মসজিদে হারাম খুলে দেওয়ার পরিকল্পনা

  • ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

রোববার রাতে পবিত্র কাবা তাওয়াফ করছেন মসজিদে হারামের বিভিন্ন কাজে নিয়োজিত শ্রমিকরা, ছবি: সংগৃহীত

রোববার রাতে পবিত্র কাবা তাওয়াফ করছেন মসজিদে হারামের বিভিন্ন কাজে নিয়োজিত শ্রমিকরা, ছবি: সংগৃহীত

জিলহজ মাসের চাঁদ দেখা সাপেক্ষে পবিত্র হজের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হতে আর মাত্র ২৯ দিন বাকি। চলতি বছর শুধুমাত্র সৌদি আরবে বসবাসকারীরা ‘অত্যন্ত সীমিত’ পরিসরে হজের অনুমতি পাবেন।

হজে আনুষ্ঠানিকতা শুরুর আগেই হারামাইন প্রেসিডেন্সি কর্তৃপক্ষ তাওয়াফ ও নামাজের জন্য মসজিদে হারাম খুলে দেওয়ার পরিকল্পনা করছেন। মসজিদে হারাম খুলে দেওয়া হলে স্বল্প পরিসরে উমরাপালনও শুরু হবে।

বিজ্ঞাপন

সৌদি আরবের প্রভাবশালী দুই পত্রিকা ওকাজ ও সৌদি গেজেট এ খবর দিয়েছে।

খবরে বলা হয়, নামাজ, তাওয়াফ ও উমরার জন্য মসজিদে হারাম খুলে দেওয়া হলেও জনসমাগম নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য বেশ কিছু নতুন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এর অন্যতম হলো- মসজিদে হারামে ধারণ ক্ষমতার ৪০ শতাংশ মুসল্লি প্রবেশের সুযোগ পাবেন।

বিজ্ঞাপন

এ ছাড়া মসজিদে আগতদের সুরক্ষার পাশাপাশি, মসজিদ ব্যবস্থাপনায় নিয়োজিতদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার যাবতীয় পদ্ধতি অবলম্বনসহ কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মানা হবে। মসজিদে প্রবেশের সময় মাস্ক অবশ্যই ব্যবহার করতে হবে।

পরিকল্পনা করা হচ্ছে, মসজিদে হারামে যে সব মুসুল্লি আসবেন; তাদের প্রত্যেকের প্রয়োজনীয় তথ্য ও ফোন নম্বর সংরক্ষণ করা হবে। তাওয়াফ ও নামাজের সময় অবশ্য সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার ব্যাপারে অত্যন্ত কঠোর অবস্থান নেওয়া হবে। বিগত ১৪ দিনের মাঝে করোনার উপসর্গ ছিল এমন কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না।

ইতোমধ্যে মসজিদের হারামের প্রবেশপথগুলোতে থার্মাল ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। থার্মাল ক্যামেরায় আগতদের শরীরের তাপমাত্রা পর্যবেক্ষণ করা হবে। যাদের উচ্চতাপমাত্রা পাওয়া যাবে, তাদের ভেতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না।

প্রবেশ পথে মুসল্লিদের কোভিড-১৯ সংক্রমণ বিষয়ে অবহিত করার জন্য স্বেচ্ছাসেবী নিয়োজিত থাকবে। তারা স্বাস্থ্যবিধি বিশেষ করে হাত ধোয়া, স্যানিটাইজার ব্যবহার করা, হ্যান্ডশেক পরিহার করা এবং স্বাস্থ্যবিধি অনুসারে হাঁচি-কাশির বিষয়ে সচেতন করবেন আগতদের। প্রবেশ পথসহ স্থানে স্থানে স্বাস্থ্য সচেতনতামূলক সাইনবোর্ড স্থাপন করা হবে।

উমরাপালনকারীদের জন্য নির্দেশনা
পরিকল্পনায় রয়েছে, পবিত্র উমরাপালন করতে আসা মুসল্লিলের কিং ফাহাদ গেট দিয়ে মাতাফে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে। তারা বের হবেন আল সাফা গেট কিংবা আন নবী গেট সংলগ্ন ব্রিজ দিয়ে।

সাধারণ তাওয়াফকারীদের জন্য নির্দেশনা
সাধারণ তাওয়াফকারীরা ৮৯ ও ৯৪ নম্বর গেট দিয়ে মাতাফে প্রবেশ করবেন এবং আজইয়াদ গেট দিয়ে বের হবেন।

আর দক্ষিণ ও পশ্চিম থেকে আগত মুসল্লিদের মাতাফের দ্বিতীয় তলায় প্রবেশ করতে হবে আজইয়াদ ফ্লাইওভার এবং শোবাইকা ফ্লাইওভার দিয়ে। তারা বের হবেন চলন্ত সিঁড়ি (এস্কেলেটর) ও আল সাফা ব্রিজ দিয়ে।

মসজিদে হারাম খুলে দেওয়ার পর উমরাপালনকারী ছাড়া অন্যদের মাতাফে যেতে দেওয়া হবে না। মসজিদের প্রথম ও দ্বিতীয়তলা তাওয়াফকারীদের জন্য বরাদ্দ থাকবে। হুইল চেয়ার ও বয়স্করা দ্বিতীয়তলা ব্যবহার করতে পারবেন।

ভিড় নিয়ন্ত্রণের জন্য তাওয়াফের স্থানগুলোতে প্লাস্টিকের অস্থায়ী দেয়াল বানিয়ে দেওয়া হবে। সাফা-মারওয়াতেও আলাদা আলাদা লেন করে দেওয়া হবে।

জনসমাগম এড়াতে মক্কার প্রবেশ পথে কড়াকাড়ি আরোপ করা হবে। বিশেষ করে শুক্রবার সকাল থেকে মসজিদে হারামে যাওয়ার পথগুলো নিয়ন্ত্রণ করা হবে। স্থানীয়দের নিজ নিজ মহল্লার মসজিদে নামাজ পড়তে উৎসাহিত করা হবে।

করোনাভাইরাসের বিস্তার প্রতিরোধে ৫ মার্চ থেকে মসজিদে হারামে জনসাধারণের প্রবেশ বন্ধ রয়েছে। তবে সীমিত পরিসরে জামাত, জুমা, তারাবি, ঈদের নামাজ ও সালাতুল কুসুফ আদায় করা হয়েছে। মসজিদে হারামের চারপাশে পুলিশ সদস্যরা ব্যারিকেড দিয়ে রেখেছেন।

সৌদি আরবে এখন পর্যন্ত ১ লাখ ৮৬ হাজার ৪৩৬ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। মারা গেছেন ১ হাজার ৫৯৯ জন আর সুস্থ হয়েছেন ১ লাখ ২৭ হাজার ১১৮ জন।