তারুণ্যের শক্তিই একটি জাতির অগ্রগতির চালিকাশক্তি। তরুণেরা তাদের স্বপ্ন, উদ্যম, এবং সৃজনশীলতার মাধ্যমে সমাজকে বদলে দিতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন।
মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় রাজধানীর বাড্ডায় ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়োজনে ইউটিইউ ইসলামিক সেমিনার-২০২৫ এ প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
বিজ্ঞাপন
ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, তরুণদের মধ্যে রয়েছে নতুন কিছু শেখার আকাঙ্ক্ষা, প্রচণ্ড কর্মস্পৃহা এবং নতুন ধারণা বাস্তবায়নের সাহস। শিক্ষা, প্রযুক্তি ও মানসিক বিকাশের মাধ্যমে তরুণেরা যেকোনো জাতির জন্য বিশাল সম্পদ হয়ে উঠতে পারে। তাদের ঐক্য, ইতিবাচক চিন্তা-চেতনা ও কাজের প্রতি নিষ্ঠা একটি সমাজকে উন্নতির শিখরে পৌঁছে দিতে পারে। এজন্য তাদেরকে সঠিক দিকনির্দেশনা ও সুযোগ দেওয়া প্রয়োজন।
ধর্ম উপদেষ্টা আরো বলেন, তারুণ্যের শক্তি দেশের উন্নয়নের চাবিকাঠি। তরুণদের দায়িত্ব শুধু নিজেদের উন্নতিই নয় বরং সমাজ, দেশ ও বিশ্বব্যাপী পরিবর্তনের অগ্রদূত হওয়া। তাদের উদ্যম ও কর্মস্পৃহা জাতির ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করে। এ কারণে তারুণ্যের শক্তিকে সঠিকভাবে কাজে লাগাতে হবে।
বিজ্ঞাপন
ড. খালিদ বলেন, মহানবী হজরত মুহাম্মদ (স.)-এর ২৩ বছরের নবুওয়তের জীবন মানবজাতির হেদায়েতের উৎস। তার জীবনাদর্শকে আমাদের মেনে চলতে হবে। উপদেষ্টা ইসলামের সৌন্দর্য নিজে ধারণ করা এবং অন্যদের মাঝে সেটা ছড়িয়ে দেওয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। এছাড়া তিনি রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য উন্নত চরিত্রের মানুষকে বাছাই করার আহ্বান জানান।
এ সেমিনারে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন আস সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শায়খ আহমাদুল্লাহ ও ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক সেন্টারের পরিচালক প্রফেসর মোকতার আহমদ প্রমুখ। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অংশগ্রহণ করেন।
বিশ্ব ইজতেমার প্রথম ধাপে যৌতুক বিহীন ৬৩টি বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে। ভারতের মাওলানা যোহাইরুল হাসান এই বিয়ে পড়িয়েছেন। বিয়ে সম্পূর্ণ হওয়ার পরে উনি সকলের জন্য দোয়া করেন।
শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) বাদ আসর ইজতেমা ময়দানে উপস্থিত হন ৬৩ জোড়া দম্পতি। তাদের সম্মতিতে ইজতেমার বয়ান মঞ্চে যৌতুকবিহীন বিবাহের আয়োজন সম্পন্ন হয়।
ইজতেমা আয়োজক কমিটির মিডিয়া সমন্বয়ক হাবিবুল্লাহ রায়হান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, প্রতিবছরের মতো এবারও ইজতেমার দ্বিতীয় দিনে যৌতুকবিহীন বিবাহের আয়োজন হয়েছে। এতে ৬৩টি বিবাহ কার্য সম্পন্ন হয়েছে।
এর আগে টঙ্গীর তুরাগ তীরে প্রথম পর্বের দ্বিতীয় দিনে ইজতেমার অন্যতম প্রধান আকর্ষণ হিসেবে যৌতুকবিহীন বিয়ের কথা জানানো হয়। বাংলাদেশ তাবলিগ জামাতের শুরায়ি নিজামের মিডিয়া সমন্বয়ক হাবিবুল্লাহ রায়হান এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি জানান, রেওয়াজ অনুযায়ী বয়ান মঞ্চের মিম্বরের কামরার পাশে শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকেই যৌতুকবিহীন বিয়ের হবু দম্পতির নামের তালিকাভুক্তির কাজ শুরু হয়। তালিকুভুক্তির পর হবু দম্পতির লোকজনদের কাছে একটি করে সিরিয়ালের টোকেন দেওয়া হয়। আসর নামাজের আগ পর্যন্ত নাম তালিকাভুক্ত করা হয়। সবকিছু ঠিকঠাক হওয়ার পর আসরের নামাজের পর বয়ান মঞ্চ থেকেই এ বিয়ে পড়ানো হয়।
নিয়ম অনুযায়ী কনের অনুপস্থিতিতে বর-কনের অভিভাবক এবং বর সশরীরে বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দেন। বিয়ের আগে বর-কনের উদ্দেশ্যে বয়ান এবং বিয়ের পর বয়ান মঞ্চ থেকেই মোনাজাতের মাধ্যমে নব দম্পতিদের সুখ-সমৃদ্ধিময় জীবন কামনা করা হয়। পরে বর-কনের অভিভাবকরা বয়ান মঞ্চের আশপাশে উপস্থিত মানুষদের মধ্যে খেজুর বিতরণ করেন। ‘মোহর ফাতেমি’র নিয়মানুযায়ী এ বিয়েতে মোহরানা ধরা হয় দেড়শ’ তোলা রুপা বা এর সমমূল্যের অর্থ।
শুরায়ি নিজামের প্রথম পর্বের ৩ দিনের এই ইজতেমায় লাখো মুসল্লি অংশ নিয়েছেন। ইজতেমা ময়দানে শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) দেশের বৃহৎ জুমার জামাত অনুষ্ঠিত হয়। এতে মুসল্লিদের ঢল নামে। ২ ফেব্রুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে শেষ হবে বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব।
সৌদি আরবে বাংলাদেশের হজ ও উমরা পালনকারীদের সেবা দিয়ে আলোচনায় উঠে এসেছেন হাফেজ জিয়াউর রহমান। সৌদি প্রবাসী ওই হাফেজের প্রতিষ্ঠিত ‘বীনা ইন্টারন্যাশনাল ট্রান্সপোর্ট এন্ড ক্যাটারিং সার্ভিস কোম্পানি’র কার্যক্রম ইতোমধ্যে সৌদি সরকারেরও নজর কাড়তে সক্ষম হয়েছে। এর ফলে বিভিন্ন নামিদামি সৌদি কোম্পানি তাদের সঙ্গে কাজ করতে চুক্তিবদ্ধ হচ্ছে।
বাংলাদেশি হজ ও উমরা এজেন্সির মালিকদের মুখে মুখে তার নাম। হাজিদের ইবাদত-বন্দেগি পালনে তার সহায়ক ভূমিকা ভূঁয়সী প্রশংসা কুঁড়িয়েছে। আগামী রমজানের উমরা ও হজ মৌসুমে বিশেষ পরিকল্পনা নিয়ে হাজির হতে চাচ্ছেন।
বীনা ইন্টারন্যাশনালের কার্যক্রম প্রসঙ্গে হাফেজ জিয়াউর রহমান বার্তা২৪.কমকে বলেন, বীনা ইন্টারন্যাশনাল সৌদি আরবে হাজিদের সেবাদানকারী কোম্পানি আল দিয়াফা গ্রুপের একটি প্রতিষ্ঠান। এটি বাংলাদেশ থেকে আসা হজ এবং উমরা হাজিদের সেবা দেওয়ার জন্য প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। ২০২৪ সালের হজে বাংলাদেশের ৯০টি হজ এজেন্সির ২৮ হাজারের বেশি হাজিকে আমরা সেবা দিয়েছি। গতবছর বাংলাদেশ থেকে আসা প্রায় তিন লাখের বেশি উমরা হাজির মধ্যে আমাদের কোম্পানির মাধ্যমে ভিসা হয়েছে দেড় লক্ষাধিক।
তিনি বলেন, হজ ও উমরাযাত্রীদের উত্তম সেবা দেওয়ার জন্য প্রায় দুইশর কাছাকাছি কর্মী রয়েছে। এর মধ্যে বাংলাদেশি কর্মী শতাধিক। এছাড়া ভারত-পাকিস্তানসহ সাতটি দেশের জনবল কাজ করে আমাদের সঙ্গে। হজের সময় অতিরিক্ত প্রায় পাঁচশ বাংলাদেশি কাজ করে। এই কর্মীদের মধ্যে বাংলাদেশিদের প্রাধান্য দেওয়া হয়। ফলে বাংলাদেশে রেমিট্যান্স পাঠানোর ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখা যায়, যাতে আমার দেশ লাভবান হয়।
সেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে আপনি বাংলাদেশের উমরা যাত্রীদের নিয়ে ভাবনার কারণ কি? এমন প্রশ্নে হাফেজ জিয়াউর রহমান বলেন, ২০১৫ সালে আমাদের দেশের কিছু অসাধু-লোভী উমরা ও ট্রাভেল ব্যবসায়ীর কারণে বিভিন্ন কোম্পানি বন্ধ হয়ে যায়। তারা উমরায় এমন লোকদের পাঠাতেন, যারা সৌদি আরব এসে আর ফেরত যেত না। এ জন্য বাংলাদেশিদের সঙ্গে সৌদির কোনো উমরা কোম্পানি কাজ করবে না বলে সিদ্ধান্ত নেয়।
তখন আমাদের দেশের উমরা প্রত্যাশীদের সৌদি আরব আসা প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। ওই সময় বাংলাদেশি ট্রাভেল এজেন্সিগুলোর জন্য উমরার কাজ করা সহজ ছিলো না। তখন আমি উদ্যোগ নিয়ে সৌদির বীনা কোম্পানির সঙ্গে বাংলাদেশের হয়ে বীনা ইন্টারন্যাশনাল নাম দিয়ে চুক্তি করি। তখন বাংলাদেশের প্রায় ৩০ থেকে ৪০টি ট্রাভেল এজেন্সি আমাদের সঙ্গে উমরার কাজ করার চুক্তি করে। আবার বাংলাদেশের উমরা কার্যক্রম শুরু হয়।
কবে থেকে হজ কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত হলেন? এমন প্রশ্নের উত্তরে বলেন, আমি ১৯৯৭ সাল থেকে হজের কাজ শুরু করি। করোনা পরবর্তী সময়ে ২০২৩ সালে ভাবলাম, হজের সময় যেসব হাজি বাংলাদেশ থেকে আসেন তারা হজের মূল অংশে সৌদি মক্তবের (সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান) অধীনে থাকায় ভাষা না জানা এবং খাবারের ভিন্নতায় তাদের অনেক কষ্ট হয়। এ জন্য ২০২৩ সালে এর সঙ্গে সরাসরি যুক্ত হই।
২০২৩ সালে আমরা প্রায় সাড়ে ছয় হাজার হাজির সেবা দিয়েছি। ২৪ সালে সেটা বেড়ে ২৮ হাজার হয়ে যায়। কাজ শুরু করেই আমরা বড় একটি সফলতা অর্জনে সক্ষম হই। সেই প্রেরণা ও অভিজ্ঞতা থেকে ২০২৪ সালের হজ নিয়ে একটি মাইলফলক ঠিক করি এবং প্রস্তুতি নেই। কিন্তু সৌদি সরকার এ বছর এসে কিছু নতুন নিয়মকানুন তৈরি করে। যার মধ্যে রয়েছে- নুসুক সিস্টেমের কার্ড, মিনার জোন এবং তাঁবু নির্ধারণ, পরিবহন-ট্রাফিক সিস্টেমসহ সব কার্যক্রমে নতুন নিয়ম-পদ্ধতি চালু করা হয়, যা আগের সব নিয়মের পুরোপুরি উল্টো। এতে আমাদের প্রস্তুতি কার্যক্রম ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং বিরাট বিড়ম্বনায় পড়ে যাই। তাত্ক্ষণিকভাবে এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য এজেন্সির মালিক, গ্রুপলিডার এবং আমাদের বীনার কর্মীরা ঝাপিয়ে পড়ে। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্ঠায় হাজিদের সর্বোচ্চ সেবা দেওয়ার চেষ্টা করেছি আমরা।
হাজিদের পরিবহন সেবার ক্ষেত্রে হাফেজ জিয়াউর রহমানের ব্যাপক সুনাম রয়েছে। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সৌদি আরবে আমিই একমাত্র বাংলাদেশি; যার হজ-উমরা মন্ত্রণালয় এবং ট্রান্সপোর্ট মন্ত্রণালয় কর্তৃক অনুমোদিত নিজস্ব লাইসেন্স করা ট্রান্সপোর্ট কোম্পানি রয়েছে। বাংলাদেশি হজ-উমরা যাত্রীদের ভালো সার্ভিস দিতে হলে নিজস্ব যানবাহন ছাড়া সেটা সম্ভব নয়। নিজস্ব যানবাহন থাকলে সর্বোচ্চ ভালো সার্ভিস দেওয়া সম্ভব। সেই চিন্তা থেকেই পরিবহন সার্ভিস নিয়ে আসা।
বাংলাদেশি হাজিদের খাবার সরবরাহের ভাবনা প্রসঙ্গে বলেন, আসলে হজের সময় সৌদি মোয়াল্লিমের পক্ষ থেকে হাজিদের যে খাবার সরবরাহ করা হয়- সেটা আমাদের দেশের মানুষের জন্য মুখরোচক নয়। অধিকাংশ হাজি সেটা খেতে পারেন না। প্রচুর খাবার নষ্ট হয়। আর হাজিরাও ক্ষুধায় কষ্ট করেন। আমি চেষ্ট করলাম হাজিদের বাংলাদেশী মুখরোচক খাবারের আয়োজন করতে। যে খাবার হাজিরা খেতে অভ্যস্ত। আলহামদুলিল্লাহ! সৌদি সরকার অনুমোদিত প্রায় চল্লিশ হাজার হাজির খাবার পরিবেশনের জন্য সরকার অনুমোদিত বীনা ইন্টারন্যাশনাল কোম্পানির নিজস্ব ৪টি কিচেন পরিচালনা করছে।
হজ ও উমরা নিয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে হাফেজ জিয়াউর রহমান বলেন, হাজিদের সেবার জন্য যে গাড়িগুলো রয়েছে; সেগুলো সামর্থ্যের আলোকে বাড়ানো। যাতে হাজিদের চলাচলে সুবিধা হয়। পাশাপাশি আমাদের ক্যাটারিং সার্ভিসের মান আরও উন্নত করা। মক্কা-মদিনায় আবাসন ব্যবস্থার ক্ষেত্রে এজেন্সির চাহিদা অনুযায়ী পরামর্শের মাধ্যমে সৌদি সরকারের সঙ্গে কাজ করা। পাশাপাশি বাংলাদেশি ট্রাভেল এজেন্সিদের এসব আবাসন ব্যবস্থার অন্তর্ভুক্ত করতে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করা।
বাংলাদেশ সরকার হজের দুটো প্যাকেজ ঘোষণা করে। এর বাইরে কেউ যদি বাড়তি সুবিধা ভোগ করতে চান তাদের কোনো সুযোগ রয়েছে কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন, বাংলাদেশের এজেন্সিগুলো ডি ক্যাটাগরির সার্ভিস গ্রহণ করেন। এ ছাড়া হজের ভিআইপি ক্যাটাগরির হাজিরাও এজেন্সিগুলোর কাছে আসে। হাজিদের কেমন সেবা দেওয়া হবে সেটা তারাই ঠিক করবে। এ জন্য এজেন্সিগুলোকে কাজ করতে হয়। এজেন্সি মালিকরা আমাদের কাছে এলে আমরা ভিআইপিদের জন্য ভিআইপি হোটেল, গাড়ি, মিনার তাঁবু এবং খাবারসহ সম্পূর্ণ সেবা দিতে চেষ্টা করি।
আগামী হজের প্রস্তুতির বিষয়ে হাফেজ জিয়াউর রহমান বলেন, আগামী হজে সেবা দেওয়ার জন্য জন্য আমরা সৌদির ফ্লাইনাস কোম্পানির সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছি। কয়েকটি হজ কোম্পানির সঙ্গে মিটিং শেষে হাজিদের সর্বোচ্চ সার্ভিসের নিশ্চয়তা পেয়ে ফ্লাইনাস কোম্পানির জোন-৫ এ ২০ হাজার হাজি এবং জোন-১ এ দেড় হাজার ভিআইপি হাজির জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়েছি। ফ্লাইনাস কোম্পানির ভাইস প্রেসিডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার যিয়াদ সাঈদের উপস্থিতিতে আনুষ্ঠানিক চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে। আমাদের নিয়ত এবং আল্লাহর সাহায্যে আমরা সর্বোচ্চ সার্ভিস দেওয়ার অভিপ্রায় ব্যাক্ত করছি, আশা করি- হাজি সাহেবরা আমাদের সার্ভিসে সন্তুষ্ট হবেন- ইনশাআল্লাহ।
অনেক হজ ও উমরা যাত্রী সৌদি আরবে নানাবিধ বিড়ম্বনার শিকার হন। তাদের বিষয়ে আপনার পরামর্শ কী- এ প্রসঙ্গে হাফেজ জিয়াউর রহমান বলেন, অনেকেই ট্রাভেল এজেন্সির সঙ্গে ভালোভাবে চুক্তি না করার কারণে বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন। কারও সঙ্গে আসার আগে বিস্তারিত জেনে-বুঝে চুক্তি করলে এমনটা হওয়ার সম্ভাবনা কম। অনুরোধ থাকবে, কম টাকায় কেউ যেন হজ ও উমরায় না আসেন। অল্প কিছু টাকার ব্যবধানে অনেক সমস্যা হয়।
গাজীপুরের টঙ্গী তুরাগ তীরে বিশ্ব ইজতেমা ময়দানে ও আশপাশের সড়কের ধারে হরদম বেচাকেনা হচ্ছে টুপি, সুগন্ধি আতর, জায়নামাজসহ নামা প্রসাধনী। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আগত মুসল্লিরা ইজতেমায় ইবাদত কায়েমের পাশাপাশি এসব দোকান থেকে নিজ ও স্বজনদের জন্য ক্রয় করছেন এসব প্রসাধনী পণ্য।
শনিবার (১ ফেব্রুয়ারী) দুপুরে টঙ্গীর তুরাগ তীরে চলমান ইজতেমা ঘুরে দেখা যায়, টঙ্গী- কামাড়পাড়া সড়কের দুই পাশে ও ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়কের পাশের ইজতেমা ময়দানের বিভিন্ন গেটের আশপাশে অন্তত দুই শতাধিক দোকানে টুপি, সুগন্ধি আতর, তজবি, জায়নামাজসহ বিভিন্ন পণ্য হরদম বেচাকেনা চলছে। পসরা সাজিয়ে বসা এসব পণ্যের দাম যেমন কম, মান ততোটাই ভালো। যার ফলে ইজতেমায় আগত মুসল্লিরা নিজের ও স্বজনদের জন্য কিনছেন।
ইজতেমায় আগত মুসল্লি আমির আলী, তিনি বার্তা২৪.কমকে বলেন, ত্রিশাল থেকে ইজতেমায় এসেছি। এখানে বিভিন্ন পণ্যের দোকান দেখা যাচ্ছে। আমি পরিবারের সদস্যদের জন্য জায়নামাজ ও আতর কিনলাম। কারণ বাড়ি গেলেই সবাই ছুটে আসবে। তাই তাদের উপহার দিতে এসব নিলাম।
আরেক মুসল্লি মুহাম্মদ আজাদ বার্তা২৪.কম কে বলেন, প্রতি বছর ইজতেমায় আসি। যখন বাড়ি ফিরি দুই ছেলে, ও স্বজনরা ছুটে আসে তাদের জন্য কি এনেছি জিজ্ঞেসা করে। তাই টুপি, জায়নামাজ, আতর কিনে নিয়ে যাই।
এদিকে ইজতেমায় আগত এসব দোকানের মালিকরা জানান, প্রতি বছর ইজতেমায় লাখ লাখ মানুষের সমাগম ঘটে। যার ফলে টানা কয়েকদিন প্রচুর বেচাকেনা হয়। ধর্মীয় কাজে আগত এসব মানুষের কথা ভেবে পণ্যেগুলো আমরা স্বল্প মূল্যে বিক্রি করে থাকি। যাতে মানুষজন নির্বিঘ্নে তাদের পছন্দের জিনিস সাধ্যের মধ্যে ক্রয় করতে পারে।
প্রসঙ্গত, প্রতি বছর গাজীপুরের টঙ্গী তুরাগ তীরে বিশ্ব ইজতেমা ময়দানে লাখ লাখ মুসল্লির আগমন ঘটে। এতে কয়েকদিন এ স্থানে বিভিন্ন পণ্যের বেচাকেনা চলে পুরোদমে। শুধু মাত্র ধর্মীয় কাজে ব্যবহৃত পণ্যের দোকান বসে অন্তত দুই শতাধিক। সব মিলিয়ে এসব দোকানে প্রায় ৫০ লাখ টাকা বেচাকেনা হয় বলে জানান দোকানিরা।
প্রথমবারের মতো ইরান আন্তর্জাতিক হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতায় মেয়েদের গ্রুপে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছেন বাংলাদেশের কোনো নারী হাফেজ। পূর্ণ কোরআন হেফজ গ্রুপে অংশ নিয়ে সাফল্য অর্জনকারী ওই নারী হাফেজের নাম মুতাহহারা বিনতে আবদুল হাফিজ।
মুসলিম ছেলে-মেয়েদেরকে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের প্রতি উদ্বুদ্ধ করতে আয়োজন করা হয় আন্তর্জাতিক হেফজ ও কেরাত প্রতিযোগিতা। ইরানের মাশহাদে অবস্থিত ইমাম রেজা আলী মসজিদের (মাশহাদে মদিনার) সভাকক্ষে আয়োজিত কোরআন প্রতিযোগিতা তিন ক্যাটাগরিতে অনুষ্ঠিত হয়।
নারী-পুরুষের আলাদা আলাদা আয়োজনে হেফজুল কোরআন, কেরাত ও তারতিল গ্রুপে মোট ৮০ দেশের প্রতিযোগীরা অংশগ্রহণ করেন। ইরান কোরআন প্রতিযোগিতার ৪১তম আসরে প্রতি গ্রুপে উত্তীর্ণ সেরা তিন জনকে পুরস্কার দেওয়া হয়।
প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেন হাফেজ মুতাহহারা লাবিবা বিনতে আবদুল হাফিজ। কারি আবু জর গিফারী, হাফেজ মুহসিন আহমদ মাহদি, হাফেজ কলিম সিদ্দিকী ও কারি মুসাররাত তাবাসসুম।
২৭ জানুয়ারিতে শুরু হওয়া প্রতিযোগিতা ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত চলে। প্রতিযোগিতায় নারী হাফেজদের গ্রুপে প্রথম স্থান অর্জন করেন ইরানের প্রতিযোগী ও তৃতীয় স্থান লাভ করেন ইয়েমেনের প্রতিনিধি।
হাফেজ মুতাহহারা লাবিবা বিনতে আবদুল হাফিজ হাফেজ কারি ইসমাইল হাসান পরিচালিত সাউদা বিনতে জামআহ (রা.) ইন্টারন্যাশনাল বালিকা হেফজ মাদরাসার সাবেক ছাত্রী। মাদরাসাটি রাজধানীর দক্ষিণ যাত্রাবাড়ী, ডেমরা রোডে বিবির বাগিচা এক নম্বর গেটের বিপরীতে অবস্থিত।
মুতাহহারা তার চাচা ও ফুফুদের কাছ থেকে কোরআন হেফজ শেষে চাচা হাফেজ কারি ইসমাইল হাসানের কাছে উচ্চতর তাজভিদ ও বিভিন্ন মাকামাত শিক্ষা করে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে। প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অর্জন করেন ইরানের প্রতিযোগী ও তৃতীয় স্থান লাভ করেন ইয়েমেনের প্রতিনিধি।
এর আগে মুতাহহারা লাবিবা ২০২৪ সালে অনুষ্ঠিত কুয়েত আন্তর্জাতিক হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে তৃতীয় স্থান অর্জন করেন। এই মাদরাসার অপর শিক্ষার্থী মাইমুনা বিনতে মনিরুজ্জামান ২০২৩ সালে ইরানের প্রতিযোগিতায় তৃতীয় স্থান অর্জন করে এবং নুসাইবা হক ফাইজা ২০২৩ সালে দুবাইয়ে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতায় সপ্তম স্থান অর্জন করে বাংলাদেশের জন্য সুনাম বয়ে আনেন।