ইসলামে সংখ্যালঘুর অধিকার প্রতিষ্ঠিত বিষয়



ড. মাহফুজ পারভেজ, কন্ট্রিবিউটিং এডিটর, বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ধর্মীয়, জাতিগত, ভাষাগত সংখ্যালঘুর মানবাধিকারের দাবিতে সোচ্চার বিশ্ব সম্প্রদায় আইনগত ও সামরিক-বেসামরিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেও বিশ্বব্যাপী নিপীড়িত মানবতার আহাজারি থামাতে পারছে না। বরং ইসলামে সংখ্যালঘুর অধিকার সংরক্ষণের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত থাকার পরেও মুসলিমরাই হচ্ছে সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত। ‘ইসলামে সংখ্যালঘুর অধিকার’ সম্পর্কে ঐতিহাসিক পর্যালোচনা: পর্ব- ৭

অমুসলমান ও সংখ্যালঘুদের প্রতি ইসলামের সমানাধিকার, সম্মানজনক ও মর্যাদাপূর্ণ আচরণ, যা ধর্মীয় নৈতিকতা ও আদর্শিক বাধ্যবাধকতার মাধ্যমে আইনের ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত এবং ঐতিহাসিক ধারাবাহিকতায় সকল সময়ই প্রতিপালিত হয়েছে, তা আজকেও প্রতিটি মুসলিম রাষ্ট্র আর মুসলমান সম্মিলিতভাবে বিশ্বাস করেন এবং স্বীকৃতি প্রদান করেন। ১৯৯০ সালের ৩১ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট মিসরের রাজধানী কায়রোয় অনুষ্ঠিত ৬ দিনব্যাপী ঊনিশতম ইসলামিক কনফারেন্সে বিশ্বের বিভিন্ন মুসলিম দেশের প্রতিনিধিরা উপস্থিত হয়ে ২৫টি ধারা এবং ৩৭টি ঊপধারাবিশিষ্ট ‘ইসলামে মানবাধিকার সম্পর্কিত ঘোষণা’র কয়েকটি মৌলিক বিষয়ের প্রতি দৃষ্টি দেওয়া হলে ইসলামের সাম্যভিত্তিক সমঅধিকারের প্রসঙ্গটি সুস্পষ্ট হবে বলে বিশ্বাস করি, যেখানে মুসলমান-অমুসলমানের ওপর বিধানসমূহ সমভাবে প্রযোজ্য-

১. সমগ্র মানব জাতি এক পরিবার।
২. জাতি, গোত্র, বর্ণ, ভাষা, নারী, পুরুষ, ধর্মবিশ্বাস, রাজনৈতিক মতবাদ, সামাজিক অবস্থান বা অন্য কোনো বিবেচনায় মৌলিক মানবিক মর্যাদা, দায়িত্ব ও কর্তব্যের দিক থেকে সকল মানুষ সমান।
৩. প্রতিটি মানুষই আল্লাহর সৃষ্ট জীব।
৪. সে ব্যক্তিকে আল্লাহ সবচেয়ে বেশি পছন্দ করেন, যে আল্লাহর সৃষ্টি জগতের কল্যাণে নিয়োজিত।
৫. শুধুমাত্র তাকওয়া এবং সৎকর্মের ভিত্তিতে একজন মানুষ অন্যের চেয়ে শ্রেষ্ঠ হতে পারে।
৬. জীবন হলো আল্লাহপ্রদত্ত এক নিয়ামত।
৭. প্রত্যেক ব্যক্তিরই জীবন-ধারণের নিশ্চয়তা বিধানের অধিকার ইসলামে স্বীকৃত।
৮. প্রত্যেক ব্যক্তি, সমাজ ও রাষ্ট্রের কর্তব্য হলো- মানুষের জীবন-ধারনের অধিকারকে যে কোনো প্রকার অবমাননা থেকে রক্ষা করা।
৯. আইন-নির্দেশিত কোনো কারণ ও বিধান ছাড়া কাউকে হত্যা করা হারাম।
১০. এমন কোনো কাজ বা উপায় অবলম্বন করা নিষিদ্ধ, যা মানব জাতির ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

১১. স্রষ্টা কর্তৃক নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে কারও জীবন রক্ষা করা ইসলামী আইন নির্দেশিত একটি কর্তব্য। শারীরিক ক্ষতি বা নির্যাতন থেকে নিরাপত্তা পাওয়ার অধিকার সবার জন্যই সুরক্ষিত; এ নিশ্চয়তা বিধান করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব এবং আইন-নিদের্শিত কোনো কারণ ছাড়া এ অধিকার লঙ্ঘন করা নিষিদ্ধ।

১২. সামরিক অভিযান বা সশস্ত্র কোনো সংঘর্ষের সময় নির্দোষ ব্যক্তি, যেমন-বৃদ্ধ, নারী এবং শিশু হত্যা নিষিদ্ধ। আহত ও পীড়িত ব্যক্তির চিকিৎসা পাওয়ার অধিকার রয়েছে। যুদ্ধবন্দীদের অধিকার রয়েছে অন্ন-বস্ত্র-আশ্রয় পাওয়ার। মৃতদেহ বিকৃত করা অবৈধ। যুদ্ধবন্দী বিনিময় এবং যুদ্ধের ফলে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ বা পুর্নমিলনের ব্যবস্থা করে দেওয়া মানবিক কর্তব্য।

১৩. গাছপালা বিনাশ, শস্য ও প্রাণীর ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি সাধন, প্রাণহানিকর শেল নিক্ষেপ, বোমা বিস্ফোরণ বা অন্য কোনো প্রকারে শত্রুপক্ষীয় বেসামরিক সাধারণ মানুষের ঘর-বাড়ি ও সহায়-সম্পত্তির ক্ষতি সাধন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।

১৪. প্রত্যেক ব্যক্তি, জীবিত বা মৃত সকল অবস্থায়, পবিত্রতা রক্ষার অধিকারী এবং আপনাপন সুনাম ও মর্যাদা রক্ষার অধিকারী। রাষ্ট্র বা সমাজ পরিত্যাক্ত ধন-সম্পত্তি ও সমাধি রক্ষার দায়িত্ব পালন করবে।

১৫. সমাজের বুনিয়াদ হলো পরিবার এবং পরিবার গঠনের ভিত্তি হলো বৈবাহিক প্রথা। প্রত্যেক প্রাপ্ত বয়স্ক নারী-পুরুষের বিবাহ-বন্ধনে আবদ্ধ হওয়া অধিকার আছে। গোত্র, বর্ণ বা জাতীয়তার কারণে উদ্ভূত কোনো প্রতিবন্ধকতার জন্য তাদেরকে এ অধিকার ভোগ করা থেকে বঞ্চিত করা যাবে না।

১৬. সমাজ এবং রাষ্ট্র বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপনের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা দূর করার দায়িত্ব নেবে এবং বৈবাহিক প্রক্রিয়াকে সহজতর করে তুলবে। পরিবারের নিরাপত্তা বিধান এবং কল্যাণ সুনিশ্চিত করবে সমাজ ও রাষ্ট্র।

১৭. মর্যাদা এবং তা ভোগ করার অধিকার সংরক্ষণের পাশাপাশি কর্তব্য পালনের দিক থেকেও সকলের অধিকার সমান।
১৮. সন্তানের ভ্রুণ এবং সন্তানের মা, উভয়কে অবশ্যই নিরাপত্তা প্রদান করতে হবে এবং তাদের যথাযথ পরিচর্যার ব্যবস্থা করতে হবে।
১৯. মা-বাবা অথবা উপযুক্ত দায়িত্বপূর্ণ অভিভাবকের অধিকার রয়েছে তাদের শিশুদের জন্য যে কোনো প্রকার শিক্ষাদানের পদ্ধতি বেছে নেওয়ার।

২০. প্রতিটি মানুষ বাধ্যবাধকতা ও অঙ্গকারের ভিত্তিতে তার বৈধ ক্ষমতা উপভোগের অধিকার রাখে।
২১. কোনো রকম বল প্রয়োগ বা জোরজবরদস্তি অথবা কারো দারিদ্র্য বা অজ্ঞতার সুযোগ নিয়ে কাউকে ধর্মান্তরিত করা যাবে না।
২২. প্রতিটি মানুষ স্বাধীনসত্তা হিসাবে জন্মগ্রহণ করে। কাউকে দাসত্বে আনা, অবমাননা করা, শোষণ করা বা তাকে হীন উদ্দেশ্যে ব্যবহার করার অধিকার কারো নেই।

২৩. আইনের সীমারেখার মধ্যে প্রতিটি মানুষের স্বাধীনভাবে চলাফেরা, স্বদেশের সীমার ভেতরে বা বাইরে নিজ বাসস্থান নির্বাচনের অধিকার রয়েছে। অধিকার রয়েছে নির্যাতনের শিকার হলে অন্য রাষ্ট্রের কাছে আশ্রয় প্রার্থনার।

২৪. প্রতিটি কর্মক্ষম মানুষের জন্য কাজ পাওয়ার ও করার সমানাধিকার রাষ্ট্র-সমাজ কর্তৃক নিশ্চিত করতে হবে।
২৫. বৈধ উপায়ে প্রাপ্ত সম্পদ ভোগের অধিকার সমকলের জন্য সমানভাবে রয়েছে।
২৬. প্রত্যেকের স্ব স্ব বৈজ্ঞানিক গবেষণা, সাহিত্যকর্ম, শিল্পকর্ম বা প্রযুক্তিগত সৃজনশীলতার ফলাফল ভোগের অধিকার সবার রয়েছে এবং এ সব কর্ম থেকে উদ্ভূত নৈতিক ও বৈষয়িক স্বার্থসমূহ রক্ষার অধিকারও তাদের রয়েছে।

২৭. প্রত্যেকের পরিচ্ছন্ন পরিম-লে আত্মোন্নয়নের অনুকূল পরিবেশে বসবাসের অধিকার রয়েছে।
২৮. প্রত্যেকের সুচিকিৎসা ও সামাজিক সুবিধাদি ভোগ করার অধিকার রয়েছে।
২৯. রাষ্ট্র প্রতিটি ব্যক্তির শালীন, স্বচ্ছল জীবন-যাপনের অধিকারকে সুনিশ্চিত করবে, যা তার এবং তার ওপর নির্ভরশীল ব্যক্তির খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান. শিক্ষা, চিকিৎসা ও অন্যান্য মৌলিক চাহিদাসহ সব ধরনের প্রয়োজনীয়তা পূরণে সক্ষম।
৩০. প্রত্যেকেরই নিরাপদে বসবাসের অধিকার রয়েছে। এই নিরাপত্তা যেমন তার নিজের, তেমনি তার সম্মান-সম্পত্তি, তার ওপর নির্ভরশীলদের এবং তার ধর্মের ব্যাপারেও প্রযোজ্য।

৩১. প্রত্যেকেরই জীবন-যাপন ও কাজ-কর্মে, নিজ বাড়িতে, নিজ পরিবারে, নিজ সম্পত্তির ব্যাপারে এবং আত্মীয়তা বা অন্য কোনো সম্পর্কের ক্ষেত্রে গোপনীয়তা বজায় রেখে নিরুপদ্রবে থাকার অধিকার রয়েছে। কোনো ব্যক্তির ওপর গুপ্তচরবৃত্তি, তাকে কড়া নজরে বা পাহাড়ায় রাখা অথবা তার সুনাম ক্ষুণœ হতে পারে, এমন কোনো কাজ করা যাবে না। রাষ্ট্র তাকে অযৌক্তিক এবং স্বেচ্ছাচারমূলক যে কোনো রকম অবৈধ হস্তক্ষেপ থেকে রক্ষা করবে।

৩২. প্রত্যেকের বসতবাটির নিরাপত্তা বিধান ও তাতে অবৈধ হস্তক্ষেপ না হতে পারে তার ব্যবস্থা করতে হবে এবং বাসিন্দাদের অনুমতি ছাড়া বা বেআইনীভাবে কারো বাসগৃহে প্রবেশ নিষিদ্ধ এবং এর বাসিন্দাদেরকে জোরপূর্বক বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করা, তাদের বাসস্থান বলপূর্বক দখল করে নেওয়া বা বাড়ি-ঘর নির্মূল করা যাবে না।
৩৩. শাসক ও শাসিত নির্বিশেষে প্রত্যেক ব্যক্তি আইনের চোখে সমান।
৩৪. ন্যায়বিচার প্রত্যেক ব্যক্তির প্রাপ্য।
৩৫. প্রত্যেকের দায় একান্তভাবে প্রত্যেকের ব্যক্তিগত।

৩৬. আইন-সঙ্গত কোনো কারণ ছাড়া কাউকে যেন শাস্তি দেওয়া না হয়, তার ব্যবস্থা করা।
৩৭. নিরপেক্ষ বিচারে বা শুনানীর মাধ্যমে অপরাধ প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত প্রত্যেক ব্যক্তিই নির্দোষ। এ নিরপেক্ষ বিচার প্রক্রিয়ায় বা মামলা পরিচালনার ক্ষেত্রে প্রত্যেকেরই আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ রয়েছে।

৩৮. বৈধ কারণ ছাড়া কোনো ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা, তার স্বাধীনতাকে খর্ব করা বা কেড়ে নেওয়া, তাকে নির্বাসিত করা বা কয়েদ করা অথবা তাকে শাস্তি দেওয়া অসঙ্গত। কাউকে কোনো প্রকার দৈহিক বা মানসিক নির্যাতন করা বা তার মানহানি করা ও তার প্রতি কোনো প্রকার নিষ্ঠুরতা বা তাকে কোনো রকম অমর্যাদা করা যাবে না। অথবা কোনো ব্যক্তির অনুমতি ছাড়া বা তার স্বাস্থ্য বা জীবনের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ কোনো ডাক্তারি বা বৈজ্ঞানিক গবেষণা বা পরীক্ষায় তাকে ব্যবহার করা যাবে না।

৩৯. যে কোনো প্রকারে অথবা যে কোনো উদ্দেশ্যে কাউকে জিম্মি করা সুস্পষ্টভাবে নিষিদ্ধ।
৪০. প্রত্যেকেরই স্বাধীনভাবে নিজস্ব মত প্রকাশের অধিকার রয়েছে। প্রত্যেকেরই সঠিক বিষয়ের পক্ষে কথা বলার বা সুপারিশ করার এবং যা কিছু ভালো, তা প্রচার ও প্রসারের অধিকার রয়েছে।
৪১. এমন কোনো মতবাদ, যা পরস্পরের মধ্যে ঘৃণা, বিদ্বেষ ছড়ায় বা বর্ণগত ও গোত্রীয় বিভেদ সৃষ্টি করে, তা অনুমোদিত নয়।
৪২. ক্ষমতা একটি আমানতস্বরূপ; এটাকে অন্যায় সুবিধা গ্রহণ বা কাউকে বঞ্চিত করা, অপপ্রয়োগ করা, বিদ্বেষ দ্বারা পরিচালিত হয়ে কাউকে হীন উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ।
৪৩. নিজ রাষ্ট্রের প্রশাসনে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে অংশগ্রহণের অধিকার প্রত্যেকের রয়েছে।

আরও পড়ুন: পর্ব-৬: প্রকৃত ইসলামী সমাজ সব ধর্মাবলম্বীর সমানাধিকারের রক্ষাকবচ

   

উমরা ভিসায় হজ নয়, না মানলে কঠোর শাস্তি



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
উমরা ভিসায় হজ নয়, না মানলে কঠোর শাস্তি, ছবি: সংগৃহীত

উমরা ভিসায় হজ নয়, না মানলে কঠোর শাস্তি, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

উমরার পারমিট বা ভিসা দিয়ে হজপালন করা যাবে না বলে জানিয়েছে সৌদি আরবের হজ ও উমরা বিষয়ক মন্ত্রণালয়। এ বিষয়ে আগামী ২৪ মে (১৬ জিলকদ) থেকে ২৬ জুন (২০ জিলহজ) পর্যন্ত হজের স্থানগুলোতে দেশটি কঠোর বিধি-নিষেধ আরোপ করেছে। এ সময়ে শুধুমাত্র হজের অনুমোদন নিয়েই কেবল হজ করা যাবে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আগত হজযাত্রীদের শৃঙ্খলা নিশ্চিত করতে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়। গত ১৯ মে সৌদি গেজেটের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় হজ পারমিট ছাড়া মক্কায় প্রবেশে স্থানীয় নাগরিক, দর্শনার্থী ও প্রবাসীদের বিধি-নিষেধ আরোপ করা হয়। পবিত্র মক্কা শহর, সেন্ট্রাল হারাম এলাকা, মিনার, আরাফাত, মুজদালিফা, রুসাইফার হারামাইন ট্রেন স্টেশন, নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র এবং হজযাত্রীদের গ্রুপে হজের অনুমতি ছাড়া ধরা পড়লে জরিমানা করা হবে। আর নির্দেশনা লঙ্ঘন করে মক্কায় প্রবেশ করলে ১০ হাজার রিয়াল জরিমানা করা হবে।

আগামী ২ জুন (২৫ জিলকদ) থেকে ২০ জুন (১৪ জিলহজ) পর্যন্ত এ নির্দেশনা থাকবে। এ সময়ে নিয়ম লঙ্ঘনকারী বাসিন্দাদের তাদের দেশে পাঠিয়ে দেওয়া হবে এবং সৌদি আরবে পুনরায় প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হবে। তা ছাড়া এ নির্দেশনা বারবার লঙ্ঘন করলে পুনরায় ১০ হাজার সৌদি রিয়াল (২ লাখ ৯২ হাজার ৭৯৪ টাকা) জরিমানা করা হবে।

সৌদি বার্তা সংস্থা আরও জানায়, আর বিনা অনুমতিতে হজ করে হজবিষয়ক নির্দেশনা লঙ্ঘনকারীদের পরিবহন করে ধরা পড়লে ছয় মাস পর্যন্ত কারাদণ্ডসহ ৫০ হাজার সৌদি রিয়াল (১৪ লাখ ৬৩ হাজার ৯৭২ টাকা) জরিমানা করা হবে এবং ব্যবহৃত গাড়ি বাজেয়াপ্ত করা হবে।

তা ছাড়া পরিবহন করা মানুষের সংখ্যার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে জরিমানার পরিমাণ আরো বাড়বে। আর নির্দেশনা লঙ্ঘনকারী প্রবাসী হলে সাজাভোগের পর তাকে দেশে পাঠিয়ে দেওয়া হবে।

চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ১৬ জুন পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে। এ বছর ২০ লাখের বেশি মানুষ হজপালন করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

;

হাজিদের সচেতনতায় বিশেষ প্রচারণা



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
হাজিদের সচেতনতায় বিশেষ প্রচারণা, ছবি: সংগৃহীত

হাজিদের সচেতনতায় বিশেষ প্রচারণা, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সৌদি আরবের হজ ও উমরা মন্ত্রণালয় হজসংক্রান্ত নিয়ম-কানুন মেনে চলা এবং বৈধ অনুমতি বা ভিসাব্যতীত হজপালন করা থেকে বিরত থাকার ব্যাপারে বার্তা পৌঁছে দেওয়ার জন্য বিশ্বের বহুল ব্যবহৃত ও প্রচলিত ১৫টি ভাষায় একটি আন্তর্জাতিক সচেতনতা ও শিক্ষামূলক প্রচারণা শুরু করেছে।

এ বছর হজপালনে আগ্রহী সবার কাছে সচেতনতামূলক বার্তা পৌঁছে দেওয়ার জন্য ২০টি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, বিভিন্ন ইসলামি কেন্দ্র ও ব্যক্তিদের সঙ্গে সমন্বয় করে ডিজিটাল ও প্রচলিত মিডিয়ার মাধ্যমে হজসংক্রান্ত নির্দেশনাবলী ও বিধিবিধানের প্রচার-প্রসারই এই প্রচারাভিযানের লক্ষ্য।

হজযাত্রীরা পবিত্র ভূমিতে যাত্রাপথে বিমানে বসেই নিজ নিজ ভাষায় হজসংক্রান্ত বিষয়ে ধারণা পাওয়ার জন্য মন্ত্রণালয় সৌদি এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটগুলোতে হজ ও উমরা চ্যানেল চালু করেছে।

সৌদি এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটে হজ ও উমরার চ্যানেলে রয়েছে, ২৩টি শিক্ষামূলক ক্লিপ, ১৪টি ভাষায় ১৩টি সচেতনতামূলক নির্দেশিকা, ৯ ভাষায় ১টি ডকুমেন্টারি, ৭ ভাষায় ৬টি ফিল্ম, ৭ ভাষায় ইহরাম পরার ১টি ভিডিও। ভাষাগুলো হলো- সিংহলি, মালয়েশিয়ান, আরবি, ইংরেজি, বাংলা, ফ্রেঞ্চ, হাউসাবিয়া, ফারসি, ইন্দোনেশিয়ান, তুর্কি, স্প্যানিশ, উর্দু, আমহারিক ও রুশ।

এছাড়া দেশটির হজ ও উমরা মন্ত্রণালয় তার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের পেজে ধারাবাহিক পোস্টে বলেছে, হজে যাওয়ার পথে, বিধিবদ্ধ সচেতনতা নির্দেশিকা পড়ুন, আপনার ঈমানি সফরে আপনার অধিকার ও বাধ্যবাধকতা সম্পর্কে জানুন। হজ-উমরা চ্যানেলের বিষয়বস্তু অনুসরণ করে যথাযথ প্রস্তুতি নিয়ে আপনার যাত্রা শুরু করুন।

হজ বিষয়ক সচেতনতার বিষয়গুলো বিস্তারিত জানার জন্য মন্ত্রণালয় নিম্নের লিঙ্কে https://www.haj.gov.sa/Guides আল্লাহর মেহমানদের প্রবেশ করার সুযোগ প্রদান করেছে। যাতে হজযাত্রী অতি সহজে হজপালন, বিভিন্ন পদক্ষেপ, সময়সূচি ও পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে পারেন।

হজ ও উমরা মন্ত্রণালয় তার প্ল্যাটফর্মের ওয়েব প্যানেলের মাধ্যমে বেশ কয়েকটি ব্যাখ্যামূলক নির্দেশিকা প্রদান করেছে, যার মধ্যে রয়েছে- মসজিদে হারাম গাইড, মসজিদে নববি গাইড এবং মসজিদে নববি পরিষেবা গাইড।

;

সৌদি পৌঁছেছেন বিভিন্ন দেশের প্রায় ৩ লাখ হজযাত্রী



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
সৌদি পৌঁছেছেন বিভিন্ন দেশের প্রায় ৩ লাখ হজযাত্রী, ছবি: সংগৃহীত

সৌদি পৌঁছেছেন বিভিন্ন দেশের প্রায় ৩ লাখ হজযাত্রী, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

হজফ্লাইট শুরুর পর বিভিন্ন দেশ থেকে প্রায় ৩ লাখ হজযাত্রী সৌদি আরব পৌঁছেছেন। হজযাত্রীরা মক্কা এবং মদিনায় অবস্থান করছেন। এসব হজযাত্রীর মধ্যে ৩২ হাজারের বেশি বাংলাদেশি হজযাত্রী রয়েছে।

মঙ্গলবার (২১ মে) সৌদি প্রেস এজেন্সির সূত্রে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আরব নিউজ এ তথ্য জানিয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সৌদি আরবের ডিরেক্টর জেনারেল অফ পাসপোর্ট অফিসের দেওয়া তথ্যমতে, এ পর্যন্ত বিমান, স্থল এবং সমুদ্রপথে সৌদি আরব পৌঁছেছেন ২ লাখ ৯৭ হাজার ৬৫৭ জন হজযাত্রী।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশটির পাসপোর্ট অধিদপ্তর জানিয়েছে, হজযাত্রীদের প্রবেশের পর প্রাপ্ত তথ্য থেকে এ সংখ্যা নিশ্চিত হওয়া গেছে। এ সংখ্যা ঘণ্টায় ঘণ্টায় বাড়ছে।

খবরে আরও বলা হয়, হজযাত্রীদের সর্বাধুনিক প্রযুক্তিগত সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। প্রবেশ পথগুলোতে সম্পূর্ণ প্রশিক্ষিত ও বিভিন্ন ভাষায় দক্ষ কর্মীরা তাদের স্বাগত জানাচ্ছেন।

জিলহজ মাসের চাঁদ দেখা সাপেক্ষে চলতি বছর হজের আনুষ্ঠানিকতা ১৪ জুন শুরু হয়ে ১৯ জুন শেষ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

হজযাত্রীদের বহনকারী ফ্লাইট ৯ মে থেকে সৌদি আরব আসা শুরু করে। তখন থেকে ২১ মে মধ্যরাত পর্যন্ত ৩২ হাজার ৭১৯ জন হজযাত্রী সৌদি আরবে পৌঁছেছেন বলে হজ ব্যবস্থাপনা পোর্টালের সবশেষ বুলেটিনে জানানো হয়। এছাড়া এখন পর্যন্ত হজে গিয়ে দুইজন বাংলাদেশি নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে। বাংলাদেশ থেকে ৮২টি ফ্লাইটে এসব হজযাত্রী সৌদি পৌঁছেছেন।

এর আগে, গত ৯ মে বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের প্রথম ডেডিকেটেড ফ্লাইট ৪১৫ জন হজযাত্রী নিয়ে সৌদি আরবের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। এর মাধ্যমে চলতি বছর হজের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়। শেষ হবে ১০ জুন।

চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ১৫ জুন পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। হজযাত্রীদের প্রথম ফিরতি ফ্লাইট শুরু হবে ২০ জুন এবং শেষ হবে ২২ জুলাই।

;

হজযাত্রীদের জন্য বিশেষ ছাতা



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
হজযাত্রীদের জন্য বিশেষ ছাতা, ছবি: সংগৃহীত

হজযাত্রীদের জন্য বিশেষ ছাতা, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

হজযাত্রীদের জন্য বিশেষ ছাতার ব্যবস্থা করেছে সৌদি আরবের হজ ও উমরা মন্ত্রণালয়। মঙ্গলবার (২১ মে) ইসলামিক ইনফরমেশনের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশেষভাবে ডিজাইন করা ছাতাগুলো হজযাত্রীদের সূর্যের আলো থেকে বিশেষ সুরক্ষা প্রদান করবে। যেহেতু ২০২৪ সালে হজের সময় প্রচণ্ড গরম থাকবে, তাই বিশেষ এই ছাতার প্রবর্তন করা হয়েছে। এতে হজযাত্রীদের জন্য হজের আমলগুলো করা সহজ হয়ে যাবে।

বিশেষ এই ছাতাগুলোর বৈশিষ্ট্য হলো, এটি পরে দীর্ঘসময় সূর্যের নিচে থাকলেও আলো থেকে তা সুরক্ষা প্রদান করবে। এ ছাড়া প্রতিটি ছাতার মধ্যে একটি পকেট রয়েছে। এতে হজযাত্রীরা নিজেদের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সঙ্গে রাখতে পারবেন। বিশেষ করে পানির বোতল ও জায়নামাজ বহন করতে পারবেন- যা হজযাত্রীদের ইবাদত-বন্দেগির জন্য সহায়ক হবে।

ছাতাগুলোর আরেকটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো, এগুলোকে এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে, যেন তা মাথায় থাকা অবস্থায়ও মুসল্লি সেজদা করতে পারে। সহজের চলাচল করতে পারবে। বাতাসে তা উড়ে যাবে না।

হজযাত্রীরা ছাতাগুলো মক্কা, মিনা ও আরাফাতের বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে সংগ্রহ করতে পারবেন।

উল্লেখ্য যে, আগামী মাসে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া হজের সময় সৌদি আরবের তাপমাত্রা অনেক বেশি থাকতে পারে। এ বিষয়ে সতর্ক করেছেন সৌদি ন্যাশনাল সেন্টার অব মেটিওরোলজির প্রধান আয়মান গোলাম।

আসন্ন হজে উচ্চ তাপমাত্রার জন্য সতর্ক করে প্রস্তুতি গ্রহণের পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। আয়মান গোলাম বলেছেন যে, এ বছর হজের মৌসুম চলবে জুনের মাঝামাঝিতে। হজের মৌসুম সৌদি আরবে বছরের সবচেয়ে গরম সময়ের সঙ্গে মিলে গেছে।

বছরের এই সময়ে সাধারণত সৌদি আরবে তাপমাত্রা এবং বাতাসের আর্দ্রতা দুটোই অনেক বেশি থাকে। ফলে হজে অংশগ্রহণকারীদের সতর্ক থাকতে অবহিত করা হয়েছে।

;