ইসলামি আইন সমগ্র মানব জাতির কল্যাণের উৎস



ড. মাহফুজ পারভেজ, কন্ট্রিবিউটিং এডিটর, বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

ধর্মীয়, জাতিগত, ভাষাগত সংখ্যালঘুর মানবাধিকারের দাবিতে সোচ্চার বিশ্ব সম্প্রদায় আইনগত ও সামরিক-বেসামরিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেও বিশ্বব্যাপী নিপীড়িত মানবতার আহাজারি থামাতে পারছে না। বরং ইসলামে সংখ্যালঘুর অধিকার সংরক্ষণের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত থাকার পরেও মুসলিমরাই হচ্ছে সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত। ‘ইসলামে সংখ্যালঘুর অধিকার’ সম্পর্কে ঐতিহাসিক পর্যালোচনা: পর্ব- ৮

ইসলামে অমুসলিম ও সংখ্যালঘুদের সমানাধিকার, সম্মান, মর্যাদা, নিরাপত্তা ও কল্যাণ নিশ্চিত হওয়ার পরিপূর্ণ নিশ্চয়তা ধর্মীয় নৈতিকতা ও বিধিবদ্ধ আইন দ্বারা স্বীকৃত এবং তা পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধানের অংশ হিসাবে ইসলামি শাসন ব্যবস্থার স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও দায়িত্বশীলতার আদর্শের সঙ্গে ঘনিষ্টভাবে সম্পর্কযুক্ত। ইসলামে শাসন ব্যবস্থার মূল কথা হচ্ছে- তাওহিদের ভিত্তিতে সকল প্রশ্নের মীমাংসা করা এবং সকল নাগরিকের জন্য ন্যায়বিচার ও সমানাধিকার প্রতিষ্ঠা করা। এজন্য শাসনকর্তার মধ্যে আল্লাহর প্রতি পূর্ণ আনুগত্য ও ভয়, জ্ঞানবত্তা, ন্যায়পরায়ণতা, জনসাধারণের অভাব-অভিযোগ ও আশা-আকাঙ্খা-প্রত্যাশা সম্পর্কে জ্ঞান থাকার প্রতিও গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।

বস্তুত পক্ষে, আল্লাহর ভয় সমস্ত কল্যাণের উৎস ও সমস্ত সুখের চাবিকাঠি। সফিউদ্দিন মুহম্মদ বিন আলী বিন তাবা, যিনি সাধারণে ইবনে তিকতাকা নামে পরিচিত এবং ‘শাসনকর্তাদের আচরণ ও ইসলামী শাসন বংশ’ নামে একটি গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থ রচনা করেছেন, তিনি বলেছেন, ‘রাজা যখন আল্লাহর উপস্থিতি সম্পর্কে সচেতন থাকেন, তখন আল্লাহর বান্দারা শান্তি ও নিরাপত্তার আর্শীবাদ উপভোগ করতে পারে।’

তিনি আরও বলেছেন, ‘শাসনকর্তাকে ক্ষমা গুণের অধিকারীও হতে হবে। কারণ এটিই হচ্ছে সব সদগুণের মধ্যে শ্রেষ্ঠ।’

ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে শাসিতদের উপকারের জন্য শাসকদের সদা-জাগ্রত বাসনা থাকতে হবে আর তাদের অভাব-অভিযোগ সম্পর্কে তাদের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে। কারণ হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সব সময় তার সাহাবাদের সঙ্গে আলোচনা করতেন। আর আল্লাহতায়ালা কোরআনে কারিমে বলেছেন, ‘তাদের সঙ্গে সমস্ত বিষয়ে আলোচনা কর।’

প্রশাসনিক ব্যাপারে শাসকের কর্তব্য হচ্ছে- সরকারী আয়ের তত্ত্বাবধান করা, শাসিতের জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তা বিধান করা, শান্তি রক্ষা করা, দুস্কৃতিকারীদেরকে সংযত করা, ক্ষতি প্রতিরোধ করা। তাকে সব সময় তার কথা রক্ষা করতে হবে। অন্যদিকে, শাসিতদের কর্তব্য হচ্ছে আনুগত্য, কিন্তু কোনো শাসিত ব্যক্তিই উৎপীড়ককে মানতে বাধ্য নয়। ইবনে রূশদ উৎপীড়কের ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে উক্তি করেছেন, ‘উৎপীড়ক হচ্ছে সে, যে ব্যক্তি নিজের জন্য শাসন করে, জনগণের জন্য নয়।’

যেখানে নিজের জন্য শাসন করারই সুযোগ নেই, সেখানে নিজের ভাষা, বর্ণ, বংশ, অঞ্চল বা অন্য কোনো প্রয়োজনে শাসনকে পথভ্রষ্ট করার সুযোগ ইসলামে নেই। এরচেয়ে বড় সমানাধিকারের নিশ্চয়তা আর কি হতে পারে? মূলত সমতার নীতিভিত্তিক আর সরলতা ও স্পষ্টতার দিক দিয়ে অসাধারণ-উজ্জ্বল ইসলামি শাসন ব্যবস্থা ও আইন-কানুন এমন কোনো আনুগত্য দাবি করে না, যা কষ্টসাধ্য। ফলে মুসলমানরা যে সকল দেশে শাসন ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়েছে, সে সকল দেশ সামন্ততান্ত্রিক অমানবিকতার সর্বনাশা কুফল থেকে রক্ষা পেয়েছে এবং সে সকল দেশের মানুষ ভূমি দাসের শৃঙ্খল থেকে বেঁচেছে। এবং ইসলামি আইন দু’টি অনবদ্য ফল উৎপন্ন করেছে। তা হলো-

১. মানব রচিত আইনগুলো যে সকল মিথ্যা ও অত্যাচারের বোঝা চাপিয়েছিল, সেগুলো থেকে মানবাত্মার মুক্তি; ও
২. অধিকারের পূর্ণ সমতা সম্পর্কে ব্যক্তিকে নিশ্চয়তা দান।

অতএব, মুসলমান, অমুসলমান, সংখ্যাগুরু ও সংখ্যালঘু, সকল মানুষের শারীরিক ও আত্মীক মুক্তি আর মৌল-অধিকারের তত্ত্বগত ও ব্যবহারিক নিশ্চয়তার অপর নাম ইসলাম। সামগ্রিক ইসলামি জীবন ব্যবস্থার অংশ হিসাবে ইসলামি রাষ্ট্র-সমাজ-অর্থ ব্যবস্থায় নিহিত রয়েছে ধর্ম-বর্ণ-ভাষা-অঞ্চল-লিঙ্গ-সংস্কৃতি নির্বিশেষে আপামর মানবতার উজ্জ্বল উদ্ধার; জাগতিক ও পারলৌকিক কল্যাণ, শান্তি ও মুক্তি।

যদিও অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় হলো- এটাই যে, সকল ধরণের সংখ্যালঘুকে কার্যকর ক্ষেত্রে নিরাপত্তা দিয়েছিল ইসলামি সমাজ ও রাষ্ট্র ব্যবস্থা এবং ইসলামের মতাদর্শে সুস্পষ্টভাবে সংখ্যালঘুর স্বার্থ ও নিরাপত্তা নিশ্চিত রয়েছে, তথাপি বর্তমান বিশ্বে নির্যাতিত-নিপীড়িত জাতিসত্ত্বার নাম ইসলাম। বিশ্বের যেসব দেশে মুসলমানরা সংখ্যালঘু ও দুর্বল, সেখানেই তাদেরকে পিষে মারা হচ্ছে। ভাষা, জাতীয়তা, ধর্ম, বর্ণ ইত্যাদি দিক থেকে বহু রাষ্ট্রে সংখ্যালঘুরূপে বসবাসকারী মুসলমানরা চরমভাবে লাঞ্ছিত ও নিগৃহীত হচ্ছে। মুসলমানের মানবাধিকারের নূন্যতম অধিকারকেও স্বীকৃতি দেওয়া হচ্ছে না। রক্ত, মৃত্যু, গৃহত্যাগ মুসলমানের নিয়তিতে পরিণত করেছে ক্ষমতাসীন-সবল জনগোষ্ঠী।

শুধু সংখ্যালঘু হিসাবেই নয়, যেসব দেশে মুসলমানরা সংখ্যালঘু, সেখানেও চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে যুদ্ধ, বিগ্রহ, দাঙ্গা, হাঙ্গামা। বিশ্বের দেশে দেশে বয়স্ক ও সাবালক মুসলিম জনগোষ্ঠীকে নিধনের পর শিশু-কিশোরদেরকে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে মৃত্যুও মিছিলে। সকল ধরনের অমানবিক ও বর্বর যৌন ও শারীরিক নির্যাতন করা হচ্ছে- মুসলিম তরুণী ও নারীদের। নিজস্ব ঘর-বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করে মুসলিম জনগোষ্ঠীকে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে শরণার্থী শিবিরে। বিশ্বের মোট শরণার্থীর ৮০%ভাই মুসলিম।

এ হলো ইতিহাসের নির্মম পরিহাস যে, একদা যারা মানবতাকে রক্ষা করেছে, তারাই অমানবিক নির্যাতন ও জুলুমের শিকার। যারা সংখ্যালঘু ও দুর্বলকে বাঁচিয়েছে, হেফাজত করেছে, সেই মুসলমানরাই আজ সবচেয়ে বেশি নিরাপত্তাহীন এবং হত্যা ও নির্যাতনের মুখোমুখি।

কি কারণ রয়েছে এর পেছনে? কেন শুধু মুসলমান জনগোষ্ঠীই বর্তমান বিশ্বব্যবস্থায় চরম ক্ষতির সম্মুখীন? কেন মানবতার নিরাপত্তা প্রদানকারী ধর্মানুসারীরা পাচ্ছে না শান্তি ও নিরাপত্তার গ্যারান্টি? কেন বেছে বেছে শুধুমাত্র মুসলিম দেশগুলোতে দাঙ্গা-হাঙ্গামা-বিভেদ ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে?

গভীরভাবে এসব প্রশ্নের উত্তর তলিয়ে দেখা আজকে শুধু মুসলমানদের নয়, মানবতাপন্থী ও বিশ্বশান্তি প্রত্যাশী সকলেরই দায়িত্ব। সংখ্যালঘুর নিরাপত্তা ও মানবাধিকারের কথা যারা বলেন, তাদেরকে অবশ্যই এসব প্রশ্নে উত্তর খুঁজে বের করে হানাহানি ও রক্তপাতে প্লাবিত বিশ্বকে বাঁচাতে হবে; রক্ষা করতে হবে মানুষ ও মানবতাকে।

আরও পড়ুন: পর্ব-৭: ইসলামে সংখ্যালঘুর অধিকার প্রতিষ্ঠিত বিষয়

   

সৌদিতে আরও এক বাংলাদেশি হজযাত্রীর মৃত্যু



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

চলতি মৌসুমে হজ পালন করতে গিয়ে মো. মোস্তফা (৮৯) নামে আরও এক হজ যাত্রী মারা গেছেন। শনিবার (১৮ মে) মক্কায় মারা যান তিনি।

রোববার (১৯ মে) রাত ২টার হজ পোর্টালের আইটি হেল্প ডেস্কের প্রতিদিনের বুলেটিন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

এর আগে, গত বুধবার (১৫ মে) চলতি হজ মৌসুমে সৌদি আরবের প্রথম বাংলাদেশি এক হজযাত্রী মারা যান। মো. আসাদুজ্জামান নামের ওই ব্যক্তি মদিনায় মৃত্যুবরণ করেন।

এ দিকে পবিত্র হজ পালন করতে গিয়ে এখন পর্যন্ত (১৮ মে রাত ১টা ৫৯ মিনিট) সৌদি পৌঁছেছেন ২৮ হাজার ৭৬০ জন হজযাত্রী। মোট ৭২টি ফ্লাইটে তারা সৌদিতে পৌঁছান। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ৩ হাজার ৭৪৭ জন ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজযাত্রী ২৫ হাজার ১৩ জন। এখন পর্যন্ত ৮১ হাজার ৮৬২টি ভিসা ইস্যু করা হয়েছে।

হজ সম্পর্কিত সবশেষ বুলেটিনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এয়ারলাইন্স, সিভিল এভিয়েশন অথরিটি অব বাংলাদেশ, বাংলাদেশ হজ অফিস ঢাকা এবং সৌদি আরব সূত্রে এ তথ্য জানিয়েছে হেল্পডেস্ক।

হেল্প ডেস্কের তথ্য মতে, এ পর্যন্ত মোট ৭২টি ফ্লাইটের মধ্যে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ২৮টি, সৌদি এয়ারলাইনসের ২৬টি এবং ফ্লাইনাস এয়ারলাইনস ২০টি ফ্লাইট পরিচালনা করেছে।

হজ ফ্লাইট শুরু হওয়ার পর গত মধ্যরাত পর্যন্ত ৮১ হাজার ৮৬২ জন হজযাত্রীর ভিসা ইস্যু হয়েছে। সে হিসেবে এখনো ৩ হাজার ৩৯৫ জন হজযাত্রীর ভিসা হয়নি। সর্বশেষ শনিবার (১৮ মে) মো. মোস্তফা নামের ৮৯ বছর বয়সী হজযাত্রী মক্কায় মারা যান।

;

নিবন্ধিত কোনো হজযাত্রী হজপালনে বঞ্চিত হবেন না



মুফতি এনায়েতুল্লাহ, অ্যাসিস্ট্যান্ট এডিটর, বার্তা২৪.কম
হজ ক্যাম্পে হজযাত্রীদের একাংশ, ছবি: বার্তা২৪.কম

হজ ক্যাম্পে হজযাত্রীদের একাংশ, ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

নিবন্ধিত কোনো হজযাত্রী হজপালনে বঞ্চিত হবেন না বলে আশাবাদী বাংলাদেশ হজ অফিসের পরিচালক মুহাম্মদ কামরুজ্জামান।

ভিসা না হওয়া হজযাত্রীরা এক ধরনের অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছেন। তবে বাংলাদেশ হজ অফিসের পরিচালক মুহাম্মদ কামরুজ্জামান বার্তা২৪.কমকে বলেন, চলতি হজ মৌসুমে নিবন্ধিত সবার ভিসা হবে বলে আমি আশাবাদী। কয়েকটি এজেন্সির হজযাত্রী নিয়ে জটিলতা হচ্ছে, তার অর্ধেকই ইতোমধ্যে সমাধান হয়েছে। বাকি কাজ সমাধানের পথে।

জিলহজ মাসে চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ১৬ জুন পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হতে পারে। বাংলাদেশ থেকে ৯ মে শুরু হওয়া হজফ্লাইট শেষ হবে ১০ জুন। এই সময়ের মধ্যে সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় গাইডসহ হজপালনে সৌদি আরব যাবেন ৮৫ হাজার ১১৭ জন। ইতোমধ্যে ২৮ হাজার ৪ জন হজযাত্রী সৌদি আরব পৌঁছেছেন। ৮২ হাজার ১০০ জনের ভিসা ভিসা হয়েছে। এখনও বেসরকারিভাবে নিবন্ধিত ৩ হাজার ৩৩৬ জনের ভিসা হয়নি।

মুহাম্মদ কামরুজ্জামান, পরিচালক, হজ অফিস, ছবি: বার্তা২৪.কম

জানা গেছে, যথাসময়ে ভিসার আবেদন না করায় ওয়ার্ল্ডলিঙ্ক ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলস (লাইসেন্স ৫৭০, যাত্রী সংখ্যা ২৮৬), আনসারি ওভারসিস (লাইসেন্স ৬০১, যাত্রী সংখ্যা ২৬০), আল রিসান ট্রাভেল এজেন্সি (লাইসেন্স ৬৭২, যাত্রী সংখ্যা ৪৪৪), মিকাত ট্যুর অ্যান্ড ট্রাভেলস (লাইসেন্স ১০২৫, যাত্রী সংখ্যা ৩৭৫), নর্থ বাংলা হজ ট্রাভেলস এন্ড ট্যুরস (লাইসেন্স ১০৮৬, যাত্রী সংখ্যা ২৬০), হলি দারুন নাজাত হজ ওভারসিস (লাইসেন্স ১৪৬২, যাত্রী সংখ্যা ২৫০) কে ধর্ম মন্ত্রণালয় শোকজ করে। এসব এজেন্সির মাধ্যমে ১ হাজার ৮৭৫ জনের চলতি বছর হজে যাওয়ার কথা রয়েছে।

আর আল রিসান ট্রাভেলস এজেন্সির নিবন্ধিত হজযাত্রীদের মধ্যে এখন পর্যন্ত কারও ভিসা না করায় বৃহস্পতিবার (১৬ মে) এজেন্সির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আব্দুস সালাম মিয়ার দেশত্যাগ স্থগিত ও তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।

হজ এজেন্সির মালিকদের সংগঠন হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব)-এর সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম বার্তা২৪.কমকে বলেন, আল রিসান ট্রাভেলস এজেন্সিসহ অভিযুক্ত এজেন্সির মালিকদের নিয়ে আমরা বসে, পয়েন্ট পয়েন্ট ধরে সমস্যা নিয়ে আলোচনা করে সমাধানের চেষ্টা করেছি। ইতোমধ্যে হলি দারুন নাজাত হজ ওভারসিস, ওয়ার্ল্ডলিঙ্ক ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলস এবং মিকাত ট্যুর অ্যান্ড ট্রাভেলসের হজযাত্রীদের ভিসা প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। অন্যদেরও হয়ে যাবে। নিবন্ধিত কোনো হজযাত্রী হজপালন থেকে বঞ্চিত হবেন না বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেন।

এমন আশাবাদী হওয়ার কারণ জানতে চাইলে হাব সভাপতি বলেন, হজ ব্যবস্থাপনায় সৌদি আরব অংশে যে পরিমাণ অর্থ প্রেরণ করা দরকার এজেন্সিগুলো তা পাঠিয়েছে। আর যতটুকু সমস্যা রয়েছে, আশা করি তা সমাধান করা যাবে।

এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম, ছবি: বার্তা২৪.কম

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আল রিসান ট্রাভেলস এজেন্সি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আব্দুস সালাম মিয়া বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘আমি এবার হজে কোনো লোক পাঠাইনি। আকবর হজ গ্রুপের মুফতি লুৎফর রহমান ফারুকী তার লাইসেন্সে সমস্যা হওয়ায় আমার লাইসেন্স ব্যবহার করে ৪৪৮ জন হজযাত্রী পাঠাচ্ছে। চলতি সমস্যা নিয়ে হাব সভাপতির সঙ্গে বৈঠকে মুফতি লুৎফর রহমান সৌদি থেকে ফোনে কথা বলেছেন, তিনি আশ্বস্থ করেছেন; আজকালের মধ্যে ২০ থেকে ৩০ জনের ভিসা হয়ে যাবে। আর আগামীকাল বা পরশুর মধ্যে সবার ভিসা হয়ে যাবে। তিনি মদিনার বাড়ি ভাড়া করেছেন, মক্কার বাড়িও ভাড়া হওয়ার পথে।’

;

মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের আগমুহূর্তে ছেলের খুনিকে ক্ষমা করলেন বাবা



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
আল হুমাইদি আল হারবি, ছবি: সংগৃহীত

আল হুমাইদি আল হারবি, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

মৃত্যদণ্ড কার্যকরের আগ মুহূর্তে ছেলের খুনিকে ক্ষমা করে দিলেন বাবা। শেষ সময়ে জন্মদাদা বাবার এমন উদারতা দেখে উপস্থিত কর্মকর্তারা হতবাক হয়ে যায়। ঘটনাটি ঘটেছে সৌদি আরবে। খবর গালফ নিউজের।

আল হুমাইদি আল হারবি নামের ওই বাবা হঠাৎ করে দণ্ড কার্যকরের স্থানে যান। সেখানে গিয়ে ঘোষণা দেন, ছেলের হত্যাকারীকে ক্ষমা করে দিয়েছেন তিনি। ওই হত্যাকারীর দণ্ড কার্যকরের প্রস্তুতি নেওয়ার আগে আল হুমাইদি আল হারবির কাছে একাধিকবার গিয়েছিলেন সরকারি কর্মকর্তারা।

কিন্তু ওই সময় তিনি ছেলের হত্যাকারীকে ক্ষমা করতে চাননি। কিন্তু পরে নিজের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেন। নিজ ছেলের হত্যাকারীকে ক্ষমা করার একমাত্র অধিকারী ব্যক্তি ছিলেন ওই বাবা। সে অনুযায়ী, বিনা শর্তে তিনি হত্যাকারীকে ক্ষমা করে দেন। এতে করে সেখানে থাকা সবাই বেশ অবাক হন।

আল হারবি জানিয়েছেন, ধর্মীয় দিক বিবেচনা করে তিনি এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। যদিও প্রথমে হত্যাকারীকে ক্ষমা করতে চাননি। কিন্তু পরে নিজের মন পরিবর্তন করেন। ছেলের হত্যারকারীকে ক্ষমা করা ওই বাবার এমন উদারতার প্রশংসা করেছেন সাধারণ মানুষ। তারা এটিকে ক্ষমার একটি অনন্য উদাহরণ হিসেবে অভিহিত করেছেন।

খবরে প্রকাশ, নিজ গোত্রের প্রতিবেশীর বন্ধুর ছেলের হাতে তার ছেলে খুন হন। দেশটির আইন অনুযায়ী বিচার শেষে হত্যাকারীর মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা করা হয়। সৌদি আরবের আইনে রক্তপণ নিয়ে কিংবা অভিভাবক হিসেবে খুনিকে ক্ষমা করে দেওয়ার বিধান রয়েছে।

সে হিসেবে তিনি ছেলের খুনিকে ক্ষমা করে বলেন, ‘আমাদের সম্পর্ক আজও আগের মতো।’

তার স্পষ্ট কথা, আমি একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য ছেলের হত্যাকারীকে ক্ষমা করেছি। এ বিষয়ে সরকারি কর্মকর্তারা ক্ষমার কথা বললেও তার পরিবার ক্ষমা প্রসঙ্গে কোনো কথা বলেননি।

তিনি আরও বলেন, ঘটনার পর আমাদের সম্পর্ক গত ছয় দশকের মতোই আজও আছে। ছেলের খুনের পর যেমন ছিল, এখনও সম্পর্ক তেমনি আছে।

হত্যাকারীর বাবা আবদুল মাজিদ আল হারবি বলেন, আমি নিহতের বাবাকে অন্তরের অন্তস্থল থেকে শ্রদ্ধা করি এবং সম্মান করি, তিনি আমার ভাইয়ের চেয়েও বেশি।

;

সৌদিতে বাংলাদেশি হজযাত্রীর মৃত্যু



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

চলতি বছরের হজ মৌসুমে সৌদি আরবে মো. আসাদুজ্জামান নামের এক বাংলাদেশি হজযাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। এটিই এবারের হজে প্রথম কোনো বাংলাদেশির মৃত্যু।

শনিবার (১৮ মে) হজ পোর্টালের আইটি হেল্পডেস্কের প্রতিদিনের বুলেটিন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

এতে বলা হয়, ১৫ মে আসাদুজ্জামান মদিনায় মসজিদে নববীতে থাকা অবস্থায় হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে পরেন। পরে তাকে কিং সালমান হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। জানা গেছে, নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া উপজেলার ৭ নম্বর মাসকা ইউনিয়নের সাতাশী গ্রামের বাসিন্দা মো. আসাদুজ্জামান।

এদিকে শুক্রবার (১৭ মে) রাত ৩টা পর্যন্ত ২৭ হাজার ১১১ জন হজযাত্রী সৌদি আরব পৌঁছেছেন। অন্যদিকে এখনো ৪ হাজার ২৫৬ জন হজযাত্রীর ভিসা হয়নি।

চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ১৬ জুন এবারের হজ অনুষ্ঠিত হবে। হজযাত্রীদের সৌদি আরবে যাওয়ার ফ্লাইট শুরু হয় গত ৯ মে। আগামী ১০ জুন পর্যন্ত যাওয়ার ফ্লাইট চলবে। হজ শেষে ২০ জুন ফিরতি ফ্লাইট শুরু হবে। দেশে ফেরার ফ্লাইট শেষ হবে আগামী ২২ জুলাই।

;