চামড়ার ন্যায্যমূল্য নির্ধারণ করুন: জাতীয় উলামা পরিষদ

  • নিউজ ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

চামড়ার ন্যায্যমূল্য নির্ধারণের দাবিতে জাতীয় উলামা পরিষদের মানববন্ধন, ছবি: সংগৃহীত

চামড়ার ন্যায্যমূল্য নির্ধারণের দাবিতে জাতীয় উলামা পরিষদের মানববন্ধন, ছবি: সংগৃহীত

অসাধু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের কবল থেকে চামড়া শিল্পকে রক্ষায় আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সমন্বয় করে আসন্ন কোরবানির পশুর চামড়ার ন্যায্যমূল্য নির্ধারণে দাবি জানিয়ে জাতীয় উলামা পরিষদ নামের একটি সংগঠন মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে।

শনিবার (১৮ জুলাই) সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন- আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী, আল্লামা আতাউল্লাহ হাফেজ্জী, আল্লামা আব্দুল হামিদ (পীর সাহেব মধুপুর), মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী, মাওলানা ফজলুল করীম কাসেমী, মুফতি মনির হোসাইন কাসেমী, মুফতি সাইফুল্লাহ, মাওলানা বশির আহমদ, মাওলানা মাহবুবুর রহমান, মাওলানা নূরুল্লাহ প্রমুখ।

বিজ্ঞাপন

মানববন্ধনে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী বলেন, দেশের অতি সম্ভাবনাময়ী চামড়া শিল্প ধ্বংসে যেমন দেশের উন্নয়নবিরোধী একটা চক্র কাজ করে যাচ্ছে, তেমনি এই শিল্পের সঙ্গে জড়িত ব্যাবসায়ী সিন্ডিকেটও কাঁচা চামড়ার মূল্যে ধস নামিয়ে এতিম, গরীব ও নি:স্ব মানুষের অধিকার লুটে নিতে তৎপর। দুর্ভাগ্যজনকভাবে সরকার গরীব ও এতিমদের অধিকার রক্ষার পরিবর্তে ব্যবসায়ীদের চাহিদামতো সিদ্ধান্ত দিচ্ছে। যে কারণে গত কয়েক বছর ধরে কাঁচা চামড়ার মূল্যে বিশাল ধস নেমেছে। এতে এতিম ও গরীবরা চরমভাবে বঞ্চিত হচ্ছে।

তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে চামড়ার ন্যায্যমূল্য নির্ধারণের জন্য আমরা প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপের দাবি জানাচ্ছি। দেশের অর্থনীতিকে রক্ষার পাশাপাশি চামড়ার প্রকৃত হকদার এতিম, গরীব ও দুস্থ মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সিন্ডিকেট চক্রকে উৎখাত করে চামড়ার ন্যায্যমূল্য নির্ধারণ অত্যন্ত জরুরি। অন্যথায় গত বৎসরের মতো লাখ লাখ চামড়া বিনষ্ট হওয়ার মতো ঝুঁকির আশঙ্কা তৈরি হতে পারে।

বিজ্ঞাপন

আল্লামা কাসেমী আরও বলেন, সরকার চামড়ার ন্যায্যমূল্য নির্ধারণে ব্যর্থ হলে দেশের তাওহিদি জনতা মাঠ পর্যায়ে কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবে। এতিম ও গরীবের অধিকার প্রতিষ্ঠায় আমাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। নেতৃবৃন্দের সঙ্গে পরামর্শ করে জাতীয় উলামা পরিষদ পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করবে।

বন্যা পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করে আল্লামা কাসেমী বলেন, বর্তমানে দেশের বড় একটা অংশ বন্যা কবলিত হওয়ায় গ্রামাঞ্চলের বহু মানুষ পানিবন্দী হয়ে আছে। করোনা পরিস্থির কারণে এমনিতেই তারা বহুমুখি সঙ্কটে ছিল। বন্যার কারণে উপদ্রুত এলাকার মানুষ মানবেতর পরিস্থিতির মুখে পড়েছে। সরকারের পাশাপাশি দেশের সক্ষম নাগরিকদের প্রতি আহ্বান জানাব, ত্রাণ ও মানবিক সহায়তা সামগ্রী নিয়ে পানিবন্দি অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ান।

মাওলানা আতাউল্লাহ হাফেজ্জী বলেন, আজকের এই মানববন্ধন থেকে আমরা সরকারের কাছে চামড়ার ন্যায্যমূল্য নির্ধারণের দাবি জানাই। যাতে দেশের লাখ লাখ এতিম, গরীব ও নি:স্ব মানুষের অধিকার রক্ষা হয় এবং কওমি মাদরাসাসমূহের বিপুল সংখ্যক এতিম ও গরীব ছাত্রের ভরণ-পোষণে সহযোগিতা হয়।

মাওলানা আব্দুল হামিদ (পীর সাহেব মধুপুর) বলেন, চামড়া ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ব্যব্যসায়ীদের সিন্ডিকেট একজোট হয়ে গরীবদের অধিকার লুটে নিচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আমি উদাত্ত আহ্বান জানাবো, আপনি দেশের গরীব-দু:খী মানুষকে অনেক দান-সদকা ও ত্রাণ সহায়তা দিচ্ছেন। অনুগ্রহ করে কোরবানির চামড়ার ন্যায্যমূল্য নিশ্চিতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করুন। এতে এতিম, গরীব ও অসহায় মানুষ অনেক উপকৃত হবেন। তবে সরকার যদি আসন্ন ঈদে চামড়ার ন্যায্যমূল্য নির্ধারণে ব্যর্থ হয়, আমরা দেশের মানুষকে নিয়ে এতিম ও গরীবদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় বৃহৎ আন্দোলন গড়ে তুলব- ইনশাআল্লাহ।

মানববন্ধনে আলেম-উলামা, মাদরাসা ছাত্র ও সাধারণ জনতা অংশগ্রহণ করেন। মাওলানা আব্দুল হামিদ (পীর সাহেব মধুপুর)-এর মোনাজাতের মাধ্যমে কর্মসূচি শেষ হয়।