হজের প্রাক-নিবন্ধন সার্ভার বন্ধ থাকবে ১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত

  • ইসলাম ডেস্ক, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

হজের প্রাক-নিবন্ধন সার্ভার বন্ধ থাকবে ১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত, ছবি: সংগৃহীত

হজের প্রাক-নিবন্ধন সার্ভার বন্ধ থাকবে ১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত, ছবি: সংগৃহীত

সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনার হজযাত্রীদের প্রাক-নিবন্ধন আরও এক মাস বন্ধ থাকবে। ই-হজ ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের আইটি ফার্ম নিয়োগের জন্য নিবন্ধন সার্ভার বন্ধ রাখা হয়েছে।

দরপত্র আহ্বান করার কারণে ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত প্রাক-নিবন্ধন বন্ধ থাকবে বলে গত ৩০ অক্টোবর এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায় ধর্ম মন্ত্রণালয়। পরে ১৭ নভেম্বর এই কার্যক্রম বন্ধ রাখার সময়সীমা আরও এক মাস বাড়িয়ে ১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত করা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

পবিত্র হজে গমনের জন্য হজযাত্রীদের ধর্ম মন্ত্রণালয় নিয়ন্ত্রিত সার্ভারে নির্দিষ্ট তথ্য পূরণ ও ফি প্রদান সপেক্ষে প্রাক-নিবন্ধন করতে হয়। এখান থেকেই বছরে সৌদি সরকার থেকে প্রাপ্ত কোটা অনুযায়ী হজযাত্রীদের ক্রমিক সংখ্যা অনুয়ায়ী হজের মূল নিবন্ধনের জন্য মনোনীত করা হয়। ২০১৯ সালে এক লাখ ২৭ হাজার ১৫২ জন হজপালন করেন। এ বছর সৌদি আরব কর্তৃক বাংলাদেশের জন্য হজের কোটা ছিল ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জনের।

২০২০ সালে হজপালনের জন্য এ পর্যন্ত প্রাক-নিবন্ধন সম্পন্ন করেছেন বেসরকারি ব্যবস্থাপনার সংখ্যা ২ লাখ ২ হাজার ৬৮৭ জন এবং সরকারি ব্যবস্থাপনার ৪ হাজার ৩৭১ জন। এখান থেকে ১ ডিসেম্বর সৌদি আরবের সঙ্গে দ্বি-পাক্ষিক হজ চুক্তির পর জানা যাবে কতজন হজপালন করার সুযোগ পাবেন। এটা নিয়ে হজযাত্রীদের মাঝে এক ধরনের উদ্বেগ রয়েছে। এই উদ্বেগের মধ্যেই দীর্ঘ এক মাস নিবন্ধনের সার্ভার বন্ধ রাখার ঘোষণা এলো।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞপ্তিতে প্রাক-নিবন্ধন সার্ভার বন্ধের কারণ হিসেবে জানানো হয়, বিদ্যমান আইটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ায় নতুন আইটি প্রতিষ্ঠান নিয়োগের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এমতাবস্থায় উল্লিখিত সময় পর্যন্ত সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজযাত্রী প্রাক-নিবন্ধন কার্যক্রম সাময়িকভাবে স্থগিত থাকবে।

এ দিকে গত ৩১ অক্টোবর ই-হজ ব্যবস্থাপনার আইটি ফার্ম নিয়োগের জন্য টেন্ডার আহ্বান করা হয়। টেন্ডার জমার শেষ সময় আগামী ২৪ নভেম্বর। এত দিন বিজনেস অটোমেশন নামে একটি আইটি ফার্ম ই-হজ ব্যবস্থাপনা সম্পর্কিত আইটি কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিল।

সৌদি সরকারের নিয়ম অনুয়ায়ী কয়েক বছর ধরেই হজযাত্রীদের নিবন্ধন থেকে শুরু করে প্রায় সব কার্যক্রম ই-হজ সিস্টেমে পরিচালিত হয়ে আসছে।

এই ই-হজ ব্যবস্থাপনার আওতায় চলতি বছর প্রায় ৬০ হাজার হজযাত্রীর প্রি-অ্যারাইভাল ইমিগ্রেশন (সৌদি আরবে পৌঁছার পরের ইমিগ্রেশন) ঢাকায় সম্পন্ন হয়। আগামী বছর এই সংখ্যা আরও বৃদ্ধির কথা জানিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।

বাংলাদেশের হজযাত্রী বেড়ে যাওয়া ও সৌদি ‘ই-হজ সিস্টেম’-এর সঙ্গে সমন্বয়ের জন্য হজযাত্রীদের জন্য প্রাক-নিবন্ধন পদ্ধতি চালু করা হয়েছে। বেশ কয়েক বছর ধরে এই পদ্ধতি চলে আসছে। সরকারিভাবে হজ গমনেচ্ছুদের প্রাক-নিবন্ধনের কাজ নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা জমা দিয়ে ইউনিয়ন তথ্যসেবা কেন্দ্র, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কার্যালয় ও হজ অফিস আশকোনায় সম্পন্ন করা যায়।

আর বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ গমনেচ্ছুদের নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা জমা দিয়ে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদিত বৈধ হজ এজেন্সির মাধ্যমে প্রাক-নিবন্ধন সম্পন্ন করতে হয়।

প্রাক-নিবন্ধনের পর হজযাত্রীকে একটি সিরিয়াল নম্বর দেওয়া হয়। ওই নম্বর হিসেবে পরে চূড়ান্ত নিবন্ধন সম্পন্ন করে হজে যাওয়ার প্রক্রিয়া শেষ করতে হয়।

প্রাক-নিবন্ধন সার্ভার বন্ধ থাকা নিয়ে হজ এজেন্সির মালিকদের মধ্যেও ক্ষোভ দেখা গেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক এজেন্সির মালিক বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, প্রথমে ই-হজ ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম হালনাগাদ করার জন্য ১ নভেম্বর ২০১৯ থেকে ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত প্রাক-নিবন্ধন কার্যক্রম স্থগিত রাখা হয়। এর পর আবার আইটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি শেষ বলে ১৭ নভেম্বর থেকে ১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রাক-নিবন্ধনের বিষয়ে ঘোষণা দেওয়া হলো। এতে হজ গমনেচ্ছুদের মাঝে একটা উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। এমনিতেই হজের কোটা পূরণ হয়ে গেছে, সেখানে নিবন্ধনটুকু করতে না পেরে অনেকে হতাশ। সাময়িক অসুবিধার জন্য ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় আন্তরিকভাবে দুঃখিত বলেই দায় এড়াতে পারে না। আইটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি শেষ হওয়ার আগে থেকে কেন উদ্যোগ নেওয়া হলো না নতুন প্রতিষ্ঠান নিয়োগ কিংবা তাদের সঙ্গে চুক্তির বাড়ানোর। এটা স্পষ্ট খামখেয়ালি।

বিজ্ঞপ্তিটি দেখতে ক্লিক করুন