বাড়িতেই মাশরুম চাষ করার উপায়
করোনাকালে চিকিৎসকেরা পরামর্শ দিচ্ছেন হাই প্রোটিনযুক্ত ডায়েটের। মাশরুম হাই প্রোটিনযুক্ত একটি খাবার। আবার হজমও হয় তাড়াতাড়ি। প্রোটিন ছাড়াও এতে আছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ও খনিজপদার্থ। আর এই মাশরুমের চাষপদ্ধতিও খুব সহজ।
বাংলাদেশের আবহাওয়া ও জলবায়ু মাশরুম চাষের জন্য খুবই উপযোগী। মাশরুম চাষের জন্য না লাগে মাটি, না লাগে রোদ। বরং অন্ধকার ও কিছুটা স্যাঁতসেতে জায়গা হলেই ভালো। স্বল্প খরচে উৎপাদিত এই মাশরুমের উপকারও অনেক। তাই সামান্য যত্নেই নিজের বাগানে কীভাবে চাষ করবেন মাশরুম জেনে নিন সে উপায়—
খাবার উপযোগী মাশরুম
বাংলাদেশে সাধারণত চার জাতের খাবার উপযোগী মাশরুম চাষ হয়ে থাকে। এর মধ্যে অয়েস্টার মাশরুম বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি চাষ হচ্ছে। সারাবছরই এই মাশরুম চাষ করা যায় তবে শীত ও বর্ষাকালে এর ভালো ফলন হয়ে থাকে। অয়েস্টার বা ঝিনুক মাশরুম খুব অল্প জায়গার সহজেই চাষ করা যায়।
মাশরুম চাষের প্রয়োজনীয় উপকরণ
মাশরুম চাষ করতে সাধারণত বীজ বা স্পন প্যাকেট, ধানের খড়, পাতলা পলিথিন ব্যাগ, ঝুলন শিকা বা বাঁশ, ছিদ্রযুক্ত কালো পলিথিন সিট, ঘরের উষ্ণতা ও আদ্রর্তা পরিমাপের জন্য হাইগ্রোমিটার, ঘরের উষ্ণতা ও আদ্রর্তা নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য হ্যান্ড স্প্রেয়ার, জীবাণুনাশক, ব্লেড বা ছোট ছুরি, বালতি এবং অন্যান্য আনুষাঙ্গিক উপকরণ দরকার হয়ে থাকে।
অয়েস্টার মাশরুম চাষ পদ্ধতি
প্রথমে মাশরুম চাষ কেন্দ্র হতে মাশরুমের বীজ বা স্পন প্যাকেট সংগ্রহ করতে হবে। পরে বীজ বা স্পনের দুই পাশে কিছুটা গোল করে কেটে চেঁছে নিতে হবে।
তারপর মাশরুমের প্যাকেট ৩০ মিনিটের জন্য পানিতে ডুবিয়ে রাখতে হবে। পানি থেকে ৩০ মিনিট পরে মাশরুমের প্যাকেট তুলে নিতে হবে।
মাশরুমের প্যাকেট ৫ থেকে ১০ মিনিট উপুড় করে রাখতে হবে যাতে প্যাকেট হতে অতিরিক্ত পানি ঝরে যায়। পানি ঝরে গেলে ঘরের পূর্ব নির্ধারিত স্থানে এটি রেখে দিতে হবে। প্রতিদিন এর উপর অন্তত ৩-৪ বার পানি ছিটিয়ে দিতে হবে।
সাধারণত ৩-৪ দিন পর কাটা জায়গা থেকে অঙ্কুর গজাবে। অঙ্কুর গজানোর পর সেখানে মাঝে মাঝে পানি ছিটিয়ে দিতে হবে।
খাওয়ার উপযোগী মাশরুম উৎপন্ন হতে ৫ বা ৬ দিন সময় লাগবে। পরবর্তীতে খাবার উপযোগী মাশরুম উৎপন্ন হলে গোড়া থেকে তা তুলে নিতে হবে।
বীজের যে জায়গাটি কাটা হয়েছিল সেখানে ব্লেড দিয়ে একটু চেঁছে দিতে হবে। পরবর্তীতে ঐ বীজ থেকে পুনরায় মাশরুম গজাবে।
একটি আধা কেজি ওজনের বীজ বা স্পন প্যাকেট থেকে ৩-৪ বার অর্থাৎ তা থেকে মোট ২০০-২৫০ গ্রাম মাশরুম পাওয়া যাবে।