কনস্টেবল মনিরুল হত্যা: কাওসারের ৭ দিনের রিমান্ড



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
কনস্টেবল কাওসার আহমেদ

কনস্টেবল কাওসার আহমেদ

  • Font increase
  • Font Decrease

রাজধানীর বারিধারার ডিপ্লোমেটিক জোনে পুলিশ কনস্টেবল মনিরুল হককে গুলি করে হত্যার মামলায় গ্রেফতার কনস্টেবল কাওসার আহমেদের ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শাকিল আহাম্মদ রোববার (৯ মে) এ রিমান্ডের আদেশ দেন। এর আগে, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গুলশান থানার সাব-ইন্সপেক্টর মো. আব্দুল মান্নাফ আসামিকে আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন।

ডিএমপির গুলশান বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) রিফাত রহমান শামীম বলেন, গতরাতের ঘটনায় নিহতের ভাই মাহাবুবুল আলম বাদী হয়ে একটি মামলা করেছেন।

শনিবার (৮ জুন) রাতে বারিধারায় ফিলিস্তিন দূতাবাসের নিরাপত্তার দায়িত্বে অন্যান্য পুলিশ সদস্যের মতো ছিলেন কনস্টেবল মনিরুল এবং কাওসার। রাত পৌনে ১২টার দিকে হঠাৎই সহকর্মী মনিরুলকে নিজের বন্দুক দিয়ে গুলি করেন কনস্টেবল কাওসার। এতে ঘটনাস্থলেই মারা যান মনিরুল।

এসময় হামলাকারীর এলোপাতাড়ি গুলিতে পাশে থাকা জাপান দূতাবাসের গাড়িচালক সাজ্জাদ হোসেন আহত হন। তাকে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। পরে আটক করা হয় হামলাকারী কাওসারকে।

নিহত মনিরুল ইসলামের বাড়ি নেত্রকোনায়। তার তিন বছরের একটি সন্তান রয়েছে।

‘রায়ের অনুলিপি পেলে হলি আর্টিজানের আসামিদের বিরুদ্ধে পরবর্তী সিদ্ধান্ত’



বাসস
এটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন/ছবি: সংগৃহীত

এটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন/ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

দেশের ইতিহাসে বহুল আলোচিত হলি আর্টিজান জঙ্গি হামলায় হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আনা মামলার বিষয়ে এটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেছেন, হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় পেলে তা পর্যালোচনার পর রাষ্ট্রের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে তাদের নির্দেশনা অনুসারে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

এটর্নি জেনারেল বলেন, হাইকোর্ট রায়ের অনুলিপি পেলে বুঝতে পারব কী যুক্তিতে বা কোন কোন যুক্তিতে আসামিদের মৃত্যুদণ্ড থেকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। কিন্তু এখনো রায়ের কপি আমরা পাইনি।

এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, মৃত্যুদণ্ডের পরিবর্তে হাইকোর্ট আসামিদের আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়েছেন। তাই তাদের মৃত্যু পর্যন্ত কারাগারেই থাকতে হবে। কারাগার থেকে বের হওয়ার সুযোগ নেই।

রাজধানীর হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গিদের সশস্ত্র হামলায় নৃশংস হত্যাকাণ্ডের মামলায় হাইকোর্টের রায় প্রকাশের অপেক্ষায় রয়েছে। গত বছরের ৩০ অক্টোবর এই মামলার হাইকোর্ট রায় দেয়।

রায়ের পর্যবেক্ষণে বলা হয়, হলি আর্টিজান হামলায় দেশি-বিদেশি ২০ জন নাগরিকসহ দু’জন পুলিশ কর্মকর্তাকে নিষ্ঠুর ও নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। তাতে বহির্বিশ্বে দেশের ভাবমূর্তি চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে রায়ে উল্লেখ করেছে হাইকোর্ট।

রাজধানীর গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে আলোচিত সন্ত্রাসী হামলা মামলায় বিচারিক আদালতের দেওয়া মৃত্যুদণ্ডাদেশ কমিয়ে ৭ আসামির আমৃত্যু কারাদণ্ডাদেশের রায়ে এই মন্তব্য করেছেন উচ্চ আদালত।

রায়ে আদালত বলেন, নিষ্ঠুরতম হত্যাকাণ্ডটি জনসাধারণের মনে চরম আতঙ্ক সৃষ্টিসহ জননিরাপত্তা মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত করেছে। বিচারপতি সহিদুল করিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ আসামিদের আপিল ও জেল আপিল এবং ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদন) খারিজ করে রায় দেয়। আদালত রায়টি বাংলায় ঘোষণা করেন।

রায়ে আদালত বলেন, সন্ত্রাসবিরোধী আইন, ২০০৯ এর ধারা ৬ (১) (ক) (আ) ধারার অপরাধ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় আপিলকারী মো. জাহাঙ্গীর হোসেন, মো. আসলাম হোসেন সরদার ওরফে মোহন, মো. আব্দুস সবুর খান (হাসান), রাকিবুল হাসান রিগেন ওরফে রাফিউল ইসলাম, মো. হাদিসুর রহমান, মো. শরিফুল ইসলাম খালেদ এবং মামুনুর রশিদ রিপনকে আইনের ৬(২)(আ) ধারায় বর্ণিত সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হলো।

মামলায় দেশি-বিদেশি ২০ জন নাগরিকসহ দুইজন পুলিশ কর্মকর্তাকে যে নিষ্ঠুর ও নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে, তাতে বহির্বিশ্বে দেশের ভাবমূর্তি চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

তাছাড়া এই নিষ্ঠুরতম হত্যাকাণ্ডটি জনসাধারণের মনে চরম আতঙ্ক সৃষ্টিসহ জননিরাপত্তা মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত করেছে। রায়ে বলা হয়, এই অবস্থায় আপিল বিভাগের ‘আতাউর মৃধা ওরফে আতাউর বনাম রাষ্ট্র’ মামলার নজিরের ১৭৯ প্যারায় বর্ণিত পর্যবেক্ষণের মর্ম অনুসারে আপিলকারীদেরকে আমৃত্যু কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হলে ন্যায়বিচার নিশ্চিত হবে। সে অনুযায়ী প্রত্যেককে আমৃত্যু কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হলো। তাদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড অনাদায়ে ৫ বৎসরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়- বলে রায়ে উল্লেখ করেন হাইকোর্ট।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বশির আহমেদ। আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী আরিফুল ইসলাম ও আমিমুল এহসান। আসামিপক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী ছিলেন এস এম শফিকুল ইসলাম।

ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, সন্ত্রাস বিরোধী আইন, ২০০৯ এর ৬ (১) (ক) (অ) ধারা অনুসারে অপরাধ করায় বিচারিক আদালত তাদের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন। কিন্তু হাইকোর্ট বলেছেন-না, এই আসামিরা ৬ (১) (ক) (আ) ধারা অনুসারে অপরাধ করেছেন। অর্থাৎ এই আসামিরা কেউই সরাসরি হত্যাকাণ্ডের সাথে যুক্ত ছিলেন না। তারা সহযোগিতার (অ্যাবেটমেন্ট) সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। এখানে সাজা হলো যাবজ্জীবন। এখানে আপিল বিভাগের ‘আতাউর মৃধা ওরফে আতাউর বনাম রাষ্ট্র’ মামলার নজিরের ১৭৯ প্যারায় বর্ণিত পর্যবেক্ষণের মর্ম অনুসারে আপিলকারীদের আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়েছেন হাইকোর্ট।

২০১৬ সালের ১ জুলাই রাতে রাজধানীর গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্টুরেন্টে হামলা চালিয়ে বিদেশি নাগরিকসহ ২০ জনকে হত্যা করেন নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন নব্য জেএমবির (আত্মঘাতী) সদস্যরা। তাদের গুলিতে দুই পুলিশ কর্মকর্তা নিহত হন। পরে কমান্ডো অভিযানে নিহত হন পাঁচ জঙ্গি। এ ঘটনা দেশ বিদেশে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। এ ঘটনার মামলায় ২০১৯ সালের ২৭ নভেম্বর ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মজিবুর রহমান একজনকে খালাস দিয়ে সাতজনের মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- জাহাঙ্গীর হোসেন ওরফে রাজীব গান্ধী, আসলাম হোসেন ওরফে র‌্যাশ, আব্দুস সবুর খান, রাকিবুল হাসান রিগ্যান, হাদিসুর রহমান, শরিফুল ইসলাম ওরফে খালেদ ও মামুনুর রশিদ। খালাস পেয়েছেন মিজানুর রহমান ওরফে বড় মিজান।

ফৌজদারি মামলায় বিচারিক আদালত যখন আসামিদের মৃত্যুদণ্ড দেন, তখন ওই দণ্ড কার্যকরের জন্য হাইকোর্টের অনুমোদনের প্রয়োজন হয়। এজন্য সংশ্লিষ্ট বিচারিক আদালত ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৭৪ ধারা অনুযায়ী মামলার সব নথি হাইকোর্টে পাঠিয়ে দেন, যা ডেথ রেফারেন্স নামে পরিচিত। নথি আসার পর হাইকোর্টের ডেথ রেফারেন্স শাখা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সংশ্লিষ্ট মামলার পেপারবুক প্রস্তুত করে। এরপর বেঞ্চ নির্ধারণ হলে শুনানি শুরু হয়। সে আলোকে মামলাটি হাইকোর্টে শুনানি ও রায় হয়েছে।

দেশের ইতিহাসে অন্যতম নৃশংস এ হামলায় ৯ ইতালীয়, ৭ জাপানি, এক ভারতীয়, এক বাংলাদেশি-আমেরিকান দ্বৈত নাগরিক ও দুজন বাংলাদেশিসহ মোট ২০ জনকে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় সন্ত্রাসীদের ছোড়া গ্রেনেডের আঘাতে প্রাণ হারান বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সালাউদ্দিন আহমেদ ও সহকারী পুলিশ কমিশনার রবিউল ইসলাম।

হামলার পর জিম্মি অবস্থার অবসানে সেনাবাহিনীর কমান্ডো অভিযানে নিহত হন পাঁচ জঙ্গি। তারা হলেন- মীর সামেহ মোবাশ্বের, রোহান ইবনে ইমতিয়াজ ওরফে মামুন, নিবরাস ইসলাম, খায়রুল ইসলাম পায়েল ও শফিকুল ইসলাম উজ্জ্বল। এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযানের সময় নিহত হয়েছেন নব্য জেএমবির আরও আট সদস্য। তাদের অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আবুল হাসনাত রেজা করিমও অভিযোগ থেকে অব্যাহতি পান।

ওই ঘটনায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে গুলশান থানায় একটি মামলা করেন ওই থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) রিপন কুমার দাস। পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের পরিদর্শক হুমায়ুন কবির মামলাটি তদন্ত করে ২০১৮ সালের ১ জুলাই আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করেন।

;

সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীদের সম্পদের হিসাব দাখিলের নির্দেশনা চেয়ে রিট



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
আদালত/ছবি: সংগৃহীত

আদালত/ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

দুর্নীতিরোধে সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীদের সম্পদের হিসাব দাখিল ও প্রকাশের নির্দেশনা চেয়ে একটি রিট দায়ের করা হয়েছে।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সুবীর নন্দী দাস সোমবার (১ জুলাই) সকালে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এই রিট দায়ের করেন।

রিটে মন্ত্রিপরিষদ সচিব, জনপ্রশাসন সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, দুদকের চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরসহ ১০ জনকে বিবাদী করা হয়েছে।

বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী ইবাদত হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রিটটি শুনানির জন্য মঙ্গলবার (২ জুলাই) দিন ধার্য করেছেন।

এ বিষয়ে আইনজীবী সুবীর নন্দী দাস বলেন, সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীদের সম্পদের হিসাব আইনে উল্লেখিত যথাযথ নিয়মে কর্তৃপক্ষের কাছে দাখিলের পাশাপাশি ওয়েবসাইটে প্রকাশের নির্দেশনা চেয়ে রিটটি করেছি। আগামীকাল এই রিটের শুনানি হবে।

;

চাঁদপুরে হত্যা মামলায় দু’জনের মৃত্যুদণ্ড



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চাঁদপুর
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

চাঁদপুর শহরের রহমতপুর আবাসিক এলাকার ভূঁইয়া বাড়িতে কোহিনুর হত্যার ঘটনায় হওয়া মামলায় দু’জনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে আসামিদের ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৩ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

রোববার (৩০ জুন) বিকেলে চাঁদপুরের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মো. মহসিনুল হক এ রায় দেন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামি হলো- নাজমা আক্তার নয়ন ও মো. রফিক।

হত্যা মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ২০১৫ সালের ২২ আগস্ট রাত ৮টায় কোহিনুর বেগম আসামিদের কাছ থেকে পাওনা টাকা চাইতে গেলে তারা তাকে ধারালো বঁটি দিয়ে মাথায় কোপ দিয়ে হত্যা করে।

ঘটনার পর কোহিনুরের ভাই আবদুল মালেক বাদী হয়ে ছয়জনকে আসামি করে থানায় মামলা করেন। মামলায় ১৫ জন সাক্ষী সাক্ষ্য প্রদান করেছেন।

আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পিপি) রঞ্জিত রায় চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, আদালতের এ রায়ে কোহিনুরের পরিবার সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন।

;

বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার চেয়ে মতিউরের স্ত্রী লায়লার আবেদন



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
মো. মতিউর রহমানের প্রথম স্ত্রী লায়লা কানিজ লাকি

মো. মতিউর রহমানের প্রথম স্ত্রী লায়লা কানিজ লাকি

  • Font increase
  • Font Decrease

ছাগলকাণ্ডে আলোচিত জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সদ্য সাবেক সদস্য মো. মতিউর রহমানের প্রথম স্ত্রী লায়লা কানিজ লাকি বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞার প্রত্যাহার চেয়ে আদালতে আবেদন করেছেন।

রোববার (৩০ জুন) আদালতে হাজির হয়ে আইনজীবীর মাধ্যমে তিনি এই আবেদন করেন। আগামী ২৮ জুলাই শুনানির দিন ধার্য করেছেন ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন।

এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মীর আহমেদ আলী সালাম।

ড. মতিউর রহমানের স্ত্রী লায়লা কানিজ লাকি ছিলেন রাজধানীর সরকারি তিতুমীর কলেজের বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক। সেখান থেকে অধ্যাপনা ছেড়ে কোন রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা ছাড়াই স্থানীয় সংসদ সদস্য রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজুর হস্তক্ষেপে ও নরসিংদী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জিএম তালেবের সহযোগিতায় ২০২৩ সালে ১৯ জানুয়ারি জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদকের পদ বাগিয়ে নেন।

২০২২ সালের ১৩ ডিসেম্বর ক্যান্সার আক্রান্ত হয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুস ছাদেক মারা যাওয়ার পর পদটি শূন্য হয়। পরে নিজেকে উপজেলা চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী ঘোষণা দেন। দলীয় মনোনয়নও পান তিনি। পরে স্থানীয় সংসদ সদস্যের সহযোগিতায় দলীয় প্রভাব বিস্তার করে ২০২৩ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিনে ৬ প্রার্থীকেই প্রার্থিতা প্রত্যাহারে বাধ্য করিয়ে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন লায়লা কানিজ লাকি।

গত ২৪ জুন দুর্নীতি সমন কমিশনের (দুদক) আবদনের প্রেক্ষিতে ছাগলকাণ্ডে আলোচিত জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর্মকর্তা মতিউর রহমান, তার স্ত্রী কলেজশিক্ষক লায়লা কানিজ এবং পুত্র আহম্মেদ তৌফিকুর রহমান অর্নবের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেয় আদালত।

এদিকে, ড. মতিউর রহমানের সম্পদ অনুসন্ধানে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) তিন সদস্যের একটি কমিটি কাজ শুরু করেছে।

এছাড়া আলোচিত মতিউর রহমানকে রোববার বর্তমান দায়িত্ব থেকে সরিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগে সংযুক্ত করা হয়েছে।

এবার কোরবানির ঈদে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের সাদিক অ্যাগ্রো থেকে ১৫ লাখ টাকায় একটি ছাগল কিনতে গিয়ে আলোচনার জন্ম দেন মতিউর রহমানের ছেলে ইফাত। তার পরই আলোচনায় আসে তার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ, ব্যাংকে গচ্ছিত অর্থের পরিমাণ, আয় ও ব্যয়ের তথ্য। এনিয়ে খতিয়ে দেখছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। খোদ এনবিআরও তার আয়কর রিটার্নে দেওয়া তথ্য খতিয়ে দেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানা যায়।

মূলত মতিউর রহমান কাস্টমস কমিশনার হিসেবে কর্মরত থাকার সময় থেকেই তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। দুদকসহ বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানে তার বিরুদ্ধে তদন্ত করে শাস্তির আওতায় আনতে একাধিক আবেদন জমা পড়ে।

সাধারণ একজন চাকরিজীবী হয়েও এ পর্যন্ত শতকোটি টাকা সাদা করেছেন। বসুন্ধরায় দুই কোটি টাকার একটি ফ্ল্যাট এবং ধানমন্ডিতে ৫ কাঠায় আলিশান ৭ তলা বাড়ির মালিক। যার মূল্য ৪০ কোটি টাকা। ভালুকার সিডস্টোর এলাকার পাশেই প্রায় ৩০০ বিঘা জমির ওপর গ্লোবাল জুতার ফ্যাক্টরি। এ ছাড়া রয়েছে ৬০ শতাংশ জমি।

জেসিক্স নামে একটি যৌথ ডেভেলপার কোম্পানি রয়েছে। বসুন্ধরার ১৪ তলা বাণিজ্যিক ভবন আছে। গাজীপুর সদরে ৮টি খতিয়ানে ৬০ শতাংশ জমি রয়েছে। যার মূল্য প্রায় ৪০ কোটি টাকা। তার স্ত্রী লায়লা কানিজের নামে সাভার থানার বিলামালিয়া মৌজায় ১৪.০৩ শতাংশ, গাজীপুর থানার খিলগাঁও মৌজায় ৬২.১৬ শতাংশ জমি রয়েছে।

ছেলে আহমেদ তৌফিকুর রহমান অর্ণবের নামে ১৪.৫০ শতাংশ জমি আছে গাজীপুরে। যার মূল্য প্রায় ৯০ কোটি টাকা। তার নিজের ও পরিবারের সদস্যদের নামে আছে একাধিক দামি গাড়ি। তার নামে বেনামে বিভিন্ন ব্যাংকে ৫০ কোটি টাকার বেশি এফডিআর করা আছে। তিনি একাধিক বিয়ে করেছেন। বিভিন্ন নারীর সঙ্গেও তার সম্পর্ক আছে।

ড. মতিউর রহমান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফাইন্যান্স বিষয়ে সম্মান ডিগ্রি এবং একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্সে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থান অধিকার করেন। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের প্রিস্টন ইউনিভার্সিটি থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি ভ্যাট এবং কাস্টমস বিষয়ে দেশ-বিদেশ থেকে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন।

;