আল রশিদ ফাউন্ডেশনকে অ্যাম্বুলেন্স দিল এফবিসিসিআই
করোনাভাইরাসে মৃতদের দাফনকাজ সম্পন্ন নিশ্চিত করতে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন আল রশিদ ফাউন্ডেশনকে একটি লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্স উপহার দিয়েছে ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ড্রাস্ট্রি (এফবিসিসিআই)।
রোববার (৫ জুলাই) এফবিসিসিআইর পক্ষ থেকে সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা এবং হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব)-এর সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন তসলিমের কাছে অ্যাম্বুলেন্সটি হস্তান্তর করেন।
এ সময় এফবিসিসিআইর সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম বলেন, ‘দেশের এ কঠিন সময়ে আল রশিদ ফাউন্ডেশনের মানবিক প্রচেষ্টায় সম্মিলিতভাবে মানুষের পাশে থাকার জন্য এটি এফবিসিসিআইর ছোট্ট একটি উদ্যোগ। করোনা মোকাবিলায় আমাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন। এই জরুরি সময়ে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন আল রশিদ ফাউন্ডেশনের সকলকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানাই। আমরা এই সংগঠনের সঙ্গে থাকতে পেরে আনন্দিত।’
আল রশিদ ফাউন্ডেশন চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসাইন তসলিম বলেন, ‘জরুরি মুহূর্তের সেবা দান, লাশ দাফন কিংবা শেষকৃত্য সম্পন্নের জন্য ২৪ ঘণ্টা আমাদের স্বেচ্ছাসেবীরা প্রস্তুত। মানবতার সেবায় বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের একমাত্র শীর্ষ সংগঠন হিসেবে এগিয়ে আসায় এফবিসিসিআইর সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিমকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানাই। আমরা চাই, এফবিসিসিআইর মতো অন্যরাও মানবতার সেবায় এগিয়ে আসুক।’
এ সময় উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআইর সহ-সভাপতি নিজামউদ্দিন রাজেশ, দিলীপ কুমার আগারওয়ালা ও পরিচালক সুজিব রঞ্জন দাসসহ সংগঠনের অন্য নেতৃবৃন্দ।
কোনো ধরনের বিনিময় বা প্রাপ্তির আশা ছাড়াই মানবিক দায়বোধ থেকে করোনা মহামারি শুরুর পর করোনায় আক্রান্ত হয়ে কিংবা করোনা উপসর্গ নিয়ে মৃত্যুবরণকারীদের জানাজা ও দাফন-কাফনে নানাবিধ জটিলতা দেখা দেওয়ার করুণ সময়ে হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব) সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম ফাউন্ডেশনটি প্রতিষ্ঠা করেন।
সরকার ৪টি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনকে করোনায় মৃতদের দাফনের অনুমোদন দিয়েছে। আর রশিদ ফাউন্ডেশন তার একটি। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনপ্রাপ্ত এই ফাউন্ডেশনে এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম নিজ অর্থায়নে একটি ফ্রিজিং অ্যাম্বুলেন্স ও রোগী পরিবহনের দুটি অ্যাম্বুলেন্স কেনেন। গঠন করেন তিনজন নারীসহ ৩০ সদস্যের একদল প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত অভিজ্ঞ আলেম ও স্বেচ্ছাসেবক দল।
এ পর্যন্ত ফাউন্ডেশনটি প্রায় তিনশ’ মরদেহ দাফন করেছে। সম্পূর্ণ অলাভজনক প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম শুধু রাজধানী ঢাকাতেই সীমাবদ্ধ নয়, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও অধিদফতরের সঙ্গে সমন্বয় করে যেখানে প্রয়োজন সেখানেই করোনারোগী পরিবহন এবং মৃতদেহ দাফন ও সৎকারের কাজ করে যাচ্ছে।
হাব সভাপতি ও আল রশীদ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম ফাউন্ডেশনটি তার বাবার নামানুসারে গড়ে তুলেছেন। কুমিল্লা সদর উপজেলার মোহাম্মদপুর গ্রামের মাওলানা রশিদ আহমেদ অত্যন্ত নামকরা আলেম ছিলেন।
বর্তমানে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে তাদের অপারেশনাল অফিস রয়েছে। সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবকরা ঢাকার ভেতরে মরদেহ হাসপাতাল থেকে গ্রহণ করে গোসল দেওয়া, কাফন পরানো, জানাজা পড়ে কবর দেওয়া এবং জানাজা পরবর্তী দোয়া ইত্যাদি করে থাকেন বিনামূল্যে। আর ঢাকার বাইরে পরিবহন সুবিধা ছাড়া অন্যসব সেবা তারা দিতে পারেন। সারাদেশে দাফনকাজে তাদের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত টিম রয়েছে।