কুর্দিস্তানের হিজাব উৎসবে হাজার হাজার নারী

  • ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

হিজাব উৎসব, ছবি : সংগৃহীত

হিজাব উৎসব, ছবি : সংগৃহীত

ইরাকের কুর্দিস্তানে বর্ণাঢ্য হিজাব উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে। সম্প্রতি রাজধানী শহর ইরবিলে ‘গোল্ডেন ক্রাউন ফেস্টিভাল’ নামের উৎসবটি অনুষ্ঠিত হয়। এতে তিন হাজারের বেশি মুসলিম তরুণী হিজাব পরেন। এ সময় উৎসবমুখর পরিবেশে তাদের মাথায় সোনালি মুকুট পরানো হয়।

জানা যায়, প্রতিবছর তরুণীদের হিজাব পরা উপলক্ষে বর্ণাঢ্য এই উৎসবের আয়োজন করা হয়। টানা দশমবারের মতো গোল্ডেন ক্রাউন ফেস্টিভাল নামের এই উৎসবের আয়োজন করে কুর্দিস্তান স্টুডেন্টস ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (কেএসডিও)।

বিজ্ঞাপন

অনুষ্ঠানের আয়োজক কেএসডিও এক বিবৃতিতে জানায়, গোল্ডেন ক্রাউন ফেস্টিভাল প্রতিবছর অনুষ্ঠিত হয়। মুসলিম নারীর হিজাব যে তার জন্য মুকুটের সমতূল্য এ বিশ্বাস থেকেই বিশাল এই আয়োজন করা হয়।

উৎসবমুখর পরিবেশে তরুণীরা এ আয়োজনে অংশ নেন। এখানে হিজাব পরতে শুরু করেন কুর্দিস্তানসহ ইরাকের বিভিন্ন অঞ্চলের মুসলিম তরুণীরা। হিজাবি তরুণীদের স্বাগত জানানো এবং সবার মধ্যে হিজাবের গ্রহণযোগ্যতা বাড়ানো এ আয়োজনের মূল লক্ষ্য।

বিজ্ঞাপন

হিজাব আরবি শব্দ। এর অর্থ আবরণ। যে অতিরিক্ত বড় কাপড় দিয়ে দেহ আচ্ছাদিত করা হয়। মুসলিম নারীদের জন্য শরিয়তসম্মত উপায়ে হিজাব পরা আবশ্যক। মহান আল্লাহ বলেন, ‘হে নবী, আপনি আপনার স্ত্রীদের, কন্যাদের ও মুমিন নারীদের বলুন, তারা যেন তাদের চাদরের কিছু অংশ নিজেদের ওপর টেনে দেন। এতে তাদের চেনা সহজ হবে। ফলে তাদের উত্ত্যক্ত করা হবে না। আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।’ -সুরা আহজাব : ৫৯

অন্যত্র ইরশাদ হয়েছে, ‘আর মুমিন নারীদের বলে দিন যেন তারা তাদের দৃষ্টি সংযত রাখে...আর যা সাধারণত প্রকাশ পায়, তা ছাড়া তারা তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ করবে না।’ -সুরা নুর : ৩১

মুসলিম নারীরা হিজাব পরিধান করেন। তবে কোনো কোনো দেশে তারা বাঁধার সম্মুখীনও হন। তাই হিজাবভীতির বিরুদ্ধে সংহতি জানাতে ও হিজাবের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ তৈরি করতে প্রতিবছর ১ ফেব্রুয়ারি বিশ্বে হিজাব দিবস পালিত হয়। এবার বিশ্বের ১৫০টির বেশি দেশে তা উদযাপিত হয়েছে।

দিবসটি উদযাপনকারী সংস্থা ওয়ার্ল্ড হিজাব ডে জানিয়েছে, ‘হিজাব দিবসের লক্ষ্যের মধ্যে রয়েছে, পারষ্পরিক বোঝাপড়া, সহনশীলতা ও সংহতি বৃদ্ধির মাধ্যমে মুসলিম নারীদের ধর্মীয় অনুশীলন সম্পর্কে ধারণা তৈরি করা। পোশাক ও অভিব্যক্তি সম্পর্কিত ব্যক্তিগত পছন্দের বৈচিত্র্য সম্পর্কে ধর্মীয় স্বাধীনতা রক্ষা ও সচেতনতা প্রচার করতে দিবসটি একটি প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করে।’

২০১৩ সালের ১ ফেব্রুয়ারি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ‘বিশ্ব হিজাব দিবস’ পালনের উদ্যোগ নেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত নিউ ইয়র্কের বাসিন্দা নাজমা খান। ১১ বছর বয়সে বাবা-মায়ের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান। বর্তমানে তিনি নিউ ইয়র্কের ব্রঙ্কসে বসবাস করছেন। সেখানে গিয়ে হিজাব পরা শুরু করেন তিনি।

কিন্তু হিজাব পরার পর থেকে নানা ধরনের অসহিষ্ণু আচরণের মুখোমুখি হন তিনি। তখন থেকে হিজাবের প্রতি ইতিবাচক ধারণা তৈরি করতে দিবসটি উদযাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। দ্য ওয়ার্ল্ড হিজাব ডে (ডাব্লিওএইচডি)-এর উদ্যোগে দিবসটির কার্যক্রম পরিচালিত হয়।

শরিয়ত অনুসারে মুসলিম নারীদের জন্য নির্দিষ্ট অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ঢেকে রাখার বাধ্য-বাধ্যকতা রয়েছে। বিশ্বের অনেক দেশে নারীদের হিজাব পরা নিয়ে বাধা-বিপত্তি থাকলেও তা অনেক নারীর জন্য আশা ও অগ্রগতির প্রতীক।