শরৎ শেষে শীতের বার্তা, রোদে বেরোনোর আগে প্রয়োজন সানস্ক্রিন
লাইফস্টাইল
কাশফুল, পরিষ্কার নীল আকাশ আর সবুজ মাঠ। এই সমস্ত শব্দগুলো শুনলেই মনে আসে ঋতুর রানী শরতের নাম। বাংলার প্রকৃতিতে শরতের আবির্ভাব মুগ্ধ করে আমাদের। তবে এবারের শরৎ একেবারেই ভিন্ন। করোনাকালে শরৎ যে সত্যিই এসে পড়েছে বোঝা যায় ফেসবুকের কল্যাণে।
শরৎকালে তাপমাত্রা ও আদ্রতা কমে যায়। এই সময় শুষ্ক হয়ে ওঠে চারিদিক। তখনই প্রয়োজন হয় ময়েশ্চারাইজারের। কিন্তু, গরম লাগতে থাকে। এদিকে রোদের তাপও বেড়ে যায়। তাই এই সময় বাইরে বের হওয়ার আগে অবশ্যই সানস্ক্রিন মাখা উচিত।
বিজ্ঞাপন
হিমেল হাওয়া গায়ে মেখে একটু রোদে আরাম কেদারা নিয়ে বসার আরামই আলাদা। বিশেষ করে আমাদের মতো গ্রীষ্মপ্রধান দেশে শীত তো অতিথি-মাত্র। তাই আমরা মূলত শীতের সবটুকু রূপ-রস রীতিমতো চেটেপুটে উপভোগ করতে চায়।
অনেকের মনে করেন শীতকালে রোদ থেকে বাঁচতে সানস্ক্রিন ব্যবহার করার প্রয়োজন নেই। গরমের দিনের মতো শীতের দিনেও কিন্তু সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি ত্বকের একইরকমভাবে ক্ষতি করে। তাই শীত পরার সময় সূর্যের তেজ থেকে ত্বককে বাঁচাতে সানস্ক্রিন খুবই প্রয়োজনীয়। আর মনে রাখবেন শীতকালে এসপিএফ ৩০-৫০ এর মধ্যে যেকোনও সানস্ক্রিন ব্যবহার করা উচিত।
বিজ্ঞাপন
রোদের হাত থেকে বাঁচতে অয়েলি স্কিনের জন্য ওয়াটার-বেসড কোনও সানস্ক্রিন বেছে নেওয়া উচিত। অতিরিক্ত ময়েশ্চার বা আর্দ্রতাযুক্ত সানস্ক্রিন শীতকালে শুষ্ক ত্বকের যাবতীয় সমস্যার সমাধান করতে বিশেষভাবে সাহায্য করে।
প্রায় সময়ই আমাদের মনে হঠাৎ কোনো খাবার খাওয়ার ইচ্ছা জাগে। খাবার যে শুধু ক্ষুধা লাগলেই খায় বা খেতে ইচ্ছা হয়, তেমনটা হয়। অনেক সময় রসনা তৃপ্তির জন্যও বিভিন্ন মুখরোচক খাবার খাওয়া হয়। তবে হঠাৎ কোনো খাবার খাওয়ার ইচ্ছা এমনি এমনি নাও হতে পারে। শরীরের কোনো উপাদানের ঘাটতি হলে, সেই সংকেত দেয় আমাদের জিহ্বা।
লো ব্লাড সুগার থেকে মানসিক চাপ, এমনকি নারীদের পিরিয়ডের কারণেও ক্রেভিং অর্থাৎ, নির্দিষ্ট কোনো খাবার খাওয়ার বা পান করার ইচ্ছা জাগতে পারে। কোন খাবার খাওয়ার বাসনা কোন সমস্যার কারণে হতে পারে, জেনে নিন-
লো ব্লাড সুগার: শ্বেতসার সম্পন্ন খাবার যেমন রুটি, পাস্তা জাতীয় খাবার খাওয়ার ইচ্ছা জাগার মানে হলো, রক্তে গ্লুকোজ বা শর্করার ঘাটতি রয়েছে। দীর্ঘসময় শ্বেতসার খাওয়া না হলে এমনটা হতে পারে। হঠাৎ রক্তে গ্লুকোজ বা শর্করা কমে গেলে স্টার্চজাতীয় খাবার খেতে ইচ্ছা করে। সেক্ষেত্রে আস্ত বীজ ও শস্যজাতীয় খাবার গ্রহণ করা উচিত। শস্যজাতীয় খাবারে ফাইবার অর্থাৎ, তন্তুজাতীয় উপাদানের আধিক্য থাকে। এছাড়া এসব উপাদান হজম হতেও সময় লাগে, তাই অনেকক্ষণ পেট ভরা থাকে। শস্যজাতীয় খাবার অনেক প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান ভরপুর।
মানসিক চাপ: গবেষকদের মতে, যখন মানুষ মানসিক চাপে থাকে, তখন কর্টিসোল নামক হরমোন নিঃসৃত হয়। এর ফলে মিষ্টিজাতীয় খাবার খাওয়ার ইচ্ছা তীব্র হয়। এরকম হলে চিনি বা মিষ্টি খাওয়া উচিত নয়। কারণ তাতে হঠাৎ রক্তে চিনির পরিমাণ বেড়ে যায় আবার ভেঙেও যায়। এরফলে মেজাজ খারাপ হওয়া এবং ক্লান্ত বোধ হতে পারে। তাই মিষ্টি খাওয়ার চাহিদা মেটাতে ফল, দই বা ঠান্ডা দই খেতে পারেন। ফল বা দই একটি চমৎকার নাস্তা। দইয়ে প্রচুর ক্যালসিয়াম থাকে যা হাড়ের জন্য ভালো। অন্যদিকে, বেরি বা ফলে রোগ প্রতিরোধী অ্যান্টি অক্সিডেন্ট থাকে।
তৃপ্তির অভাব: গরম, সুস্বাদু কোনো পেট ভরিয়ে কিছু খেতে ইচ্ছে করলে মিষি্ট আলু বা মসুর ডাল খাবারে রাখতে পারেন। মসুর ডালে প্রোটিন, ফাইবার থাকায় রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ স্বাভাবিক রাখে এবং বার বার ক্ষুধা লাগার সমস্যা কমিয়ে আনে। মিষি্ট আলুও ফাইবার আর ভিটামিন ‘এ’-এর ভালো উৎস। তাই এই খাবার গুলো অনেকক্ষণ পেট ভরা রেখে তৃপ্তি আনে।
এর বিকল্প হতে পারে উচ্চ আমিষ বা প্রোটিন জাতীয় খাবার। ক্ষুধা মেটাতে আর তৃপ্তি প্রদানে ডিম, মাছ, মুরগীর মাংসও ভালো কাজ করে।
পিরিয়ড সাইকেল: নারীদের ক্ষেত্রে, মানসিক চাপে থাকলে মিষ্টিজাতীয় খাবার খেতে ইচ্ছে করে। বিশেষ করে চকলেট খাবার খেতে ইচ্ছা হওয়ার প্রবণতা অনেক বেশি হয়। গবেষণাতেও দেখা গেছে নারীদের পিরিয়ড চলাকলে সাধারণত চকলেট, মিষ্টি, নোনতা খাবার ইচ্ছা বেশি হয়। সেক্ষেত্রে চকলেট বা বাদাম বা নারকেল দুধ খাওয়া যেতে পারে। চিনিবিহীন বা কম চিনিযুক্ত চকলেট দুধও পান করা যেতে পারে। বাদাম আর বীজ খেলে প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদানের ঘাটতি পূরণ হয়।
পিপাসা: অনেকের ক্ষেত্রে শুধু খাবার খাওয়ার আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে পানীয় পানের ইচ্ছাও জাগতে দেখা যায়। মস্তিষ্কের একটি নির্দিষ্ট অংশ ক্ষুধা-তেষ্টা নিয়ন্ত্রণ করে। তাই অনেক সময় পর্যাপ্ত পানি পান না করার কারণে খাবারের সাথে সাথে পানীয় পানের ইচ্ছাও জাগে। তাই যদি কখনো ক্ষুধা বোধ হয় কিন্তু কি খাবেন ভেবে পান না, তখন এক গ্লাস পানি পান করুন। পানি পানের পর ১৫ মিনিট অপেক্ষা করে দেখুন সমস্যার সমাধান হয় কিনা।
মানুষের শরীরে সোডিয়ামঘাটতি সহ বিভিন্ন কারণে খাওয়ার পর তৃপ্তি বোধ না করার সমস্যা দেখা দিতে পারে। বিভিন্ন উপাদানের অভাবজনিত কারণে মানুষ ভিন্ন ভিন্ন খাবার খাওয়ার আকাঙ্ক্ষা তৈরি হতে পারে।ফল, দই, ডিম এবং বীজ ও শস্য খাবার এধরনের আকাঙ্ক্ষা মেটাতে সাহায্য করতে পারে। তবে বেশি গুরুতর পরিস্থিতিতে চিকিৎসক ও পুষ্টিবিদের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
বর্তমানে আমরা এমন এক পর্যায়ে আছি যেখানে আমরা যখন কারও সঙ্গে কথা বলি প্রায়শই অনুভব করি যে তারা আসলে শুনছেই না। আবেগের প্রতি যথাযথ মনোযোগের অভাব কিংবা ক্রমাগত নেতিবাচকতা ও বিভিন্ন কারণে খুব সহজেই সম্পর্কগুলো ধীরে ধীরে ম্লান হয়ে যায়। এই বৈশিষ্ট্যগুলো আপনার এবং অন্যদের মধ্যে অজান্তেই তৈরি হতে পারে। আসুন মনোবিজ্ঞানের মতে সম্পর্কের ৭টি লক্ষণের দিকে বিশেষভাবে নজর দেওয়া যাক, যেসব লক্ষণের কারণে মানুষ সম্পর্কে দিন দিন আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে।
সঙ্গীর প্রতি অমনোযোগী
দুজন কথা বলার সময় যখন কেউ একজন অমনোযোগী হয়, তখন অন্যজন অপমানিত বোধ করতে পারে। মনে হতে পারে সে মূল্যহীন। একসঙ্গে থাকার পরও যখন কেউ ফোন স্ক্রলিং কিংবা অন্য কোন কাজে ব্যস্ত থাকে এতে ক্রমাগত দূরত্ব সৃষ্টি হয়। সত্যিই এমন পরিস্থিতিতে সম্পর্ক তৈরি হওয়া কঠিন। কেউ আপনার প্রতি যত্নশীল, আপনার খেয়াল রাখছে মানুষ সাধারণত এটাই পছন্দ করে। সঙ্গীর প্রতি আপনার মনোযোগ দিন এতে সঙ্গী নিজেকে মূল্যবান ভাবতে শেখে।
আবেগহীন মনোভাব
যদি একজন ব্যক্তি তার অনুভূতি গোপন রাখে বা নিজের আবেগকে যথাযথভাবে প্রকাশ করতে পারে না, তাহলে অন্য ব্যক্তির সাথে কোন সম্পর্ক তৈরি হয় না। দুজনের আবেগ অনুভূতি সঠিকভাবে প্রকাশ পেলে একে অপরের প্রতি বিশ্বাস বাড়ে, তৈরি হয় ঘনিষ্ঠতা। অন্যথায়, এটি কেবল বন্ধুত্বের বন্ধনে পরিণত হতে পারে।
অতিরিক্ত ঈর্ষা
সামান্য ঈর্ষা স্বাভাবিক হতে পারে, কিন্তু যখন তা চরম আকার ধারণ করে, তখন তা অতিরিক্ত নিয়ন্ত্রণমূলক হয়ে ওঠে। সঙ্গী কোথায় আছে এবং তারা কার সাথে সময় কাটাচ্ছে তা নিয়ে ক্রমাগত প্রশ্ন সম্পর্ক তিক্ত হয়ে ওঠে। সঙ্গীর প্রতি ঈর্ষাও ভালোবাসার প্রতিফলন। তবে, অতিরিক্ত ঈর্ষা নিরাপত্তাহীনতা অবিশ্বাসের লক্ষণ। যেকোনো সম্পর্কের ভিত্তি হচ্ছে বিশ্বাস। সম্পর্কে বিশ্বাস না থাকলে তা সহজেই ভেঙে পড়ে।
নেতিবাচকতা পোষণ
যখন একজন ব্যক্তি সবসময় খারাপ আশা করে বা সবকিছুকে নেতিবাচক দৃষ্টিতে দেখে, তখন তার চারপাশে থাকা মানুষ ক্লান্ত হয়ে পড়ে। যারা কঠিন সময়েও ইতিবাচক থাকে, প্রিয়জনকে দূরে না সরিয়ে কাছে টানে মানুষ এমন লোকদের পছন্দ করে।
যোগাযোগে অদক্ষ
এমন মনে হতে পারে যে একজন ব্যক্তি যদি কথোপকথন চালিয়ে যেতে ব্যর্থ হন বা সঠিকভাবে যোগাযোগ স্থাপন করতে না পারে তবে সম্পর্কে দূরত্ব সৃষ্টি হয়। সম্পর্ক গড়ে তোলার জন্য এবং একে অপরকে আরও ভালভাবে বোঝার জন্য কথা বলা প্রয়োজন। দুজনের অবস্থা সুখ-দুঃখ ভাগ করে না নিলে সত্যিকারের মানসিক সংযোগ ঘটে না।। সুন্দর সম্পর্কের জন্য ভালো যোগাযোগ খুবই নিয়ামক।
লক্ষ্যহীন মনোভাব
যে ব্যক্তি লক্ষ্যহীন তিনি সহজেই সঙ্গীর কাছে মূল্যহীন হতে পারে। জীবনে কোনও দিকনির্দেশনা না থাকলে মানুষ খুব কমই সফলতা অর্জন করে।। মানুষ উচ্চাকাঙ্ক্ষা সম্পন্ন ব্যক্তি বা পরিশ্রমী ব্যক্তিদের প্রতি আগ্রহী হয়। সঙ্গীর সঙ্গে জীবনের উদ্দেশ্য ভাগ করে নেওয়া, কর্মপরকিল্পনা ঠিক করার মাধ্যমে সম্পর্ক অটুট থাকে।
অতিরিক্ত চাপ প্রয়োগ
অনেকেই মনে করে সঙ্গীকে অতিরিক্ত চাপে রাখলে তাকে নিয়ন্ত্রণে রাখা যাবে। যখন কাউকে চাপে রাখা হয় তখন সুস্থ আলোচনা এবং আপোষের কোনও সুযোগ থাকে না। মানুষ সাধারণত অতিরিক্ত চাপের প্রতি বিরক্ত বোধ করে। মানুষ নিজেই সিদ্ধান্ত নিতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। একটি সম্পর্ক এমন হওয়া উচিত নয়, যাতে শুধুমাত্র সম্পর্ক টিকে রাখার জন্য আপনাকে প্রতিনিয়ত মানষিক চাপে থাকতে হয়।
কর্মব্যস্তময় আমাদের জীবন। সারা দিনের পরিশ্রম ও ঘরে-বাইরে সামাল দিতে গিয়ে আমরা ক্লান্ত। এসব ব্যস্তার মাঝে মুখের কিছুটা যত্ন নেয়া হলেও একেবারেই নেয়া হয় না চুলের যত্ন। সপ্তাহ কিংবা মাসে একবারও নিয়ম করে স্যালনে যাওয়ার অবসর হয় না। কিংবা সময় সুযোগ হলে তা অনেকের জন্য ব্যয় সাপেক্ষ। নিত্যদিনের সকল চাহিদার ভিড়ে স্যালনে অনেকেরই যাওয়া হয়ে ওঠে না। কারও আবার স্যালনের কেমিক্যাল চুলে ভীষণভাবে প্রভাব ফেলে। সারা সপ্তাহে চাকরি-বাকরির পর অথবা ঘরকন্যা করার পর সপ্তাহে অন্তত এক ঘণ্টা রাখুন নিজের জন্য।
চাইলেই ঘরোয়া কিছু উপকরণ দিয়ে স্যালনের মতোই স্পা বাড়িতে করে ফেলা যায় নিমিষে। রুক্ষ চুল সহজেই হবে মসৃণ-ঝলমলে। সত্যি বলতে সপ্তাহ জুড়ে রোদ, জল, ধুলোর আক্রমণে চুলের যে দুরবস্থা হয়, তা অন্তত কিছুটা পুষিয়ে নিতে সপ্তাহের যেকোন দিন কিংবা ছুটির দিনটিকে কাজে লাগাতে পারেন।
ঘরে বসে হেয়ার স্পা করতে যে যে উপকরণ প্রয়োজন
১) যেকোন নারকেল, অলিভ বা কাঠবাদামের তেল।
২) চুলের যেকোনও ভাল স্পা ক্রিম। হাতের নাগালে ক্রিম না থাকলে কলা হাতে মেখে কিংবা ব্লেন্ড করে নিতে পারেন।
ধাপে ধাপে চুলে স্পা করবেন কীভাবে?
১. প্রথমে বড় দাঁতের চিরুনি দিয়ে শুকনো চুলের জট ছাড়িয়ে নিন।
২. তারপর পছন্দ মতো যে কোনও তেল হালকা গরম করে মাথার ত্বক এবং চুলে মেখে নিন। চুলের ডগা ফাটার সমস্যা থাকলে সেই অংশে তেল মাখুন ভাল করে। অন্তত আধ ঘণ্টা তেল মেখে রাখুন।
৩. এবার চিরুনি দিয়ে সিঁথি ভাগ করে স্পা ক্রিম মেখে নিন। যদি স্পা ক্রিমের পরিবর্তে কলা মাখতে চান তা হলে কলা ভাল করে মেখে কিংবা ব্লেন্ড করে একটি ছাঁকনি দিয়ে ছেঁকে নিয়ে মাথায় মেখে নিন।
৪. অন্তত মিনিট ২০ শাওয়ার ক্যাপ দিয়ে মাথা ঢেকে রাখুন। শাওয়ার ক্যাপ না থাকলে তোয়ালেও ব্যবহার করতে পারেন।
৫. বাড়িতে যদি ভেপার নেওয়ার যন্ত্র থাকে, তা দিয়ে চুলে গরম জলের ভাপ নিন। অন্যথায় গরম জলে তোয়ালে ভিজিয়ে, নিংড়ে নিয়ে তা মাথায় মুড়িয়ে রাখতে পারেন।
৬. আরও আধ ঘণ্টা পর হালকা গরম পানিতে মাথা ধুয়ে শ্যাম্পু করে ফেলুন। প্রয়োজনে বার দুয়েক শ্যাম্পু করতে হবে।
৭. সব শেষে কন্ডিশনার দিতে ভুলবেন না। মিনিট পাঁচেক মাথায় কন্ডিশনার রেখে, তার পর ধুয়ে ফেলুন।
৮. মাথা ঘষে ঘষে মুছবেন না। তোয়ালেতে মাথার পানি টেনে নিলে তারপর সিরাম মাখতে পারেন।
করোনা মহামারির পর বিশ্বে নতুন করে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে দ্য হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাস (এইচএমপিভি)। চলতি জানুয়ারির শুরুতে পূর্ব এশিয়ার দেশ চীনে প্রথম এর সংক্রমণ ধরা পড়ে। এরপর জাপানে ভাইরাসটি শনাক্ত হয়। এখন এইচএমপিভির প্রাদুর্ভাব মালয়েশিয়া ও ভারতেও ছড়িয়ে পড়েছে। এমনকি বাংলাদেশেও এই রোগের প্রাদুর্ভাব লক্ষ্য করা গেছে।
ইনফ্লুয়েঞ্জা ধাঁচের এই ভাইরাসে এরই মধ্যে আক্রান্ত হয়েছেন অনেকে। ভাইরাসটি করোনার মতোই ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে বলে সতর্ক করেছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। যদিও বিশ্ব স্বাস্থ্যসংস্থা এই ভাইরাস নিয়ে এখনও কোনো সতর্কতা জারি করেনি।
তবে এই ভাইরাস প্রতিরোধে এখন থেকেই সতর্ক হওয়া প্রয়োজন। বিশেষ করে যাদের এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি তাদের সচেতন থাকা জরুরি। বয়সের তারতম্যের কারণে এবং বিভিন্ন স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সমস্যা থাকলে এইচএমপিভিতে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে বলে জানাচ্ছেন ভারতীয় চিকিৎসক আশিস নন্দী। এইচএমপিভি থেকে যাদের ঝুঁকি বেশি, তিনি তাদের চারটি ভাগে ভাগ করেছেন।
১। শিশু এবং বালক-বালিকা
চিকিৎসকের মতে, এদের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা যেহেতু পরিণত হয়নি, তাই আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
ফুসফুসে সংক্রমিত হয় এমন যেকোনও ভাইরাসের মতোই হবে এইচএমপিভির উপসর্গ। জ্বর, কাঁশি, ব্রঙ্কাইটিস, নিউমোনিয়া। খুব ছোট শিশুদের হাইপক্সিয়া এবং ডিহাইড্রেশনও হতে পারে।
২। বয়স্করা
বয়সের সঙ্গে সঙ্গে রোগপ্রতিরোধ শক্তিও দুর্বল হয়। ফলে যেকোন সংক্রমণ প্রতিরোধের ক্ষমতাও কমে যায়। সিওপিডির বা হার্ট ফেলের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে এইচএমপিভি।
৩। কোমর্বিডিটি থাকলে
শ্বাসকষ্ট, ডায়াবেটিস থাকলে বা এমন যেকোনও রোগ, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল করে দেয়, তা থাকলে ভাইরাসের সঙ্গে লড়াই করার ক্ষমতা কমবে।
এর কারণে রোগের মাত্রা বেড়ে যেতে পারে, নতুন কোনও সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে। অন্যান্য রোগীর তুলনায় তাদের সুস্থ হতে বেশি সময় লাগতে পারে।
৪। অপুষ্টির সমস্যা থাকলে
পুষ্টির অভাবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও কমে যায়। গ্লোবাল হাঙ্গার ইনডেক্সের ২০২৪ এর তথ্য অনুযায়ী, না খেতে পাওয়া জনগণের সংখ্যার মাপকাঠিতে ১২৭ টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ৮৪তম। পাশাপাশি দেশের জনসংখ্যার ১১ দশমিক ৯ শতাংশ অপুষ্টিতে ভুগছে।
কীভাবে সতর্ক হবেন?
ইতিহাস পর্যালোচনা করলেই দেখা যায় যুগে যুগে মানুষ বিভিন্ন রোগের সম্মুখীন হয়েছে । তবে সতর্ক থাকলে তার প্রভাব অনেকটাই এড়ানো যায়। কমানো যায় শারীরিক ক্ষতিও। চিকিৎসক নন্দী বলছেন, চিকিৎসা সংক্রান্ত কয়েকটি বিষয়ের পাশাপাশি জীবনযাত্রারও পরিবর্তন আনা প্রয়োজন।
১। টিকা: এইচএমপিভি ভাইরাসের জন্য এখনও কোন টিকা আবিষ্কৃত হয়নি। তবে, ভবিষ্যতে তেমন টিকা আবিষ্কার হলে তা নিয়ে নেওয়া উচিত।
২। চিকিৎসা: চিকিৎসক নন্দীর মতে, মোনোক্লোনার অ্যান্টিবডিজ রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা রক্ষা করতে সাহায্য করে।
৩। পরীক্ষা: উপসর্গ দেখলে এইচএমপিভির পরীক্ষা করতে হবে।
৪। অসুখের যত্ন: যাদের ডায়াবটিস বা শ্বাসকষ্ট রয়েছে, তারা প্রতিনিয়ত নিজেদের শরীরের দিকে খেয়াল রাখুন। দরকার হলে যত্ন নিন।
৫। জীবনযাত্রা রদ-বদল: নিয়মিত হাত ধোয়া, মুখে-নাকে হাত না দেওয়া, মাস্কের ব্যবহার এবং যতটা সম্ভব জমায়েত এড়িয়ে চলা।