শতাধিক বিশ্বনেতার উপস্থিতিতে বাকুতে কপ২৯
শতাধিক বিশ্বনেতার উপস্থিতিতে ইউরোপ ও এশিয়ার (ইউরোশিয়া) দেশ আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে শুরু হচ্ছে বিশ্ব জলবায়ু পরিবর্তন সম্মেলন ২৯ বা দ্য ইউএন ক্লাইমেট চেঞ্জ কনফারেন্স-কপ২৯ (The UN Climate Change Conference COP29)।
মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের অনেক দেশের নেতাই বক্তব্য রাখবেন বলে জানা গেছে। এর মধ্যে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ের স্টারমার।
এদিকে, ৫ নভেম্বর অনুষ্ঠিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান দলের প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প বিজয় লাভের পর বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন নিজে জলবায়ু পরিবর্তন সম্মেলনে নিজে উপস্থিত হবেন না বলে জানা গেছে। তার পরিবর্তে একটি উচ্চ পর্যায়ের মার্কিন প্রতিনিধি দল বাকুর সম্মেলনে উপস্থিত হয়েছেন।
এ সম্মেলন চলবে ২২ নভেম্বর পর্যন্ত।
মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্ট এ খবর জানায়।
খবরে বলা হয়, মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) আজারবাইজানের রাজধানী বাকুতে বিশ্ব জলবায়ু পরিবর্তন সম্মেলন-কপ২৯ শুরু হচ্ছে। এতে বিশ্বের শতাধিক নেতা উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখার পাশাপাশি বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সমস্যা মোকাবিলায় আলোচনা করবেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান দলের প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প বিজয় লাভ করায় বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন নিজে উপস্থিত থাকছেন না। তবে এই সম্মেলনে মার্কিন প্রশাসনের উচ্চ পর্যায়ের এক প্রতিনিধি দল উপস্থিত থাকছেন।
এ বিষয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্টের আন্তর্জাতিক জলবায়ু নীতিমালার ঊর্ধ্বতন পরামর্শক জন ডি. পোডেস্টা বলেছেন, ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে আমরা নতুন প্রেসিডেন্ট পাচ্ছি, যিনি জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে নেতৃত্ব দেবেন।
পোডেস্টা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন এখন আর তামাশা নয়, এটি এখন মানুষের জীবন-মরণ সমস্যা।
এদিকে, সোমবার ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্য এনভায়রনমেন্টাল প্রেটেকশন এজেন্সি দলের নেতা নিউইয়র্কের রিপাবলিকান দলের সাবেক কংগেসম্যান লি জেলডিনকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানিগুলোর ওপর যে বিধিনিষেধ আছে, তা শিথিল করতে নির্দেশ দিয়েছেন।
জলবায়ু পরিবর্তন সম্মেলন- কপ২৯-এ যোগ দেওয়া প্রতিনিধি দল একে ‘ফিন্যান্স কপ’ বলে অভিহিত করেছেন। এ সম্মেলনে বিশ্বনেতারা বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনজনিত করণীয় সম্পর্কে নতুন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করবেন এবং সেইসঙ্গে তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলিকে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে অভিযোজনখাতে আর্থিক বরাদ্দ করা হবে। তবে এ বিষয়ে যোগাযোগের ঘাটতির কারণে তা অনেকটাই কঠিন হয়ে যাবে বলে ওয়াশিংটন পোস্ট জানিয়েছে।
এ সম্মেলনের উদ্দেশ্য হচ্ছে, আন্তর্জাতিক সহযোগী সংস্থার সঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ‘দ্য প্যারিস এগ্রিমেন্ট’র (প্যারিস চুক্তি) অনুযায়ী, বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধির মাত্রা যতটুকু সম্ভব ১.৫ সেন্টিগ্রেডের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখার বিষয়ে দেশগুলির কর্মসূচি পর্যালোচনা করা হবে।
এ বিষয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) এক বিবৃতিতে জানায়, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সমস্যা কোনো দেশের সীমানায় সীমাবদ্ধ নয় বরং এটি ইউরোপসহ সারাবিশ্বের জীবন ও প্রকৃতির ওপর হুমকিস্বরূপও।
কপ২৯-এ ক্লাইমেট অ্যাকশনের কমিশনার ওপকে হোয়িস্ত্রা ইউরোপীয় ইউনিয়ন দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তিনি কমিশনার ফর এনার্জি, কাদরি সিমসন এবং ইনোভেশন, রিসার্চ, কালচার, এডুকেশন ও ইয়ুথ ইলিয়ানা ইভানোভার সঙ্গেও বৈঠকে মিলিত হবেন।
বিশ্ব জলবায়ু পরিবর্তনজনিতখাতে সবচেয়ে বেশি ব্যয় অনুদান দেয় ইউরোপীয় ই্উনিয়ন (ই্উ)। ২০২৩ সালে ইইউ অনুদান দিয়েছে মোট ২৮.৬ বিলিয়ন ইউরো।
এছাড়া গ্রিন হাউস গ্যাস নির্গমন নিঃসরণ হ্রাসে তৃতীয় বিশ্বের দেশের প্রাইভেটখাতে আরো ৭.২ বিলিয়ন অনুদানের জন্য তহবিল জোগাড় করতে কর্মতৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে ইইউ।
কপ-২৯-এর আরেকটি উল্লেখযোগ্য উদ্দেশ্য হচ্ছে, ২০২৩ সালের দুবাইতে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে জীবাস্ম জ্বালানি থেকে পুনর্ব্যবহারযোগ্য জ্বালানিখাতে পরিবর্তনে সদস্য দেশগুলোর মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানোর বিষয়ে পারস্পরিক বৈঠক করা। এছাড়া ২০৩০ সালের মধ্যে এর দক্ষতা দ্বিগুণ করতে আলোচনা করা।