হজযাত্রীকে তার সমুদয় অর্থ ফেরত দেওয়া হবে: ধর্ম সচিব
সরকারি-বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় নিবন্ধিত কোনো হজযাত্রী হজের টাকা ফেরত চাইলে তিনি অনলাইনে মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে আবেদন করবেন এবং কোনো প্রকার সার্ভিস চার্জ কর্তন ছাড়া তাকে তার জমা দেওয়া সমুদয় অর্থ ফেরত প্রদান করা হবে।
বুধবার (২৪ জুন) ধর্ম মন্ত্রণালয় হজ সংশ্লিষ্টদের নিয়ে জুম মিটিং শেষে এ কথা জানিয়েছে।
ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. নূরুল ইসলামের সভাপতিত্ব অনুষ্ঠিত বৈঠকে সিভিল এভিয়েশনের চেয়ারম্যান, হাব সভাপতি, হজ পরিচালক, হজ কাউন্সিলরসহ স্বরাষ্ট্র, স্বাস্থ্য ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিসহ বিভিন্ন দফতরের প্রায় ৩৯ জন কর্মকর্তা অংশগ্রহণ করেন।
বৈঠক শেষে জানানো হয়, প্রাণঘাতী করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে চলতি বছর খুবই সীমিত সংখ্যক হজযাত্রী নিয়ে পবিত্র হজ পালিত হবে বলে সৌদি আরব জানিয়েছে। সৌদি সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী এ বছর পবিত্র হজে অংশগ্রহণের সুযোগ না থাকায় যেসব বাংলাদেশি নাগরিক হজে যাওয়ার জন্য নিবন্ধন করেছিলেন, তারা যেকোনো সময় তাদের নিবন্ধনের টাকা তুলে নিতে পারবেন। টাকা তুলে নেওয়ার ক্ষেত্রে কেউ যাতে হয়রানির শিকার না হন, সে বিষয়টিও খেয়াল রাখা হবে।
ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব আরও জানান, চলতি বছরের প্রাক-নিবন্ধন এবং নিবন্ধন যথারীতি ২০২১ (১৪৪২ হিজরি) সালের প্রাক-নিবন্ধন এবং নিবন্ধন হিসেবে কার্যকর থাকবে। ২০২১ সালে কোনো কারণে হজ প্যাকেজের ব্যয় বৃদ্ধি বা হ্রাস পেলে তা বর্তমান হজযাত্রীর জমাকৃত অর্থের সঙ্গে সমন্বয় করা হবে।
কোনো হজযাত্রী নিবন্ধন বাতিল করলে একইসঙ্গে তার প্রাক নিবন্ধন বাতিল হয়ে যাবে এবং তাকে নতুন করে প্রাক-নিবন্ধন করে হজে যেতে হবে।
বেসরকারি হজ ব্যবস্থাপনার হজযাত্রী নিবন্ধন বাতিল করে টাকা উত্তোলন করতে চাইলে তার হজ এজেন্সির মাধ্যমে অনলাইনে আবেদন করবেন এবং মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন সাপেক্ষে হজ এজেন্সির মাধ্যমে অথবা ব্যাংকের মাধ্যমে তাদের জমাকৃত অর্থ গ্রহণ করবেন।
সরকারি অথবা বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় যে সব হজযাত্রী তাদের জমাকৃত নিবন্ধনের টাকা তুলতে চান তাদেরকে ১২ জুলাই এর পর আবেদন করতে হবে।
মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, নিবন্ধিত হজযাত্রীদের মধ্যে কেউ যদি টাকা না তুলে মনে করেন যে আগামী বছর হজে যাওয়ার জন্য তা রেখে দেবেন, তাহলে সে বিষয়টিকেও স্বাগত জানাবে মন্ত্রণালয়।
সৌদি বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক হজ চুক্তি অনুযায়ী ১৪৪১ হিজরিতে সরকারি ও বেসরকারি মিলিয়ে এবার বাংলাদেশ থেকে ১ লাখ ৩৭ হাজার ১৯৮ জন হজযাত্রীর হজে যাওয়ার সুযোগ ছিল। কিন্তু সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে চূড়ান্ত নিবন্ধন করেছিলেন ৬৪ হাজার ৫৯৯ জন হজযাত্রী। তন্মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ৩ হাজার ৪৫৭ জন ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৬১ হাজার ১২৪ জন।
হাবের সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম বলেছেন, আল্লাহর মেহমানরা হজের নিয়ত করে টাকা জমা দিয়েছেন। অনেকেই হয়তো হজের টাকা উঠাবেন না। আর হজের টাকা কেউ তুলে নিয়ে নিলে তার প্রাক-নিবন্ধনসহ পুরো নিবন্ধন বাতিল হয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে আগামী বছর হজে যেতে চাইলে তাদেরকে নতুনভাবে প্রাক-নিবন্ধন করতে হবে। সেক্ষেত্রে তারা সিরিয়ালে পিছিয়ে পড়বেন। কারণ কোটার চেয়ে প্রাক-নিবন্ধনকৃত হজযাত্রীর সংখ্যা প্রায় দিগুণ।