেই আমার গর্ব করার কিছুই নেই। আল্লাহ প্রদত্ত এ নেয়ামত যেকোনো মুহূর্তে ছিনিয়ে নিতে পারেন, তিনি একজন বাদশাকে স্বল্প সময়ের ব্যবধানে ফকিরে পরিণত করতে পারেন। আমাদের সব নেয়ামত আল্লাহর দান। আর এ নিয়ে গর্ব করার অর্থ, দানকারীর দানের অবজ্ঞা করা। অতএব আমাদের সর্বদা সাবধান থাকতে হবে যাতে কখনোই সম্পদ, শক্তি, ক্ষমতা, শিক্ষা, সৌন্দর্য, পেশা বা অন্যকোনো নেয়ামতের কারণে অহঙ্কার না করি এবং হেয়প্রতিপন্ন না করি।

   

হজযাত্রীর কাছে নুসুক কার্ড না পেলেই আটক



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
নুসুক কার্ড, ছবি: সংগৃহীত

নুসুক কার্ড, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

চলতি বছর নুসুক কার্ড ছাড়া কেউ হজ করতে পারবেন না। সৌদি সরকারের হজ ও উমরা মন্ত্রণালয়ের অনুমতি ছাড়া হজযাত্রী প্রতিরোধ করতে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

শনিবার (২৫ মে) ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত একটি চিঠি হজ এজেন্সির মালিকদের কাছে পাঠানো হয়েছে।

চিঠিতে বলা হয়েছে, জেদ্দা হজ অফিস থেকে এ সংক্রান্ত প্রাপ্ত পত্রের ছায়ালিপি পাওয়ার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশ দিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।

জেদ্দা হজ অফিস থেকে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, মাশায়ের (মিনা, আরাফাত ও মুজদালিফ) এলাকাসহ মক্কা নগরীর গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে মক্কায় প্রবেশের তাসরিহ বা নুসুক কার্ড ছাড়া কাউকে পাওয়া গেলে প্রথমবার ১০ হাজার সৌদি রিয়াল অর্থদণ্ড এবং পুনরায় অপরাধে দ্বিগুণ জরিমানা ও কারাদণ্ডের বিধান করা হয়েছে। হজের অনুমতি নেই, এমন কোনো ব্যক্তিকে পরিবহন করা হলে পরিবহনকারীকে ছয় মাসের কারাদণ্ড এবং ৫০ হাজার সৌদি রিয়াল জরিমানা করা হবে।

এ ছাড়া মিনা ও আরাফাতে হাজির তাঁবুতে নুসুক কার্ড ছাড়া কাউকে পাওয়া গেলে তাকে অর্থদণ্ড আরোপ এবং দেশে প্রত্যাবর্তনের মতো শাস্তি প্রদানের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এরূপ কর্মের সহযোগিতাকারীকেও শাস্তির আওতায় নিয়ে আসা হবে।

হজের অনুমতি নেই কিংবা নুসুক কার্ডবিহীন কাউকে মাশায়েরে পরিবহন করলে গাড়িচালকসহ উভয়েই শাস্তির আওতায় আসবেন। ই-হজ সিস্টেমে ভাড়াকৃত বাড়ি বা হোটেলে হাজি আবাসন না করে অন্যত্র হাজি আবাসন করা হলে অথবা সিস্টেমে এক হোটেল এন্ট্রি দিয়ে অন্য হোটেলে হাজি ওঠানো হলে এজেন্সি বা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে শাস্তির আওতায় নিয়ে আসা হবে।

ধর্ম মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, ডিজিটাল এই নুসুক কার্ডে সংশ্লিষ্ট হজযাত্রীর প্রয়োজনীয় সব তথ্য মজুদ থাকবে এবং হজের জন্য পবিত্র কাবার প্রাঙ্গণে প্রবেশ করতে চাইলে এই কার্ড অবশ্যই প্রদর্শন করতে হবে। হজের অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা পালনেও বিভিন্ন জায়গায় কার্ডটি দেখাতে হবে।

;

মক্কায় প্রতিবন্ধীদের জন্য বিশেষ রাস্তা ও ইবাদতের স্থান



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
প্রতিবন্ধীদের জন্য নির্ধারিত মসজিদে হারামের ৯১ নম্বর গেট, ছবি: সংগৃহীত

প্রতিবন্ধীদের জন্য নির্ধারিত মসজিদে হারামের ৯১ নম্বর গেট, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

আগে থেকে ব্যবস্থা থাকলেও চলতি হজ মৌসুমে মক্কার মসজিদে হারামে অসুস্থ, বয়স্ক ও বিশেষভাবে অক্ষম প্রতিবন্ধীদের জন্য বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করেছে হারামাইন পরিচালনা পরিষদ। তাদের দেখাশোনা, রাস্তা দেখানো ও যেকোনো ধরনের সাহায্যের জন্য বিশেষভাবে প্রশিক্ষিত ২ শতাধিক গাইড নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

এবার মসজিদে হারামের কয়েকটি স্থান বিভিন্ন শ্রেণির প্রতিবন্ধীদের জন্য সংরক্ষিত করা হয়েছে, যাতে তাদের ইবাদত-বন্দেগি ও চলাচলে কোনো অসুবিধায় পড়তে না হয়।

সৌদি আরবের সরকারি বার্তা সংস্থা এসপিএ জানিয়েছে, মসজিদে হারামে চলাচলে অক্ষম প্রতিবন্ধীদের হুইলচেয়ারের জন্য বিশেষ পথ তৈরি করা হয়েছে। সেই সঙ্গে যেখানে তাদের বসার স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে, সেখানে পানিসহ অন্যান্য সুবিধা দেওয়া হয়েছে।

পুরুষ ও নারী প্রতিবন্ধীদের জন্য মসজিদে হারামে পৃথক তিনটি স্থান সংরক্ষিত রয়েছে, যা প্রধান ফটকের কাছে। ফলে তাদের যাতায়াতের ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা হবে না। জায়গাগুলো হলো- মসজিদে হারামের ৯১ নম্বর গেট এবং আল শাবাকা ব্রিজের কাছে ৬৮ নম্বর গেট (নিচতলায়)।

মসজিদে হারামে প্রতিবন্ধীদের চলাচলে রয়েছে আলাদা ব্যবস্থা, ছবি: সংগৃহীত

আর নারীদের হুইলচেয়ার ব্যবহার করার জন্য বাদশাহ ফাহাদ এক্সটেনশনের গেট নম্বর ৮৮ এবং নিচতলার গেট নম্বর ৬৫ ছাড়াও মাতাফের (কাবা চত্বর) সামনে নামাজের জন্য একটি স্থান (মুসাল্লা নম্বর ১৫) সংরক্ষিত ঘোষণা করা হয়েছে, যেখানে হুইলচেয়ারসহ নারীরা আরামে বসতে পারেন৷

এ ছাড়া বয়স্কদের জন্য ডিজিটাল কোরআন এবং অন্ধদের জন্য ব্রেইল সংস্করণ ছাড়াও শ্রবণ ও বাক প্রতিবন্ধীদের জন্য সাংকেতিক ভাষায় জুমার খুতবার শোনার বিশেষ ব্যবস্থা করা হয়েছে।

;

সোমবার ছায়াশূন্য কাবার দেখা মিলবে



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
সোমবার ছায়াশূন্য কাবার দেখা মিলবে, ছবি: সংগৃহীত

সোমবার ছায়াশূন্য কাবার দেখা মিলবে, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সোমবার পবিত্র কাবা ঘরের ঠিক ওপরে উঠে আসবে সূর্য। ওই সময়ে ছায়াশূন্য পবিত্র কাবার দেখা মিলবে।

জ্যোতির্বিদরা জানিয়েছেন, সোমবার (২৭ মে) স্থানীয় সময় দুপুর ১২টা ১৮ মিনিটে পবিত্র কাবার ঘরের ঠিক ওপর সূর্য থাকবে। বছরের দুইবার এমন ঘটনা ঘটলেও চলতি বছরে প্রথমবারের মতো এ ঘটনা ঘটতে যাচ্ছে।

আল আরাবিয়া নিউজকে জেদ্দা অ্যাস্ট্রোনোমিক্যাল সোসাইটির প্রধান মাজেদ আবু জাহরা জানিয়েছেন, সোমবার দুপুর নাগাদ মক্কার পবিত্র কাবা ঘরের সঙ্গে সূর্য একই লাইনে অবস্থান করবে। এ সময় সূর্যের কেন্দ্রবিন্দুটি কাবার ঠিক ওপরে উঠে আসবে।

জ্যোতির্বিদরা জানিয়েছেন, সূর্যের এই অবস্থানকে ‘ছায়াশূন্য’ (জিরো শ্যাডো) অবস্থা বলেই চিহ্নিত করেন মহাকাশ বিজ্ঞানীরা। বছরে অন্তত দুইবার পবিত্র মক্কা নগরীর ক্ষেত্রে এই ঘটনা ঘটে। প্রতিবছর ২৭ বা ২৮ মে ছাড়াও ১৫ বা ১৬ জুলাই তারিখে একই ঘটনা ঘটে থাকে। পবিত্র কাবাঘরটি বিষুবরেখা ও কর্কটক্রান্তির মাঝে অবস্থিত হওয়ার কারণেই এমনটা ঘটে।

তারা আরও জানান, মক্কায় সোমবার ভোর ৫টা ৩৮ মিনিটে সূর্যোদয় হবে। উত্তরপূর্ব দিকটি থেকে সূর্য ধীরে ধীরে ওপরে উঠতে শুরু করবে। সে কারণে সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য হলেও পবিত্র এই মসজিদ ঘরের কোনো দিকে কোনো ছায়া থাকবে না।

পৃথিবীর অক্ষরেখায় সূর্য ২৩.৫ ডিগ্রি কৌণিক অবস্থান নিয়ে বিষুব রেখার উত্তর ও দক্ষিণ দিকে ঘুরতে থাকে।

এভাবে একবার উত্তর গোলার্ধে একবার দক্ষিণ গোলার্ধে যায়। আর এই আসা যাওয়ার পথে বছরে দুইবার সরাসরি ওপরে অবস্থান নিয়ে পবিত্র কাবাকে ছায়াশূন্য করে দেয়।

জ্যোতির্বিদ আবু জাহরা আরও জানান, কাঠের কোনো কাঠি মাটিতে লম্বালম্বী করে মানুষ কাবার সঠিক দিক নির্ধারণ করতে পারবে। এর মাধ্যমে কিবলার দিকটি কাঠির ছায়ার ঠিক বিপরীতে দেখতে পাবে।

;

হজযাত্রীদের জন্য ২ শতাধিক বিশেষ গাইড, সাড়ে ৩ হাজার বাস



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
শায়খ সুদাইস এক হজযাত্রীকে উপহার দিচ্ছেন, ছবি: সংগৃহীত

শায়খ সুদাইস এক হজযাত্রীকে উপহার দিচ্ছেন, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

আসন্ন হজে মসজিদ হারাম এবং মসজিদে নববিতে আগত বয়স্ক, প্রতিবন্ধী এবং অসুস্থদের বিশেষ যত্ন ও সেবার লক্ষে বিশেষ দল নিয়োগ করা হয়েছে।

হারামাইন প্রেসিডেন্সির উদ্যোগে চলতি হজ মৌসুমে ‘ইনসানিয়্যুন’ মানবিক উদ্যোগ শিরোনামে এই কর্মসূচি পারিচালিত হবে। এর মাধ্যমে হজযাত্রীদের অভিজ্ঞতা সমৃদ্ধ হবে। যারা অসুস্থ, বয়স্ক এবং প্রতিবন্ধী- তারা নির্বিঘ্নে ও আরামের সঙ্গে গ্র্যান্ড মসজিদ এবং মসজিদে নববি পরিদর্শন, জিয়ারত ও ইবাদত-বন্দেগি পালন করতে পারবেন।

মসজিদে হারাম এবং নববির ধর্ম বিষয়ক প্রধান শায়খ আবদুর রহমান আস-সুদাইস এই কর্মসূচি উদ্বোধন করে বলেন, ‘মানবতাবাদী উদ্যোগের লক্ষ্য হলো- আচরণ উন্নত করা এবং প্রেসিডেন্সি কর্তৃক প্রদত্ত পরিষেবাগুলোকে বিভিন্ন সেক্টর এবং বিভাগজুড়ে বিস্তৃতি করা। আমরা সব ধরনের হজযাত্রীদের জন্য একটি উপযুক্ত উপাসনার পরিবেশ উপহার দিতে চাই। আমাদের উদ্দেশ্য, মুসলমানদের উদার মনোভাব বাড়ানো এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে সেবার মান উন্নত করা।’

এই উদ্যোগের জন্য বিশেষভাবে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ২ শ গাইড নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। যারা এই শ্রেণির হজযাত্রীদের ধর্মীয় চাহিদা মেটাতে প্রযুক্তি, মেধা ব্যবহার করবে। তারা অসুস্থ, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধী হজযাত্রীদের ধর্মীয়ভাবে সচেতনতা বৃদ্ধি ও দিকনির্দেশনার জন্য নিবিঢ়ভাবে কাজ করবে।

এ সময় তিনি বলেন, হজপালনকারীদের সেবা দিতে ধর্মীয় বিষয়ক সংস্থার পক্ষ থেকে কোনো অবহেলা সহ্য করা হবে না।

তিনি আরও বলেন, হারামাইনের ধর্মবিষয়ক অধিদপ্তর হজ মৌসুমে বিভিন্ন দেশ থেকে আগত হজযাত্রীদের জন্য বিভিন্ন ভাষায় বিষয়ভিত্তিক ধর্মীয় পুস্তিকা তৈরি করেছে, যা হজযাত্রীদের দেওয়া হবে।

মিনা-আরাফাতের জন্য সাড়ে ৩ হাজার বাস : সৌদি আরবে হজ ব্যবস্থাপনায় সেন্ট্রাল ট্রান্সপোর্ট অথরিটি চলতি হজের পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে। ঘোষণায় বলা হয়, হাজিদের পরিবহনের জন্য ৩ হাজার ৫০০টি বাস প্রস্তুত। এসব বাস চলতি হজ মৌসুমে মসজিদে হারামের চারপাশে অবস্থিত ৯টি স্টেশন থেকে চলাচল করবে। বাসগুলো হজযাত্রীদের মিনা ও আরাফাতে আনা-নেওয়া করবে। এ জন্য ১২টি রুট নির্ধারণ করা হয়েছে।

;