হজ স্থগিত নাকি সীমিত পরিসরে?



মুফতি এনায়েতুল্লাহ, বিভাগীয় প্রধান, ইসলাম
মানুষশূন্য কাবা চত্বর, ছবি: সংগৃহীত

মানুষশূন্য কাবা চত্বর, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

প্রথমেই বলে রাখি, এখন শাবান মাস, এরপর রমজান, শাওয়াল, জিলকদ ও জিলহজ মা। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ১০ জিলহজ অর্থাৎ ৩০ জুলাই হজের সম্ভাব্য তারিখ মনে করা হচ্ছে।

সে হিসেবে হজের আরও চার মাস সময় বাকি। তবে হজপালনের জন্য বিভিন্ন দেশে থেকে মুসল্লিরা সাধারণত জিলকদ মাসের শুরু থেকেই সৌদি আরব আসতে শুরু করেন। কিন্তু হজের প্রস্তুতি নিতে হয় আরও আগে থেকেই। প্রতিবছর সারা বিশ্ব থেকে ২০ লাখের বেশি মুসলমান হজপালন করতে সৌদি আরব যান।

করোনা পরিস্থিতির কারণে এবারের হজ কী হবে- এটা নিয়ে নানা ধরনের জল্পনা-কল্পনার মাঝে সৌদি আরবের হজ ও উমরা বিষয়ক মন্ত্রী মোহাম্মদ সালেহ বিন তাহের বেনতেন বুধবার (১ মার্চ) বলেছেন, ‘পরিস্থিতি স্পষ্ট না হওয়া পর্যন্ত হজের বিষয়ে কোনো চুক্তিতে না যেতে আমরা সব দেশের মুসলিম ভাইদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’

সৌদি মন্ত্রীর দেওয়া এমন বক্তব্য পর্যালোচনা করে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান বলছে, বাতিল হতে পারে এ বছরের হজ। কারণ, করোনা পরিস্থিতির কারণে ফেব্রুয়ারি মাসের শেষের দিকে উমরা স্থগিত করা হয়। পরে পবিত্র নগরী মক্কা ও মদিনা লকডাউন ঘোষণার পাশাপাশি কারফিউ জারি করা হয়েছে। এসব পদক্ষেপের কারণে এ বছরের হজ নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। অন্যদিকে বিশ্বকে তটস্থ করে ফেলা করোনা খুব সহসা দূর হবে এমন আভাস দিতে পারছে না কেউ। সব মিলিয়ে একটি গুমোট পরিবেশ বিরাজমান।

হজ ফরজ ইবাদত
হজ ফরজ ইবাদত, অন্যতম শ্রেষ্ঠ ইবাদত। ইসলামের পাঁচ স্তম্ভের মধ্যে পঞ্চম। মুসলমানমাত্রই বায়তুল্লাহ তথা আল্লাহর ঘর কাবা নিজ চোখে দেখা এবং সেই ঘর তাওয়াফের তীব্র বাসনা পোষণ করেন, হজপালনের আকাঙ্খা লালন করেন। ইসলামি বিধানমতে, হজ ফরজ হওয়ার জন্য পাঁচটি শর্ত রয়েছে। এক. মুসলিম হওয়া, দুই. বিবেকবান হওয়া, তিন. প্রাপ্তবয়স্ক হওয়া, চার. স্বাধীন হওয়া ও পাঁচ. হজ আদায় করার সামর্থ্য থাকা।

ইসলামি চিন্তাবিদদের মতে, এ সামর্থ্য তিনটি শর্তযুক্ত, এক দৈহিক সামর্থ্য অর্থাৎ কাবা শরিফ পর্যন্ত সফর করার শারিরীক যোগ্যতা, চলাফেরায় অক্ষম লোকের ওপর হজ ফরজ নয়। এমন ব্যক্তির আর্থিক সামর্থ্য থাকলে বদলি হজ করানো ওয়াজিব। দুই, আর্থিক সামর্থ্য অর্থাৎ পরিবার-পরিজনের ভরণপোষণ নিশ্চিত করে কোনো ব্যক্তির নিকট হজে যাওয়া-আসা ও পাথেয় খরচ থাকলে তার ওপর হজ ফরজ হবে। তিন, নিরাপত্তা অর্থাৎ যাতায়াতের পথ নিরাপদ থাকা এবং রাষ্ট্রীয় নিষেধাজ্ঞা না থাকা। কোনো ব্যক্তির জীবনের কোনো একটি বছরে উপরোক্ত শর্তগুলোর সমন্বয় ঘটলে তার ওপর পবিত্র হজ ফরজ।

ব্যাপকভাবে মসজিদে হারামে জামাত বন্ধ, তবে সীমিত আকারে এখনও জামাতে নামাজ চলছে, ছবি: সংগৃহীত

মহামারির মতো পরিস্থিতিতে হজপালন প্রসঙ্গে ইসলামের বিধান
হজ ফরজের শেষ অংশ নিরাপত্তা অর্থাৎ যাতায়াতের পথ নিরাপদ থাকা এবং রাষ্ট্রীয় নিষেধাজ্ঞা না থাকার কথা উল্লেখ করে অনেকে বলতে চাচ্ছেন, করোনা পরিস্থিতির কারণে সৌদি আরব এবারের হজ স্থগিত রাখতে পারে। কিংবা যাবতীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করে সীমিত পরিসরে শুধুমাত্র সৌদি আরবের নাগরিকদের জন্য হজপালনের অনুমতি দিতে পারে।

আমাদের প্রত্যাশা হলো- হজের আগেই করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাক। এখনও যেহেতু সময় আছে, হজ স্থগিত হবে এমন কথা না বলাই ভালো। হজের প্রস্তুতি চলতে থাকুক। তবে মহামারি আক্রান্ত এলাকা থেকে অন্য এলাকায় এবং আক্রান্ত এলাকায় না যাওয়ার ব্যাপারে হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাদিসে স্পষ্টভাবে বলেছেন। এই হাদিসের আলোকে করোনার মতো বৈশ্বিক মহামারির কারণে সৌদি সরকার হজযাত্রীদের সৌদিতে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিতে পারেন। এমন অবকাশ আছে। তাছাড়া হজ জীবনে একবার ফরজ। আর্থিকভাবে সামর্থ্যবান হওয়ার পর ব্যক্তির ওপর ফরজ হয়। এবার যদি কেউ ফরজ ইবাদতটি পালন করতে না পারেন, পরের বছর আদায় করবেন। এর মধ্যে কারও মৃত্যু হয়ে গেলে- তিনি উত্তরাধিকারীদের কাছে হজের জন্য অসিয়ত করে যাবেন এবং সে অনুযায়ী পরবর্তীতে সেটি পালন করলে আদায় হয়ে যাবে। ইসলামি শরিয়ত এর অনুমোদন দেয়।

অন্যদিকে হজপালনের পথ ও স্থান নিরাপদ না হলে, জীবনহানি, রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কিংবা শত্রু দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার ভয় থাকলে হজ বিলম্বিত করায় কেউ গোনাহগার হবেন না।

অতীতে হজ স্থগিতের নজির রয়েছে
মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক বিভিন্ন গণমাধ্যমে বলা হচ্ছে, ইতোমধ্যে সৌদি সরকার তাদের গ্র্যান্ড ফতোয়াবোর্ডসহ বিশ্বের বিভিন্ন ফতোয়াবোর্ড ও ইসলামি বিশেষজ্ঞদের মতামত নিচ্ছে। কারণ মহামারি, যুদ্ধ পরিস্থিত ও সংঘাতে কারণে হজ স্থগিত রাখা কিংবা সীমিত আকারে পালনের নজির রয়েছে। লন্ডনের কিংস কলেজের ওয়ার স্টাডিজের লেকচারার সিরাজ মাহের গার্ডিয়ানকে বলেছেন, অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে- সৌদি কর্তৃপক্ষ মানুষকে মানসিকভাবে প্রস্তুত করছে যে এবারের হজ বাতিল হতে পারে। চলতি মহামারির কারণ তো আরও প্রকট।

সম্প্রতি ‘দ্য নিউ আরব’-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়, সৌদি আরবে উমরা বন্ধ করা এবং করোনাভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে হজের সময় কী হবে তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিচ্ছে। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব কমার কোনো লক্ষণ এখনও নেই। ফলে অনেকে হজ বাতিলের আশঙ্কা করছেন।

সৌদি কিং আবদুল আজিজ ফাউন্ডেশন ফর রিসার্চ অ্যান্ড আর্কাইভস ইতিহাসে ৪০ বার হজ বাতিল করা হয়েছিল বা হজযাত্রীর সংখ্যা অত্যন্ত কম ছিল উল্লেখ করে একটি বিবৃতি প্রকাশ করেছে উল্লেখ করে সংবাদমাধ্যমটির ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ইসলামের ইতিহাসে এর আগেও বহুবার রোগ, যুদ্ধ, সংঘাত, দস্যু ও আক্রমণকারীদের তৎপরতাসহ নানাবিধ কারণে হজ বাতিল করা হয়েছে। সে হিসেবে চলমান পরিস্থিতিতে মানুষের আশঙ্কা একেবারেই অমূলক নয়।

হিজরতের নবম বছরে হজ পালন ফরজ ইবাদত হিসেবে ঘোষিত হওয়ার পর থেকে এ যাবৎ আংশিক বা সম্পূর্ণরূপে ৪০ বার হজ স্থগিত হয়েছিল। তন্মধ্যে ১২ বার স্থগিত করা হয়েছিল সম্পূর্ণরূপে। তবে ১৯৩২ সালের পর পুরোপুরি হজ বন্ধ থাকার কোনো নজীর নেই।

আরাফার ময়দানে ইবাদত-বন্দেগিতে মশগুল হাজিরা, ছবি: সংগৃহীত

সীমিত পরিসরে হজ আয়োজন হতে পারে
মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক বিভিন্ন গণমাধ্যমে বলা হচ্ছে, ইতোমধ্যে সৌদি সরকার তাদের গ্র্যান্ড মুফতি, ফতোয়াবোর্ডসহ বিশ্বের বিভিন্ন ফতোয়াবোর্ড ও ইসলামি বিশেষজ্ঞদের মতামত নিচ্ছেন। প্রয়োজনে তারা ওআইসিসহ প্রভাবশালী মুসলিম দেশ ও সংগঠনগুলোর কাছে পরামর্শ চাইতে পারে। মহামারি, যুদ্ধ পরিস্থিত ও সংঘাতের কারণে হজ স্থগিত রাখা কিংবা সীমিত আকারে পালনের নজির থাকলেও সৌদি আরব একক সিদ্ধান্তে হজ স্থগিতের ঘোষণা দিয়ে সমালোচনার শিকার হতে চায় না। কারণ এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে মুসলমানদের আবেগ-অনুভূতির বিষয়।

এ ছাড়া হজ বন্ধের ঘোষণা দেওয়ার আগে সৌদি আরব চিন্তা করতে তাদের অর্থনৈতিক আয়ের বিষয়টিও। অপরিশোধিত তেল বিক্রি করে সৌদি আরবের যা রোজগার হয়, তার থেকেও বেশি আয় করে তারা হজ থেকে। সৌদি সরকারের ভিশন-২০৩০ এর অন্যতম লক্ষ্য হলো- বছরে ১ কোটি উমরা ভিসা ও হজযাত্রীর সংখ্যা ৫০ লাখে উন্নীত করা। এ পথেই হাঁটছে দেশটি। যে কারণে দেখা যাচ্ছে, চলতি বছর উমরা ভিসা চালুর প্রথম চার মাসে দেশটি ২২ লাখ উমরা ভিসা ইস্যু করে। এমনিতে ১ মাসের বেশি সময় ধরে উমরা বন্ধ, কবে চালু হবে সেটা অনিশ্চিত। এমতবস্থায় হুট করে তারা হজ বন্ধের সিদ্ধান্ত নেবে বলে মনে হয় না। সব কিছুই অস্পষ্ট।

এই পরিস্থিতিতে সৌদি হজ মন্ত্রীর ‘হজ পালনেচ্ছুকদের করোনা মহামারি নিয়ন্ত্রণে না আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে বলা’ বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। এর সৌদি হজ ও উমরা মন্ত্রণালয় এক চিঠিতে পরবর্তী ঘোষণার আগ পর্যন্ত হজের অত্যাবশ্যকীয় সকল কাজ বন্ধ রাখার জন্য অনুরোধ করেছে। এই চিঠি হজে অংশগ্রহণকারী সব দেশকেই দেওয়া হয়েছে।

তাই অনেকে মনে করছেন, হজের আগে সৌদি আরবের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে এলেও বিশ্ব পরিস্থিতির উল্লেখযোগ্য উন্নতি না হলে সীমিত আকারে অভ্যন্তরীণভাবে হজ কার্যক্রম চালু রাখা হতে পারে। আর সৌদিতে করোনা পরিস্থিতির উল্লেখযোগ্য উন্নতি না হলে উমরার মতো এ বছরের হজকার্যক্রম সম্পূর্ণ বন্ধ রাখার ঘোষণা দেওয়া হতে পারে। তবে একথা এখনও জোর দিয়ে বলার সময় হয়নি।

বেশ কয়েকজন প্রবাসীর অভিমত- সৌদি সরকার এখন ভাইরাসে বিস্তার রোধে বেশি নজর দিচ্ছেন। সৌদিতে কারফিউ জারি, লকডাউন, মসজিদের জামাত, অফিস-আদালত, গাড়ি চলাচল ও উমরা বন্ধ করে দেওয়া তারই অংশ।

তাদের মতে, সময়ের হিসেবে এবার হজ মৌসুমে সৌদি আরবের তাপমাত্রা ৪৫ থেকে ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত হতে পারে। প্রচণ্ড গরমের কারণে তখন করোনা বিস্তারের আশঙ্কা কম। ততদিন পর্যন্ত পরিস্থিতি সৌদি আরবে নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে। তবে বহির্বিশ্বে করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না এলে বাইরের লোকদের সৌদি আরবে প্রবেশের অনুমতি সৌদি সরকার কোনোভাবেই দেবে না। সেক্ষেত্রে বাইরের লোকদের জন্য হজ বন্ধ রেখে সৌদি আরবের বাসিন্দাদের জন্য সীমিত আকারে হজের অনুমতি দেওয়া হতে পারে।

তবে এটা বলা যায়, সৌদিতে করোনা যেভাবে ছড়াচ্ছে তাতে আসন্ন রমজানে মসজিদে হারাম ও মসজিদে নববীতে ইতেকাফসহ উমরার অনুমতি দেওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ। আর তারাবি জামাতও সীমিত করা হতে পারে।

   

ঈমানের স্বাদ ও মিষ্টতা কী?



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ঈমানের স্বাদ সবাই আস্বাদন করতে পারে না, ছবি : সংগৃহীত

ঈমানের স্বাদ সবাই আস্বাদন করতে পারে না, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

হজরত উমর ইবনুল খাত্তাব (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে এসেছে, হজরত জিবরাইল (আ.) রাসুলে কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞাসা করলেন, এবার আমাকে ঈমান সম্পর্কে বলুন, রাসুল (সা.) বললেন, ‘ঈমান হলো, তুমি ঈমান রাখবে আল্লাহর প্রতি, তার (আল্লাহর) ফেরেশতাদের প্রতি, তার কিতাবসমূহের প্রতি, তার রাসুলদের প্রতি এবং শেষ দিবসের (কেয়ামত) প্রতি। (এবং) তুমি ঈমান রাখবে তাককিরের ভালো-মন্দের প্রতি।’ হজরত জিবরাইল (আ.) বললেন, আপনি সত্য বলেছেন। -সহিহ মুসলিম : ৮

ঈমানের স্বাদ
হজরত আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি নবী কারিম (সা.)-কে বলতে শুনেছেন, ঈমানের স্বাদ আস্বাদন করবে ওই ব্যক্তি, যে আল্লাহকে রবরূপে, ইসলামকে দ্বীনরূপে এবং মুহাম্মাদ (সা.)-কে রাসুলরূপে সন্তুষ্টচিত্তে গ্রহণ করবে। -সহিহ মুসলিম : ৩৪

সুস্বাদু খাদ্যের স্বাদ সেই বুঝতে পারে যার জিহ্বায় স্বাদ আছে। রোগ-ব্যাধির কারণে নষ্ট হয়ে যায়নি। তদ্রূপ ঈমান ও যাবতীয় আমলের স্বাদও ওই খোশনসিব ব্যক্তিই অনুভব করে, যে সম্পূর্ণ সন্তুষ্টিচিত্তে ও সর্বান্তকরণে আল্লাহকে রব ও পরওয়ারদিগার এবং মুহাম্মদ (সা.)-কে রাসুল ও আদর্শ এবং ইসলামকে পূর্ণাঙ্গ দ্বীন ও জীবন ব্যবস্থা হিসেবে গ্রহণ করে।

আল্লাহতায়ালা, নবী মুহাম্মদ (সা.) ও ইসলামের সঙ্গে যার সম্পর্ক কেবলই বংশগত ও প্রথাগত বা কেবলই চিন্তাগত ও বুদ্ধিগত পর্যায়েই নয় বরং সে আল্লাহর বন্দেগি, মুহাম্মদ (সা.)-এর আনুগত্য এবং ইসলামের অনুসরণকে মনেপ্রাণে নিজের জীবনে গ্রহণ করে নেবে। সেই ঈমানের স্বাদ আস্বাদন করতে পারবে। -মাআরিফুল হাদিস : ১/৯১

ঈমানের মিষ্টতা
হজরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী কারিম (সা.) বলেছেন, তিনটি গুণ যার মধ্যে থাকবে সে ঈমানের মিষ্টতা অনুভব করবে। আল্লাহ ও তার রাসুল তার কাছে সবকিছু থেকে অধিক প্রিয় হওয়া, কাউকে ভালোবাসলে শুধু আল্লাহরই জন্য ভালোবাসা, আর কুফুরিতে ফিরে যাওয়াকে এমন ঘৃণা করা, যেমন সে ঘৃণা করে আগুনে নিক্ষিপ্ত হওয়াকে। -সহিহ বোখারি : ১৬

এই হাদিসের বিষয়বস্তুও আগের হাদিসের বিষয়বস্তুর প্রায় কাছাকাছি। উপস্থাপনায় কিছুটা ভিন্নতা রয়েছে। এই হাদিসে বলা হচ্ছে, ঈমানের মিষ্টতা ওই ব্যক্তিই অনুভব করতে পারবে, যে আল্লাহ ও তার রাসুলের ভালোবাসায় পরিপূর্ণ সমর্পিত থাকবে; আল্লাহ ও তার রাসুলকে জগতের সবকিছু থেকে বেশি ভালোবাসবে। অন্য কারও প্রতি যদি তার ভালোবাসা হয়, তা হবে সম্পূর্ণ এই ভালোবাসার অধীন। আর ইসলাম তার এতই প্রিয় যে, ইসলাম থেকে ফিরে যাওয়া, কুফুরিতে লিপ্ত হওয়া তার কাছে আগুনে নিক্ষিপ্ত হওয়ার সমতুল্য। -মাআরিফুল হাদিস : ১/৯১

;

মসজিদ নির্মাণ করবে দাউদ কিম

কোরিয়ার প্রতিটি গলি থেকে ভেসে আসবে আজানের সুর



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
জমি কেনার দলিল হাতে দাউদ কিম, ছবি : সংগৃহীত

জমি কেনার দলিল হাতে দাউদ কিম, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

কয়েক বছর আগে ইসলাম ধর্ম গ্রহণকারী দক্ষিণ কোরিয়ান ইউটিউবার দাউদ কিম মসজিদ নির্মাণের ঘোষণা দিয়েছেন। এরই মধ্যে মসজিদের জন্য জমিও কিনেছেন তিনি। ইনস্টাগ্রামে ওই জমি ও তার দলিলের ছবি শেয়ার করেছেন দক্ষিণ কোরিয়ার নাগরিক এই নওমুসলিম। তিনি দেশটির ইঞ্চোন শহরে মসজিদটি নির্মাণ করবেন বলে আশা প্রকাশ করেছেন।

ইনস্টাগ্রামে কিম লিখেছেন, ‘অবশেষে আপনাদের সাহায্যে আমি ইঞ্চোনে মসজিদ নির্মাণের জন্য জমি ক্রয়ের চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছি। খুব শিগগিরই জায়গাটিতে মসজিদ নির্মিত হবে। আমি বিশ্বাস করতে পারছি না আমার এই স্বপ্ন পূরণ হচ্ছে।’

ওই পোস্টে তিনি আরও লেখেন, ‘ওই জমিতে মসজিদের পাশাপাশি একটি ইসলামিক পডকাস্ট স্টুডিও তৈরির ইচ্ছা আমার। সত্যি এটি একটি দুঃসাহসিক পদক্ষেপ, এতে বহু সমস্যার সম্মুখীন হওয়া লাগতে পারে। তবে আমার বিশ্বাস- আমি এগুলো সম্পন্ন করতে সক্ষম হব।’

দাউদ কিম আশাবাদ ব্যক্ত করে লিখেছেন যে, ‘এমন একটি দিন আসবে, যেদিন কোরিয়ার প্রতিটি গলি আজানের সুমধুর ধ্বনিতে ভরে উঠবে। এ জন্য আমি চেষ্টা করে যাচ্ছি।’

কিম ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে ইসলাম গ্রহণের ঘোষণা দেন। এরপর ইউটিউবসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে তিনি সারাবিশ্বে বিখ্যাত বনে যান। জনপ্রিয় এই ইউটিউবার তার নিয়মিত ব্লগে ইসলামিক বিভিন্ন কনটেন্ট, নামাজ পড়ার ভিডিওসহ নানা কিছুই পোস্ট করে থাকেন। ২০২২ সালে কিম বাংলাদেশ ভ্রমণ করেন। বাংলাদেশ ঘুরে তিনি পবিত্র উমরা পালন করতে সৌদি আরব যান।

দক্ষিণ কোরিয়ার এই গায়ক ইউটিউবিং করতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ঘুরে বেড়ান। ঘুরতে ঘুরতে তিনি ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া ও তিউনিশিয়া যান। দেশগুলোতে গিয়ে ইসলাম ধর্মকে কাছ থেকে দেখে ও বুঝে তিনি আকৃষ্ট হন। ইসলামের জীবনবিধান দেখে তিনি অনুপ্রাণিত হন। ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে পুরোপুরি মুসলমান হয়ে যান।

দক্ষিণ কোরিয়া উত্তর-পূর্ব এশিয়ার একটি দেশ। যা কোরিয় উপদ্বীপের দক্ষিণ অংশ নিয়ে গঠিত। সিউল দক্ষিণ কোরিয়ার বৃহত্তম শহর ও রাজধানী। সিউল বিশ্বের শীর্ষ ১০টি ধনী শহরের তালিকায় থাকা একটি শহর।

দক্ষিণ কোরিয়ায় ইসলামের উপস্থিতি খুবই সামান্য। ২০০৫ সালেও দেশটির আদমশুমারিতে মুসলিমদের কোনো বিভাগের সদস্য হিসেবে ধরা হত না। বর্তমানে দেশটিতে ২ লাখ মুসলিম রয়েছে, যাদের বেশিরভাগ বিভিন্ন মুসলিম প্রধান দেশ থেকে আসা অভিবাসী এবং কিছু ধর্মান্তরিত বাসিন্দা। দেশটিতে ২১টি মসজিদ, ১৩টি ইসলামিক সেন্টার ও ১৪০টির মতো নামাজের স্থান রয়েছে।

১৯৬৯ সালে কোরিয়ান সরকার প্রদত্ত জমিতে গড়ে ওঠে সিউল কেন্দ্রীয় মসজিদ ও ইসলামিক সেন্টার। সিউল সেন্ট্রাল মসজিদ দক্ষিণ কোরিয়ার প্রথম মসজিদ। যা হেনামডং সিউলে অবস্থিত। মসজিদটি ইতিমধ্যে বিশ্বের অনন্য সুন্দর মসজিদ হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেছে।

;

তীব্র গরম মুমিনকে যা শিক্ষা দেয়



মাওলানা ফখরুল ইসলাম, অতিথি লেখক, ইসলাম
গরম থেকে বাঁচতে ফুটপাতের এক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী মাথায় পানি দিচ্ছেন, ছবি : রাজু আহমেদ

গরম থেকে বাঁচতে ফুটপাতের এক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী মাথায় পানি দিচ্ছেন, ছবি : রাজু আহমেদ

  • Font increase
  • Font Decrease

বাংলাদেশে এখন চলছে গ্রীষ্মকাল। ফলে তীব্র গরম অনুভূত হচ্ছে। বস্তুত শীত, গরম, রোদ, বৃষ্টি সবই আল্লাহর দেওয়া। তীব্র শীত আর প্রচণ্ড গরমে রয়েছে মুমিনে জন্য শিক্ষা। জনজীবন অতিষ্ট হওয়া গরম আমাদেরকে স্মরণ করিয়ে দেয় সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর আজাবের কথা। তাই তীব্র তাপদাহের সময় দয়াময় আল্লাহতায়ালার কাছে বেশি বেশি তওবা-ইস্তেগফার করা জরুরি।

পৃথিবীতে ইসলামই একমাত্র ধর্ম, যেখানে মানবতার কল্যাণ সাধনকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হয়। ফলে তীব্র গরমের সময় ইবাদত-বন্দেগি সহজ করেছে ইসলাম। হজরত আবু জার (রা.) বলেন, এক সফরে আমরা আল্লাহর রাসুল (সা.)-এর সঙ্গে ছিলাম।
এক সময় মোয়াজ্জিন জোহরের আজান দিতে চেয়েছিল। তখন নবী কারিম (সা.) বলেন, গরম কমতে দাও। কিছুক্ষণ পর আবার মোয়াজ্জিন আজান দিতে চাইলে নবী কারিম (সা.) পুনরায় বলেন, গরম কমতে দাও।
এভাবে তিনি (নামাজ আদায়ে) এত বিলম্ব করলেন যে, আমরা টিলাগুলোর ছায়া দেখতে পেলাম।
এরপর নবী কারিম (সা.) বলেন, গরমের প্রচণ্ডতা জাহান্নামের উত্তাপ হতে। কাজেই গরম প্রচণ্ড হলে উত্তাপ কমার পর নামাজ আদায় করো। -সহিহ বোখারি : ৫৩৯
বর্ণিত হাদিসের আলোকে বিধান হলো, অতীব গরমের সময় কিছুটা বিলম্ব করে জোহরের নামাজ আদায় করা সুন্নত।

গরমের সময় এমন কিছু আমল রয়েছে, যেগুলোর সওয়াব অনেক। একজন মুমিন সেসব আমল করে সহজেই আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করতে পারেন। ওই সব আমলের কয়েকটি হলো-

নফল রোজা
গরমের রোজা শীতের থেকে বেশি কষ্টকর। গরমের কষ্ট উপেক্ষা করে যদি নফল রোজা রাখা যায়, তাহলে আল্লাহতায়ালা বেশি নেকি দেবেন। সাহাবায়ে কেরাম ও পূর্ববর্তী বুজুর্গরা বেশি সওয়াবের আশায় গরমকালে রোজা রাখতেন।

পিপাসার্তকে পানি পান করানো
পিপাসার্তকে পানি পান করানো একটি উত্তম কাজ। আর যদি প্রচণ্ড গরমে কাউকে ঠাণ্ডা পানি পান করানো হয়, তাহলে তো কাজটি আরও উত্তম হবে। এক ব্যক্তি হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে প্রশ্ন করলেন, ‘কোন দান উত্তম? তিনি বললেন, ‘পানি পান করানো।’ -সুনানে নাসাই : ৫৪৫৬
ইমাম কুরতুবি (রহ.) বলেন, ‘তৃষ্ণার্তের তৃষ্ণা নিবারণ সর্বোত্তম মহৎ কাজের একটি।’
হাদিসের অন্য এক বর্ণনায় এসেছে, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘সদকা বা দান জাহান্নামের আগুন নির্বাপণ করে। আর পানি পান করানো উত্তম সদকা।’ -সুনানে আবু দাউদ : ৭৪৩৫

নফল নামাজ
অতিরিক্ত গরম হলো- জাহান্নামের নিশ্বাস, তাই জাহান্নামের ভয়ে বেশি করে এবং লম্বা লম্বা সুরা দিয়ে নফল নামাজ আদায় করা উত্তম। হাদিসে এসেছে, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যখন গরম বেশি পড়বে, তখন বেশি নামাজ আদায় করো। কারণ অতিরিক্ত গরম হলো- জাহান্নামের নিশ্বাস।’ -মেশকাত : ৫৯১

গরম থেকে শিক্ষা
গরমের তীব্রতা থেকে মুমিনের জন্য রয়েছে শিক্ষা। কেননা জাহান্নামের আগুনের উত্তাপ পৃথিবীর আগুনের চেয়ে ৭০ গুণ বেশি। তাই এ গরম থেকে জাহান্নামের তীব্রতা অনুমান করে গোনাহ থেকে মুক্ত থাকা। হাদিসে এসেছে, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘জাহান্নাম তার প্রতিপালকের কাছে এ বলে নালিশ করেছিল, হে আমার প্রতিপালক! (দহনের প্রচণ্ডতায়) আমার এক অংশ আরেক অংশকে গ্রাস করে ফেলছে। ফলে আল্লাহ তাকে দুইটি শ্বাস ফেলার অনুমতি দেন। একটি শীতকালে অপরটি গ্রীষ্মকালে। আর তাই তোমরা গ্রীষ্মকালে প্রচণ্ড উত্তাপ এবং শীতকালে তীব্র ঠাণ্ডা অনুভব করো।’ -সহিহ বোখারি : ৫৪৫৫

গ্রীষ্মকালকে গালমন্দ না করা
আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করার অন্যতম মাধ্যম হচ্ছে, গরিবদের মাঝে সুমিষ্ট ফল বিতরণ করা। ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্য করা। ঘামে ভেজা শরীরে জনসমাগমে গমন না করা। গরমের সময় প্রবাহিত ঘামের গন্ধ যেন অন্যের কষ্টের কারণ না হয়, সেদিকে দৃষ্টি রাখা। গ্রীষ্মকালকে গালমন্দ না করা বিষয়টিও খেয়াল রাখার নির্দেশ দেয় ইসলাম।

বৃষ্টির জন্য নামাজ
প্রচণ্ড গরমে একপশলা বৃষ্টির জন্য মুমিনরা আল্লাহর রহমতের প্রত্যাশী। শস্য ফলানোসহ পশুপাখির খাবারের জন্য যেমন বৃষ্টি দরকার, তেমনি তীব্র তাপদাহে সৃষ্ট নানা জটিলতা ও কষ্ট থেকে মুক্তি পেতেও আল্লাহর রহমতের বৃষ্টি খুব প্রয়োজন। এমন পরিস্থিতিতে দয়াময় আল্লাহতায়ালার দরবারে বৃষ্টি কামনা করে নামাজ পড়া ও দোয়া করা সুন্নত। পরিভাষায় এই নামাজের নাম ‘ইসতিসকা’ বা বৃষ্টির নামাজ।

ইসলামের শিক্ষা হলো- সর্বাবস্থায় বান্দা আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা আদায় করবে। প্রচণ্ড গরমের সময়ও এর ব্যতিক্রম নয়। তীব্র তাপদাহের সময় মানুষের উচিৎ জাহান্নামের গরমের কথা স্মরণ করা। জাহান্নাম থেকে বাঁচতে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষে আত্মনিয়োগ করা।

একটু শান্তির জন্য দুনিয়ার জীবনে গরমের কষ্ট ও তীব্রতা থেকে বাঁচার জন্য যদি আমরা সম্ভবপর সব উপায় অবলম্বন করতে পারি, তাহলে আখেরাতের আজাব ও ভয়াবহতা থেকে বাঁচার জন্য আমলদার এবং সাধনাকারী হওয়া জরুরি।

;

৪০ বছর ধরে মদিনায় বিনামূল্যে চা-কফি খাওয়ানো বৃদ্ধের মৃত্যু



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
চা-কফি নিয়ে বসে আছেন শায়খ ইসমাইল আল-জাইম আবু আল-সাবা, ছবি : সংগৃহীত

চা-কফি নিয়ে বসে আছেন শায়খ ইসমাইল আল-জাইম আবু আল-সাবা, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

পবিত্র মদিনা জিয়ারতকারীদের অনেকের কাছে পরিচিত নাম শায়খ ইসমাইল আল-জাইম আবু আল-সাবা। গত ৪০ বছর ধরে তিনি পবিত্র হজ-উমরা পালনকারীদের মাঝে বিনামূল্যে চা, কফি, রুটি ও খেজুর বিতরণ করেছেন। অনেক বাংলাদেশি হাজি তার হাতে চা-কফি পান করেছেন।

সদাহাস্য সিরিয়ান এই নাগরিক মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) ৯৬ বছর বয়সে মদিনায় ইন্তেকাল করেছেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে হারামাইনের খবর সরবরাহকারী ভেরিফায়েড পেইজ ‘ইনসাইড দ্য হারামাইন’ এই খবর জানিয়ে তার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছে।

জানা যায়, প্রতিদিন ৪০টি ফ্লাস্কে করে চা-কফি আনতেন তিনি। এ জন্য একটি বিশেষ ট্রলি ব্যবহার করতেন, মসজিদে নববিতে যাওয়া অন্যতম পথ জায়েদিয়া এলাকায় বসতেন তিনি। সবুজ চা, লাল চাসহ নানা স্বাদের চা বানিয়ে আনতেন। থাকত চিনিযুক্ত, চিনিমুক্ত চা-কফি। এছাড়া এলাচযুক্ত চা, পুদিনা চা, বিভিন্নরকমের মশলাযুক্ত চা আনতেন।

তিনি রাস্তার পাশে বসে পথচারীদের মধ্যে চা, কফি, খেজুর, রুটি ও বিস্কুট বিনামূল্যে বিতরণ করতেন। এই কাজে তাকে সহযোগিতা করতেন ছেলেরা। কেউ কিছু দিতে চাইলে বিনয়ের সঙ্গে প্রত্যাখান করতেন।

গত বছর সৌদি আরবের প্রভাবশালী পত্রিকা আল আরাবিয়া তাকে নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে।

সিরিয়ার নাগরিক শায়খ ইসমাইল প্রায় ৪০ বছর ধরে মদিনায় বসবাস করে আসছিলেন। মদিনার কুবা এভিনিউতে একটি সাধারণ বাড়িতে বসবাস করলেও নিজের সম্পদ পুরোটাই উৎসর্গ করেছিলেন হজ ও উমরা যাত্রীদের খেদমতে।

টানা চার দশক ধরে অনন্য এই সেবার কারণে সবার কাছে তিনি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার পাত্রে পরিণত হন। তার মৃত্যুতে মদিনায় শোকের ছায়া নেমে আসে। বাংলাদেশের অনেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্মৃতিচারণের পাশাপাশি শোকপ্রকাশ করে তার জন্য দোয়া কামনা করেছেন।

;