রিজিক বৃদ্ধি প্রসঙ্গে কোরআন-হাদিসের বর্ণনা



ইসলাম ডেস্ক, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম
কোরআনে কারিমে ইরশাদ হয়েছে, পৃথিবীর প্রত্যেক জীবের জীবিকার দায়িত্ব আল্লাহর, ছবি: সংগৃহীত

কোরআনে কারিমে ইরশাদ হয়েছে, পৃথিবীর প্রত্যেক জীবের জীবিকার দায়িত্ব আল্লাহর, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

জীবিকার পেছনে কমবেশি সবাই দৌঁড়ায়। জীবনের জন্য রিজিক, সেই রিজিকের সন্ধানে অনেকের জীবন পর্যন্ত চলে যায়। কেউ হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে সামান্য অর্জন করে, আবার কেউ উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া সম্পদ বসে বসে খায়। এটাই দুনিয়ার রীতি।

কোরআনে কারিমে ইরশাদ হচ্ছে, ‘পৃথিবীর প্রত্যেক জীবের জীবিকার দায়িত্ব আল্লাহর। তিনি জানেন তারা কোথায় থাকে এবং কোথায় সমাপিত হয়। সবকিছুই (উল্লেখ) এক সুবিন্যস্ত কিতাবে (লওহে মাহফুজে) রয়েছে।’ -সূরা হুদ: ৬

এই আয়াতের তাফসিরের প্রথম অংশে বলা হয়েছে, দুনিয়ায় বিচরণশীল সবার রিজিকের দায়িত্ব আল্লাহর। আয়াতের এই অংশে বলা হয়েছে, দুনিয়ার রিজিক নির্ধারিত সময়ের জন্য। মানুষের স্থায়ী ও অস্থায়ী একাধিক আবাসস্থল আছে। দুনিয়া অস্থায়ী আবাসস্থল আর আখেরাত স্থায়ী আবাসস্থল। উভয়ের অধিবাসীদের সম্পর্কে আল্লাহ সবিশেষ অবহিত।

আল্লাহতায়ালাই রিজিকদাতা। এ কথা মুসলমানমাত্রই বিশ্বাস করেন। আল্লাহ প্রদত্ত রিজিক মানুষ লাভ করে বিভিন্ন উপকরণের মাধ্যমে। এই রিজিক তিনি দান করেন নিজ অনুগ্রহে।

অনেকে মনে করেন, জীবিকার ব্যবস্থা হয় চাকরি, ব্যবসা বা চাষাবাদের মাধ্যমে। কিন্তু কোরআনের ঘোষণা হলো, রিজিকের সিদ্ধান্ত হয় আসমানে। আল্লাহ বলেন, ‘আকাশে রয়েছে তোমাদের রিজিক ও প্রতিশ্রুত সব কিছু।’ –সূরা জারিয়াত: ২২

আল্লাহতায়ালা নিজ বান্দাদের পরীক্ষার জন্য রিজিক কমবেশি করেন। রিজিক বৃদ্ধি আল্লাহর সন্তুষ্টির প্রমাণ নয়, অনুরূপ রিজিকের সংকীর্ণতাও তার অসন্তুষ্টির কারণ নয়। অধিকাংশ মানুষ এ বিষয় জানে না যে, দুনিয়ার সচ্ছলতা কারও শুভ লক্ষণের প্রমাণ নয়। কেননা আখেরাতের সাফল্য নির্ভর করে নেক আমলের ওপর। দুনিয়ায় আল্লাহ কখনও অবাধ্যকে দেন সচ্ছলতা, অনুগতকে দেন সংকীর্ণতা। আবার কখনও এর বিপরীত করেন্। কখনও উভয়কে সচ্ছলতা দেন, কখনও দেন সংকীর্ণতা। কখনও অবাধ্য বা অনুগত ব্যক্তিকে এক সময় দেন সচ্ছলতা, অন্য সময় দেন অসচ্ছলতা। এসব কিছু নিয়ন্ত্রণ করেন আল্লাহতায়ালা নিজ প্রজ্ঞা ও হিকমতের ভিত্তিতে।

রিজিকের এই হ্রাস-বৃদ্ধি পরীক্ষাস্বরূপ। এ প্রসঙ্গে আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘আমি অবশ্যই তোমাদের পরীক্ষা করব, কখনও ভয়ভীতি, কখনও অনাহার দিয়ে, কখনও তোমাদের জানমাল ও ফসলাদির ক্ষতির মাধ্যমে। (এমন পরিস্থিতিতে ধৈর্যধারণ করতে হবে) তুমি ধৈর্যশীলদের (জান্নাতের) সুসংবাদ দান করো।’ –সূরা বাকারা: ১৫৫

স্বভাবগতভাবে মানুষ তাড়াহুড়া প্রবণ। সে দ্রুত সব কিছু পেতে চায়। হাদিসে বলা হয়েছে, ‘নির্ধারিত জীবিকা আসবেই। কেউ তার রিজিক ভোগ না করে মৃত্যুবরণ করবে না।’

নবী করিম (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘হে মানুষ! তোমরা আল্লাহকে ভয় করো। ধনসম্পদ সংগ্রহে উত্তম পন্থা অবলম্বন করো। কেননা কেউ তার রিজিক পরিপূর্ণ না করে মৃত্যুবরণ করবে না। যদিও তা অর্জনে বিলম্ব হোক না কেন।’ –সুনানে ইবনে মাজাহ

বিখ্যাত বুজুর্গ হাসান বসরি (রহ.) বলেছেন, আমি কোরআনের নব্বই জায়গায় পেয়েছি, আল্লাহতায়ালা বান্দার রিজিক নির্ধারণ করে রেখেছেন এবং রিজিকের দায়িত্ব নিয়েছেন। কেবল এক জায়গায় পেয়েছি, ‘শয়তান তোমাদেরকে অভাব-অনটনের ভয় দেখায়।’ -সূরা বাকারা: ২৬৮

কিছু কারণে বান্দার রিজিক তথা জীবিকা বৃদ্ধি পায়। ওইসব কারণগুলো হচ্ছে-

এক. একনিষ্ঠভাবে এক আল্লাহর ইবাদত ও সৎকর্ম করা। -সূরা আন নাহল: ৯৭

দুই. বেশি পরিমাণে সর্বাবস্থায় আল্লাহকে স্মরণ করা ও ইস্তেগফার পড়া। -সূরা নুহ: ১০-১২

তিন. সর্বাবস্থায় আল্লাহকে ভয় করে চলা। -সূরা আত তালাক: ২

চার. বেশি বেশি বৈধ রিজিকের জন্যে দোয়া করা। -সূরা বাকারা: ১৮৬

পাঁচ. দৃঢ়তার সঙ্গে আল্লাহর ওপর ভরসা করা। -সূরা আত তালাক: ৩

ছয়. অসহায় দরিদ্রদের সাহায্য করা। -সহিহ বোখারি: ২৮৯৬

সাত. হজ ও উমরা করা। -সুনানে তিরমিজি: ৮১০

আট. আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা করা। -সহিহ বোখারি: ২০৬৭

নয়. সকাল সকাল ঘুম থেকে জাগ্রত হওয়া। -সুনানে আবু দাউদ: ২৬০৬

দশ. ফজরের নামাজ জামাতের সঙ্গে আদায় করা। -সহিহ মুসলিম: ৬৫৭

একমাত্র যে কারণে বান্দাকে রিজিক থেকে বঞ্চিত রাখা হয় তা হচ্ছে গোনাহের কাজে লিপ্ত থাকা। -সুনানে ইবনে মাজাহ: ৯০

উল্লেখ্য হারাম উপার্জন দিয়ে গঠিত শরীরের কোনো ইবাদত আল্লাহ কবুল করেন না এবং ওই শরীর জান্নাতে প্রবেশ করবে না। -সিলসিলা সহিহাহ: ২১২

অতএব কোনো ধরনের হতাশা নয়, তাকদিরে আমাদের জন্য যতটুকু বরাদ্দ আছে, ততটুকু আমরা পাবোই, এটাই আল্লাহর ওয়াদা। আমাদের কাজ শুধু চেষ্টা করে যাওয়া। যে বিষয়ে আল্লাহ হুকুম করেছেন- তা মানা, আর যে বিষয়ে আল্লাহ নিষেধ করেছেন, তা থেকে নিচেকে বাঁচিয়ে রাখা। এসব কাজের অন্যতম হলো-

উদাসীনতা: আল্লাহতায়ালার জিকির থেকে উদাসীনতা মানুষের রিজিকের বরকত উঠিয়ে নেয়।

সুদ: সুদ সম্পদের বরকত নষ্ট করে দেয়।

অকৃতজ্ঞতা: রিজিক কমে যাওয়ার আরেকটি কারণ হলো- অকৃতজ্ঞতা। আল্লাহতায়ালার নিয়ামতের প্রতি শোকরিয়া না করা। আল্লাহ অকৃতজ্ঞদের পছন্দ করেন না।

গোনাহ: রিজিকে বরকত আসার জন্য আল্লাহর ওপর ঈমান ও তাকওয়া অবলম্বন অত্যন্ত জরুরি। যে বান্দা এই দু’টি জিনিস অর্জন করতে পারবে না, তার রিজিকে সংকীর্ণতা নেমে আসবে।

গোনাহ ঈমানকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। ফলে এটিও রিজিকের বরকত কমে যাওয়ার অন্যতম কারণ। কখনও কখনও মুমিন বান্দার দুনিয়ায়ই এর শাস্তি ভোগ করতে হয়, যার ফলে তার ওপর বিপদাপদ, অভাব-অনটন ও অসুস্থতা ইত্যাদি চেপে বসতে পারে।

   

ফিলিপাইনে অনুমোদন পেল ভার্চুয়াল শরিয়া আদালত



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ফিলিপাইনের আইন সভা

ফিলিপাইনের আইন সভা

  • Font increase
  • Font Decrease

ফিলিপাইনের আইন সভায় সর্বসম্মতিক্রমে ডিজিটাল পদ্ধতিতে শরিয়া আদালত পরিচালনা বিষয়ক প্রস্তাবিত বিলটি তৃতীয় ও চূড়ান্ত পর্যায়ে পাস হয়েছে। এর ফলে মুসলিম ট্রাইব্যুনালের আদালত পরিষেবা ডিজিটাল পদ্ধতিতে পাওয়া যাবে এবং মুসলিম জনগোষ্ঠীর জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা সহজ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

গত সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর) প্রস্তাবিত বিলটি আইন সভায় পাস হয়। তবে প্রস্তাবিত বিলটি আইন হিসেবে পাস হওয়ার আগে ফিলিপাইনের সিনেট থেকেও অনুমোদন পেতে হবে। আশা করা হচ্ছে, ফিলিপাইনের সিনেটেও আইনটি দ্রুত পাস হবে।

শরিয়া আদালতের সহজীকরণের এই প্রক্রিয়াকে স্বাগত জানিয়েছে ফিলিপাইনের মুসলিম আইন বিষয়ক সহায়তাকারী সংস্থা দ্য ন্যাশনাল কমিশন অব মুসলিম ফিলিপিনো (এনসিএমএফ)। যেসব অঞ্চলে সরাসরি কোনো শরিয়া আদালত নেই, সেখানকার মুসলিমদের এই সংস্থাটি প্রয়োজনীয় সেবা দেওয়ার অনুমোদন পাবে।

এনসিএমএফের মুখপাত্র ইউসুফ মানদো বলেন, শরিয়া আদালতের ইতিবাচক উন্নয়নকে এনসিএমএফ সাধুবাদ জানায়। আমাদের অধিকাংশ ক্লায়েন্টের আদালতের হস্তক্ষেপের প্রয়োজন।

শরিয়া আদালত পরিষেবার ডিজিটাইজেশন প্রক্রিয়া তাদের ব্যাপকভাবে সহযোগিতা করবে, যারা এমন স্থানে বসবাস করে যেখানে কোনো শরিয়া আদালত নেই। এটি সবার জন্য ন্যায়বিচারের সমান সুযোগ তৈরি করবে। এনসিএমএফ নিজস্ব আইনবিষয়ক ব্যুরোর মাধ্যমে বিবাহ, জন্ম ও মৃত্যু সনদসহ মুসলিমদের প্রয়োজনীয় নথিপত্রের জন্য একটি ডিজিটাল প্ল্যাটফরম তৈরি করবে। এ ক্ষেত্রে দেশটির সুপ্রিম কোর্ট এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সমন্বয় থাকবে।

মানডো বলেন, ‘আমরা কংগ্রেসকে বিশেষ করে বিলটির লেখকদের ধন্যবাদ জানাই। তারা ফিলিপাইনের মুসলিমদের অধিকার সুরক্ষায় আমাদের আইন বিষয়ক ব্যুরোকে সুদৃঢ়করণে সহযোগিতা করেছে। এই পর্যায়ে আমরা অপেক্ষায় রয়েছি, বিলটি সিনেটের পক্ষ থেকে পাস হবে এবং আইন হিসেবে চূড়ান্তভাবে প্রকাশিত হবে।’

ফিলিপাইনে মোট জনসংখ্যা প্রায় ১১০ মিলিয়নের মধ্যে ৬ শতাংশের বেশি মুসলিম রয়েছে। তাদের বেশির ভাগই দেশটির দক্ষিণে মিন্দানাও ও সুলু দ্বীপপুঞ্জ এবং মধ্য-পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ পালাওয়ানে বাস করে।

১৯৭৭ সাল থেকে ফিলিপাইনের মুসলিমদের জন্য রয়েছে মুসলিম শরিয়া আদালত। সেই বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি দেশটির প্রেসিডেন্ট ফারদিনান্দ মারকোস সুপ্রিম কোর্টের আওতায় এর অনুমোদন দেন। বর্তমানে দেশটির পাঁচটি জেলায় শরিয়া আদালতের কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।

;

সাত মাসে কোরআনের হাফেজ সাত বছরের মাইদা



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
সাত মাসে কোরআনের হাফেজ হওয়ায় মাইদাকে পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে

সাত মাসে কোরআনের হাফেজ হওয়ায় মাইদাকে পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে

  • Font increase
  • Font Decrease

মাত্র সাত মাসে পুরো কোরআন মাজিদ মুখস্থ করে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে চট্টগ্রামের মোছা. জান্নাতুল মাওয়া মাইদা। তার বয়স মাত্র সাত বছর। সে নগরীর অক্সিজেন এলাকার পাঠানপুর মহিউস সুন্নাহ ইসলামিক মাদ্রাসার বালিকা শাখার শিক্ষার্থী।

বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) মাদ্রাসার শিক্ষক হাফেজ মাওলানা সাআদ সাদেক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

মাদ্রাসার পরিচালক মাওলানা হাফেজ মহিউদ্দিন জানান, সাধারণত কোরআন মাজিদ হিফজ শেষ করতে দুই থেকে তিন বছর সময় লাগে। তবে সাত বছর বয়সী জান্নাতুল মাওয়া মাইদা মাত্র সাত মাসে পুরো কোরআন মাজিদ মুখস্থ করে বিস্ময় সৃষ্টি করেছে। আমরা তার উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া কামনা করছি। মহান আল্লাহ যেন তাকে দ্বীনি ইলম অর্জন করে ইসলামের সেবা করার তাওফিক দেন।

হাফেজ মাইদার বাবা হাফেজ মোহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন জানান, মাইদা খুবই অল্প সময়ে কোরআন মাজিদ হিফজ সম্পন্ন করেছে। বাবা হিসেবে আমি মহান আল্লাহর কাছে অত্যন্ত কৃতজ্ঞ। পাশাপাশি মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ ও মাইদার শিক্ষিকদের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি।

জান্নাতুল মাওয়া মাইদার বাড়ি চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায়। তার বাবার নাম মোহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন এবং মায়ের নাম শেফালী আক্তার।

;

বোরকা নিষিদ্ধ করল সুইজারল্যান্ড



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
বোরকা নিষিদ্ধ করল সুইজারল্যান্ড

বোরকা নিষিদ্ধ করল সুইজারল্যান্ড

  • Font increase
  • Font Decrease

সুইজারল্যান্ডের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ গত বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) মুসলিম নারীদের বোরকা পরাসহ মুখ ঢেকে রাখার ওপর নিষেধাজ্ঞা পাস করার পক্ষে ভোট দিয়েছে। আইনটি ইতিমধ্যে ডানপন্থী পপুলিস্ট সুইস পিপলস পার্টির দখলে থাকা উচ্চ কক্ষে অনুমোদন পেয়েছে।

আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, আইনটি ১৫১-২৯ পাশ হয়েছে। বোরকার ওপর নিষেধাজ্ঞার পদক্ষেপটি দুই বছর আগে দেশটিতে হওয়া গণভোটের ফল। যেখানে সুইস ভোটারদের ৫১ শতাংশ নেকাব, বোরকা, সেই সঙ্গে কিছু প্রতিবাদকারীদের পরার স্কি মাস্ক ও ব্যান্ডানার ওপর নিষেধাজ্ঞাকে সমর্থন করেছিলেন।

নিম্ন কক্ষের অনুমোদনের ফলে নিষেধাজ্ঞাটি এখন ফেডারেল আইনে পরিণত হয়েছে, যা লঙ্ঘন করলে ১ হাজার সুইস ফ্রাঙ্ক (প্রায় ১ হাজার ১০০ ডলার) জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে।

গণভোটের সময় মুখ ঢেকে রাখা নিষিদ্ধ করার প্রচারণার সমালোচনা করেছিল মুসলিমরা। মুসলিম নারীদের সংগঠন পার্পল হেডস্কার্ফের মুখপাত্র ইনেস এল-শিখ বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘সুইজারল্যান্ডে বোরকা পরা মাত্র ৩০ জন নারী রয়েছেন।’

সুইজারল্যান্ডের ইসলামিক সেন্ট্রাল কাউন্সিল বলছে, ভোটে সারা দেশে মুসলিম বিরোধী মনোভাব ছড়িয়ে পড়ার বার্তাই প্রতিফলিত হয়েছে।

নিষেধাজ্ঞাটিতে বলা হয়েছে কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া, পাবলিক স্পেস ও জনসাধারণের প্রবেশযোগ্য ব্যক্তিগত ভবনে নাক, মুখ ও চোখ ঢেকে রাখা যাবে না। যদিও সুইজারল্যান্ডে বোরকা পুরো মুখ ঢেকে সাধারণত পরা হয় না।

এর আগে বেলজিয়াম ও ফ্রান্স অনুরূপ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।

সুইজারল্যান্ডে বোরকা নিষেধাজ্ঞায় মুসলিমরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। এমনকি বিতর্কিত এই বিলটি নিয়ে সংশয় ও আপত্তি রয়েছে মধ্যপন্থী ও বাম দলগুলোরও।

;

জাতিসংঘে কোরআন অবমাননার নিন্দায় মুসলিম নেতারা



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
কাতারের আমির শেখ তামিম, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়িপ এরদোয়ান ও ইরানের প্রেসিডেন্ট আহমদ রাইসি

কাতারের আমির শেখ তামিম, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়িপ এরদোয়ান ও ইরানের প্রেসিডেন্ট আহমদ রাইসি

  • Font increase
  • Font Decrease

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৮তম অধিবেশন চলছে। অধিবেশনে দেওয়া বক্তব্যে বাকস্বাধীনতার অজুহাতে পবিত্র কোরআনের কপি পোড়ানোর নিন্দা জানিয়েছেন মুসলিম বিশ্বের নেতৃবৃন্দ। তারা ধর্মীয় গ্রন্থ ও নিদর্শনের অবমাননা রোধ এবং এসবের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়ার আহ্বান জানান।

মঙ্গলবার (১৯ সেপ্টেম্বর) তারা এ আহ্বান জানান।

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়িপ এরদোয়ান বলেন, ‘পশ্চিমা দেশগুলোতে ইসলামফোবিয়া ও ধর্মীয় বৈষম্য মহামারি আকারে দেখা দিয়েছে। তা এখন অসহনীয় পর্যায়ে পৌঁছেছে। তবে অনেক দেশ এমন ভয়ানক কাজে উৎসাহ দিয়ে আগুন নিয়ে খেলা অব্যাহত রেখেছে। যে মানসিকতা বাকস্বাধীনতার আড়ালে ইউরোপে পবিত্র কোরআনের ওপর জঘন্য হামলাকে উৎসাহিত করে, তা মূলত নিজের (ইউরোপ) হাতেই নিজের ভবিষ্যৎ অন্ধকার করে দিচ্ছে।’

সম্প্রতি ফ্রান্সের স্কুলে হিজাব ও আবায়া পরায় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ সরকার। সেই সময় এর প্রতিবাদ জানান এরদোয়ান।

এদিকে বক্তব্যের সময় পবিত্র কোরআন হাতে নিয়ে ইরানের প্রেসিডেন্ট আহমদ রাইসি বলেন, ‘পশ্চিমা দেশগুলোতে ইসলামফোবিয়া ও সাংস্কৃতিক বর্ণবৈষম্য দেখা যাচ্ছে। সেখানে পবিত্র কোরআনের অবমাননা থেকে শুরু করে স্কুলে বোরকা নিষেধাজ্ঞাসহ অনেক শোচনীয় ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু অশ্রদ্ধার আগুন দিয়ে কখনো ঐশ্বরিক সত্যকে ঢেকে রাখা যায় না। পশ্চিমা বিশ্ব বাকস্বাধীনতার অজুহাত দেখিয়ে সবার মনোযোগ অন্য দিকে সরাতে চাচ্ছে।’

কাতারের আমির শেখ তামিম জাতিসংঘ বলেন, ‘ইচ্ছাকৃত অন্যের সম্মানিত বিষয়কে অসম্মান করাকে মত প্রকাশের স্বাধীনতা মনে করা উচিত নয়। আমি মুসলিমদের বলব, কেউ পবিত্র কোরআন পোড়ালে বা অবমাননা করে উসকানির মাধ্যমে আমাদের বোকা বানালে তাদের মাধ্যমে বিভ্রান্ত হওয়া যাবে না। পবিত্র কোরআন একটি সম্মানিত গ্রন্থ, বুদ্ধিহীন ব্যক্তি ছাড়া কেউ তা অবমাননা করতে পারে না।’

গত কয়েক মাসে সুইডেন ও ডেনমার্কে ধারাবাহিকভাবে ধর্মীয় গ্রন্থ কোরআন পোড়ানো প্রকাশ্যে ঘটেছে। কিন্তু এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে দেশ দু’টির সরকার কোনো ব্যবস্থা না নিলে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে আরব ও মুসলিম দেশগুলোতে। মুসলিম দেশগুলোর নেতারা বলছেন, কোরআন মাজিদ পোড়ানো মতপ্রকাশের কোনো মাধ্যম হতে পারে না।

এ ধরনের কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা জানায় মিসরের আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ, অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশন (ওআইসি) ও মুসলিম ওয়ার্ল্ড লীগসহ মুসলিম দেশগুলো।

গত ১২ জুলাই ধর্মীয় বিদ্বেষ রোধে জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদে (ইউএনএইচআরসি) একটি প্রস্তাব পাস হয়। সর্বশেষ গত ২৫ জুলাই জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ধর্মীয় গ্রন্থের প্রতি সহিংসতার বিরুদ্ধে একটি নিন্দা প্রস্তাব পাস করা হয়। তাতে এ ধরনের ঘৃণ্য কাজকে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের শামিল বলা হয়।

ইরাক, কুয়েত, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও মরক্কোসহ বিভিন্ন মুসলিমপ্রধান দেশ কুরআন পোড়ানোর ঘটনার প্রতিবাদে সুইডিশ রাষ্ট্রদূতদের তলব করেছিল। এ নিয়ে ৫৭ সদস্যের অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশনের জরুরি বৈঠকও হয়।

;