১৪ শর্তে মসজিদ খোলা রাখার আহ্বান আল্লামা শফীসহ শীর্ষ আলেমদের

  • ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

আল্লামা আহমদ শফী, ছবি: সংগৃহীত

আল্লামা আহমদ শফী, ছবি: সংগৃহীত

সুস্থদের জন্য মসজিদে জুমা, জামাত ও তারাবির নামাজ আদায়ের জন্য সকল মসজিদ খোলা রাখার আহ্বান জানিয়েছেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির আল্লামা আহমদ শফীসহ দেশের শীর্ষ আলেমরা।

মঙ্গলবার (২১ এপ্রিল) কওমি মাদরাসার সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা আল হাইয়াতুল উলইয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়া বাংলাদেশের প্যাডে সংস্থাটির অফিস সম্পাদক মু. অছিউর রহমান কর্তৃক পাঠানো বিবৃতিতে এ কথা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

পাঠানো বিবৃতিতে বলা হয়, রমজান মাস অত্যাসন্ন। এ মাস রহমত ও নাজাতের মাস। করোনাভাইরাসহ সমস্ত বালা-মসিবত থেকে মুক্তির জন্য এ মাসের সদ্ব্যবহার একান্ত জরুরি। তাই নিম্নোক্ত ১৪ শর্ত মেনে সরকারের প্রতি আল্লামা শাহ আহমদ শফী ও দেশের শীর্ষ আলেমরা সুস্থ ব্যক্তিদের জুমা, পাঁচ ওয়াক্তের জামাত ও তারাবি আদায়ের জন্য নামাজের সময় সব মসজিদ খোলা রাখার আহ্বান জানাচ্ছি।

হেফাজত আমিরের পক্ষ থেকে বিবৃতি দেওয়ার বিষয়টি বার্তা২৪.কমকে নিশ্চিত করেছেন আল্লামা শফীর ছেলে মাওলানা আনাস মাদানী।

বিজ্ঞাপন

যেসব শর্তপূরণ সাপেক্ষে মসজিদ খোলা রাখার আহ্বান জানানো হয়েছে-

১. মসজিদে কার্পেট, জায়নামাজ বা গালিচা বিছানো যাবে না।

২. জুমার বয়ান, খুতবা, জামাত ও দোয়া সংক্ষিপ্ত করা হবে এবং নামাজের আগে বা পরে মসজিদের ভেতরে বা সামনে জড়ো হওয়া যাবে না।

৩. পঞ্চাশোর্ধ বয়সের মুসল্লি এবং ১২-১৩ বছর পর্যন্ত বয়সের বালক মসজিদে আসবে না।

৪. যাদের সর্দি, জ্বর, কাশি, গলা ব্যথা ও শ্বাসকষ্ট আছে- যারা আক্রান্ত দেশ ও অঞ্চল থেকে এসেছেন কিংবা যারা উক্তরূপ মানুষের সংস্পর্শে গিয়েছেন তারা মসজিদে আসবে না।

৫. যারা বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত এবং যারা অসুস্থদের সেবায় নিয়োজিত তারা মসজিদে আসবেন না।

৬. যারা মসজিদে গিয়ে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা করেন তারাও আসবেন না।

৭. পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের পূর্বে সম্পূর্ণ মসজিদকে জীবাণুনাশক ইত্যাদি দিয়ে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করবে এবং অজুখানায় অবশ্যই সাবান ও পর্যাপ্ত টিস্যু রাখবে।

৮. মুসল্লিদের দু’জনের মাঝে অন্তত দুই ফুট পরিমাণ জায়গা ফাঁক রেখে দাঁড়াতে হবে।

৯. বাসা থেকে অজু করে যেতে হবে এবং হাত ও পা ভালোভাবে ধুয়ে মুছে যেতে হবে।

১০. বাধ্যতামূলকভাবে মাস্ক পরিধান করতে হবে। পরস্পর হাত মেলানো ও আলিঙ্গন থেকে বিরত থাকতে হবে।

১১. সম্মিলিত ইফতারের আয়োজন করা যাবে না।

১২. মুখে হাত দেওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।

১৩. ইমাম, মোয়াজ্জিন ও খাদেম সাহেবদের প্রশাসনের দায়িত্বরত ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে হবে।

১৪. বিষয়গুলোর প্রতি লক্ষ রাখার জন্য প্রতি মসজিদে একটি করে স্বেচ্ছাসেবক কমিটি গঠন করতে হবে।

বিবৃতিতে বলা হয়, এ সব বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে কিংবা কোনো এলাকায় আক্রান্ত সংখ্যা অস্বাভাবিক হয়ে গেলে প্রশাসন সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করতে পারবেন।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, করোনাভাইরাসের ক্রমবর্ধমান এই বিস্তার নিঃসন্দেহে মহান স্রষ্টার সীমাহীন ক্ষমতার বহিঃপ্রকাশ। এতে মানবজাতির জন্য বিরাট পরীক্ষা ও চিন্তার খোরাক রয়েছে; জ্ঞান-বিজ্ঞানের প্রভূত উন্নতি ও অগ্রগতি সত্ত্বেও মানুষ কত অসহায়! তাই মানবজাতির সর্বপ্রথম করণীয় হলো- নিজেদের অক্ষমতা প্রকাশ করে মহান মালিকের শ্রেষ্ঠত্ব ও বড়ত্ব স্বীকারপূর্বক তার শরণাপন্ন হওয়া এবং এই বিপদ থেকে মুক্তির জন্য সকাতর প্রার্থনা করা। একজন মুসলিমের জন্য এ অবস্থায় প্রধান করণীয় হলো- সকল প্রকার গোনাহ থেকে তওবা করে আল্লাহর দিকে ফিরে আসা এবং হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুন্নত মোতাবেক জীবনযাপন করা।

বিবৃতিদাতারা হলেন আল হাইয়াতুল উলইয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়া বাংলাদেশের চেয়ারম্যান আল্লামা শাহ আহমদ শফী, কো-চেয়ারম্যান মাওলানা আব্দুল কুদ্দুছ, মুফতি রুহুল আমীন, মাওলানা নূর হোসাইন কাসেমী, মুফতি মো. ওয়াক্কাস, মাওলানা মুহাম্মাদ নুরুল ইসলাম, মাওলানা মাহমুদুল হাসান, মাওলানা আতাউল্লাহ ইবনে হাফেজ্জী হুজুর, মাওলানা আব্দুল হামিদ (পীর সাহেব মধুপর), মাওলানা শামসুল হক, মাওলানা আব্দুল হালিম বোখারি, মাওলানা আবু তাহের নদভী, মুফতি শাসমুদ্দীন জিয়া, মাওলানা মুহিব্বুল হক, মাওলানা আব্দুল বাছীর, মুফতি আরশাদ রাহমানি, মাওলানা মাহমুদুল আলম, মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসউদ, মুফতি মোহাম্মাদ আলী, মাওলানা সাজিদুর রহমান, মুফতি ফয়জুল্লাহ, মাওলানা মুছলেহুদ্দীন রাজু, মুফতি মাহফুজুল হক, মুফতি জসিমুদ্দীন, মাওলানা আনাস মাদানি, মাওলানা আব্দুর রহমান হাফেজ্জী, মুফতি নূরুল আমীন, মাওলানা উবায়দুর রহমান মাহবুব, মাওলানা মোশতাক আহমদ, মাওলানা নূরুল হুদা ফয়েজী, মাওলানা বাহাউদ্দীন যাকারিয়া, মাওলানা ছফিউল্লাহ, মাওলানা মুহাম্মাদ ইসমাইল, মুফতি আব্দুল মালেক, মুফতি দেলোয়ার হুসাইন, মুফতি মিজানুর রহমান সাঈদ, মুফতি এনামুল হক, মাওলানা জুনায়েদ আল হাবিব, মুফতি মাহমুদুল হাসান, মাওলানা রিজওয়ান, মাওলানা আব্দুর রব ইউসুফি, মাওলানা মনজুরুল ইসলাম, মাওলানা মাসঊদুল করিম, মাওলানা মুফতি নাজমুল হাসান, মুফতি ইয়াহইয়া, মুফতি সাইফুল ইসলাম ও মাওলানা আবুল কালাম।